নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাসেল চাচা কী বলব?

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪


একজন অসম্ভব মেধাবী মানুষ বারট্রান্ড রাসেল। একজন বারট্রান্ড রাসেলে কী নেই বলা মুশকিল।

তিনি চায়ের কেটলি তত্ত্বের জন্য সুপরিচিত।ইলাস্ট্রেটেড পত্রিকা দ্বারা কমিশনকৃত কিন্তু অপ্রকাশিত “ইজ দেয়ার এ গড?” শিরোনামের একটি প্রবন্ধে ১৯৫২ সালে রাসেল লিখেন,

আমি যদি বলি যে পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের মাঝখানে একটি চীনা চায়ের কেতলি, যা এতই ছোট যে আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দূরবিন দিয়েও দেখা যাবে না, একটি ডিম্বাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে তবে কেউই তা ভুল প্রমাণ করতে পারবে না। কিন্তু আমি যদি বলি যে প্রমাণ করা যাবে না বলে এই চায়ের কেতলির অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় পোষণ করা অচিন্তনীয়, তবে আমাকে সঙ্গত কারণেই পাগল হিসেবে অভিহিত করা হবে। এরকম কোন কেতলির কথা যদি প্রাচীন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হত, প্রতি রবিবারে পবিত্র সত্য হিসেবে শিক্ষা দেওয়া হত, বিদ্যালয়গুলোতে ছোট বাচ্চাদের মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হত, তবে এহেন বস্তুর অস্তিত্বে অবিশ্বাসকে উন্মাদনার সামিল করা হত এবং আধুনিক যুগের মনোবিজ্ঞানী বা প্রাচীন যুগের ইনকুইজিশনকে তলব করা হত। রাসেল পাশ্চাত্য দর্শনকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। রাসেলের এই উপমা পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। Richard Dawkins এই উপমাটি তার একটি বইয়ে ব্যবহার করেছেন।

বিপক্ষে যুক্তিঃ
পিটার এটকিন্স বলেন যে রাসেলের উপমার মূল প্রতিপাদ্য হল একজন বিজ্ঞানী কোন নেতিবাচকতাকে প্রমাণ করতে পারেন না, তাই অক্কামের ক্ষুরের সাহায্যে একটি সহজতর তত্ত্ব সবসময়ই একটি জটিল তত্ত্বের উপরে প্রাধান্য পাবে। তিনি লক্ষ্য করেন যে এই যুক্তি ধার্মিকদের উপর ভাল খাটে না, কারণ ধর্মবিশ্বাস ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দ্বারা চালিত, একে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সাথে একই পাল্লায় মাপা যায় না। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী ওসব ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাপ্রসূত দাবিসমূহকে সংশয়ী দৃষ্টিতে দেখে।

এরিক রিটান এই উপমার বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান যে চায়ের কেতলি একটি বস্তু জাগতিক অবভাস এবং একারণে এটি যাচাইযোগ্য, কিন্তু ঈশ্বর বস্তুজগতের উর্ধ্বে। তাছাড়া আমরা বস্তুজগত সম্পর্কে যা জানি, তার আলোকে রাসেলের চায়ের কেতলিতে বিশ্বাস মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়।

A Free Man's Worship এ রাসেল লিখেন,

"How, in such an alien and inhuman world, can so powerless a creature as Man preserve his aspirations untarnished? A strange mystery it is that Nature, omnipotent but blind, in the revolutions of her secular hurryings through the abysses of space, has brought forth at last a child, subject still to her power, but gifted with sight, with knowledge of good and evil, with the capacity of judging all the works of his unthinking Mother. In spite of Death, the mark and seal of the parental control, Man is yet free, during his brief years, to examine, to criticise, to know, and in imagination to create. To him alone, in the world with which he is acquainted, this freedom belongs; and in this lies his superiority to the resistless forces that control his outward life."

একদিন বারট্রান্ড রাসেল বক্তৃতা দিচ্ছিলেন ‘পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে’ সে সম্পর্কে। তখন একজন বৃদ্ধলোক তার কথার প্রতিবাদ করে বললেন- পৃথিবী যে চ্যাপ্টা আর তা কচ্ছপ পিঠে করে বয়ে বেড়াচ্ছে তা মনে করেছ আমরা জানিনা! রাসেল তখন বলেন, তাহলে ওই কচ্ছপটা কিসের ওপর দাঁড়ানো? তখন বৃদ্ধ বললেন আমি তোমাকে বলে দেই আর তুমি তা শিখে ফেল আর কী!

