নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
(১) "আমাদের খাদ্য"
(২) "জমির উর্বরতা বৃদ্ধির উপায়"
(৩) "নিট কনসেপশন ইন বায়ো কেমিস্ট"
(৪) "ইনফ্লুয়েন্স অব লাইট ইন সাম বায়ো-কেমিক্যাল প্রসেস"- এগুলো বইয়ের নাম। এই বইগুলো ভারতীয় কৃষি স্কুল /বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পাঠ্য। বইগুলোর লেখক নীলরতন ধর।
কয়েক দিন আগে ঝিনেদা গিয়েছিলাম......। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ফেরার পথে যশোর যাবো, সেখান থেকে ঘুরে আসবো সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম স্থান....। যে বাড়িতে আতিথিয়েতা গ্রহণ করেছিলাম সেই বাড়িটা নীলরতন ধর রোডে অবস্থিত। উপমহাদেশের কৃতি গুণীজন বিজ্ঞানী ডক্টর নীলরতন ধর সাহেবের নামে নামকরণ করা হয়েছে। কারণ, মাইকেল মধুসূদন দত্তের যশোরেই নীলরতন ধর সাহেবের জন্ম এবং স্কুল জীবন এই যশোরেই। অথচ এই মানুষটাকে যশোরের বেশীরভাগ মানুষই চিনেও না জানেও না। এমন একজন গুণীকে আমরা চেনানোর চেষ্টা করিনা ববং ভুলে যাচ্ছি। তাকে জানলে বা জানালে যশোরবাসীই গৌরাবান্বিত হতে পারতো। অহংকারের অনেকগুলো পালক তাকে ঘিরেই যুক্ত হতে পারতো যশোরের গৌরাবাঙ্গে।
......ইতিপূর্বে সাগরদাঁড়ি আমি দুইবার গিয়েছি, তাই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে যশোর পাবলিক লাইব্রেরীতে কিছুটা সময় কাটানোর মনস্থ করি। যশোর ছিলাম ৩২ ঘন্টা। তারমধ্যে পাবলিক লাইব্রেরীতে চার ঘন্টায় অনেক কিছু আবিষ্কার করেছি...৷ যশোরের ছেলে হয়ে তিনি তিন বার নোবেল পুরস্কার কমিটির একজন বিচারক মনোনীত হয়েছিলেন- ভাবা যায়!
ভৌত রসায়ন ক্ষেত্রের পথিকৃৎ প্রখাত বিজ্ঞানী নীলরতন ধর ১৮৯২ সালের ২ জানুয়ারি যশোর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন অ্যাডভোকেট প্রসন্ন কুমার ধর। ডঃ নীলরতন ধরের ভ্রাতাগণ উকিল অমূল্য রতন ধর, রাজনীতিবিদ ডাঃ জীবন রতন ধর, ডাঃ দুর্গারতন ধর এম.আর.সি.পি সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
প্রখ্যাত বিজ্ঞানী অধ্যাপক নীলরতন লেখাপড়া করেছিলেন যশোর জেলা স্কুলে। মেট্রিকুলেশন পাস করে চলে যান- কোলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে। শিক্ষাজীবনের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সর্বস্তরেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। এমএসসি-তে কলা ও বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে সর্বোচ্চ রেকর্ড নম্বর পেয়ে কুড়িটি স্বর্ণপদক, গ্রিফিথ পুরস্কার ও এশিয়াটিক সোসাইটি পুরস্কার লাভ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে অনার্স এবং এমএসসি পড়ার সময়ে বিজ্ঞান জগতের দুইজন দিকপাল আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র ও আচার্য জগদীশচন্দ্রের অধীনে গবেষণায় রত হন। ১৯১৫ সালে স্টেট স্কলারশিপ পেয়ে বিলেত যান। ১৯১৭ সালে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং ১৯১৯ সালে প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডি.এস.সি’ উপাধি লাভ করেন। ১৯১৯ সালে লণ্ডন থেকে ফিরে আই.ই.এস নির্বাচিত হয়ে এলাহাবাদ ম্যুর সেন্ট্রাল কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন। তাঁর গবেষণা জীবনের প্রথম কাজ ‘ইনডিউসড অ্যাণ্ড ফটো-কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন’। শেষ জীবনেও তিনি নাইট্রোজেন ফিকশন নিয়ে গবেষণায় রত ছিলেন। তাঁর মৌলিক গবেষণাপত্রের সংখ্যা ছয়শতাধিক। ভৌত রসায়ন ক্ষেত্রে তিনি পথিকৃৎ হিসেবে স্বীকৃত।
তিনি পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি ডক্টরেট এবং এস এ হিল ও জি হিল স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৩৮, ১৯৪৭ ও ১৯৫২ সালে নোবেল পুরস্কার কমিটিতে তিনি বিচারক ছিলেন। তিনি অল ইন্ডিয়া সায়েন্স রিচার্স একাডেমির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৩৪ সালে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তাঁর নির্মিত ইণ্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব স্পেশাল সায়েন্স এর বাড়িটি তাঁর প্রথম স্ত্রী বিজ্ঞানী সেইলা ধরের মৃত্যুর পর (১৯৪৯) এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর নামাঙ্কিত করে। তিনি অত্যন্ত মিতব্যয় জীবনযাপন করতেন। তাঁর