নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জন্মান্তরবাদ

২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৯


জন্মান্তরবাদের মূল কথা হলো, যতদিন পর্যন্ত মোক্ষ বা ঈশ্বর লাভ না হয়, ততদিন পর্যন্ত জীবাত্নাকে বার বার নতুন দেহ ধারণ করে মোক্ষ লাভের যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।
প্রত্যুষে জীবনের শুরু হয়, সবুজ ঘাসে শিশিরের মৃত্যুতে একটি কর্মচঞ্চল দিন। আবার নতুন দিনের প্রতীক্ষায় জীবনকে গিলে খায় গোধূলি।
এভাবেই কী ভাবা যায় জন্মান্তরবাদ? হয়তোবা ভাবা যায়।
ভারতীয় দার্শনিকেরা মনে করেন, মানুষের অমর আত্মা একটি মরণশীল দেহের মধ্যে কর্মের প্রভাবে আবদ্ধ থাকে। এটি একটি অনন্ত অস্তিত্বের চক্র।
পুরোহিত বলে চলেছেন,
জন্মান্তরবাদ অথবা বার বার জন্মের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মৃত্যুর পর আবারো ফিরে আসা নয়, জন্ম মৃত্যুর ঘোরটোপে চক্রাকারে আবর্তিত হওয়া নয়। বরং জন্মের পর কর্মের মাধ্যমে মৃত্যু পরবর্তী সময়ে স্বর্গীয় অবস্থানে পৌঁছানো। যেখানে আত্না নির্বাণ লাভ করবে।
বুদ্ধের কথাও কিন্তু একই বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দেয়-
বুদ্ধ বলেন,“অনাদি এই সংসার। অবিদ্যা তৃষ্ণা চক্রে আবদ্ধ হয়ে ক্রমাগত পরিভ্রমণশীল সত্ত্বদের আরম্ভ দেখা যায় না।”
অবিদ্যা এবং তৃষ্ণার কর্দমাক্ত দৃষ্টির কারণে জীবন প্রবাহ নিরন্তর চলমান। অবিদ্যা এবং তৃষ্ণা সমূলে বিনাশ করে কেউ অভিলাষী হলে তার নিজ জীবন প্রবাহ নিরুদ্ধ হয়, এভাবে বুদ্ধ এবং অর্হৎগণের পূনর্জন্ম নিরোধ হয়।
এই জন্মান্তর নিরোধ হয়ে এক অনন্য স্বর্গীয় অবস্থানে পৌঁছানোকেই বুদ্ধ নির্বাণ বলেছেন।
বৈদিক ধর্ম হলো বর্তমান সময়ের হিন্দু ধর্মের আদি রূপ।
বৈদিক নীতিশাস্ত্রের ভিত্তি হল সত্য ও ঋত ধারণাদুটি। সত্য ধারণায় পরম উপাস্যের সঙ্গে একাত্মতার তত্ত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ঋত ধারণায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে সত্যের সেই প্রকাশটি, যার মাধ্যমে সত্য এই ব্রহ্মাণ্ড ও তার অন্তর্ভুক্ত সব কিছুকে পরিচালনা করেন।
পানিক্কর বলেছেন:
“ঋত হল সবকিছুর চরম ভিত্তি; এটিই "সর্বোচ্চ", যদিও এটি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা অনুভব করা যায় না। প্রত্যেকের সহজাত শক্তির অভিপ্রকাশের মধ্যেই এটি নিহিত রয়েছে।''
এখানে আমাদের সহজাত ইন্দ্রিয়গুলোর কথা বলা হয়েছে। ভেতরকার মানবেন্দ্রিয় দ্বারা হয়তো তার সন্ধান পাওয়া যাবে।
আমাদের মহাবিশ্বেরও সদা প্রসারমাণতা অথবা একটি নির্দিষ্ট সময় পর মহাসংকোচন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দু'টির কোনটি ঘটবে তা মহাবিশ্বের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে।
যদি মহাসংকোচন ঘটে, তবে এটা লক্ষ কোটি বার ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। যা মূলত বার বার একই ঘোরে আবর্তিত হওয়া বোঝায়, কেননা মহাসংকোচনের পর অবিশ্যম্ভাবী মহাবিস্ফোরণ ঘটবে।
আর যদি তা না হয় তবে মহাবিশ্বের অন্তিম পরিণতি হিসেবে তা একটা অনন্য অবস্থানে পৌঁছাবে বা মিলিয়ে যাবে।
অনন্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে আমরা ভাববো, কোটি কোটি নক্ষত্র চলে যাচ্ছে দূরে, মহাসমারোহের যাত্রায় অনন্ত অপেক্ষার স্রোত লীন হয়ে যাবার অপেক্ষায়। তবু এই লীন হয়ে যাবার ভেতরেও আনন্দ আছে, আছে অনন্ত সুখ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


শিশু জন্ম নেয় প্রকৃতির নিয়মে, মানুষ মে যায় প্রকৃতির নিয়মে

২| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নিত্য লয় প্রলয়ে দেহ নাশ বিনাশে
যৌবন চলে বার্ধক্যের পানে
সৃষ্টির অবিনাশী সূত্রে-রুপ বদলের খেলা
জন্মের পূর্বে ছিলাম কিরুপে
পরে ধরব কিইবা রুপ
চঞ্চল মন আরো চঞ্চল হয়
বিধারাতার খেলা একি অপরুপ :)

+++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.