নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।
আল কোরআনে আসমান ও জমিন শব্দ নিয়ে ভ্রান্ত ধারনার কারনে অনেক সময় অনেক নাস্তিক আসমান ও জমিন সৃষ্টি সংক্রান্ত বিভিন্ন আয়াত নিয়ে উপহাস সুচক মন্তব্য পেশ করে থাকে। ব্যাটা নাস্তিক কি বলে?আসলে আল কোরআন কে তো ওরা বোঝেই না। বুঝতে চেষ্টাও করে না।আল কোরআন আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বৎসর পূর্বে নাজিল হয়েছিলো স্বল্প জ্ঞানী মানুষদের জন্য। তাদের জ্ঞান বিজ্ঞানের হিসাবে রেখে আল কোরআনকে নাজিল করা হয়েছিলো। আল কোরআন বিজ্ঞান গ্রন্থ নয়। এটি সকলেই জানে। কিন্তু আমি মনে করি আল কোরআন এমন একটি গ্রন্থ যা বিজ্ঞান যাচাই করার একটি ছাকনি বিশেষ। বিজ্ঞানের কোন থিওরি গ্রহণযোগ্য হতে পারে আর কোন থিওরি গ্রহনযোগ্য হবে না সেটা আল কোরআনই নির্ধারন করে দিতে পারে। আল কোরআন রুপক অর্থ আপনার সঠিক উপলদ্ধি বোধ দিয়ে যাচাই করলেই আপনিই বুঝতে পারবেন মানুষের উদ্ভাবিত কোন বৈজ্ঞানিক তথ্যটি সঠিক? আল কোরআনে অসংখ্য স্থানে বিজ্ঞান নির্ভর আয়াত আছে। যেগুলোকে যদি আপনি সরাসরি ধরেন তাহলে আপনার মনে হবে বিষয়গুলো সঠিক নয় কিন্তু যদি রুপক অর্থগুলো একটু বোঝার চেষ্টা করেন তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন আল কোরআনে ব্যপক বৈজ্ঞানিক তথ্য নিহিত আছে। আর ঐ নিহিত তথ্যই প্রকৃত তথ্য।
আল কোরআনে আসমান জমিন শব্দটি বিভিন্ন স্থানে প্রয়োগ করা হয়েছে। আমার পূর্বের অনেক লেখাতেই আমি উল্লেখ করেছি আকাশ ও জমিন রুপক শব্দ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অর্থে আকাশ ও জমিন শব্দটি আল কোরআনে ব্যবহার করা হয়েছে। বিভিন্ন ভাবে আকাশ এবং জমিনের ব্যাক্ষা দেওয়া হয়েছে। আসমান শব্দটি আসমান বা আবরন অর্থে ব্যবহার করা হলেও জমিন শব্দটি কোন আয়াতে পৃথিবী অর্থে ব্যবহার হলেও অন্য ক্ষেত্রে অন্য ক্ষেত্রে মহাজাগতিক বস্তু সমুহকে বোঝানো হয়েছে। আল কোরআনে এ আয়াত অনুসারে আকাশ কি বা আকাশ এর প্রকৃতি কেমন হতে পারে ? কোন ক্ষেত্রে আসমান বলতে আমাদের পৃথিবীর উর্দ্ধে বায়ুমন্ডল মেঘমন্ডলের সিকিউরিটি জোনের সীমারেখাকে বোঝানো হয়েছে। আবার আরেক ক্ষেত্রে সমগ্র মহাবিশ্বের মহাজাগতিক সীমারেখাকে আকাশ বলা হচ্ছে। যদিও আরবী ব্যকরনে আকাশ বলতে বোঝানো হয় ‘উপরে’। অর্থাৎ উপরে যা কিছু আছে। একটি আয়াতে আমি লক্ষ্য করলাম পৃথিবীর উর্দ্ধে সৌরজগত সৃষ্টির বিষয়বস্তুকেও তুলে ধরা হয়েচে। আর জমিন বলতে কিছু আয়াতে কোথাও আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীকে মিনিং করা হয়েছে আবার কোথাও জমিন বলতে মহাজাগতিক বস্তু সমূহকে বোঝানো হয়েছে। এবার আসুন আল কোরআনের উল্লেখিত আয়াতগুলো নিয়ে আলোচনা করি।
আল কোরআনে সুরা আম্বিয়ার ৩২ নাম্বার আয়াত এই আয়াতটিতে আকাশের একটি ব্যাক্ষা দেওয়া হয়েছে। ⦁ وَجَعَلْنَا السَّمَاءَ سَقْفًا مَحْفُوظًا ۖ وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ ⦁ “ এবং আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ স্বরূপ। কিন্তু তারা আকাশস্থ নিদর্শনাবলী হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় ” সুরা আম্বিয়া আয়াত ৩২ । এই আয়াতে উল্লিখিত একটি শব্দ পাওয়া যাচ্ছে যেটা হচ্ছে ( سَقْفًا ) সাক্কফান । এই শব্দের দুটি অর্থ আছে সেই দুটি অর্থ নিম্নরূপঃ ⦁ ছাদ , চাল , ছাউনি ⦁ আচ্ছাদান , আবরণ । এই শব্দটি জেনে অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে, আকাশ কিভাবে ছাঁদ হতে পারে বা আকাশ কিভাবে সুরক্ষা প্রদান করে? তাহলে এর উত্তর টা বেশ সহজ। সাক্কফান শব্দের অর্থ হলো ছাঁদ। এখন প্রশ্ন হলো আমাদের উপরে কি এমন আছে যা আমাদের ছাঁদ হিসেবে আমাদের সুরক্ষা প্রদান করে? আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোনে আমাদের উর্দ্ধে বায়ুমন্ডল 7টি স্তর দ্বারা বিভাজিত। এবং বায়ুমন্ডলের এইসকল স্তর আমাদের পৃথিবীকে সুরক্ষতি করে ? এই সকল স্তরসমূহ পৃথিবীর জন্য ঢালের ( Shield ) এর মত কাজ করে । আমরা জানি বায়ুমন্ডলকে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু স্তরে ভাগ করেছেন এইসকল স্তরগুলো হচ্ছে , ⦁ ট্রপোস্ফিয়ার Troposphere) ⦁ স্ট্রেটোস্ফিয়ার (Stratosphere) ⦁ ওজোন স্তর ( Ozone Layer ) ⦁ মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere) ⦁ থার্মোস্ফিয়ার (Thermosphere) ⦁ আয়নোস্ফিয়ার (Ionosphere) ⦁ এক্সোস্ফিয়ার ( Exosphere) । বায়ুমন্ডলের এসকল বিভিন্ন স্তর পৃথিবীকে সুরক্ষিত