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিরোধীর ভূমিকা নেন রাসেল, ফলস্বরূপ তাঁকে ছ'মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। সেই সঙ্গে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের অধ্যাপক পদ থেকে বরখাস্ত হন। ১৯৫০ সালে পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে আন্দোলন সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই কারণে ১৯৬১ সালে তাঁকে আবার কারাদনণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
ডারউইন, মার্ক্স, ফ্রয়েডের পরেই হয়তো রাসেল চাচার অবস্থান। সুতরাং, পাগলদের জগতে ঢুকার আগে সাবধান। আগে ভাবতে হবে আপনি ওদের জগত থেকে বের হতে পারবেন কিনা।গানটি শোনেননি? " তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে
তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।...." পাগলদের জগতে ঢুকার আগে একটু সতর্ক হয়ে নিবেন, নইলে শেষ হবে জীবন যৌবন।ভাল থাকবেন।
বিঃ দ্রঃ পাগল হয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। :P

চাচা কিছু বই লিখেছেন। তার দার্শনিক নিবন্ধ "অন ডিনোটিং" দর্শনশাস্ত্রে মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। চাইলে পড়তে পারেন।এছাড়াও "In Quest of Happines" রাসেলের দর্শন বিষয়ক অন্যতম গ্রন্ধ।

গাণিতিক যুক্তিবিদ্যা ও বিশ্লেষণী দর্শনে অসামান্য অবদান তার। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ১৯৫০ সালে। জগৎবিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনকে সাথে নিয়ে তিনি পরমাণু অস্ত্রবিরোধী মেনিফেস্টো প্রকাশ করেন ১৯৫৫ সালে। ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ সালে ৯৭ বছর বয়সে প্রয়ান ঘটে এই মহা মনীষীর।

আমার ধর্মের সম্পূর্ণ সারকথাটি এরকম: প্রতিটি দায়িত্ব পালন করো, এবং পুরস্কারের প্রত্যাশা করো না; না এখন, না ভবিষ্যতে।— বারট্রান্ড রাসেল

অনেক সময় পার হয়েছে, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে।উজবেক কবি ইব্রাহিম আলাউদ্দিনের ভাষায়,
"তুমি একখানা কিতাব পড় আর কিতাবের লেখকের খোঁজ কর।

বিরাট অট্টালিকা দেখে নির্মাতার নাম জানতে চাও। তবে জমিন ও আসমানের কোন মালিক নেই?

হে মানুষ চিন্তা কর, বুঝে দেখ আমাদের কাছে সব জিনিসই নিশানা দিচ্ছে।
মহান সর্বশক্তিমান এক আল্লাহর।"

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৮

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:০১

মারুফ তারেক বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হে মানুষ চিন্তা কর, বুঝে দেখ আমাদের কাছে সব জিনিসই নিশানা দিচ্ছে।
মহান সর্বশক্তিমান এক আল্লাহর।"

অবুঝের কি দোষ যদি না বোঝে
মূর্খের কি দোষ যদি জ্ঞানের নাগাল না পায়
বানরের আঙুর টক তত্ত্বে কোন অবিশ্বাসীর কু-যুক্তি আমার বিশ্বাসকে টলাবে কিভাবে?
যখন সত্য প্রত্যক্ষদর্শনেরই আরেক নাম।

:)

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

মারুফ তারেক বলেছেন: মানুষ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অধিকারী। যখন কেউ অস্বীকার করে তাদের প্রসঙ্গেঃ

সূরা বাকারা আয়াত ৭) আল্লাহ তাদের হৃদয়ে ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন ৷ আয়াত ১০) এবং তাদের চোখের ওপর আবরণ পড়ে গেছে ৷ তারা কঠিন শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।

৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৬

সুমন কর বলেছেন: আমার ধর্মের সম্পূর্ণ সারকথাটি এরকম: প্রতিটি দায়িত্ব পালন করো, এবং পুরস্কারের প্রত্যাশা করো না; না এখন, না ভবিষ্যতে।— বারট্রান্ড রাসেল

চমৎকার শেয়ার।

৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৫:২৭

চলন বিল বলেছেন: বাস্টার্ড রাসেল খুব ভালো মানুষ ছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.