নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলিতিসের গান Songs of Bilitis(ধারাবাহিক)

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ রাত ২:৪৩

(৬) ভালবাসায়


‘নদীর জল পৌঁছাবে যখন ঐ বরফ ঢাকা পাহাড়ে,গম,যবের চাষ হবে যখন পাহাড়ের ধারে।

‘পাইন গাছ গজাবে যখন-পুকুরে,আর পদ্ম ফুল ফুটবে পাহাড়ে,কালো হয়ে যাবে যখন জ্বলন্ত সূর্য আর চাঁদ ঝরে পড়বে ঘাসে।

‘তখন,শুধু তখন,হয়তো অন্য কাউকে ভালবাসবো আমি।তখন শুধু তখন
তোমাকে ভুলে যাব,আমি-বিলিতিস,আমার জীবন,আমার হ্রদয়,মনের মাঝেঢ় লুকানো মন আমার।

সে বললো আমাকে,বললো আমাকে সে।এই পৃথিবীতে কিছু নেই আর…শুধু আমার শরীরে চরম আনন্দ মেশানো শরীরটা তার।


অভিসারের রাত

এখন প্রতি রাতেই আমি খুঁজি তাকে।বের হয়ে যাই চুপিচাপি,জঙ্গলের পেছনের পথটা দিয়ে,হেঁটে যাই ঘরে তার,আর অবাক হয়ে দেখি আমার স্বপ্নের মানুষটাকে।

বসে থাকি চুপচাপ-সময় থমকে থাকা,কথা নেই কোন,আনন্দটা শুধু তাকে দেখে যাওয়া্র।চুমু খাওয়া তার নিঃশ্বাসকে,এক সময় অজান্তেই আমার ঠোঁট ছুঁয়ে যায় তার ঠোঁটকে।

আমার শরীরটা খুঁজে নেয় তার শরীর,দুটো শরীর হয় এক।জেগে উঠে সে,
জেগে উঠার চেষ্টা করছিল সে,কিন্ত আমার হাতে বাঁধা যে সে তখন।হেসে উঠলো,একটু রাগও ছিল চোখে মুখে,তারপর আরও জোরে জড়িয়ে ধরলো আমাকে।এ ভাবেই চললো রাতের খেলাটা,আমাদের।

‘…সকালের,লাল হয়ে আছে আকাশের গাল,সূর্য কেন যে তুমি এত দুষ্ট,নিষ্ঠুর যে- এত তাড়াতাড়ি এলে আকাশে!লুকিয়ে থাকলে না কেন কোথাও কোন পাহাড়ের গুহায়,না হয় মাটির নীচে কোথাও,আমরা দুজন ভালবাসার আনন্দে থাকতাম না হয় আর কিছুটা সময় এঁকে অন্যকে জড়িয়ে,ভেসে যেতাম আনন্দে ভুলে যেতাম তোমার কথা একেবারে…।


ঘুমপাড়ানী গান

ঘুমাও,তুমি।সুন্দর একটা খেলনা তোমার জন্যে আনবো সারডি থেকে,পোষাকটা আনবো সেই সূদূর জন্যে ব্যাবীলন থেকে।ঘুমাও,বিলিতিস আর প্রথম সূর্যের রাজার মেয়ে।

ঐ দেখ,জঙ্গলের মাঝের প্রাসাদটা,ওটা তৈরী করা শুধু তোমার জন্যেই।বিশাল একটা পাইন গাছের কান্ড তোমার প্রাসাদের স্তম্ভ,আকাশের দিকে ছুটে যাওয়া শাখা প্রশাখাগুলোয় সাজানো তোমার ছাদ।

ঘুমাও,তুমি।আমি সূর্যের আলোকে বিক্রি করে দেব উত্তাল সমুদের কাছে,
একটুকুও ব্যাঘাত না হয় যেন তোমার ঘুমের।তোমার নিঃশ্বাসের শব্দটা হাল্কা সাদা ঘুঘুর পাখার শব্দের চেয়েও।