করে রেখেছে। যেমন ওজোন স্তর (Ozone layer)। ওজন স্তর পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কি:মি: উপরে অবস্থিত । বায়ুমণ্ডলে ওজোনের প্রায় ৯০ শতাংশ স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওজোনস্তরে ওজোনের ঘনত্ব খুবই কম হলেও জীবনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন উল্কাপিন্ড গ্রহানু বাইরের গ্রহ অথবা এস্টিরয়েড বেল্ট থেকে পৃথিবীর মাধ্যকর্ষনে এর ভিতর পড়লে ওজোন স্তরের কারনে তা ভেংগে চূর্ণ বিচূর্ন হয়ে বিলিন হয়ে যায়। ফলে আমাদের এই পৃথিবিতে এসে পৌছায় ডাস্ট। তাছাড়া বায়ুমন্ডল বাহিরের বিপদ থেকে রক্ষা করে পৃথিবীকে। যদি এই বায়ুমন্ডলে ওজোন স্তর না থাকত তাহলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি আর তাপমাত্রায় পুড়ে যেত পৃথিবীর সব কিছু । কয়েক স্তরে এই ১০০০০ কি মি Ocean of Gas layer, stropo strato exo , meso sphere যা বেশি সূর্যের তাপ আর ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মিকে Ultra violet ray / Near Ultra Violet ray ফিল্টার করে আমাদের পৃথিবিতে আনে সহনীয় মাত্রায় । মহাশুন্যের খালি স্থানের তাপমাত্রা -২৭০ ডিগ্রি। ঐ বরফ ঠাণ্ডা তাপমাত্রা পৃথিবিতে আসলে সব জমে বরফ হয়ে যেত । Ocean of Gas layer এই -২৭০ ডিগ্রি বরফ ঠাণ্ডা তাপমাত্রা থেকে পৃথ্বীকে রক্ষা করে । আবার এই পৃথিবীকে সূর্যের প্রখর রশ্মি কে ফিল্টার করে সহনিয় মাত্রায় আর সহনিয় আলোকে উজ্জ্বল করে পৃথিবীতে পৌছে দেয়. ফলে সব কিছু পুড়ে যায় না । এই অত্যাধিক তাপমাত্রা থেকে বেচে যাবার কারনে পৃথিবির সকল জীব বসবাস উপযোগি পরিবেশে বেঁচে আছে ।
আমাদের পৃথিবীর অভ্যন্তরে Van allan Belt নামক শক্তি শালি ২ টি চুম্বক ক্ষেত্র রয়েছে যা পৃথিবির কেন্দ্রে Magnetic Field তৈরি করছে এবং বাইরে কয়েক হাজার কি মি পযন্ত বিস্তৃত । এই ভ্যান এ্যোলেন বেল্ট বায়ুমন্ডলের 7টি স্তরকে আটকিয়ে রেখে বায়ুমন্ডল দ্বারা আমাদের পৃথিবীকে রক্ষা করে। সুরা ৫০ আয়াত ৬ এ উল্রেখ আছে أَفَلَمْ يَنظُرُوٓا۟ إِلَى ٱلسَّمَآءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَـٰهَا وَزَيَّنَّـٰهَا و مَا لَهٰا مِن فروج– "তারা কী দেখেনা তাদের উপরের আকাশের দিকে, কিভাবে আমি তা সৃষ্টি করেছি ও তাকে সজ্জিত করেছি, এবং এতে কোনো ফাটল নেই।" যদি কোন ভাবেই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফাটল বা ছিদ্র থাকতো তাহলে গ্রীণ হাউজ এফেক্টের দ্বারা মহাবিশ্বের আল্ট্রাভায়োলেট রে গামা রে প্রবেশ করে মুহুত্বের মধ্যে পৃথিবীর প্রাণীজগত বিনষ্ট করে দিতো। লক্ষ্য করুন আলকোরআনের আরেক স্থানে বলছে- قال اللّٰه تعالي [الملك :٣]: "الذي خلق سبع سماوات طباقا ما تری في خلق الرحمان من تفاوت فارجع البصر هل تری من فطور – "যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সামঞ্জসুপুর্নভাবে সৃষ্টি করেছেন, তুমি রহমানের সৃষ্টিতে কোনো সমস্যা ও ক্রুটি খোজে পাবেনা, দৃষ্টি ফেরাও! কোনো ফাটল/ক্রুটি দেখতে পাও কি? আল কোরআনের এসকল আয়াত ও বিজ্ঞানের বায়ুমন্ডল সম্পর্কে ধারনা দেয় । এসকল প্রমান আমাদের উপলদ্ধি করাচ্ছে বায়ুমন্ডলই এমন একটি স্থান যেস্থান পৃথিবীকে ছাদের মতো রক্ষা করছে। প্রকৃত অর্থে আকাশ বলে কিছু নেই। আরবী সাহিত্যে আকাশ শব্দের অথ উপরে। একটি বিষয়বস্তুর উপরে থাকা সমস্ত কিছুকেই আকাশ বলা হয়। লক্ষ্য করুন এবার আলকোরআনের সিজদা সুরাতে ১১ ও ১২ নং আয়াতে। এই আয়াতে আকাশের বর্ননা ভিন্ন রকম প্রতিভুত হচ্ছে।
“অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ। তিনি ওকে (আকাশকে) ও পৃথিবীকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস। ওরা বলল, ‘আমরা তো অনুগত হয়ে আসলাম| তারপর তিনি দু’দিনে আসমানসমূহকে সাত আসমানে পরিণত করলেন। আর প্রত্যেক আসমানে তার কার্যাবলী ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন। আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ। সুরা সিজদা আয়াত নং ১১- ১২
