নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
ইতিহাস......
“জুলাই মাসের ১ তারিখ, ২০১৭' সকালবেলা আমার ব্যক্তিগত মোবাইলে একটা কল আসলো। নিজেকে তিনি প্রেসিডেন্টের মিলিটারি সেক্রেটারি পরিচয় দিয়ে জানালেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করতে হবে। এই ধরণের ফোন পেয়ে আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ এসব ক্ষেত্রে সবসময় আমার রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে যে কোন বৈঠকের দিন-ক্ষণ ঠিক করা হয়।
ফোনে কথা শেষ করার একটু পরেই ০১৭৩০০৯০০৯৫ নাম্বার থেকে মিলিটারি সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন মিটিং এর রিকনফার্মেশন করে একটি এসএমএস পাঠালেন। আমি উদ্বিগ্ন এবং হতবুদ্ধি হয়ে বসে থাকলাম।
যাইহোক, নির্দিষ্ট সময়ের পাঁচ মিনিট আগেই আমি বঙ্গভবনে পৌছালাম। সামনের বারান্দায় মিলিটারি সেক্রেটারি আমাকে রিসিভ করে একটি রুমে নিয়ে গেলেন। আমি শুধু অবাক হচ্ছি। কারণ বঙ্গভবনে আমি অনেকবার এসেছি, সবসময় আমাকে অভ্যর্থনার জন্য নির্দিষ্ট রুমে নিয়ে যাওয়া হতো।
কিন্তু তিনি এদিন আমাকে অফিসারদের একটা রুমে নিয়ে গেলেন। ভাঙাচুরামার্কা এক রুমে তিনি নিজে টেবিলের ওপাশে একটা চেয়ারে বসলেন এবং আমাকে সামনের সোফাতে বসালেন। আমি অপমানিত বোধ করতে লাগলাম এবং চিন্তা করতে থাকলাম এভাবে বসার চেয়ে বরং ভেগে যাওয়াই ভালো হবে। এইটা একজন প্রধান বিচারপতির প্রাপ্য আচরণ না।
এইসময় তিনি আমার সাথে এইসেই কথাবার্তা বলে সময় কাটাতে চাচ্ছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন আমি চা বা কফি খাবো কি না। আমি বললাম, নো থ্যাংকস।
এভাবে পয়তাল্লিশ মিনিট সময় পার হয়ে গেলো। তারপর এক সময় তারা আমাকে প্রেসিডেন্টের রুমে নিয়ে গেলো। ওখানে উপস্থিত মানুষদের দেখে তো আমি হতবাক। প্রেসিডেন্টের সাথে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
প্রাথমিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা আর আনিসুল হক মিলে আমাকে ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায় প্রসঙ্গে চেপে ধরলেন। দীর্ঘক্ষণ তর্কবিতর্ক হলো। এটর্নি জেনারেল আমাকে বললেন, এ পর্যন্ত অসংখ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি রায় দিয়ে বিচার বিভাগের মাধ্যমে আমি যে খেদমত করেছি তার জন্য সরকার আমাকে চিরকাল মনে রাখবে। কিন্তু এখন এই একটা রায় প্রসঙ্গে দ্বিমত করে আমি সব বরবাদ করে দিচ্ছি। এই কথা শুনে আমার খুব অপমান বোধ হলো।
যখন তারা বুঝতে পারলেন যে আমাকে আমার মতামত থেকে নড়ানো সম্ভব না, তখন হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাথা গরম হয়ে গেলো। তিনি ভ্যার ভ্যার করে রাগের সাথে উল্টাপাল্টা সব কথা বলতে লাগলেন। তিনি হুমকি দিয়ে বললেন, আমার সম্পর্কে সব গোপন খবরাখবর তার ভালো করেই জানা আছে।
তার কথাবার্তা শুনে আমি এবার পুরোপুরি বেকুব হয়ে গেলাম। আমার মনে হচ্ছিলো ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী অন্ধ হয়ে গেছেন। তার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো পরবর্তী নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ব্যবহার করা।
পুরো সময়টাতে প্রেসিডেন্ট নিরব দর্শক হয়ে বসে থাকলেন, মাঝে মধ্যে শুধু ছোটখাটো দু'একটা মন্তব্য করছিলেন। ঐদিন এ মিটিং এতো গোপনভাবে করা হয়েছিলো যে রাতে আমাদের জন্য কোন খাবারের আয়োজনও করা হয়নি। শেষপর্যন্ত রাত সাড়ে এগারোটার দিকে কোন সমাধান ছাড়াই মিটিং শেষ হয়ে যায়।
তখন আমার এতো ক্ষুধা লেগেছিলো যে আমি দাঁড়িয়ে ঠিকমতো ব্যালেন্স রাখতে পারতেছিলাম না। যন্ত্রের মতো টলতে টলতে গাড়িতে এসে উঠি এবং বাসায় পৌছার পর শুধু এক গ্লাস পানি খেয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ি। আমার অবস্থা দেখে আমার স্ত্রী খাবার দাবার নিয়ে সেরাতে আর কোন কথা বলেনি।“
(পৃষ্ঠা ৪৩৩ – ৪৩৭) এ ব্রোকেন
ডিম বাই সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৭:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ব্যারিস্টার সরওয়ার সাহেব আর এক স্টানবাজ এটেনশন সিকার.....আর কিছ বললাম না।
২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:০০
