নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আধার ও আধেয়_জ্ঞান
_____________
একবার স্থানীয় একজন সাংবাদিক আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, "অজন ব্রহ্ম, কেউ যদি বৌদ্ধধর্মের একটি পবিত্র গ্রন্থ নিয়ে টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করেন, তাহলে আপনি কি করবেন?"
বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করে আমি জবাব দিয়েছিলাম, "স্যার, কেউ যদি বৌদ্ধধর্মের একটি পবিত্র বই নিয়ে আমার টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করেন, তাহলে প্রথমে যে কাজটি আমি করবো তা হলো_একজন প্লাম্বার মিস্ত্রিকে ডেকে আনবো!"
সাংবাদিক তার হাসি থামানোর পর চুপিসারে আমাকে বলেছিলো যে, এই প্রথমবারের মতো তিনি একটি যুক্তিযুক্ত জবাব পেলেন।
এরপর তাকে আমি আরো কিছু বললাম। আমি ব্যাখ্যা করে বললাম যে, কেউ বুদ্ধের অনেক মূর্তি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিতে পারে, বৌদ্ধমন্দির পুড়িয়ে দিতে পারে অথবা বৌদ্ধ ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীদের হত্যা করতে পারে; তারা এগুলো ধ্বংস করতে পারবে কিন্তু আমি কিছুতেই তাদের বৌদ্ধধর্ম ধ্বংস করতে দেবো না। আপনি একটি ধর্মগ্রন্থ টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করতে পারেন, কিন্তু আমি আপনাকে কখনো ক্ষমা, শান্তি ও সহানুভূতি টয়লেটে ফ্লাশ করতে দেবো না।
ধর্মগ্রন্থ ধর্ম নয়, মূর্তিও ধর্ম নয়, ইমারত বা ধর্মযাজকও ধর্ম নয়।
এগুলো 'আধার' মাত্র।
বই আমাদের কী শিক্ষা দেয়? মূর্তি আমাদের কাছে কীসের প্রতীক? ধর্মযাজকদের কোন কোন গুণ থাকা উচিৎ? এগুলো হচ্ছে 'আধেয়'।
আমরা যখন আধার ও আধেয়র মধ্যকার পার্থক্য চিহ্নিত করতে পারবো, তখনই আমরা আধেয় সংরক্ষণ করতে পারবো, এমনকি আধার যদি ধ্বংসও করে ফেলা হতে থাকে।
আমরা আরো বেশি বই ছাপাতে পারি, আরো অনেক মন্দির ও মূর্তি তৈরি করতে পারি, এবং এমনকি আরো অনেক ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবো। কিন্তু যখন আমরা অন্যদের প্রতি ও আমাদের নিজেদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলবো এবং তার বদলে আমাদের মনে হিংসা ও বিদ্বেষের ভাব পোষণ করতে থাকবো, তখন সমস্ত ধর্মটাই টয়লেটের ভেতর তলিয়ে যায়।
(মূল : অজন ব্রহ্ম। বাংলা রূপান্তর: সুব্রত বড়ুয়া।। গ্রস্থ : ভালো? মন্দ? কে জানে?)
কৃতজ্ঞতা : বাংলাদেশ ভিক্ষুণী সংঘ
৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:১৫
জয়দেব কর বলেছেন: ঠিক তাই। আপনাকেও ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৪০
মশিউর বেষ্ট বলেছেন: ধন্যবাদ। যথার্থ বলেছেন অজন ব্রহ্ম।