নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।
মহাবিশ্বটা একটি কম্পিউটার সিমিলিউশন করা একটি থ্রিডি প্রিন্ট বা মুভি। আধুনিক বিজ্ঞানের গ্রহনযোগ্য কিছু মতবাদের মধ্যে এটি একটি। আমরা যেমন কার্টৃন ছবি টিভি স্কিনে দেখি। ঠিক অনুরুপ টিভির স্কিনের প্রতিটি পিক্সেলের অনুরুপ মহাবিশ্বের প্রতিটি ডট বা সর্বশেষ মৌলিক অস্তিত্বের একটি প্লাংক স্কেল আছে । প্রত্যেক পরিমান যোগ্য ভৌত পরিমান প্ল্য্ংক স্বেল দ্বারা গঠিত। এবং মহাবিশ্ব প্রতিষ্ঠিত একটি স্কিনের উপর যার উপরেই এই মহাবিশ্ব এর সকল বস্থু বিদ্যমান। যদিও আধুনিক বিজ্ঞান মহাজাগতিক একটি ফিল্ডের সন্ধান পেয়েছে যাকে আমরা বলে থাকি হিগস্ ফিল্ড। এই হিগস ফিল্ডের মধ্যে বস্তু ভর পায়। বিজ্ঞানীদের মতে, মহাবিশ্ব সৃষ্টি ১২টি বেসিক বিল্ডিং ব্লক নিয়ে। একটা দালানের বিল্ডিং ব্লক যেমন ইট পাথর সুড়কি। ঠিক তেমনি মহাবিশ্ব গঠিত ১২টি বেসিক এলিমেন্টস দিয়ে। এর মধ্যে অন্যতম একটা এলিমেন্ট হচ্ছে 'হিগস্-বোসন' কনা বা ঈশ্বর কনা। বিল্ডিং ব্লক বা মৌলিক কনা হচ্ছে সেসব কণা যাদের ক্ষুদ্রতর কোন ভিত্তি বা গাঠনিক একক নেই। বিজ্ঞানী পিটার হিগস্ এর নামানুসারে এর নামকরন করা হয়। এটা এমন একটা উপাদান, যার সাহায্যে ভরের উৎপত্তি জানা যায়। ধারনা করা হয় বিগ ব্যাং এর সাথে সাথে কিছু কণার উৎপত্তি হয়,যেগুলি ছিলো ভরহীন। মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু ভরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এ ভর কোথা থেকে আসে? এর সৃষ্টি-ই বা কোথায়? আর কোথায়-ই বা তা মিলিয়ে যায়? এতদিন ‘হিগস-বোসন’ কণার অবস্থান ছিল পদার্থবিদ্যার অপ্রমাণিত গাণিতিক একটি সমীকরণ মাত্র। এই অদৃশ্য ভর ছাড়া মহাবিশ্বের যাবতীয় বস্তুর স্বাভাবিক উপস্থিতি এবং আচরণ সত্যিই অলৌকিক। একে অলৌকিক তত্ত্ব বলা ছাড়া আর কোনো ভাষা পদার্থবিদ্যায় জানা ছিল না। তাই একে অনেক বিজ্ঞানী ‘ঈশ্বরকণা’ বলেই অভিহিত করেন। মহাব্শ্বি নামে 12 টি উপাদানের অন্যতম 1টি উপাদান হলো হিগস কনা বা ঈশ্বর কনা। এই কনা যে ক্ষেত্র বিদ্যমান সে সকল ক্ষেত্রে অন্য 11 টি কনিকা মিথস্ক্রিয়া ঘটিয়ে বস্তু হিসেবে আর্বিভূত হয়। যেখানে হিগস কনা নেই সেখানে বস্তু উৎপাদিত হয় না। অথাৎ সেখানে মহাজাগতিক রঙ্গমঞ্চ দেখা যায় না। এই হিগস বোসন কনাই মহাজাগতিক পর্দা অথবা মহাজাগতিক মঞ্চ হিসাবে বলতে পারি। কারন এই পর্দার উপর মঞ্চয়িত হয় মহাজাগতিক এই রঙ্গমঞ্চ।
মহাবিশ্বটায় যদি এরকম একটা নিদীষ্ট পর্দা উপস্থিত থেকে থাকে এবং সেই পর্দায় উপর বস্তুর প্রক্ষিপ্ততা থেকে থাকে সিমুলেশন বা সিমুলেটেড করা কিছু হয়ে থাকে তাহলে এখন প্রশ্ন হলো এই মহাবিশ্ব কিভাবে বর্ধিত হয়। কিভাবে নিদীষ্ট সময় পর পুরানো আপনা আপনি ধ্বংশপ্রাপ্ত হয়ে সে স্থলে নতুন কিছুর আগমন হয়। মহাজাগতিক পর্দা বলতে আমরা আরো সহজে বলতে পারি যে সকল স্থানে বস্তুর আর্বিভাব ঘটে। ধরি আমরা হিগস্ ফিল্ড। হিগস ফিল্ড এর উপর শুধুমাত্র বস্তু তার ভর পা্য়। অথচ যেখানে হিগস ফিল্ড অনুপস্থিত সেখানে বস্তুর কোন উপস্থিতি নেই। কারন ভর বিহীন কোন বস্তু হতে পারে না। এমনি একটি ফিল্ড বা নিদীষ্ট ত্রিমাত্রিক স্থানের উপর সিমুলেটেড করা সময়ের প্রতিচিত্র প্রতিফলিত হয়। উদাহরন স্বরুপ আমি আপনাদের দ্বীমাত্রিক একটি চিত্রের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝতে সহায়তা করি