উদাসীন মেঘ ১২১৯ বলেছেন: গতকাল হাই কোর্টের পতিত সরকারের নিয়োগ দেয়া ১২ জন বিচারপতিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হলো। এই জন্য সর্বোচ্চ আদালতের মর্যাদা নিয়ে আওয়ামী সমর্থক এবং তাদের সুবিধাভোগী সুশীলদের সে কি আর্তনাদ! অথচ এই সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে তারা অস্ত্রের মুখে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিলো।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৭:৩০
জুল ভার্ন বলেছেন: ওরা এখন পতালক লীগ, আপসোস লীগ, হাহুতাশ লীগ- যেখানে যাহা পায় তাহাই জড়াইয়া ধরিয়া কাঁদে- এইটুকুই ওদের শান্তনা। শেষ সম্বল।
৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:২৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সিনহা একজন সত্যবাদী ও ন্যাপরায়ণ বিচারপতি ছিলেন, যিনি অন্যায়ের সাথে আপোস করতে চান নি, এজন্য স্বৈরাচার হাসিনা তাকে এভাবে অপদস্ত করেছিল। যাদেরকে এখন চারদিকে খুনি শেখ হাসিনার জন্য হাহাকার করতে দেখেন, এরা সবাই হলো সুবিধাভোগী, ক্রিম খাওয়া পার্টি। এখন ভাগে কোনো ক্রিম পড়ছে না বলে এত কান্নাকাটি।
প্রকৃতির কী নিষ্ঠুর প্রতিশোধ! সেই হাসিনাকে তার প্রাসাদ ও দেশের সকল নেতাকর্মীকে ফেলে পালিয়ে যেতে হলো অন্য দেশে। বাংলার ইতিহাসেও এটা একটা কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসাবে বিবেচিত হবে।
ধিক ধিক, শতধিক এই খুনি স্বৈরাচারের জন্য।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৭:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা আওয়ামী বিরোধী সবাইকে বলতো- পাকিস্তানের দোসর, পাকিস্তান চলে যেতে। আমরা কেউ কোথাও পালিয়ে যাইনি, সবাই আমরা আমাদের জন্মভ, আমাদের মাতৃভূমি আঁকড়ে আছি এবং থাকবো। অথচ "শেখ হাসিনা ভয় পায়না, শেখ হাসিনা পালায়না"- সেই সবার আগে পালিয়ে ইন্ডিয়া আশ্রয় নিয়েছে। একবারও নিজ দলের নেতা কর্মী সমর্থকদের কথা ভাবেনি।
৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:২৬
ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনি কতদিন ধৈর্য ধারন করে এখানে লিখে যেতে পারবেন বুঝতে পারছি না। এই ব্লগ এখন স্বৈৈরাচারের দোসরদের অন্যতম আস্তানা হয়ে দাড়িয়েছে । এখানে অনায়াসে বাক স্বাধীনতার নামে মিথ্যাচার করা যায়। এত বড় রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের বিরুদ্ধে এখানে যা খুশি তাই লেখা যায়। হাজার কোটি টাকার লুটেরাদের লুটপাঠের খবর উন্মোচনের পরেও তাদের পক্ষ নিয়ে লেখা যায় , জনগনের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া বিনা ভোটের এম্পিদের সততার সার্টিফিকেট দেয়া যায়, পলাতক স্বৈরাচারকে একজন ভাল মানুষ হিসাবে অভিহিত করা যায় !
যাদের সাথে একত্রে ব্লগিং করতাম তাদের বেশিরভাগই অনুপস্থিত আজ এই ব্লগে। একদা এত প্রিয় এই জায়গাটায় ঢুকলে এখন প্রথম দফাতেই মেজাজ চরম খারাপ হয়ে যায়।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: সামহোয়্যারইন ব্লগ সব সময়ই দুর্বিত্বদের অভয়ারণ্য, অভয়াশ্রম- একথা বলতে দ্বিধা করবোনা। যদিও সামহোয়্যারইন ব্লগও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি।প্রায় ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অজস্র ছাত্রজনতার জীবনের বিনিময়ে যে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে, সেই স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দোসরদের এবং ছাত্রজনতার জীবনের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচার এবং সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিষোদগারের চারণভূমি হচ্ছে সামহোয়্যারইন ব্লগ- এটাই আপসোস!!!
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫১
ডার্ক ম্যান বলেছেন: সারোয়ার ভাই এর সাথে কয়েকবার ফেসবুকে কথা হয়েছিল ২০১৮ সালের দিকে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে একটা বই লিখেছিলেন ইংরেজিতে।
উনি তো এখন গুমের মামলার আসামি। ব্যারিস্টার সারোয়ার করেছেন।
সিনহার স্বপ্ন ছিলো রাষ্ট্রপতি হবার। সেই স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনাকে সঙ্গী করে বইটা লিখেছেন। সিনহাকে যে লাথি মারা হয়েছিল সেটা কি বইয়ে লেখে নাই