‘অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ।’ আল কোরআনের আয়াতের এই অংশ দিয়ে আমরা বুঝতে পারি আকাশ ধুম্রপুঞ্জ ছিলো । সোজাসুজি এখানে বলা হচ্ছে পৃথিবীর উপরের সকল বস্তু ধুম্রাপুঞ্জ ছিলো। ধুম্রাপুঞ্জ ছিলো বলতে পৃথিবীর উপরে সৌরজগৎ সৃষ্টির বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে। আল কোরআনের ধুম্রপুঞ্জ রুপে বিষয়টি বুঝতে গেলে ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী মারকুইস ডি ল্যাপলাস 1796 খ্রিস্টাব্দে -সৌরজগতের উৎপত্তি সংক্রান্ত তার নীহারিকা মতবাদ কে সামনে আনতে হবে। মতবাদটি তার "Exposition of the Solar System"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। মতবাদটি 1755 খ্রিস্টাব্দে ইমানুয়েল কান্টের দেওয়া নীহারিকা মতবাদ এর তুলনায় অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত। মারকুইস ডি ল্যাপারাস ছাড়াও অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন, আদিতে পৃথিবী ও সৌরজগৎ অবস্থান ছিল এক ধোঁয়াশার মধ্যে। সেটা ছিল সুবিশাল আকৃতির নীহারিকা। মহাকাশে ঘূর্ণায়মান লক্ষ লক্ষ মাইল ব্যাপী ধুলোর মেঘ একত্র হয়ে এই নীহারিকা গড়ে তুলেছিল। পরে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে নীহারিকার মধ্যে বিভিন্ন অণু-পরমাণু যতই পরস্পরের নিকটবর্তী হয়েছে, ততই পরস্পরের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে এবং তাদের গতিশীলতা থেকে উদ্ভূত শক্তি তাপে রূপান্তরিত হয়ে তাদের গতিশীলতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরবর্তীতে তাপ বিকিরণের ফলে নীহারিকাটি সংকুচিত হতে থাকে এবং সংকুচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার গতিবেগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। একসময় ঘূর্ণন বেগ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে সেই নীহারিকার নিরক্ষীয় অঞ্চলে অভিকর্ষজ বল এবং কেন্দ্র বহির্মুখী বল পরস্পর সমান হয়। নীহারিকাটি যখন আরো সংকুচিত হয় তখন নীহারিকার বাইরের বলয় আকার অংশ সংকোচনে অংশগ্রহণ না করে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওজন শূন্য অবস্থায় নিজের জায়গায় স্থির ভাবে ভাসতে থাকে। নীহারিকাটি সংকুচিত হতে থাকায় একাধিক বলয় আকার অংশ বিচ্ছিন্ন হয়। বিচ্ছিন্ন বলয় আকার অংশ একত্রিত এবং ঘনীভূত হয়ে গ্রহের সৃষ্টি হয়। গ্রহগুলির ক্রমশ সংকুচিত হওয়ায় বলয় আকার অংশ বিচ্ছিন্ন হয়। বিচ্ছিন্ন বলয় গুলি একত্রিত হয়ে উপগ্রহের সৃষ্টি করে।নীহারিকার কেন্দ্রীয় অংশ সূর্যরূপে অবস্থান করে। প্রাথমিক অবস্থা থেকে সৌরজগৎ অনেক বিবর্তিত হয়েছে।ধুম্রপুজ্ঞ বা গ্যাসীয় অবস্থা থেকে তাপ বিকিরনের মধ্য দিয়ে বস্তু তথা গ্রহ সমুহের উদ্ভব ঘটে। কোন গ্রহের চারদিকে আবর্তনরত গ্যাস ও ধূলিকনার চাকতি থেকে তার উপগ্রহ তৈরি হয়ে থাকতে পারে, আবার কিছু উপগ্রহ ভিন্ন জায়গায় উৎপন্ন হয়ে পরবর্তীতে গ্রহের মহাকর্ষীয় বন্ধনে ধরা দিতে পারে।
নীহারিকা অনুকল্প নামের এই বহুল পরিচিত ও সর্বজনগৃহীত মডেলটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন Emanuel Swedenborg, ইমানুয়েল কান্ট এবং পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস, সেই ঊনবিংশ শতাব্দীতে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখার সক্রিয় অংশগ্রহণে মডেলটির উন্নতি ঘটেছে যার মধ্যে রয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গ্রহ বিজ্ঞান। ১৯৫০-এর দশকে মহাকাশ যুগের সূচনা ঘটা এবং ১৯৯০-এর দশকে বহির্গ্রহ আবিষ্কৃত হতে শুরু হওয়ার পর অনেকেই এই মডেলের পুনর্বিশ্লেষণ বা সমালোচনা করছেন। নতুন আবিষ্কারগুলোকেও এই অনুকল্পের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় কিনা সেটিই তাদের প্রশ্ন।
আমি আয়াতটি আরো একবার তুলে ধরছি। আয়াতটি হলো হামিম সিজদা সুরা এর 12 নং আয়াত - “অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ।” আয়াতটিতে ধুম্রপুঞ্জ বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকার কথা বলা হয়েছে।
নিম্নের চিত্রের দিকে লক্ষ করুন । ১ অংশ টুকু লক্ষ করুন। আগুন আগুন ধোয়া ধোয়া। যেটি একটি নীহারিকা। এই নীহারিকা পরবর্তী রুপ ২ অংশ। অগ্নিময় ধোয়াময় গ্যাসীয় নীহারীকার মাঝে অগ্নিময় হয়ে উঠছে ও সকল দিকে ঠান্ডা হচ্ছে। পরবর্তী ৩ অংশ দেখুন সকল অংশ প্রায় ঠান্ডা হয়ে গেছে শুধু সূর্য অংশটুকুই অগ্নিময়। তারপর দেখুন ৪ অংশটুকু ঠান্ডা হয়ে গ্রহ জন্ম নেওয়া শুরু করেছে । এবং পরবর্তী ৫ অংশে সকল গ্রহের সৃষ্টি হয়ে গেছে এবং গ্রহের গতিশীলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আল কোরআনের এই আয়াতের এই অংশ দ্বারা সৌরজগৎ সৃষ্টির বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে বোঝানো হয়েছে এবং বিজ্ঞানের একটি তত্ত্বকে সমথর্ন দেওয়া হয়েছে। আমি পুবের্ই বলেছি আল কোরআন হলো ছাকনি। বিজ্ঞানের কোন তত্ত্ব গ্রহন করা যাবে আর কোন তত্ত্ব গ্রহণ করা যাবে না তা আল কোরআন রুপক অথে ঠিক বুঝিয়ে দেয়! এবার আসি আমরা আয়াতের পরবরতী অংশে।
