নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলার মত তেমন কোনো গুন নেই এমনকি কোনো কিছুতেই সেরা নই কিন্তু সব সময় সেরাদের আশে পাশে থেকে সব সময় শিখতে চাই...\n

মাহদি (এক জন মেরুদণ্ডী প্রাণী)

মাহদি (এক জন মেরুদণ্ডী প্রাণী) › বিস্তারিত পোস্টঃ

অটিজম,সমকামী রাক্ষস আর আমার ছোট হবার গল্প

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:১৩

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে এপ্রিল মাস।
অটিজম সচেতনতার মাস।
অটিস্টিক বাচ্চাদের প্রতি আমার অনেক আগে থেকেই একটা মনের টান কাজ করত,সব সময় ইচ্ছে ছিল ওদের জন্য কিছু করার।
আমার মনে হয় তরুনদের সচেতনতাই অটিজমের একমাত্র সমাধান। দেখুন, বিপ্লব তখনি আসে যখনই কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ হয় তারুণ্য আর তাদের বিশ্বাস থাকে অবিচল।
আমি মনে করি, এই স্কুল কলেজে বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরাই আমাদের আগামীদিনের সমাজ, ওরা যদি এ বিষয়ে সচেতন হয়, পজেটিভ থাকে - তবেই পরিবর্তন সম্ভব,আলো আসবেই।

যেইভাবা, সেই কাজ। স্কুল কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েদের নিয়ে প্রতি মাসে একটা করে ওয়ারকশপ করা শুরু করলাম। দরজা বন্ধ সেমিনারে অটিজমের সংজ্ঞা হয়ত বোঝা জায়, উপলব্ধি সম্ভব না। খুজে খুজে কয়েকটি স্কুল বের করলাম যারা তাদের স্কুলে ভিজিট করতে দিবে, যার একটি ছিল আমার বাসার কাছেই।


স্কুল জীবনে স্কাঊটিং মানব সেবার শিক্ষা প্রচন্ডভাবে ভিতরে গেথে দিয়েছে।আব্বু আম্মু থেকে কখনো সোশ্যাল ওয়ারকের জন্য বাধা দেয়নি। একটু হয়ত চোখ রাংগাতো, ওই টুকুনই।
আমি কোনো ডোনেশন নেই না, কারো কাছে চাইতে লজ্জা লাগত।সংগঠনের ফাউন্ডার, মেম্বাররা ক্রেডিট নেবার সময় থাকে, ভুল ধরতে থাকে - প্রিপারেশন টাইমের আগে কেউ থাকেনা।
মোটা মোটি সব খরচ আমার পকেট(বাবার পকেট বলা ভালো) থেকেই যাচ্ছে।ক্লাস ফাকি দিয়ে এসব করে বেড়াতাম।আরো কয়েকটা সামাজিক সংগঠন, যাদের সাথে আমি কাজ করেছি,ওরাও আস্তে শুরু করল ইভেন্ট গুলোয়। বাচ্চাদের সাথে পুরো একটা দিন কাটিয়ে ছেলে মেয়েদের দৃষ্টি ভংগিতে পজেটিভ পরিবর্তন আসত, আমার তখন সেটুকুই পাওয়া। কাজ করে যাচ্ছিলাম, বাংলাভাষায় ডেডিকেটেড অটিজম এর উপর একটা ওয়েবসাইট ডেভলপমেন্ট এর জন্য। একটা অনলাইন ভিডীও লাইব্রেরীর জন্য সনামধন্য প্রফেসরদের এপায়ন্টমেন্ট নিচ্ছি, অনেক গুলো পর্ব শুটো করেছি এক ছোট ভাইয়কে রিকোয়েস্ট করে। ল'ইয়ার বন্ধুদের ধরে আইনে স্পেশাল কিডজদের অধিকার কি সে সব নিয়ে এক্টা সিরিজ এর ছক করছি। ইচ্ছা ছিল, প্রফেশনাল লাইফে যখনই পিছনে তাকাবো, অন্তত বলতে পারবো,, নাহ,জীবনে কিছু অন্তত করেছি দেশের জন্য।
ঠিক এই সময় ধাক্কাটা আসল।

