নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজের অধিকার দাবির আন্দোলন নাকি সরকার পতনের আন্দোলন!

২৫ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৫২

আজকের প্রথমআলোয় পড়লাম, ১৬ বছরের ইফাতের বুকের বাঁ পাশে ছিল গুলির চিহ্ন।
ছেলের গুলিবিদ্ধ ছবি দেখিয়ে মা কামরুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো অপরাধ করেনি। সে একজন পড়ে থাকা আহত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল সেদিন।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছে পুলিশ।
প্রথম আলোর হিসাবে কনফার্মড মৃতের সংখ্যা ২০৩ এ গিয়ে ঠেকেছে।
২০৩ টা প্রাণ! মানে ২০৩টা পরিবার শেষ হয়ে গেল।
এটা কনজারভেটিভ নাম্বার। লাশ গায়েব হওয়া, বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হওয়া মৃতের এখনও কোন হিসাব নেই।
এবং একই পত্রিকায় পড়লাম আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির দিকে ফোকাস করছেন। তিনি বলছেন "ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই, জনগণের কাছে বিচার চাইছি!" তিনি আরও বলেন, "এতে আপনারাই কষ্ট পাবেন। দেশের মানুষই কষ্ট পাবে। এই ঢাকা শহরের মানুষই কষ্ট পাবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আবার ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকতে হবে। কর্মস্থলে সময়মতো পৌঁছানো আবার ফেরত আসায় দীর্ঘ সময় লাগবে। বসে বসে সেই ট্রাফিক জ্যামে কষ্ট পাওয়া থেকে আপনাদের এই কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছিলাম।"

উনি যখন আমাদের কাছে ন্যায় বিচার চাইছেন, তখন বলছি, আমরা দেশবাসী চাঁদা তুলে বিলিওন ডলার তুলে মেট্রোরেল সারিয়ে ফেলবো। দেশ ট্রাফিক জ্যাম মুক্ত হবে। উনার ক্ষতিপূরণ আমরা দিয়ে দেব।
তবে তার আগে উনি যেন ঐ ২০৪ বাচ্চাকে ফেরত এনে দেন। যে মা টা কান্নাকাটি করছে, ওর বুকে ওর বাচ্চাকে ফিরিয়ে আনুক। যে বোনটা বিয়ের ছবি পোস্ট করে বলছে "আমার ভাইটা আর নেই" - বা ছাদে খেলতে থাকা ছোট্ট শিশু কন্যাকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মরে যেতে দেখেছে যে পিতা, ওদের সবাইকে ফেরত এনে দিক।
আচ্ছা, ২০৪ বাদ, আস্ত দুনিয়ার সম্পদ নিয়ে নেন, একটা প্রাণ ফিরিয়ে দেন। পারবেন?
ন্যায় বিচার????
মেরে ফেলেছেন সেটা একটা অপরাধ, কিন্তু তারচেয়েও বড় অপরাধ হচ্ছে নিহতদের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা সম্মান না দেখিয়ে উল্টো ওদেরকে বিএনপি জামাতের জঙ্গি/সন্ত্রাসী ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। খালি হাতে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো মানুষ কিংবা মিছিল থেকে দৌড়ে পালাতে থাকা মানুষের দিকে গুলি চালানো হয়েছে, তারপরেও সরকার পোকার ফেসে মিথ্যাচার করছে যে পুলিশ নাকি আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে।
পুলিশ গুলি চালাতেই পারে, রাষ্ট্র ওদেরকে কিছুটা হলেও ক্ষমতা দেয়। কিন্তু কেন ছাত্রলীগ গুলি চালাবে? ওরা কি সিভিলিয়ান নয়? রাষ্ট্রের টাকায় কেন গুন্ডাবাহিনী পোষা হয়?
আমার সবচেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হচ্ছে এই ট্যাগিং গেমে। সরকারের পাশবিকতার সমালোচনা করলে সরকারের লোকেরা আপনাকে বিএনপি জামাত সমর্থক বানিয়ে দিচ্ছে। বলছে আপনি সরকারের পতন চান। সিরিয়াসলি? জামাতে ইসলামীর সাথে যারা হাত মেলায়, গলাগলি করে, ঐ বিএনপিকে আমি সাপোর্ট করবো? যে ফাজিল এমনটা চিন্তা করে, ওটাকে কোন কথা ছাড়াই থাবড়াইতে মন চায়।