“ তিনি ওকে (আকাশকে) ও পৃথিবীকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস। ওরা বলল, ‘আমরা তো অনুগত হয়ে আসলাম| ” এই আয়াতটিতে সৃষ্টিশীলতার একটি পর্যায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আল্রাহ আকাশ ও পৃথিবীকে আদেশ করলেন নির্দীষ্ট কোন স্থানে আসতে। তার মানে পৃথিবী সৃষ্টির শুরুতে তার নিজস্ব কক্ষপথ থেকে কোন কারনে বিচ্যুতি ঘটেছিলো । শুধুমাত্র পৃথিবী নয় আকাশকেও আসতে বলেছিলেন। কিন্তু আকাশ আসুক আর আকাশের কোন অংশ আসুক এসেছিলো আল্লাহর নিদেশনা মানতে। আমি পূর্বেই বলেছি আকাশ বলতে আরবী ব্যকরনে উপরে বোঝানো হয়। এই আয়াত দ্বারা উপরের একটি অংশকে বোঝানো হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞান পৃথিবীর সৃষ্টি নিয়ে এবং চাঁদের সৃষ্টি নিয়ে একটি তত্ব প্রকাশ করে। সে তত্ব মোতাবেক ধারনা করা হয় পৃথিবীর অবস্থানে থাকা একটি গ্রহের সাথে থিয়া নামক একটি গ্রহের সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষ এতটাই ব্যাপক ছিলো যে দুটি সমানুপাতের গ্রহতে পরিনত হয়ে যায এবং আবার সংঘর্ষ ঘটে দুটি গ্রহ একটি গ্রহতে পরিনত হয়ে যায় এবং পৃথিবীর চারপাশ ঘিরে একটি ডিস্ক সৃষ্টি হয় যা পরবতীতে চাঁদে পরিনত হয়ে যায়। ঠিক ঐ সময়ে থিয়া গ্রহের ধাক্কাতেই পৃথিবী তার কক্ষপথ পরিবর্তিত করে আল্লাহর নিধারিত কোন স্থানে গমন করে যে স্থান টি ছিলো হেরিটেবল জোন বা বাসযোগ্য স্থান। হেরিটেবল জোন তাকেই বলা হয় অর্থাৎ একটি নক্ষত্র থেকে যতটুকু দুরত্বে একটি গ্রহ অবস্থান করলে পানি বরফ অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় পরিনত হতে পারে। শুধু তাই নয় আরো একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো দুটি গ্রহের এক ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি গ্রহে পরিনত হওয়ার কারনে পৃথিবী পর্যাপ্ত এবং পারফেক্ট আয়তন গঠন করে যে আয়তনের কারনে পরবর্তী পর্যায়ে পৃথিবীতে ম্যাগনেটিক ফিল্ড গঠন করে বায়ুমন্ডল সৃষ্টিতে সহায়ক হয়।
আয়াতের পরবর্তী অংশে বলা হয়। “তিনি দু’দিনে আসমানসমূহকে সাত আসমানে পরিণত করলেন। আর প্রত্যেক আসমানে তার কার্যাবলী ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন।” আয়াতের এই অংশের মাঝেও ব্যপক বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া যায়। আর সেটি হলো এই আয়াতে আসমান বলতে দুই টি সময়কাল অতিবাহিত করে বায়ুমন্ডলের সাতটি স্তর সৃষ্টির কথা বলা হলেও এই বায়ুমন্ডলের সৃষ্টির সাথে সবচেয়ে গুরুত্বর্ণ যে বিষয়টি জড়িত সে বিষয়টি হলো The Van Allan Belt নামক পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্র সৃষ্টির বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। এই চুম্বকক্ষেত্রের নিদির্ষ্ট পরিমান আকষর্নের কারনে বায়ুমন্ডল পৃথিবীর একটি নির্দীষ্ট সীমানা জুড়ে ব্যাপ্ত থাকে। আধুনিক বিজ্ঞানের প্রাপ্ত তথ্য থেকে যা জানা যায় পৃথিবীর আয়তন এর উপর ডিপেন্ড করে চুম্বক শক্তির আকষর্ন। অর্থাৎ দুটি গ্রহ এক হয়ে একটি গ্রহ হয়ে ঠিক সঠিক আয়তন না পেলে পৃথিবী পারফেক্ট ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা যথাযোগ্য চুম্বক শক্তি হতো না। আর সঠিক চুম্বক শক্তি সৃষ্টি না হলে বায়ুমন্ডলের স্তর বিন্যাস কোনভাবেই সম্ভব হতো না। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তি বা চুম্বক শক্তির আকষর্ন যদি নির্ধারিত ধ্রুবকের চেয়ে ০.১% বেশি হতো তবে অত্যাধিক মধ্যাকর্ষন এর চাপের কারনে পৃথিবীর বুকে কোন ভাবেই বায়ুমন্ডল সৃষ্টি হওয়া সম্ভব হতো না আবার যদি পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তি যদি নির্ধারিত ধ্রুবকের চেয়ে ০.১% কম হতো তবে পৃথিবীকে ঘিরে বায়ুমন্ডলের বলয় তৈরী না হয়ে বরং তা মহাশুন্যে উড়ে হারিয়ে যেতো। ফলে বায়ুমন্ডলের এই অভাবে পৃথিবীর বুকে কখনই ঘটতো না কার্বন ভিত্তিক নান্দনিক প্রাণের মহাযাত্রা। আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ফ্রাংক প্রেস এবং সিলভার তাদের গবেষনার মাধ্যমে প্রাপ্ত ডাটার উপর ভিত্তি করে বলেন “পৃথিবীর আয়তন একে জীবনধারনের উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যদি পৃথিবীর আয়তন কিছুটা কম হতো তবে এটি এর বর্তমান বাযূমন্ডল ধরে রাখতে পারত না। কারন এর অভিকষিয় শক্তি গ্যাস সমূহকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হতো না। আবার যদি এর ভর কিছুটা বেশি হতো তবে এর শক্তিশালী অভিকর্ষীয় আকর্ষন শক্তির দ্বারা এটি বেশি পরিমান গ্যাস (ক্ষতিকর গ্যাস সমূহ) বায়ুমন্ডলে ধারণ করত। পৃথিবীর আয়তন এবং অভ্যন্তরের পদার্থ সমহের উপরও প্রাণীকুলের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। এইগুলো যদি এক বিন্দু এদিক ওদিক হতো তাহলে কোনভাবেই এ পৃথিবীতেই প্রানিকুলের আবির্ভাব ঘটতো না।