বাম পাশের চিত্রটির দিকে লক্ষ করুন। অসংখ্য ডট ডট । এগুলো টিভির স্ক্রিনের পিক্সেল যা টিভির অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ যা বস্তুর রং ধারন করে। এই এক একটি পিক্সেল টিভি স্কিনের এক একটি প্লাংক স্কেল। টিভি স্কিনের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ হিসাবে নির্দীষ্ট ডট রং ধারন করে। বিভিন্ন চিত্র প্রতিফলিত করে। যেমন ধরেন বাম পাশের চিত্রে শুধু ডট কিন্তৃ ডান পাশের চিত্রে রয়েছে মোনালিসার সেই বিখ্যাত চিত্রটি। বাম পাশের চিত্রটিতে শুধু পিক্সেলের ডট অথচ ডান পাশে মোনালিসার চিত্র। টিভি স্কিন এখানে রং ধারন করেছে। মোনালিসার দেহের যেখানে হলুদ রং দরকার পিক্সেল সেখানে হলুদ রং দিয়েছে, যেখানে চূলের কালো-খয়েরী রং দরকার সেখানে খয়েরী রং এবং পিছনের দৃশ্যপটের গাছগাছালরি সবুজ রং সেখানে সবুজ রং ধারন করেছে পিক্সেল তার সরবরাহকৃত তথ্য অনুসারে রঙ এর সেজেছে। টেলিভিশনের স্কিনের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এর ভিতরই কেবলমাত্র চিত্র প্রতিফলিত হয় ঠিক যতটা স্থানে পিক্সেল নির্ধারিত আছে অথাৎ যতটুকু স্থান রং ধারন করার মত সক্ষমতা আছে ততটুকু স্থানই তার চিত্রের প্রতিফলিত হয়। টিভি স্কিন কোন চিত্র তৈরী করতে পারে না। চিত্রের যা কিছু নেটওয়ার্ক বা চ্যানেল তাকে সরবরাহ করে। যেমন ডিশ টিভি চ্যানেল যে চিত্র সরবরাহ করে অথবা কোন ভিডিও প্লেয়ার যে চিত্র সরবরাহ করে তাই কেবলমাত্র টিভি স্কিন প্রতিফলিত করে।
চলমান চিত্র বা চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে সময় নামের একটি বিষয় অতিবাহিত হয়। সময় এখানে ফ্রেমিং কম্পোজিশনের মাধ্যমে অতিবাহিত হয়। ধরেন আমরা একটি চলচ্চিত্র দেখছি। কিন্তু কিভাবে দ্বিমাত্রিক চিত্রকে গতিশীল চিত্রে পরিনত করা সম্ভব। সম্ভব হয়েছে গতিশীল চলচ্চিত্র ক্যামেরার কারনে। অসংখ্য ফ্রেম একের পর এক নির্দীষ্ট সময় পরপর প্রক্ষপ্তিত হওয়ার কারনে স্থিরচিত্র চলমান বলে মনে হয়। চলচ্চিত্র ক্যামেরা প্রতি সেকেন্ডে 24 টি চিত্র ধারাবাহিকভাবে উঠিয়ে থাকে এবং 24 টি চিত্র ধারাবাহিকভাবে প্রক্ষিপ্ত হওয়ার কারনে স্থির চিত্রগুলো দেখলে গতিশীল চিত্র বলে মনে হয়। ধরেন আপনি আপনার হাত উপর থেকে নীচে নামাচ্ছেন এই এ্যাকশন ঘটনাটি চলচ্চিত্রায়িত করতে চান। এবং এ ঘটনাটি ঘটাতে আপনার 5 মিনিট সময় লাগবে। আপনি ক্যামেরার সামনে দাড়ালেন ক্যামেরা অন হলো আপনি আপনার হাত উচু থেকে নীচুতে নামাতে শুরু করলেন। ক্যামেরা ম্যান 10 সেকেন্ড সময় আপনার হাত উচু থেকে নীচুতে নামানোর ঘটনাটি শ্যুট করলো। এবার আপনি যখন এই নেগেটিভ ইমেজটি ডেভেলপ এবং আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে পজিটিভ ইমেজ হবে তখন দেখবেন ওখানে প্রথম ইমেজে আপনার হাতটি যে অবস্থানে আছে দ্বিতীয় চিত্রে হাতটি ঠিক তার একটু নীচে আছে পরবর্তী চিত্রে হাতটি আরো নীচে। আর এভোবেই একের পর এক ইমেজে হাতটি নীচ থেকে নীচের দিকে যাচ্ছে। এইভাবে 240 টি স্থির চিত্র রয়েছে যেগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো। অথাৎ হাত উপর থেকে নীচে নামানোর এ্যাকশনটি 240 টি স্থির চিত্রের সমারোহে যার প্রত্যেকটি আলাদা চিত্র। আর এই 240 টি চিত্র প্রতি সেকেন্ডে 24 টি গতিতে যখন প্রদশিত হচ্ছে তখন মনে হচ্ছে যে চলমান চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। 1 সেকেন্ডে 24 টি স্থির চিত্র প্রদর্শন করার কারনে পর্দায় সময় সৃষ্টি হয়েছে সৃষ্টি হয়েছে স্থিরের গতিশীলতা।
পাঠক, আমি এতক্ষন ধরে দ্বিমাত্রিক টিভি স্কিনের সম্পর্কে এবং কিভাবে চলচ্চিত্র টিভিতে প্রদর্শিত হয় সেই সম্পর্কে বললাম কিন্ত্র এই মহাবিশ্বটি ঠিক সেরকম নই। মহাবিশ্বটা তো দ্বিমাত্রিক নয় অতএব এক্ষেত্রে দ্বিমাত্রিক পর্দাতে চিত্রের কল্পনা করে লাভ নেই। কারন এই মহাবিশ্ব ত্রিমাত্রিক।যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা আছে। এই দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতার মাঝে যেখানে হিগস্ কনিকা রয়েছে সেখানেই বস্তু ভর পায়। এই হিগস ফিল্ড একটি ক্ষুদ্র কনা দ্বারা ভরপুর। যে কনাকে আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় “গড পার্টিকেল” বলা হয়ে থাকে।