এরকমই একটা অটিজম স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হবে। তারা খুব কম বেতন দিবে,যেহেতু তারা নতুন স্কুল,লসে চলে
সকাল ৮ - দুপুর ২, সপ্তাহে ৫ দিন - ৫০০০ টাকা। আমি রাজি করালাম আমার খুব কাছের দুই ছোট ভাই বোনোকে, প্রচন্ড ভাল মানুষ ছেলে মেয়ে দুটো। ৫০০০ টাকা ওদের দু/চার দিনের পকেট মানিও হয়ত না কিন্তু ওরা ট্রেনিং নিয়ে এক্সপার্ট হলে গ্রামীণ এলাকায় কেম্পেইন গুলোয় ওরা মানুষকে আরো ভালো ভাবে বোঝাতে পারবে - আমার ব্যক্তিগত স্বার্থছিল এতটুকুই।

ছেলে মেয়ে দুটোই আমাকে পীরের মত মানত। বিশেষ করে ছেলেটা (শাহরিয়ার) আমার খুব আদরের। শাহরিয়ার, ওর বড়ভাইয়ের পথশিশুদের স্কুলে শিক্ষকতা করত ,যেখানে আমি ছিলাম এডভাইজার।সম্পর্কটা অনেকটা পারিবারিক। [যাদের কাজ থাকেনা তারাই এডভাইজার হয় :-B

ছেলেটা পথশিশুদের সেই স্কুল বাদ দিয়ে জয়েন করল, অটিজমের সেই স্কুলে।তাদের পরিচালক, যার কিনা অটিজমের সাথে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা, সেও শাহরিয়ারের ডেভোটেশনে পঞ্চমুখ।

ধাক্কাটা খেলাম দুই তিন দিন পরেই। শাহরিয়ার ফোন দিয়ে বলল, 'ভাই, আমি তোমাকে ভাই ভাবি,কিন্তু তুমি আমাকে কোথায় পাঠাইসো,,ছিহ ভাই,,ছিহ! '

শুনলাম যতটুকুন, স্কুলের ফোরথ ফ্লোর হঠাৎই নাকি পরিচালক খালি করিয়ে বাচ্চাদের থার্ড ফ্লোরে পাঠায় দেয়। এর পর ওকে ডেকে পাঠায়।
ওকে নাকি বলে তোমাকে আমার অনেক ভাল লাগে,আসো তোমার সাথে কোলাকুলি করি।
কোলাকুলির ফাকে হাত দেয় শরিরের বিভিন্ন জায়গায়, চুমু দিয়ে দেয়ালে চপে ধরে, পেন্ট ধরে টানাটানি। শুকনা টাইপ ছেলেটা ওমন শক্তিশালী শরীরের লোকটার সাথে পেড়ে উঠে নাই।বাকিটা বুঝে নিন।

আমি শুনে থ' বনে গেলাম।আমি তখন কিনা তখন পিসিতে বসে অটিজম নিয়ে একটা অনলাইন পত্রিকায় তাদেরই জন্য আরটিকেল লিখছি। বাহ!!

রাতেই স্কুলের প্রিন্সিপাল আপাকে ফোন দিলাম। মহিলার বুয়েটিয়ান জামাই ভদ্রলোক প্রথমে একটু ডাট(হেডোম) দেখাচ্ছিলেন,ভদ্রভাবে ভাবে ওনাকে নিজের সামাজিক পরিচয় দিলাম আর ধারা ৩৭৭ নিয়ে খানিকটা ওয়াজ নসিহত করলাম। মহিলার জামাই এক্স বুয়েটিয়ান, ওনার বুয়েট সোসাইটী, প্রবাসী ভাইয়ের ডোনেশন আর মহিলার মুক্তিযোদ্ধা বাবার জমানো টাকায় স্কুলটা চালু করেছেন নাকি - ওনারা ক্ষমা চাইলেন, কোনো স্টেপ না নিতে অনুরোধ করলেন। যদিও আর তারাও কোনো পদক্ষেপ নিলেন না। শাহরিয়ারদের দিক থেকেও কোনো কিছু করতে মানা করল।