সঠিক অনুপাতের চুম্বক ক্ষেত্র তৈরী হতে দুটি সময়কাল অতিবাহিত হয়েছে। এই চৌম্বৈক ক্ষেত্র মহাবিশ্ব থেকে আসা মাত্র ০.১ % রেডিয়েশন পৃথিবীতে প্রবেশ করতে দেয় এবং বাকী অংশ রেডিয়েশন তা মহাশুল্যে ফেরত পাঠায়। সূর্য থেকে বিস্ফোরিত হয়ে ক্ষতিকর রে ধেয়ে চলেছে মহাকাশের দিকে৷ সেই সকল রে পৃথিবীর উপর আঘাত হেনে চলেছে ৷ আমাদের গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র সেই ধাক্কা সামলাচ্ছে৷ সুর্য্যরে মধ্যে প্রতি মুহুর্তে যে বিভিন্ন রাসায়নিক গ্যাসের মহাবিস্ফোরণ ক্রমাগত ঘটে চলেছে এবং বিভিন্ন শক্তি নির্গত হচ্ছে গামা রে, এক্স রে সহ এমন ভয়াবহ ক্ষতিকর রেডিয়েশন যদি আমাদের বায়ুমন্ডল এবং চৌম্বক ক্ষেত্র ফেরত না পাঠাতো তবে এই পৃথিবীতে প্রাণীকুল এর আর্বিভাব কোনভাবেই সম্ভব হতো না। ডঃ হাগরস্ ভ্যান এ্যালেন বেল্ট সম্পর্কে মন্তব্য করতে যেয়ে বলেছেন যে ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের পৃথিবীর ঘনত্ব পৃথিবীর সৌরমন্ডলে যে কোন গ্রহ উপগ্রহগুলোর চেয়ে সব থেকে বেশী । পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলের বৃহৎ নিকেল ও লৌহ স্তর এই চুম্বকীয় ক্ষেত্রের জন্যই সৃষ্টি হয় । এই চুম্বকীয় ক্ষেত্রই ভ্যান এ্যালেন বিকীরণ ঢাল বা রক্ষাকবচ তৈরী করে । যা পৃথিবীকে সমস্ত ধরনের বিস্ফোরনের ক্ষতিকারক বিকীরণের হাত থেকে রক্ষা করে বা করছে । The Van Allan Belt নামক এই প্রানীকূল রক্ষাকারী বুহ্যটি পৃথিবী হতে ১০০০ কি:মি: পযর্ন্ত বিস্তৃত যা পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ চুম্বক ক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত। পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ ভাগ বা এর কেন্দ্রের Iron Core (আইরন কোর) টির দুটি অংশ আছে Outer Core এবং Inner Core।Inner Core কঠিন পর্দাথ দ্বারা তৈরী এবং Outer Core তরল পদার্থ। এ দুটি লেয়ার পরস্পর বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে এবং তাদের এই ঘুর্ননের কারনে ভূচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরী হয়। এই চুম্বকীয় ক্ষেত্র বায়ুমন্ডলের স্তরকে ধরে রাখে এবং মহাজাগতিক কসমিক রেডিয়েশন হতে পৃথিবীকে প্রাণীকুল এবং বৃক্ষজগতকে রক্ষা করে।"তারা কী দেখেনা তাদের উপরের আকাশের দিকে, কিভাবে আমি তা সৃষ্টি করেছি ও তাকে সজ্জিত করেছি, এবং এতে কোনো ফাটল নেই।" যদি কোন ভাবেই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফাটল বা ছিদ্র থাকতো তাহলে গ্রীণ হাউজ এফেক্টের দ্বারা মহাবিম্বের আল্ট্রাভায়োলেট রে গামা রে প্রবেশ করে মুহুত্বের মধ্যে পৃথিবীর প্রাণীজগত বিনষ্ট করে দিতো। অতএব আসমান সৃষ্টি বলতে বায়ুমন্ডল সৃষ্টি সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে গুরুত্বপূন একটি বিষয় কারন আসমান সৃষ্টির সাথে প্রা্ণীজগতের অস্তিত্ব নিভর্রশীল।
এবার লক্ষ্য করুন ১১ নং আয়াতের পরবর্তী অংশ“ আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি।” আমি আর কোরআনে অসংখ্যবার লক্ষ্য করেছি কোন বিষয়বস্তু নিয়ে যদি অসম্পূর্ণতা থাকে তাহলে সেই সর্ম্পুনতা আনতে আল কোরআনে আরেকটি আয়াত নাজিল করা হয়ে থাকে। অনুরুপ একটি দৃষ্টান্ত ঘটেছে এই ক্ষেত্রে। বিষয়টিকে আরো সুন্দর ভাবে উপস্থাপিত করা আছে আল কোরআনে আরেকটি আয়াতে। “আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করিয়াছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং উহাদেরকে করিয়াছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং উহাদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি”। সুরা মূলক আয়াত নং ৫। আরবী এবং ইংরেজীতেও তুলে ধরলাম।
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
And we have, (from of old), adorned the lowest heaven with Lamps, and We have made such (Lamps) (as) missiles to drive away the Evil Ones, and have prepared for them the Penalty of the Blazing Fire.
খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় একটি কথা বলা আছে। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে ব্যপক বৈজ্ঞানিক তথ্য। আল্লা আকাশে এমন কিছু উপকরণ প্রদীপমালা রেখেছেন যা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করা যায়। বলুনতো প্রিয় পাঠক আকাশে বা উপরে এমনকি কোন উপকরণ আছে যা দিয়ে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করা যায়? শয়তান বলতে কি আজাজিল বা ইবলিশ বুজছেন নাকি? না। এই শয়তান আযাযিল বা ইবলিশ নয় এই শয়তানেরা মানুষরুপী শয়তান। লক্ষ্য করুন আল কোরআনের আরেকটি আয়াত -“আর যখন তারা মুমিনদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে ‘আমরা ঈমান এনেছি এবং যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের সাথে আছি। আমরা তো কেবল উপহাসকারী “। এ আয়াতে শয়তান বলতে মানুষেরই একটি শ্রেণিকে বোঝানো হয়েছে। এই শয়তান মনুষ্যরুপী শয়তানদেরকে বোঝানো হচ্ছে। শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ হিসেবে জলন্ত অগ্নির শাস্তি স্বরুপ আল্রাহ সৃষ্টি করেছেন েএস্টিরয়েড বেল্টের উল্কাপিন্ড ও গ্রহানসমূহ। এ গুলো কি পৃথিবীতে আঘাত হানে নাই? এমন বহু সভ্যতা ধ্বংশ হয়েছে উল্কাপিন্ড বা গ্রহানুর আঘাতে। গ্রহানুর আঘাতে ফলে ভুমিকম্প সুনামি বহু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে বিলীন হয়ে গেছে মনুষ্য সভ্যতা! আল কোরআনের এমন অসংখ্য জাতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যারা আল্লার ক্রোধে দ্বারা এস্টিরয়েডের আঘাতে ধ্বংশস্তুপে পরিনত হয়েছে, বিলীন হয়েছে। যার জলজ্যান্ত উদাহরন জর্দানের ডেড সী বা মৃত সাগরের স্থানটিতে। আল কোরআনে বলা আছে “৭৩. সূর্যোদয়ের সময় মহানাদ তাদের আঘাত করে। “৭৪. অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম ও তাদের ওপর কঙ্কর বর্ষণ করলাম। ৭৫. নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে। ৭৬. পথের পাশে ওই জনপদের ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান। (সুরা : হিজর)
আজ থেকে ৩১০০ বছল পূর্বে বর্তমান জর্দান ও ঈসরাইলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ডেড সী বা মৃত সাগরের স্থানটিতে ছিলো সদম ও গোমরাহ নগর। তারা উন্নতির চরম শিখরে উন্নীত হওয়ার কারণে সীমা লঙ্ঘনকারী জাতিতে পরিণত হয়েছিল। পূর্বেকার ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলির ন্যায় তারা চূড়ান্ত বিলাস-ব্যসনে গা ভাসিয়ে দিয়েছিল। অন্যায়-অনাচার ও নানাবিধ দুষ্কর্ম তাদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। এমনকি পুংমৈথুন বা সমকামিতার মত নোংরামিতে তারা লিপ্ত হয়েছিল, যা ইতিপূর্বেকার কোন জাতি এতটা ব্যাভিচার করতো না। লুত আঃ এই জাতিকে ক্ষ্যান্ত হতে বলে এবং আল্লার পথে আসতে বলে। এই সকল পাপ মুক্ত সুন্দর জীবন ব্যবস্থার কথা বলে। ক তারা সমূলে ধ্বংস হয়ে যায়। লুত (আ.)-এর জাতির পাপীদের ওপর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশাল এক গ্রহানুর আঘাত এসে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে এক শক্তিশালী ভূমিকম্প পুরো নগরটি সম্পূর্ণ উল্টিয়ে ধ্বংশস্তুপে পরিনত করে দেন পাশাপাশি আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো গ্রহানু নিক্ষিপ্ত হওয়ার ফলে সমগ্র সভ্যতা বিলীন হয়ে যায় এবং সেখানে একটি মৃত সাগরে পরনিত হয়। যা আজ ডেড সী নামে পরিচিত। ফিলিস্তিন ও জর্দান নদীর মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল অঞ্চলজুড়ে নদীর রূপ ধারণ করে আছে এটি। জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশ নিচু। এর পানিতে তেলজাতীয় পদার্থ বেশি। এই পানিতে কোন কিছু ডোবে না। এতে কোনো মাছ, ব্যাঙ, এমনকি