এই ঈশ্বর কনা ভরপুর স্থানকেই হিগস্ ফিল্ড বলা হয়। এবং এই স্থানকেই কেবলমাত্র আমরা মহাবিশ্ব নামক চলচ্চিত্রের পর্দা বলে অভিহিত করতে পারি। যার উপর প্রদর্শিত হচ্ছে মহাবিশ্ব নামক এই চলচ্চিত্র। যার অভিনেতা হিসাবে যুগে যুগে অসংখ্য মানুষ আমরা জন্মেছি, এবং জন্মে চলেছি বংশধারা অক্ষুন্ন রেখে চলেছি চলমান এক ধারাবাহিকতায়। মহাবিশ্ব নামক এই চলচ্চিত্রে “সময়” একটি মাত্রারুপে আত্বপ্রকাশ করেছে। এবং এই সময়ই ত্রিমাত্রার এই মহাবিশ্বকে সর্বদা পরিবর্তন করে নতুনের দিকে ধাবিত করে। প্রতিটি প্লাংক স্কেল ধরে নিলে আমরা মহাজাগতিক সময় এর গতিশীলতা উপলদ্ধি করতে পারবো।
প্রফেসর এডওয়ার্ড ফ্রেডকিন একজন কম্পিউটার জিনিয়াস তিনি একটি খেয়ালি তত্ত্ব প্রদান করেছেন তার তত্ত্বের নাম দিয়েছেন Digital Physics।তিনি গুরুত্বপূণ একটি বই লিখেছেন শুধু তাই নয় তার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে একটি হাইপোথিসিস রয়েছে । এর “ফিনিট নেচার” হাইপোথিসিস অনুযায়ী তার বক্তব্য হলো “ স্থান কাল সসীম সংখ্যক বিচ্ছিন্ন উপাদান দ্বারা গঠিত।” এডওয়ার্ড ফ্রেডকিন এর ধারনা স্থান-কাল আসলে বিচ্ছিন্ন এবং সসীম। প্রত্যেক পরিমান যোগ্য ভৌত পরিমান প্ল্য্ংক স্বেল দ্বারা গঠিত। স্থান কাল সসীম সংখ্যক বিচ্ছিন্ন উপাদান দ্বারা গঠিত হলে স্থান-কালে নির্দিষ্ট অঞ্চল ধারনকৃত তথ্যের পরিমান সসীম হবে অপরদিকে নিরবচ্ছিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট অঞ্চলে তথ্যের পরিমান অসীম। লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটি নামে মহাকর্ষের একটি কোয়ান্টাম তত্ত্বে “সময় বিচিছন্ন ভাবে চলমান” । প্ল্যাংক সময় হচ্ছে বিচ্ছিন্ন একক অনেকটা সিএতে ধাপে চলা সময়ের মতো। লুপ কোয়ান্টাম গ্লাভিটি মতে ক্ষেত্রফল এবং আয়তনও কোয়ান্টায়িত, প্ল্যাংক ক্ষেত্রফল এবং প্ল্যাংক আয়তন অনেকটা সিএ এর সেলুলার স্পেসের মতো।
সেলুলার অটোম্যাটার সাথে মহাজাগতিক সামঞ্জস্যতার কি এমন কারন আছে? কেনো সিএ বিষয়টি নিয়ে গবেষনা শুরু হয়? কারন মহাবিশ্ব এর দিকে তাকায়ে যখন মানুষ দেখতে পাই যে এ মহাবিশ্বের সমস্ত কিছু কেমন যোনো নিজ থেকেই উতপত্তি হয়।যেমন আমরা মানুষ অথবা প্রানি সন্তান উতপাদন করে। নক্ষত্র জগত ঠিক একই ভাবে নিজেরাই নিজেদের উতপাদন করে। এই মহাবিশ্ব বর্ধিত হচ্ছে নিজেরা নিজেদের বর্ধিত করে। আমরা যারা মানুষ দেহের কোষ উতপাদনের বিষয় অবগত আছি তারা জানি একটি কোষ আরেকটি প্রতিলিপি কোষ তৈরী করে। এইভাবে প্রতিটি কোষ 80 বার নিজেকে বিভক্ত করে বর্ধিত করে। ঠিক এইভাবেই মহাবিশ্ব বর্ধিত হচ্ছে নিজেই নিজেদের সৃষ্টি করে। এই বিষয়টিই সেলুলার অটোমেটা বা কোষিয় স্বয়ংচল যন্ত্র উদঘাটিতের পথে এগিয়ে দেয়। ১৯৪৭ সালের দিকে জন ভন নিউম্যান (১৯৩০-১৯৫৭) এমন এক ধরনের যন্ত্রের কথা চিন্তা করলেন যা নিজেই নিজের প্রতিলিপি তৈরী করতে পারবেন। এরকম একটি যন্ত্রকে প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় জিনিষ দিয়ে একটি কক্ষে ছেড়ে দিলে নিজের মতো আরেকটি যন্ত্র তৈরী করে ফেলবে। তখন ঐ দুটি যন্ত্র পৃথকভাবে আরো চারটি যন্ত্র তৈরী করে ফেলবে। আর এভাবেই বাড়তে থাকবে। এধরনের যন্ত্রকে এখন ভন নিউম্যান মেশিন বলা হয়। ভন নিউম্যানের সেই নিজ প্রতিলিপি নির্মানকারী যন্ত্রেও সেলুলার মডেলই ছিলো সেলুলার অটোমেটা ( Cellular Automata) বা কোষীয় স্বয়ংচল যন্ত্র বা সি.এ (C.A) । একটা একমাত্রিক কোষীয় স্থান বা সেলুলার স্পেস (cellular space) হচ্ছে এক রেখায় সারিবদ্ধ কোষ। একটি দ্বিমাত্রিক সিএ ধারাবাহিক পরিবর্তনে ত্রিমাত্রিক আকৃতি সৃষ্টি করে। এই দ্বিমাত্রিক সিএ এর ত্রিমাত্রিক রুপায়ন মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে হতে পারে। সিএ গুলো যেমন সরল কিছু নিয়ম দ্বারা পরিচালিত। প্রাকৃতিক।
