নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ, এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় ।

মাহমুদ পিয়াস

মানুষ হবার চেষ্টা করছি ! পারছি কই !

মাহমুদ পিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙালী জাতির পিতা কে ?

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:১১

ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন,

"একটি দেশের জাতির পিতা কে হবে সেটা নির্ধারণ করবে সেই দেশের জনগণ, কোনো ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল না....."

এই সহশ্রাব্দের সবচেয়ে বড় বিপ্লবের সম্মুখ সারির নেতা তিনি, তাতে কোনো সন্দেহ নাই !
একটা বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়ে, ফ্যাসিজমের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, হাজারো/লাখো জনতাকে একত্রিত করে আসিফ মাহমুদ ক্ষমতায় বসেছেন, তার প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা ! এইটা অনন্য গুণ, সবাই পারে না, গত ১৫ বছর ধরে অনেক বাঘা রাজনীতিকরাও পারে নি ! আসিফ মাহমুদরা পেরেছিলেন, তাদের প্রতি লাল সালাম ! তারা আমাদের গলায় ভাষা এনে দিয়েছেন, তারা আমাদের সলতেগুলোতে আগুন এনে দিয়েছেন, আমাদের কন্ঠস্বর হয়েছেন, তাদের প্রতি সংগ্রামী সালামও, শুধু আমার আপত্তির জায়গা অন্যখানে !


কায়েদে আজম কিংবা বাবা ই কওম বা পাকিস্তান জাতির পিতা বলা হয় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে ! পাকিস্তানে গণঅভ্যুথান অনেকবারই হয়েছে, কখনো পাকিস্তান পিপলস পার্টি, কখনো তেহরিক ই ইনসাফ, কখনো পাকিস্তান মুসলিম লীগ(নওয়াজ শরীফ).... নামক মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা, কিন্তু জিন্নাহকে কেনো 'বাবা ই কওম' বলা হবে, সেটা নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলে নি ! জাতিকে একত্রিত করবার স্বার্থে তারা জিন্নাহকে কায়েদে আজম বা বাবা ই আজম বলে মেনে নিয়েছে ! ওদের মধ্যেও রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য ব্যাপক কিন্তু জিন্নাহকে নিয়ে তারা নোংরা রাজনীতিতে মাতে নি, পাকিস্তানবাসী এই দিক দিয়ে ভাগ্যবানই ! পাকিস্তানও মুসলিম প্রধান দেশ কিন্তু সেই দেশের মুসলমানরা প্রশ্ন তোলে নি, জিন্নাহ নয় বরং মোহাম্মদ ইব্রাহিম আঃ হলেন আমাদের জাতির পিতা !

আধুনিক তুরষ্কের জাতির জনক বলা হয় মোস্তফা কামাল আতাতুর্ককে ! তার রাজনৈতিক দলের নামও 'প্রজাতন্ত্রী জনতা দল' ! রেসেপ তায়েপ এরদোয়ানও ক্ষমতায় এসেছেন তার রাজনৈতিক দল জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতা হয়ে ! মুসলমানদের জন্যে তার বক্তব্য সবসময়ই আলোচনায় আসে সারা দুনিয়াজুড়ে অথচ তিনি একবারও কোথাও বলেন নি, তুরষ্কের জাতির পিতা আতাতুর্ক হতে পারেন না, জাতির পিতা হতে পারেন কেবল হযরত মোহাম্মদ ইব্রাহিম আঃ ! মুসলিম প্রধান তুর্কিবাসী হিশাবে কিংবা ইসলামি রাজত্ব প্রতিষ্ঠার নেতৃত্বের দিক দিয়ে তুর্কিবাসীর সাথে ইসলামের সম্পর্ক বাঙালী মুসলমানের চেয়ে অন্তত বেশী, এইটুকু তুর্কিবাসী দাবি করতেই পারে ! আতাতুর্ক তো ফেরেশতা ছিলেন না, তারও অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, তার কাজের সমালোচনাও তো কম না কিন্তু তুর্কিবাসী জাতির পিতা হিসাবে আতাতুর্ককে ভুলে যায় নি ! এই দিক থেকে তুর্কিবাসীও ভাগ্যবান !

আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার বলা হয় মাহাতির মোহাম্মদকে ! মালয়েশিয়াকে তিনি অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন ! এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচাইতে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা মানুষটা ২০২২ সালে নির্বাচনে হেরেও যান কিন্তু বারিশান ন্যাশনাল বা পাকাতান হারাপানের মতো শক্তিশালী রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় এসে আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসাবে মাহাতিরকে পরিবর্তন করে তাদের নিজস্ব কাওকে বসিয়ে দেয় নি ! কিংবা বলেন নি, আধুনিক মালয়েশিয়ার পথদ্রষ্টা কিংবা রূপকার হওয়ার দাবি কেবল হযরত মোহাম্মদ ইব্রাহিম আঃ এরই ! মালয়েশিয়ার মুসলমানরাও ভাগ্যবানই বলা যায় !