কোনো জলজ প্রাণীও বেঁচে থাকতে পারে না। এ কারণেই একে ‘মৃত সাগর’ বলা হয়। সাদুম উপসাগরবেষ্টিত এলাকায় এক ধরনের অপরিচিত উদ্ভিদের বীজ পাওয়া যায়, সেগুলো মাটির স্তরে স্তরে সমাধিস্থ হয়ে আছে। সেখানে শ্যামল উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যার ফল কাটলে তার মধ্যে পাওয়া যায় ধুলাবালি ও ছাই। এখানকার মাটিতে প্রচুর গন্ধক পাওয়া যায়। এই গন্ধক উল্কাপতনের অকাট্য প্রমাণ। এ শাস্তি এসেছিল গ্রহানুর আঘাত, ভয়ানক ভূমিকম্প, সুনামি ও অগ্নি উদিগরণকারী বিস্ফোরণ আকারে। ভূমিকম্প সে জনপদকে ওলটপালট করে দিয়েছিল।
১২ নং আয়াতে “ আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।” তিনি আসমানকে প্রদীপমালা দিয়ে সজ্জিত করেছেরন বলেছেন আবার ১৩ নং আয়াতে বলা হচ্ছে। “এর পরেও যদি ওরা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে (ওদেরকে) বল, আমি তো তোমাদেরকে এক ধ্বংসকর শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেছি; যেরূপ শাস্তির সম্মুখীন হয়েছিল আ’দ ও সামূদ;”। তাহলে আদ ও সামুদ জাতিকে ধ্বংশ করা হয়েছিলো গ্রহানুর আঘাতে যে গ্রহানু সৃষ্টি করার কথা তিনি বলেছিলেন প্রদিপমালা রুপে। আল কোরআনকে বুঝতে হবে। আল কোরআনের রুপক অর্থ বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। আমি কি আপনাকে বোঝাতে পেরেছি? আপনি কি বুঝতে পারছেন সেই প্রদীপমালা কি যা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্য সৃষ্টি করা! বুঝলেন না! হামীম সিজদার পরবর্তী আয়াত শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ টা দিয়ে আদ ও সামুদ জাতিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিলো? বুঝলেন কি? আকাশে এমন কিছু প্রদীপমালা সৃষ্টি করেছেন যা দিয়ে পৃথিবীতে শয়তান দ্বারা প্রলুদ্ধ জাতি স্বত্ত্বা ধ্বংশ করে দেওয়া হয়। আল কোরআনের উল্লেখিত প্রদীপমালা বলতে উল্কাপিন্ড বা গ্রহানুর এস্টেরয়েড বেল্ট কাইপার বেল্ট সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।
(চলবে)
০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৪৩
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: পৃথিবিতে বছরে গড়ে ৬১০০ উল্কা মাটিতে এসে পড়ে, অর্থ দিনে প্রায় ১৭টা । আর অনেক বড় বড় অনেক উল্কার আঘাতের চিন্হ এখনো আছে। এই গুলি যদি শয়তানের জন্য হয়ে থাকে তবে বাকি গুলি কোন শয়তানের জন্য পাঠানো হয়েছিলো।
চাদের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন উল্কার আঘাত খুবই একটা সাধারন ঘটনা মহাবিশ্বের জন্য। শয়তানের জন্যই এইগুলি পাঠানো হয় না। চাদ বা অন্য গ্রহে কোন শয়তানের জন্য ঊল্কাগুলি পাঠানো হয়েছিলো? একটা শাধারন ঘটনাকে কেন অলৌকিক রং মাখাচ্ছেন?
মানুষের কোটি খানেক শুক্রানু মাঝে ১টি শুক্রানু দিয়ে সন্তান উৎপাদন হয় কেনো? অথবা শ খানেক ডিএনএ মাঝে একটি/দুটি কোডিং ডিএনএ হয় কেনো? ৯৮/৯৯ % নন কোডিং ডিএনএ হয় কেনো? প্রতিটা গ্রহানু দিয়ে শয়তান রুপি মানুষ মারতে হবে এমন কথা আছে নাকি? বিজ্ঞান মনস্ক হবার চেষ্টা করেন। উদার মন দিয়ে যাচাই করেন। ধর্ম বিরোধীতা করতে হবে এ মানুসিকতা পরিহার করার চেষ্টা করুন।
২| ০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৪৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নাস্তিকদের কথা আমলে নিবেন না।
ওদেরকে ওদের মতো থাকতে দিন।
ওরা হেদায়েত প্রাপ্ত নয়। আল্লাহ ওদের
হেদায়েত দান করুন।
নিজের লেখাও কপি পেষ্ট!
লজ্জা কই রখি!
০৬ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:১৭
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। নিজের লেখাও নাকি কপি! কি প্রশ্ন আর কি উত্তর দেবো? রাগে কমেন্ট ডিলেট করে দিয়েছি। কি এ্যানসার দিবো বলেন তো ভাই?