আমাদের মহাবিশ্বটা হাইপার ডাইমেনশনাল সেলুলার স্পেসে অবস্থিত কিনা তা বোঝা যায় “জীবনের গেম” নামক সি এর কোষগুলোর পরিবর্তন এবং বিভাজনের মাধ্যমে। জীবিত কোষের গঠন ও মুছে যাওয়া এ হিসেব নিকেষ দ্বারা আমরা সহজেই বুঝতে পারবো মহাবিশ্বের বস্তুর গঠন ও শুন্যতা নামক এর্নাজি প্রকাশের মাধ্যমে। সিএ গুলো যেমন বিভিন্ন নিয়ম দ্বারা গঠিত ঠিক তেমনি মহাবিশ্ব কিছু নিয়ম দ্বারা পরিচালিত। স্থান কাল যদি নিরবচ্ছিন্ন না হয়ে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট উপাদান দ্বারা গঠিত হয় তাহলে মহাবিশ্বটা একটা প্রকান্ড কম্পিউটারে চলমান সিএ হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। ১৯৭০ সালে সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনে একটি কলাম প্রকাশিত হয়। সেই কলামে জন কনওয়ে দ্বিমাত্রিক সিএ এর নামকরন করেন গেম অফ লাইফ” (Game of life) বা জীবনের খেলা। স্টিফেন হকিং তার গ্রান্ড ডিজাইন বইতে গেম অফ লাইফ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন মহাবিশ্বেও সাদৃশ্যময়তা নিয়ে। “ এটা (মহাবিশ্ব) যদি সসীম হয়। এই সসীমতা এখনও প্রমান করা বাকী। তাহলে এটা হবে মহাবিশ্বের এমন এক রুপায়ন, যে মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করে। আর আমরা বাধ্য হয়েই এই মহাবিশ্বের একটি অংশ কারন এ ছাড়া আর কোন সুসংহত রুপায়ন নেই।” ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং অনুমান করছেন এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে।
আমরা না হয় মেনে নিলাম মহাবিশ্ব সিএ প্যার্টানের উপর ভিত্তি করে নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করছে। কিন্তু খটকা লাগে ধারাবাহিকতা এবং তথ্যসমূহের নির্দেশনা আসে কোথা থেকে? কিভাবে? প্রতিটি বস্তু তার দায়িত্ব পালন করছে আর এই দায়িত্ব পালনের কমান্ডিং কোন কিছু আছে কি? নাকি এই মহাবিশ্ব নিজেই একটি প্রান বা জীবন? যার নিজস্ব স্বকমান্ডিং প্রক্রিয়া তাকে তথ্য সরবরাহ করে। এডুয়ার্ড ফ্রেডকিন এ বিষয়ে তার হাইপোথিসিস এ উল্লেখ করেন “তিনি এই মহাবিশ্বকে কম্পিউটার এবং তার সফটওয়ারের মতো সুন্দর ডিজাইন করেই নির্মান করা একটি মহান বুদ্ধিমত্তা ও অসাধারন জ্ঞানের ফসল বলেই অভিহিত করেন। তিনি সেলুলার অটোমেশনের প্রযুক্তির উদাহরন দিয়ে বলেছেন এরকমই এমন একটি মৌলিক পর্যায়ে অনু, পরমানু, ইলেকট্রন কোয়ার্কদের সম্পর্কে গুরুতর তথ্য প্রদান করে। ভিত্তিগত পর্যায়ে এই অটোমেশন বস্তুজগত এর আইনকানুন কে ব্যাক্ষা করে। তার মতে তথ্য জগতে কোথাও না কোথাও এমন একটি যান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে যা সমগ্র মহাজাগতিক তথ্যকনাদের সুনিদির্ষ্ট লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট ধারাবাহিতকতায় সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত হবার মতো গুরুতর তথ্য সরবরাহ করে একটি একক আইন `The Cause of Prime mover of Everything’ দ্বারা এবং এই একক আইন দ্বারা মহাজাগতিক তথ্যকনিকারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। কারন হিসেবে তিনি একটি অতিজাগতিক শক্তির অবস্থানকে উল্লেখ করে গেছেন, যে অতিজাগতিক শক্তি কোথাও না কোথাও অবস্থান করে তথ্যকনাদের সকল প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে। তথ্যকনাদের কার্যক্ষম করার জন্য Command বা আদেশকে নির্নীত করে সেই অনুযায়ি নিয়ন্ত্রিত বা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে চালিকাশক্তি হিসেবে।” `The Cause of Prime mover of Everything’ দ্বারা যদি সমগ্র মহাবিশ্ব পরিচালিত হয় তাহলে সেই `The Cause of Prime mover of Everything’ ই এই জগৎের মন। সেই মনের ইচ্ছাতেই জগতের সময় অতিবাহিত হচ্ছে।