আর আন্দোলন নিয়ে কেউ যখন বানোয়াট গুজব ছড়ায়, ওদের ধরলে ওরা আমাকে বলছে আমি নাকি সরকারের দালাল! আবারও, সিরিয়াসলি? যেভাবে আমার ভাইদের গুলি করে মারলো, আমি যতদিন মানুষ আছি, ততদিন আমার পক্ষে এই খুনিদের সাপোর্ট করা সম্ভব? আমি নানান পাপে পাপী, কিন্তু জুলুমের পাপ আমি করতে রাজি না। আমি বিশ্বাস করি ঐ ছেলে হারা মায়ের চিৎকারে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠে। আল্লাহর কসম, কেয়ামতের দিন যখন আল্লাহ ঐ শহীদদের ডেকে জিজ্ঞেস করবেন "কোন অপরাধে এবং কারা তোমাকে হত্যা করেছিল?" - গোটা দুনিয়ার বিনিময়েও আমি সেই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে রাজি না।
কারোর প্রতি জুলুম করার আগে আমি একশোবার জুলুমের শিকার হতে রাজি আছি। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই মহা পাপের হাত থেকে রক্ষা করেন। এবং দুনিয়ার বুকেই জালিমদের কঠোরতম শাস্তি দেন।

কথা হচ্ছে, আমি "বাংলাদেশী" কবে হবো? কবে আমি নিঃসংকোচে আমার মনের কথা বলতে পারবো এবং কোন আহাম্মক মূর্খ আমাকে কোন ট্যাগ দিবে না? ন্যায়কে ন্যায় এবং অন্যায়কে অন্যায় বলতে গেলেও যদি আমাকে দল মত ইত্যাদি বিচার করতে হয়, আমার চেয়ে বড় গোলামতো আমার বাড়ির পালতু কুকুরও নয়। সিরিয়াসলি, আরাফাত, পলক, ওবায়দুল কাদেরদের মতন ফলোয়ার কোথায় পাওয়া যায়? আমি এমনই কিছু সহমত ভাই চাই। প্রয়োজনে নিজের মা বোন বিক্রি করে দিবে, তবু মালিকের হুকুম পালন করবে। তবে চরম সত্য কি জানেন? এই হারামিগুলিই শেখ হাসিনার পতনের মূল কারন হবে। লিখে দিলাম, মিলিয়ে নিবেন। বঙ্গবন্ধুর মায়ের মৃত্যুতে খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বেশি কেঁদেছিল, বাকিটা আমরা ইতিহাস বই পড়লেই জানতে পারবো। ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিনতম শিক্ষা এটাই, সে বারবার রিপিট হয়।

নিজের বাপের কোন কাজের সমালোচনা করার মানে কি পাশের বাড়ির আংকেলকে বাপ ডাকা? এ কেমন আহাম্মকি লজিকে চলে আমাদের বাংলাদেশী সমাজ?

নিজের অধিকার দাবির আন্দোলন নাকি সরকার পতনের আন্দোলন! শুধুমাত্র এই অন্ধ মূর্খ জাহিলী ইন্টারপ্রিটেশনে সরকার নিজেদের ভিতরের নরপশুত্ব বের করে আনলো। ঠিক যেমনটা ঘটেছিল নিরাপদ সড়ক দাবির আন্দোলনেও। সরকার ইচ্ছা করেই এইবার এত ব্রুটাল হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে কেউ কোন কিছু দাবি করার আগে এই দিনের কথা স্মরণ করে আর কোন পদক্ষেপ নেয়ার আগে একশোবার চিন্তা করে।