৩| ০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৪৯
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: আমার লেখার কোন অংশ যদি আমি এ লেখাতে কপি করি তাহলে কারো কি যাই আসে নাকি? ব্যাটা নাস্তিক কি বলে? প্রমান করুন আমার ভূল? আসমান জমিন নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করতে নাস্তিকবৃন্দের কাছে অনুরোধ করছি।
৪| ০৬ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৭
ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: কারে কইলেন? ? নুতন নাস্তিক নন।
০৬ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:১৩
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: আমি নুতনকে বলি নাই। অন্য এক বেটা নাস্তিক আমাকে কমেন্ট করে বলে আমি আমার অন্যে এক লেখার কিছু অংশ নাকি কপি করেছি। আচ্ছা বলেন তো ভাই আমার অন্য কোন লেখার কিছু অংশ যদি এ লেখাতে কপি করি তো সমস্যা টা কোথায়? আমি ঐ বেটার কমেন্ট ডিলেট করে দিয়েছি। উনি ক্যাচাল করার জন্য কমেন্ট করে। আমি এই একটি বিষয় বোঝানোর জন্য ধারাবাহিক ভাবে লিখছি। অতএব অন্য কোন সংখ্যা বিষয়টি থাকতেই পারে। বিভিন্ন নাস্তিকের ভিডিও লিংক দিয়ে তাদের বক্তব্য গুলো প্রতি বক্তব্য দিচ্ছি। সেটা পাঠক বুঝে নিবে।
৫| ০৬ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ রব্বুল আলামিন আপনাকে ভালো রাখুক।
০৬ ই জুন, ২০২২ রাত ১০:১২
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: ধন্যবাদ রাজী নুর ভাই। আল্লাহ আপনাকেও ভালো রাখুক। জগতের সময় আমার জীবনের ডিজাইন করেছে। ডিজাইনই জানে আমার ভাগ্যে কি আছে? জানিনা আপনার দোয়া কবুল হবে কিনা?
০৬ ই জুন, ২০২২ রাত ১০:১৩
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: আপনিও ভালো থাকুন।
৬| ০৬ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:৫৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। নিজের লেখাও নাকি কপি! কি প্রশ্ন আর কি উত্তর দেবো? রাগে কমেন্ট ডিলেট করে দিয়েছি। কি এ্যানসার দিবো বলেন তো ভাই?
জবাব দেবার দরকার নাই। শুধু আল্লাহার কাছে তার হেদায়েতের জন্য দোয়া করুন
@রাজীব নূর বলেছেন: আল্লাহ রব্বুল আলামিন আপনাকে ভালো রাখুনকজান
খানসাব কি হজ্জ করতে যাচ্ছেন?
আল্লাহ আপনার নেক আশা কবুল করুন!
আমিন
১১ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:৪৩
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:০৬
নতুন বলেছেন: খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় একটি কথা বলা আছে। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে ব্যপক বৈজ্ঞানিক তথ্য। আল্লা আকাশে এমন কিছু উপকরণ প্রদীপমালা রেখেছেন যা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করা যায়। বলুনতো প্রিয় পাঠক আকাশে বা উপরে এমনকি কোন উপকরণ আছে যা দিয়ে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করা যায়? শয়তান বলতে কি আজাজিল বা ইবলিশ বুজছেন নাকি? না। এই শয়তান আযাযিল বা ইবলিশ নয় এই শয়তানেরা মানুষরুপী শয়তান। লক্ষ্য করুন আল কোরআনের আরেকটি আয়াত -“আর যখন তারা মুমিনদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে ‘আমরা ঈমান এনেছি এবং যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের সাথে আছি। আমরা তো কেবল উপহাসকারী “। এ আয়াতে শয়তান বলতে মানুষেরই একটি শ্রেণিকে বোঝানো হয়েছে। এই শয়তান মনুষ্যরুপী শয়তানদেরকে বোঝানো হচ্ছে। শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ হিসেবে জলন্ত অগ্নির শাস্তি স্বরুপ আল্রাহ সৃষ্টি করেছেন েএস্টিরয়েড বেল্টের উল্কাপিন্ড ও গ্রহানসমূহ। এ গুলো কি পৃথিবীতে আঘাত হানে নাই? এমন বহু সভ্যতা ধ্বংশ হয়েছে উল্কাপিন্ড বা গ্রহানুর আঘাতে। গ্রহানুর আঘাতে ফলে ভুমিকম্প সুনামি বহু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে বিলীন হয়ে গেছে মনুষ্য সভ্যতা! আল কোরআনের এমন অসংখ্য জাতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যারা আল্লার ক্রোধে দ্বারা এস্টিরয়েডের আঘাতে ধ্বংশস্তুপে পরিনত হয়েছে, বিলীন হয়েছে। যার জলজ্যান্ত উদাহরন জর্দানের ডেড সী বা মৃত সাগরের স্থানটিতে। আল কোরআনে বলা আছে “৭৩. সূর্যোদয়ের সময় মহানাদ তাদের আঘাত করে। “৭৪. অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম ও তাদের ওপর কঙ্কর বর্ষণ করলাম। ৭৫. নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে। ৭৬. পথের পাশে ওই জনপদের ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান। (সুরা : হিজর)
পৃথিবিতে বছরে গড়ে ৬১০০ উল্কা মাটিতে এসে পড়ে, অর্থ দিনে প্রায় ১৭টা । আর অনেক বড় বড় অনেক উল্কার আঘাতের চিন্হ এখনো আছে। এই গুলি যদি শয়তানের জন্য হয়ে থাকে তবে বাকি গুলি কোন শয়তানের জন্য পাঠানো হয়েছিলো।
চাদের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন উল্কার আঘাত খুবই একটা সাধারন ঘটনা মহাবিশ্বের জন্য। শয়তানের জন্যই এইগুলি পাঠানো হয় না। চাদ বা অন্য গ্রহে কোন শয়তানের জন্য ঊল্কাগুলি পাঠানো হয়েছিলো? একটা শাধারন ঘটনাকে কেন অলৌকিক রং মাখাচ্ছেন?
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_impact_craters_on_Earth
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_impact_craters_on_Earth
আগের মানুষ অন্য উল্কার আঘাতের কথা জানতো না তাই সেইগুলি নিয়ে কাহিনি বানায় নাই।