নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমীমাংসিত জন্ম

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:০৬


এক

ঢেউয়ের শব্দে নিস্তব্ধ শহর।

একটানা নির্ঘুম কেটে গেছে কয়েকটি বছর, হিসেব করলে কয়েক কোটি মানুষ মৃতপ্রায়। রাত বাড়ছে, তার সাথে একই হারে বাড়ছে সমান্তরাল দূরত্ব।
তুমি কোথায় আছো? জানিনা, জানবার কথাও নয়। সময়ের স্থিতিস্থাপকতায় কোথায় চলে গেছ ব্যস্ততায় তুমি নিজেও জানো না।
দরোজায় ঠক ঠক শব্দে ঝড়ের পূর্বাভাস, একাত্তর নটিক্যাল মাইল উত্তরের ভেতর সবাইকে থাকতে বলা হয়েছে।
পউষের রাতে কেন যেন অচেনা লাগছে, অচেনা লাগছে মানুষ হিসেবে। চোখের ব্যাথাটা বেড়েছে খুব, ইদানীং আয়নায় তাকিয়ে নিজেকে চিনতে খুব কষ্ট হয়। আজ কেউ বাইরে বেরুবে না। তাহলে রাস্তার মানুষগুলো রাস্তায়ই রাত কাটিয়ে দেবে? হয়তো, কেননা পূর্বাভাসের পর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নেই। সোজা ইংরেজি অক্ষরে লিখা
"No Vacancy"

ছেলেটি আজো চাকুরী পায়নি। কী বলবে বাসায় গিয়ে? জ্যামের কারনে দেরী হয়ে গেছে, গিয়ে দেখে ইন্টার্ভিউর সময় শেষ। কী যেন বলেছিলেন বুদ্ধ? জীবন দুঃখময়।

ধার্মিকদের মন শান্তিতে থাকে সবসময়। কিন্তু, ওরা এমন গোমড়ামুখো হয়ে থাকে কেন? নরকের ভয়!
ভয়! ভয়! ভয়!
গণতন্ত্র, ত্রাসের রাজত্ব, ফ্যাসিবাদী পুঁজিবাদ, প্রভাব প্রতিপত্তিহীন প্রেমিক হৃদয়।
সবাই গেছে বনে, অথচ মানুষের মনগুলো পড়ে আছে নর্দমায়। সিটি কর্পোরেশন জোড় দিয়ে সাফাই চালাচ্ছে বেগুনবাড়ির বস্তিতে। তবু হঠাৎ করেই আগুন লেগে যাচ্ছে, পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে মাটি, পুড়ছে হৃদয়।
একবিংশ শতাব্দীর ভয়ের আগুনে ছাইহীন তাপে তপ্ত শহর। তবু ঝড় আসছে একশো মাইল দক্ষিণে... ঝড় আসছে।

দুই
ক্ষেপে গিয়ে বলেছি, আমার পকেটে কোন টাকা নেই।
অযত্ন অবেহেলা নয়, সাই সাই করে দাড়ি গোঁফ গজিয়ে যাওয়া ছেলে যেন বসে বসে খায়। আসলে লজ্জা লাগে তো, পুরপুরি না হলেও তো কিছুটা মানুষ!

জীবনানন্দ পড়ে মূর্ছা যাই-
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার !

সেই প্রেমিকার অপেক্ষায় থাকারও সময় নেই, ঢাকুনি খুলে ভাত আছে কিনা কে জানে? সাই সাই ব্যস্ততা- রাস্তার মোড়, পচা ময়লার গন্ধ, পাবলিক বাস,লেখকের লাশ।
বন্ধুকে বলে জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে রে.. চল দু'পেগ মদ খাই। ছেলেটা গাঁজা খাওয়া ধরেছে, ধর্ম কর্মের প্রতিও আস্থা নেই।
টিউশনিটা চলে গেছে, কবে বের হবে অথবা কবে ফাইল নিয়ে দৌঁড়াবে একজন তথাকথিত ট্রিপিক্যাল মধ্যবিত্ত বাঙালী?
মুখে শুধু গালাগাল আসে আজকাল, আবোলতাবোল।
অথচ এরকম হবার কথা ছিল না। সত্তরের দশক, সেই কবেকার কথা-
মহীনের ঘোড়াগুলি গেয়েছিল চৈত্রের কাফন,
যে গেছে বনমাঝে চৈত্র বিকেলে
যে গেছে ছায়াপথ বনবীথিতলে

ঠিক এমন করেই একদিন স্বপ্ন ছিল সুমিত্রা সেনের সাথে চুরুট নিয়ে কাড়াকাড়ি করবো, বাস্তবায়িত হবে সাম্যবাদ। অথচ মহান পৃথিবী করে গেছে দান, একজন তুমুল পুঁজিবাদীর গোয়ালের রাখাল!

রবীন্দ্র বন্দনা করে আটকে রাখবার মতো জীবন আমাদের নয়, চলে যাবার আক্ষেপ নিয়েই চলে যেতে হয়।
নির্ঘুম রাত তবু স্বপ্ন বুনে চলেছি সুকান্তকে নিয়ে-
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি—
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

কী লিখেছি নিজেও জানিনা, সময় নষ্ট করে থাকলে দুঃখিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.