এবার আমাদের বাঙালী জাতির ইতিহাসের দিকে তাকাতে পারেন ! তার জন্যে গভীর ইতিহাস ঘাটতে যাওয়ার দরকার নেই ! আওয়ামীলীগের আমলে দেশের সকল বইপুস্তক, চাকরির বইয়ে পড়ানো হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, তারা দাবি করেন স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন শেখ মুজিব, বিএনপি আসলে সেই স্বাধীনতার ঘোষক রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে যায় ! বলা হয়, মুজিব না, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া ! একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে কার ঘোষনায়, তাকে আমরা এখনও জাতিগতভাবে দলমত ভুলে নির্দিদ্ধায় মানতে পারি নি ! রাজনীতির মেরুকরণে সেইটাকে দলাদলিতে এনে আলাদা করে ফেলেছি ! মাঝে মাঝে মনে হয়, দুই ঘোষককে(পড়ুন দুই বাবা) সামনে রেখেই আমাদের এগোতে হবে, লীগের আমলে আমাদের জাতির পিতা মুজিব, তারেকের আমলে জিয়া !

এবার আসেন বাঙালী মুসলিমের আক্বীদায় !

মুসলিম জাতি আর বাঙালী জাতি তো ভিন্ন, মুসলিম জাতির পরিচয় সে ধর্মীয়ভাবে একজন মুসলমান ! তুর্কিরাও মুসলমান, মালয়েশিয়াবাসীরাও মুসলমান, পাকিস্তানবাসীও মুসলমান, এই মুসলমানিত্বের জায়গায় পাকিস্তান-তুর্কি-বাঙালী এক অভিন্ন কিন্তু জাতীয়তাবাদকে আনলে, তুর্কীরা তুর্কি, পাকিস্তানীরা পাকিস্তানী, বাঙালীরা বাঙালী ! তুর্কিস্তানে যে হিন্দুরা আছে তারাও তুর্কি জাতি, তুর্কি জাতি নামটা আসলে, তখন তুর্কির মুসলিম, তুর্কির হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সবাই মিলেই হয় তুর্কি জাতি !
পাকিস্তানে যে হিন্দুরা আছে তারাও নিজেকে পাকিস্তানী বলে !
সুতরাং এইখানে নিজেকে বাঙালী বলে পরিচয় দেওয়া মানে মুসলমানিত্ব থেকে খারিজ হওয়া নয় ! কিন্তু আমরা হয়তো বেশীরভাগ সময়ই সেটা মনে করি ! বাঙালীকে মুসলমানের বিপরীতে দাঁড় করাই, অথচ যদি বাঙালী জাতির কথা আসে, তখন এই বাঙলার হিন্দু, মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই মিলেই বাঙালী ! এই বাঙলার মুসলমানরাও বাঙালী মুসলমান !

এখন বাঙালী জাতির পিতা শেখ মুজিব বললে আমাদের অন্তর্দহ শুরু হয়, আমরা প্রশ্ন করি, মুজিব কিভাবে জাতির পিতা হয়?
আমাদের জাতির পিতা তো হলেন ইব্রাহিম আঃ ! তখন সাময়িকভাবে অন্তর্জালা কমে ঠিকই কিন্তু মনে শান্তি আসে না !

আপনারা ২৪ কে 'স্বাধীনতা' বলেন কোনদিক দিয়ে, সেটা হয়তো আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয় ! কিন্তু রাষ্ট্রের প্রতিটি বিপ্লব বা প্রতিবিপ্লবকে যদি আপনারা স্বাধীনতা বলে আখ্যা দেন তাহলে এটা কতোতম স্বাধীনতা, সেটা গুণে দেখতে পারেন ! ৭৫ এ মুজিবকে হটানোটাও তো বাঙালীর স্বাধীনতাই ছিল কারন যারা বাঙালীর ইতিহাস বলতে ৭২-৭৫ এর ইতিহাস বুঝেন তাদের দৃষ্টিতে তিনিও জালেমই, তাহলে সেই জালেমের হত্যাকান্ডের(পড়ুন মৃত্যু, তাতে আত্বিক শান্তি আসবে) পরও তো দেশে আরেকবার স্বাধীনতা এসেছিলো, তাই না ?
তারপর জিয়ার মৃত্যুর(পড়ুন শহীদ, তাতে শান্তি আসবে) পরে এসেছিলো আরেক স্বাধীনতা, তারপর স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পরে এলো আরেকবার স্বাধীনতা, তারপর খালেদাও যখন লীগের মতোনই তার অধীনে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় বসলো আর লীগ তাকে টেনে নামালো, সেটাও আরেকবার স্বাধীনতা ! তারপর যদি একলাফে ২৪ এ নেমে পড়ি, সেটাও হাসিনা হটানোর পরের স্বাধীনতা ! এবার গুণে দেখেন ২৪ এ কতোতম বারের মতো দেশকে স্বাধীন করেছেন ! গোণা শেষ হলে একটু জানায়েন !

একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকবে, আদর্শিক মতবিরোধ থাকবে, কাজের সমালোচনা হবে, এইটাই নিয়ম ! সারা দুনিয়াতেই হয়, কিন্তু জাতীয়তাবাদের জায়গায় কিংবা রাষ্ট্রীয় স্বার্থের জায়গায় যে বিষয়গুলো রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করে সেইসব বিষয়কে রাজনীতিকরন করা উচিত নয় বলেই মনে করি ! কিন্তু বাঙালী মুসলমানরা তাদের আত্বপরিচয় নিয়ে খুবই অসন্তুষ্ট ! সে বাঙালী হিসাবেও নিজেকে পরিপূর্ণ বাঙালী ভাবতে পারে না, আবার আদর্শিক জায়গায়ও সে নিজেকে পরিপূর্ণ মুসলমান দাবি করে শ্রেষ্ঠত্বের জায়গায় নিজেকে শক্ত করে ধরে রাখতে পারে না, খুটির এই দোলাচল পাকিস্তানবাসীর নাই, তারা মুসলমানও আবার পাকিস্তানীও, তুর্কীর মুসলমানরা মুসলমানও আবার তুর্কীও, কিন্তু আমরা বারবার নিজেদের জিগ্যেস করি, আমরা বাঙালী নাকি মুসলমান ?
অথচ হতে পারতো আমরা মুসলিম অবশ্যই কিন্তু আমরা বাঙালীও !

এ আমাদের বড়ই আফসোস ! আপনাদের দৃষ্টিতে এই আফসোস হয়তো আমার একান্ত ব্যক্তিগত আফসোস, সেটাও হতে পারে ! এখন আপনিও স্বাধীন, আমিও স্বাধীন, সুতরাং ভাবনাও স্বাধীন !

এই ব্যক্তিগত আফসোসের মেয়াদ আরো কতোশত বছর পর্যন্ত যাবে, সেটাও অজানাই থেকে যাবে বোধহয় ! খুব করে চাই, কোথাও গিয়ে এই আফসোসের পরিসমাপ্তি ঘটুক ! নিজের আত্বপরিচয়ের খুঁটিটার ভীত শক্ত করে যাতে বলতে পারি, আমি অবশ্যই কোটিভাগ মুসলিম এবং শতভাগ বাঙালী !

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:১৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: গোলাম আজম বা সাঈদিকে জাতির জনক ঘোষণা করা হোক। এই মূর্খদের কাছে এরাই ঠিক।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১:০৫

ইলি বলেছেন: গোলাম আজম বা সাঈদিকে জাতির জনক ঘোষণা করা হোক

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১:৪২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

ইউনূস বা আবু সাইদকে।

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ২:১৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


আর কেউ দায়িত্ব নিতে চাইলে ২ জন তো আছেই।

৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ২:৪৬

আহরণ বলেছেন: মূর্খদের জাতির পিতা লাগে নাকি?

এই মূর্খদের স্বাধীন করে সবচেয়ে বড় ভুল করেছে ভারত। বাংলাদেশের কাঙাল মুসলমানরা পাকিদের বুট পলিশ আর সৌদিদের ক্রিতদাস হওয়ার উপযুক্ত।

৬| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:০৩

ধুলো মেঘ বলেছেন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শেখ মুজিবের ভূমিকা কি ছিল?

উত্তরঃ কিচ্ছু না। একদম শূন্য।

তাহলে স্বাধীনতা যুদ্ধ কিভাবে হল?
উত্তরঃ নেতৃত্ব পরে এসেছে। আগে গণহত্যার বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়েছে। অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে - তারপর হয়েছে চূড়ান্ত যুদ্ধ। এই প্রক্রিয়ার কোন অংশেই শেখ মুজিবের সামান্যতম ভূমিকাও ছিলনা।

কাজেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে শেখ মুজিবকে জড়ানো একটা ছাগলামী লেভেলের নির্বুদ্ধিতা।

৭| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:১৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ইউনূসের রাজনীতির জন্য ৭ই মার্চ বা মুজিব কোন সমস্যা হওয়ার কথা না।
জাতির জনক কে হল সেটাও সমস্যা হওয়ার কথা না।
সমস্যা শুধু শিবির জামাতের।
কথিত সংস্কারের নামে ইউনুস সাহেব আমেরিকান নির্দেশে সর্বত্র জামাতীকরণ করে যাচ্ছেন।

৮| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৭

রাজীব বলেছেন: পশ্চিমবঙ্গে কোটি কোটি বাঙ্গালী রয়েছে। তাদের জাতির পিতা কে?

৯| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩

রাজীব বলেছেন: পাকিস্থা, মালয়েশিয়া হয়ে তুরস্ক পর্যন্ত চলে গেলেন কিন্তু ভারতকে দেখলেন না!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.