শাহিরিয়ারদের সাথে এরপরে আমার আর কথা হয়নি। শাহরিয়ারের বড় ভাই ছিল আমার আপন ভাইয়ের মত,সম্পর্কটা আর নেই। ওদের সারকেলের প্রতিটা মানুষ বেপারটার জন্য আমাকে আজও দোষী ভাবে। আমিও লজ্জায় কখনো ওদের সাথে আর আড্ডা দিতে যায়নি। আমার নিজের মানুষদের থেকেও গুটিয়ে নিয়েছি অনেকটা। প্রফেসর সাইকিয়াট্রিস্ট মেম ফোন দিলেন প্রজেক্টের কি অবস্থা জানত, খালি বলেছিলাম জানাবো। উনি হয়ত রাগ করেছেন, ওনার মত খ্যেতিনামাএকজন ফ্রিতে একটা কাজ করে দিচ্ছেন তাই হয়ত গায়ে লাগাচ্ছি না।আসলে আমি কাজ করার বিন্দু মাত্র আগ্রহ পাই না। আমার জন্য বেপারটা ট্রমার মত, নিজেকে অভিশপ্ত মনে হয়। ভালো কিছু করতে গেলেই হয়ত কিভাবে জেনো খারাপ লোকদের পাল্লায় পড়ে জাই। এখন চুপচাপ বাসায় থাকি, লাফা লাফি বাদ। ক্লাসে জাই আর আসি, পড়ালেখায় ডাব্বা মারছি নিয়মিত - সেল্ফ কনফিডেন্সের বারোটা বেজে গেছে।

ভাইজান, কথা সেটা না, কথা হচ্ছে - অটিস্টিক বাচ্চাদের প্রধান সমস্যা হল ওরা কমিউনিকেট করতে পারেনা। আমি সেই লোকটাকে প্রায়ই দেখেছি ছেলে বাচ্চাদের কোলে নিয়ে কিস করতে,তখন বিষয়টা আদর মনে হলেও আসলে বিষয়টা কতটুকুন আদর কতটুকুন অবদমিত যৌনতার বহিঃপ্রকাশ তা আজ বুঝতে পারি। আপনার আমার স্বাভাবিক বাচ্চাটা কিন্তু দিন শেষে আপনাকে জানাতে পারবে তার সাথে ঘটা ঘটনা গুলো, আপনার অটিস্টিক বাচ্চাটা কিন্তু তা পাড়বে না বা বোঝতে খানিকটা পারলেও হয়ত আমলে নিবেন না আপনি।

তাই অভিভাবকরা সাবধান। খেয়াল রাখুন আপনার বাচ্চাটা কোনো রাক্ষসের হাতে নিয়মিত নির্যাতিত হবার জন্য স্কুলে পাঠাচ্ছেন নাতো।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:৪১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

শুভ কামনা।
ভালো থাকুন সব সময়।

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ুমায়ূণ আহমেদের কে কথা কয় নামে একটা বই আছে- অবশ্যই পড়বেন।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:৩২

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ঐ লোকটাকে একটা উচিত শিক্ষা দেয়া দরকার ছিল।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:১৬

মাহদি (এক জন মেরুদণ্ডী প্রাণী) বলেছেন: নির্যাতিত কেও মুখ খুলেনি।আলাপ করে দেখলাম, সাক্ষ প্রমান ছাড়া উল্টো মানহানী মামলায় ফেসে যেতাম

৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৪

নতুন বলেছেন: উনাকে উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার। এবং উনার মুখোশ খোলা উচিত ছিলো আপনাদের। ছেড়ে দেওয়া মানে তার কাজ চলতে দেওয়া।

৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৩৮

অন্তরা রহমান বলেছেন: আপনার এখানে পিছিয়ে আসা উচিত হয় নি। এই রাক্ষসের হাতে এরপর আর যারা যারা নির্যাতিত হবে তাদের সকলের ক্ষেত্রে আপনি সমানভাবে দোষী। এখনো যদি সম্ভব হয়, আইনি পথে যান। ঐ স্কুলের বাচ্চাদের কথা ভাবুন। স্ট্যান্ড আপ ফর অল।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:১১

মাহদি (এক জন মেরুদণ্ডী প্রাণী) বলেছেন: নির্যাতিত কেও মুখ খুলেনি।

৬| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রতিবন্ধীদের অভিযোগ কেই বা আমলে নেবে? নিজের মা বাবাও নেয় না অনেক সময়।
সেই রাক্ষসকে আপনি একা মোকাবিলা করতে সাহস না পেলে প্রভাবশালী কয়েকজনের সাথে আলাপ করে দেখেন, সমাজ একটা ভাল কাজে এগিয়ে আসে কিনা। এ ব্যাপারে তরুণদের সাহস ও শক্তি এবং অভিজ্ঞ প্রবীণদের প্রজ্ঞা কাজে লাগানো যেতে পারে।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:১৫

মাহদি (এক জন মেরুদণ্ডী প্রাণী) বলেছেন: নির্যাতিত কেও মুখ খুলেনি।আলাপ করে দেখলাম, সাক্ষ প্রমান ছাড়া উল্টো মানহানী মামলায় যেতাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.