এডুয়ার্ড ফ্রেডকিন অবাক হন যে তথ্যকনারা কিভাবে কাজ করে? কিভাবে এক রুপ থেকে আরেক রুপে পরিবর্তিত হয়? তিনি তার `Finite Nature’’ বইতে এ সম্পর্কে যথেষ্ট আলোচনা করেছেন। তার বক্তব্য হলো “বস্তু বিভাজনে যে সর্বশেষ মৌলিক অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যাবে তাই তথ্য কনা এবং এই তথ্যকনারাই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রন করে বস্তু ও শক্তি। ফ্রেডকিনের মতে প্রতিটি বস্তু, প্রতিটি পদার্থই তথ্য বিন্যাসের দ্বারা সাজানো অথাৎ একটি ইদুর সেটিও তথ্য কনাদের বিন্যাসের সমষ্টি মাত্র। একটি ইলেকট্রন, একটি প্রোটন, একটি কোয়ার্ক Patern of information ছাড়া কিছুই নয়। ইনফরমেশন বিট গুলো যে কনফিগারেশনে রয়েছে কেবলমাত্র তারই বর্হিপ্রকাশ ঘটায়। অথাৎ বিটবিন্যাস পদ্ধতিকেই আমরা ইলেকট্রন, প্রোটন বা কোয়ার্ক নামে অভিহিত করে থাকি। আমরা যখন কোন বস্তুকে প্রত্যক্ষ করে থাকি তখন কেবলমাত্র information এর জমাট বদ্ধ রুপকেই প্রত্যক্ষ করে থাকি। আমরা মহাবিশ্বে যা কিছু দেখছি তার সমস্তটাই তথ্যবিন্যাস Binary bit of Information । তার মতে ‘বস্তু ও সংগঠন যত বড় হবে বা জটিল হবে তথ্যের বিন্যাস ও জটিলতা ততই বেড়ে যাবে। আমরা সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে যা দেখে থাকি সমস্তটাই কেবল তথ্য আর তথ্যের Patern of information’।
যদি তথ্য আর তথ্য যদি সর্বত্র থেকে থাকে তাহলে আমরা সম্ভবত এমন এক পর্যায়ে পৌছে গেছি যেখানে বস্তুর মূলে কি রয়েছে তা উপলদ্ধি করার কাছাকাছি অবস্থানে পৌছে গেছি। আধুনিক বিজ্ঞানের কোয়ান্টাম বিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে আবির্ভাব ঘটে ষ্ট্রিং থিওরি। ষ্ট্রিং থিওরি বলে প্রতিটি কনা একটি সুতার মতো ষ্ট্রিং এবং সেই ষ্ট্রিং এর কম্পনের ভিন্নতার কারনে প্রতিটি কনা তার নিজস্ব স্বকিয়তা পায়। ভিন্ন ভিন্ন কনা ভিন্ন কম্পনের কারনে হয়ে থাকে। কনাদের মেজাজ মর্জি আচরন স্থায়িত্ব সমস্তটাই কম্পন বা কনার নিজস্ব সুর দ্বারা নির্ধারিত হয়।স্থান কাল যেনো এক সুরের লহরী। স্থান কাল যদি নিরবচ্ছিন্ন না হয়ে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট উপাদান দ্বারা গঠিত হয় তাহলে প্রতিটি ক্ষেত্রই একটি কমান্ডিং সিষ্টেম এর মধ্য দিয়ে চলছে আর সেই কমান্ডিং বিষয়টিই ষ্টিং এর কম্পন দ্বারা নির্ধারিত। আর সেই কমান্ডিং প্রক্রিয়ার হলো ঘটমান কাল যা সৃষ্টির পূর্বের একটি পরিকল্পনা বা ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করে ।অথাৎ কিভাবে হবে, কি করে হবে, তার গঠন কাঠামো-বিন্যাস আচরন কেমন হবে, কতটা সময় পরে তার আর্বির্ভাব হবে। কতটা সময় ধরে হবে, স্থায়িত্ব কতটুকু সময়, কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে, কিভাবে পরিচালিত হবে সমস্ত বিষয়টি (তথ্য আর তথ্যের বিন্যাস রুপে) নির্ধারিত করা রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো সময় কি? আমরা যদি প্লাংক সময় ধরে নিয়ে স্থানকে কালের পরিবর্তিত বিভিন্ন প্লাংকের বিভিন্ন রুপ বলে থাকি সেক্ষেত্রেও কোন সমস্যা থাকে না।