সবচেয়ে হতাশ লাগছে কিছু অমানুষের পোস্টে।
ওরা পুরো দোষটাই ছাত্রদের উপর চাপাচ্ছে। ছাত্ররা কেন দাবি করতে গেল, কেন রাস্তায় নামলো, কেন এই কেন সেই। একটাবার ওদের লেখায় পেলাম না কেন ছাত্রলীগ ওদের পেটালো এবং পুলিশ গুলি চালালো। আমরা যারা ফেসবুকে এইসব হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করছি, আমরা নাকি ওদের উস্কানি দিচ্ছি। আমি সিরিয়াসলি চিন্তা করি, ওরা কি বিবেক, মনুষত্ব, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি সব ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে? এদের মাকে যদি পাশের বাসার আংকেল এসে মলেস্ট করে যায়, তবু এরা চুপ থাকবে, কারন নাহলেতো "উস্কানি" হয়ে যাবে! অদ্ভুত!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:১৪

রানার ব্লগ বলেছেন: নির্বিচারে গুলা চালানোর দায় সরকার কে নিতে হবে৷ শিশু হত্যার বিচার জরুরী।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৪১

সামরিন হক বলেছেন: এই আন্দোলনকে যদি কারো সরকার পতনের আন্দোলন বলে মনে হয় তবে সেটা তাদের নিজেদের রূপান্তর করে নেয়া।সরকার পক্ষই এই সামান্য অধিকারের আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনে নিয়ে গেছে।এটাই তো বিস্ময়! পরিচালনার ক্ষমতা নেই।আর আমরা এর আগে বুঝতেও পারিনি সেকথা।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:০৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: যে সরকার রাতের অন্ধকারে ভোট করে দেশ চালায় তাদের ভয়টা বেশিই থাকে। তাই ছাত্রদেরকে প্রতিপক্ষ ভেবে এই নারকীয় কাজটা করেছে নরপশুগুলো। ওদের বিচার দুনিয়া ও আখিরাতে হউক এই দোয়া রইল।

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৪:৪৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সিসটার বলেছেন, তাঁর ক্ষমতা চাই। জনতা, মমতা- বেঁচে থাকলে তিনি এসব নিয়ে পরে ভাবতে পারবেন।

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: ছাত্ররা করলো কোটা নিয়ে আন্দোলন। আর সেটা কি করে সরকার পতনের আন্দোলন হয়। আমার বুঝে আসে না। তবে যাদের পরিবারের সন্তান এই আন্দোলনে মারা গিয়েছে, তারা বুঝতে পারছে কতটা তাদের গেছে, কতটা শুন্যতা তাদেরকে গ্রাস করছে, কতটা ক্ষতি তাদের হয়েছে-যা কোন কিছু দিয়েই পূরণ করা যাবে না।

৬| ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫

নতুন বলেছেন: সবচেয়ে হতাশ লাগছে কিছু অমানুষের পোস্টে।
ওরা পুরো দোষটাই ছাত্রদের উপর চাপাচ্ছে। ছাত্ররা কেন দাবি করতে গেল, কেন রাস্তায় নামলো, কেন এই কেন সেই। একটাবার ওদের লেখায় পেলাম না কেন ছাত্রলীগ ওদের পেটালো এবং পুলিশ গুলি চালালো। আমরা যারা ফেসবুকে এইসব হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করছি, আমরা নাকি ওদের উস্কানি দিচ্ছি। আমি সিরিয়াসলি চিন্তা করি, ওরা কি বিবেক, মনুষত্ব, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি সব ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে? এদের মাকে যদি পাশের বাসার আংকেল এসে মলেস্ট করে যায়, তবু এরা চুপ থাকবে, কারন নাহলেতো "উস্কানি" হয়ে যাবে! অদ্ভুত!


এইসব মানুষের কথা কাজে আমি সাইকোপ্যাথ, সোসিওপ্যাথের লক্ষনের সাথে মিল পাই।

৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৩৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভীষণ সুকৌশলে এই ট্যাগ নামক বিভাজন তৈরি করা হয়েছে। এই করল ট্যাগ ও করলে সে হয়ে যাবে। লম্বা সময় ধরে যে ঘৃণার চাষাবাদ করে গেছেন একটা সুশীল সমাজ সেটার ফসল ঘরে তোলার সময় এখন। সময় কাউকে ছাড় দেয় না।

কোটা সংস্কার আন্দোলন একটা ভীষণ যৌক্তিক আন্দোলন। খুব সহজ ছিল এর সমাধান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.