গবেষণালব্ধ সকল উপার্জন লক্ষ লক্ষ টাকা বিভিন্ন গবেষণার কাজেই ব্যয় করেছেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ৪ লক্ষ টাকা আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের নামে অধ্যাপক পদ ও ১ লক্ষ টাকা আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর নামে লেকচারার পদ সৃষ্টির জন্য দিয়েছেন। চিত্তরঞ্জন সেবাসদনকে ১ লক্ষ টাকা এবং ৭ বছরের সম্পূর্ণ বেতন তিনি এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেন। ভুলে যাননি তার জন্মস্থান যশোরকেও। তার পৈত্রিক বাড়ির দান করে দিয়েছেন যশোর পাবলিক লাইব্রেরী স্থাপন করতে, সাথে নগদ দুই লক্ষ টাকা এবং দুই হাজার দুস্পাপ্য বিজ্ঞান বিষয়ক বই। যশোরের বিখ্যাত এম. এম. কলেজ, যা বর্তমানে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদেরও অন্যতম নীলরতন ধর।
ভারত সরকার তাঁকে “পদ্মশ্রী” খেতাব দিতে চাইলে তিনি তা বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করেন।
বিজ্ঞান জগতের এই দিকপাল মনীষী ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
(তথ্যসূত্র এবং ছবিঃ যশোর পাবলিক লাইব্রেরীতে রক্ষিত ডক্টর নীলরতন ধর সাহেবের উপর প্রকাশিত কয়েকটি পত্রপত্রিকা থেকে সংগৃহীত)
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: দুর্ভাগ্যজনক সত্য, এটা আমাদের জাতিগত সমস্যা!
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আপনার লেখায় বুঝতে পারলাম উনি প্রখর মেধাবী ছিলেন।
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার লেখার তথ্যসূত্র অনুযায়ী।
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
আমরা হলাম তেলমারা জাতি, গুনীজনদের খবর রাখা তাদের নিয়ে আলোচনা করা তো দূরের থাক তাদেরকে বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা করি না যদি নিজের আর্দশের না হয়।
আপনাকে ধন্যবাদ একজন গুনী মেধাবীকে নিয়ে লেখার জন্য।
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা এমনই এক জাতি- ফেসবুক/ব্লগে দুইচার লাইন ভুল বানান, ভুল বাক্যে লিখেই নিজেকে বিরাট পণ্ডিত ভেবে ডক্টর ইউনুসকেও তুলোধূনো করে ছাড়ি!
৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:১৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- উনার সম্পর্কে কখনো কিছু শুনেছি বলে মনে পরে না।
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি অবশ্য আগেও শুনেছি, তবে এবার ওনার সম্পর্কে আরও বেশী জেনেছি।
৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৮
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: উনাকে নিয়ে লেখার জন্যে ধন্যবাদ। আমার এলাকাতেই নীল রতন ধর রোড।
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৫
জুল ভার্ন বলেছেন: নীলরতন রোডে আমার একজন নিকট আত্মীয়ের বাড়ি। উনি ২০ বছর আগে এম এম কলেজের প্রফেসর পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। রসায়ন বিভাগ প্রধান ছিলেন। ইশ! আপনার কন্টাক্ট নম্বর জানা থাকলে অবশ্যই যোগাযোগ করতাম। ফেসবুকের ৮ জন আমরা একত্রিত হয়েছিলাম।
৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:১৭
আজব লিংকন বলেছেন: জন্মগতভাবে উনি বাঙালি। ভারতবর্ষ বিভক্ত হওয়ার পরে অনেক গুণীজন ইন্ডিয়ার হয়ে গেছেন। এইজন্যই অনেকের কথাই আমরা জানি না। যেমন ডক্টর নীলরতন ধর উনার কথা আজ প্রথম শুনলাম।
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৮
জুল ভার্ন বলেছেন: হ্যা দেশ বিভাগের ফলে আমাদের অনেকেরই দুই দেশ হয়ে গিয়েছে। তবে দুই একজন ব্যতিক্রম ছাড়া সবারই জন্মভূমির জন্য আকুতি রয়ে গিয়েছে।
৭| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:২৩
মেহবুবা বলেছেন: নীলরতন ধর সম্পর্কে অনে কিছু জানছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৩৪
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ আমার প্রিয় আপু।
৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭
জটিল ভাই বলেছেন:
ভাই, আফসোস লাগে যারা মূল্যায়ণ পাবার কথা তারা.......
তথ্যের জন্যে জটিলবাদ ♥
২১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫
রবিন.হুড বলেছেন: যে দেশে গুণীদের কদর নাই সে দেশে গুণীজন জন্মায় না। তাই বাংলাদেশে গুণীজন নাই।