উপরের চিত্রটির দিকে লক্ষ করুন। চার কোনা একটি বাক্স। যার মধ্যে মহাবিশ্ব। বিষয়টিকে আমরা টিভি স্কিনের পিক্সেল এর ন্যায় প্লাংক স্পেস কল্পনা করি। মনে করি প্রথম মাত্রাতে পূর্ব হতে পশ্চিম পযর্ন্ত আয়তনের মহাবিশ্বে পিক্সেল এর ন্যায় প্লাংক স্পেস রয়েছে । দ্বিতীয় মাত্রাতে অনুরুপ ভাবে উত্তর হতে দক্ষিন পযর্ন্ত অনুরুপ নিদীষ্ট প্লাংক স্পেস রয়েছে এবং এর সাথে আছে উপর থেকে নীচে উচ্চতা নামের আরেক মাত্রা বা তৃতীয় মাত্রার অনুরুপ নিদীষ্ট প্লাংক স্পেস রয়েছে। সেই হিসেবে ত্রিমাত্রার এই মহাবিশ্বের প্রতি বর্গ প্লাংক স্পেসের পরিবর্তন এবং পরিবর্ধন ঘটাতে থাকে। আর পরিবর্তন ঘটে প্রতি প্লাংক টাইমে। এই মহাবিশ্বের টোটাল টাইমকে বিভক্ত করে একটি নির্দীষ্ট টাইম হিসেবে ধরে প্লাংক টাইম নির্ধারন করা হয়েছে। প্রতি প্লাংক টাইম প্রতি স্পেসকে পরিবর্তন করে অথাৎ প্রতি প্লাংক টাইমে সমগ্র মহাবিশ্ব নতুন রুপে রুপান্তর হয়। এ্ভাবে প্রতিটি প্লাংক টাইম মহাবিশ্বকে নতুন রুপে দেয়। প্রতি প্লাংক টাইমেই এই রুপান্তর ঘটে। প্রতি প্লাংক টাইম প্রতিটি প্লাংক স্পেসকে ধরে ধরে সমগ্র মহাবিশ্বে একই সাথে রুপান্তর ঘটাতে থাকে। আলাদা আলাদা ভাবেই মহাবিশ্বের প্রতি প্লাংক স্পেস পরিবর্তিত ও রুপান্তর ঘটে। এভাবে প্রতি প্লাংক টাইম প্রতি প্লাংক স্পেসকে বিবর্তন করে। Ross Rhodes নামের আরেক গবেষক যিনি একই বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন তিনি অতীত থেকে বর্তমান এবং বর্তমান থেকে ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে বস্তুর পরিবর্তন সে সম্পর্কে বলেন-“We may ask how this change can be accomplished. In light of our assumption that time it self is discrete and step-wise, we are not permitted to imagine the information sliding or morphing from one state to the next; no, the information must be in one state in the present moment, and in another, different state in the next succeeding future moment. Moreover, the discrete nature of each separate property must effect a complete change from moment to moment, with no possibility of "transition." From one moment to the next -- from one time-step to the next -- the information must be transformed completely to a new and different, but equally finite, set of information describing the volume of space-time as it then exists.’ (Commentary on The Finite Nature Hypothesis of Edward Fredkin---Ross Rhodes)
সেলুলার অটোমেশন এর মতো বস্তু আর শুন্যস্থান (এনার্জি)এর আয়োজন এবং বিয়োজনের মাধ্যমে মহাবিশ্বকে প্রতি প্লাংক টাইম নতুন থেকে নতুন করে তোলে।যা পূর্বে থেকে নির্মান করা একপ্রকার কম্পিউটার সিমুলেশন করা কোন মুভির মতো কোন কিছু। সমস্তটাই পূর্বে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর সেই সৃষ্টিটাই কেবলমাত্র মহাবিশ্ব নামক পর্দায় প্রক্ষিপ্ত হচ্ছে। মহাবিশ্বটা কম্পিউটার জেনেলেটেড সিমুলেশন করার মতো এক প্রকারের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ছাড়া কিছুই নয়। “The Information Theoretic Metaphysics” এক নামের একটি গবেষনায় বিশিষ্ট কম্পিউটার বিজ্ঞানী Ross Rhodes বলেন-“This paper surveys evidence and arguments for the proposition that the universe as we know it is not a physical, material world but a computer-generated simulation -- a kind of virtual reality. The evidence is drawn from the observations of natural phenomena in the realm of quantum mechanics. The arguments are drawn from philosophy and from the results of experiment. While the experiments discussed are not conclusive in this regard, they are found to be consistent with a computer model of the universe. Six categories of quantum puzzles are examined: quantum waves, the measurement effect (including the uncertainty principle), the equivalence of quantum units, discontinuity, non-locality, and the overall relationship of natural phenomena to the mathematical formalism. Many of the phenomena observed in the laboratory are puzzling because they are difficult to conceptualize as physical phenomena, yet they can be modeled exactly by mathematical manipulations. When we analogize to the operations of a digital computer, these same phenomena can be understood as logical and, in some cases, necessary features of computer programming designed to produce a virtual reality simulation”
বিশিষ্ট কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের গবেষনা অনুসারে যদি ভাবতে হয় মহাবিশ্বটা কম্পিউটার সিমুলেশন করা ধরনের অথবা 3d কাটুনের মতো। যদি তাই হয়ে থাকে তবে এটা মেনে নিতে হয় মহাবিশ্বটি পূর্ব থেকেই নির্মান করা কোন বিষয় এবং নি:সন্দেহে তার নিমার্তার প্রশ্ন চলে আসে? আর সেই নির্মাতার আলাদা কোন অস্তিত্ব থাকতে হবে! যিনি মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করে মহাজাগতিক পর্দাতে প্রতিফলিত করছেন মাত্র। আমরা সকলে এই মুভির একেক জন অভিনেতা। এবং আমরা নিজেরাই নিজেদের মহাবিশ্ব নামক মঞ্চে আগমনের বন্দোবস্ত করছি। এভাবেই মহাবিশ্ব মঞ্চায়নের শেষ হবে। যা পূর্ব থেকেই নির্ধারিত।সেলুলার অটোমেশন প্রক্রিয়ার যদি মহাবিশ্বের আর্বিভাব ঘটতে হয় তাহলে সৃষ্টির শুরুতে একটি মাত্র সেল গঠনেই জরুরী ছিলো। একটি সেল প্রবৃদ্ধি ঘটিয়ে অসংখ্য সেলের পূণৎপাদন ঘটিয়ে মহাবিশ্বের সৃষ্টির সূচনা ঘটানো সম্ভব।
ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং অনুমান করছেন এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে। তার গ্রান্ড ডিজাইন বইতে তিনি উল্লেখ করেছেন “ এটা (মহাবিশ্ব) যদি সসীম হয়। এই সসীমতা এখনও প্রমান করা বাকী। তাহলে এটা হবে মহাবিশ্বের এমন এক রুপায়ন, যে মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করে। আর আমরা বাধ্য হয়েই এই মহাবিশ্বের একটি অংশ কারন এ ছাড়া আর কোন সুসংহত রুপায়ন নেই।” ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং এর গ্রান্ড ডিজাইন বইতে তিনি নিজেই বলছেন “ কনওয়ের জীবনের খেলা থেকে দেখা যাচ্ছে যে একেবারে সরলতম এক সেট জটিল সব বৈশিষ্টের বিকাশ ঘটাতে পারে যেটা বুদ্ধিমান জীবনের সমতুল্য। নিশ্চয় এধরনের বৈশিষ্ট সমৃদ্ধ এমন অনেক সেট নিয়ম সম্ভব। প্রশ্ন আসে আমাদের মহাবিশ্বকে চালনাকারী মৌলিক নিয়ম (প্রকাশ্য নিয়ম সমূহ নয়) কিভাবে নির্ধারিত হলো? কনওয়ের মহাবিশ্বের মতো আমাদের মহাবিশ্বের বিবর্তনও একটা নির্দীষ্ট অবস্থা থেকে এসব নিয়ম মেনেই ঘটে। কনওয়ের জগতে আমরাই হচ্ছি সৃষ্টিকর্তা। যারা ঐ মহাবিশ্বের আদি অবস্থায় বস্তুসমূহের অবস্থান ও প্রকৃতি নির্ধারন করে দিচ্ছি।”
সুধী পাঠক, একবার ভেবে দেখুন মৌলিক নিয়ম সমূহ আসলেও কিভাবে নির্ধারিত হলো? কে এই নিয়ম বা বিধান কে নির্ধারন করলো। এই মহাবিশ্ব কি করে এত সুন্দর নিয়মের অধীন হয়ে ফাইন টিউনিং এর সামঞ্জস্যতা রেখে এই প্রানী জগতের বিকাশে ভূমীকা রাখতে পারে। নি:সন্দেহে অতি জাগতিক এটি শক্তির হস্তক্ষেপ এখানে বিদ্যমান। “বিধান তাহার এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।” (২৮:৮৮) এই আয়াতে সরাসরি ঘোষিত হচ্ছে বিধান বা মহাজাগতিক নিয়মসমূহ আল্লাহর, তিনিই নির্ধারন করে দিয়েছেন নিয়মের সুত্র সমসূহ।মহাবিশ্বের আদি অবস্থায় বস্তুসমূহের অবস্থান ও প্রকৃতি নির্ধারন যদি আল্লাহেই করে থাকেন তাহলে সৃষ্টির অভ্যন্তরে আল্লাহ নিরাকার রুপে থাকতে পারেন না। ত্রি-মাত্রিক এই জগত এর অভ্যন্তরে তাকে অবশ্যই জাগতিক রুপেই থাকতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো সৃষ্টি জগৎ বা মহাবিশ্ব কি একটি প্রাণ ? যদি তাই হয় তাহলেই সে নিজে নিজেকে সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে। (আমরা মানুষেরা আপনা আপনি নিজেদের দেহের কোষ উৎপাদন করে থাকি।)“তিনিই আদি তিনিই অন্ত, তিনি ব্যক্ত তিনিই গুপ্ত”-৫৭:৩। আল কোরআনের ভাষায় আমরা বুঝতে পারছি আল্লাহই আদিকারন এবং বর্তমানে মহাবিশ্বে যা কিছু দেখা যায় তাও তিনি সৃষ্টি রুপে রয়েছেন এবং যা কিছু গোপন আছে তাও তিনি। অথাৎ তিনি সৃষ্টির উপাদান এবং তিনিই এই জগত এর সৃষ্টি রুপে বিরাজিত রয়েছেন এবং ধ্বংশের পর তিনিই তার স্বত্ত্বারুপে তারই নিকট ফিরে যাবেন। “আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংশশীল। বিধান তাহার এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।” (২৮:৮৮) এবং সমগ্র জগত ধ্বংশের পর যে মুল সারাতসার থেকে যাবে তাও তিনি। এবং এই মহাবিশ্ব আল্লাহর সত্ত্বা বা আল্লাহ হতে বুতপত্তি যার অর্থ দাড়ায় স্বয়ং তিনি নিজেই প্রকাশ্য ও গুপ্ত রুপে’।
যদি এক্ষেত্রে স্রষ্টা ও সৃষ্টি দুটি বিষয়কে দুটি বলে ধরি তাহলে স্রষ্টার এককত্ব থাকে না। তাহলে আমাদের মেনে নিতে হবে এ জগৎ সৃষ্টির মূল উপাদান আল্লাহ হতে আর্বিভূত। আর এই কারনে এই ধ্বংশশীল মহাবিশ্বের যা কিছু দেখা যায় তা ও আল্লাহ। অতএব এটাই সত্য এজগৎ আল্লাহ হতেই উদ্ভূত।আল কোরআনের মতো আধুনিক বিজ্ঞান এখন স্বীকার করে এই মহাবিশ্ব অন্য কোথা হতে এখানে এসেছে। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী শন ক্যারল লস এ্যাঞ্জেলস টাইমস্ এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছিলেন “আমি মনে করি, এর আগে আরেকটি মহাবিশ্ব ছিলো যা আমাদের তৈরী করেছে। এক কথা, আমরা সেই বৃহৎ মহাবিশ্ব থেকে বেরিয়েছি। এটা বৃহত্তর কোন স্থান-কাল থেকে এসেছে যাকে আমরা পর্যবেক্ষন করতে পারি না। উচ্চ এনট্র্রপির কোন বৃহত্তর স্থানের অতি সামান্য এক অংশ থেকে আমাদের মহাবিশ্ব এসেছে। এটা এমন এক বিষয় যা নিয়ে চিন্তা করার যথেষ্ট কারন আছে”।
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: বাউলিয়ানা বুঝি না ভাই, বুঝি আল কোরআন। আল কোরআন যা বলে সেটাই পথ প্রদর্শক। আমি আল কোরআনের পথে চলি। “তিনিই আদি তিনিই অন্ত, তিনি ব্যক্ত তিনিই গুপ্ত”-৫৭:৩
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৬
চন্দ্রনিবাস বলেছেন: হা লালন সাইজিও তাই বলেছেন,
যিনি সাকার, তিনি নিরাকার।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩৮
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: হ্যা ভাই যারা প্রকৃতই কোরআন নিয়ে আছে । কোরআনের মহাবিশ্বকে বুঝতে পেরেছে তারা মানতে বাধ্য হবে। নিরাকার বিষয়টা আমাদের বুদ্ধির অগম্য। আর বাস্তব হলো এই প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতির চেতনা হতেই মানুষের সৃষ্টিশীল চেতনা সমৃদ্ধ হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৫
চন্দ্রনিবাস বলেছেন: স্বয়ং তিনি নিজেই প্রকাশ্য ও গুপ্ত রুপে’। যদি এক্ষেত্রে স্রষ্টা ও সৃষ্টি দুটি বিষয়কে দুটি বলে ধরি তাহলে স্রষ্টার এককত্ব থাকে না।
আপনার এই কথাগুলো বাউলিজমের সারকথা (যতটুকু আমি বাউলিজম জানি)। যদিও মহাবিশ্ব নিয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসার মতো পর্যাপ্ত জ্ঞানী মানুষ এখনো হতে পারেনি। আরো সময়ের প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়। তবুও আমার অনুভূতি একই কথা বলে, আমরাই প্রকৃতি, আমরা সকলে মিলে মাতাপ্রকৃতি। মানুষের ভেতরেই তাই মনের মানুষের খোঁজ করতে বলেছে লালন সাঁই।