লক্ষী মেয়ে,সোনা আমার,আমার রক্তমাংস,ঘুম ভাঙ্গলে বলো আমাকে,কোথায় যেতে চাও তুমি,শহর না গ্রাম,পাহাড়ে না চাঁদের দেশে,নাকি খেলা করতে করতে হেঁটে যাবে সাদা পোশাকের দেবতাদের সাথে।

নাইয়াদদের সমাধি

হেঁটে গেলাম জঙ্গলে-বরফে ঢাকা গাছগুলোর পাশ দিয়ে,চুলের সাথে লেগে থাকা ছোট ছোট তুষার কনা ছুটে আসছে আমার ঠোঁটে,কাদামাটির বরফে ভারী হয়ে গেছে পায়ের জুতাটাও।

জিজ্ঞাসা করলো,সে ‘কি চাও তুমি’?-‘আমি হাঁটছি বনদেবতার পায়ের চিহ্নগুলো দেখে দেখে।কাদামাটিতে আঁটকে আছে তাদের পায়ের ছাপ,যেন ধবধবে সাদা পোশাকে কটা গর্ত’।‘বন দেবতারা!তারা সব মারা গেছে অনেকদিন আগে’,উত্তর ছিল তার।

‘বনদেবতার সাথে জলপরীরাও নেই আর।গত তিরিশ বছরে এ ধরণের বরফ পড়েনি কোনদিন,এ ধরণের শীতও দেখিনি আমরা।যে পায়ের চিহ্নগুলো দেখলে তুমি,সেগুলো ছাগলের পায়ের।একটু দাড়াও এখানে,এটাই সমাধি বনদেবতা আর জলপরীদের’।

হাতের লাঠিটা দিয়ে সে ভাঙ্গলো জমে থাকা বরফের চাকতি,পুরোনো হাসি নিয়ে কোন জলপরী ভেসে গেলনা সেখানে।কটা বরফের টুকরো ছুড়ে দিল সে,স্বর্গের দিকে।



মাইটিলিনের(রাজা মাকারেসের মেয়ে)শোকের গান



জাহাজে

আইওনিয়ান সমুদ্র দিয়ে সুন্দর একটা জাহাজে আসবো,আমি।তীর থেকে ছুটে গিয়ে,ছুঁড়ে দেব তোমাকে ঐ ঢেউ এর নাচে।

তুমি চলে যাচ্ছ দূর অজানা কোন দেশে-যেখানে জলপরী আর কুমারী মেয়েরা ঘুরে বেড়ায় হাতে হাতে।ভুলে যেও না ঐ কখনও না দেখা বন্ধুদের কথা,
আমার নিজের হাতে তৈরী করা এই ফুলের তোড়াটা দিবে,তাদের হাতে।

তুমি একটা ঝাউ গাছ,দাঁড়িয়ে আছো পাহাড়ে।কাঁটায় ভঁরা ডালপালা তোমার,
কাঠবিড়ালী আর পাখীরা কেঁপে উঠে সবাই,রেগে যাও যখন তুমি।

উত্তর বাতাস দেখাবে তোমাকে যাওয়ার পথটা,ধীরে ধীরে নিয়ে যাবে তোমাকে বন্দরের দিকে।তোমার কালো রং এর জাহাজটার সাথে থাকবে শুশুকের দল,আর সমুদ্র ভঁরা আর্শীবাদ।


সাফফা

চোখ কচলাছিলাম…দিনের আলোয় কখন যে ছেয়ে গেছে সারা পৃথিবীটা!
আমার পাশে ওটা কে?...একটা মেয়ে?...পাপিয়ার কেউ…ভুলে গেছি আমি…কি বলবো তোমাকে চারিতে!লজ্জায় লাল হয়ে গেছি,আমি।

কোন দেশে এলাম এবার,কোন দ্বীপ এটা,যেখানে ভালবাসার সুরটা এ ধরণের?
ক্লান্ত না হলে ভাবতাম-আমি স্বপ্নের ঘোরে…এটা কি হতে পারে,যে এটা সাফফা।

ঘুমাচ্ছে…নিঃসন্দেহে অতুলনীয় সুন্দরী একটা মেয়ে,যদিও তার চুলগুলো কাটা ছেলেদের মত।অদ্ভুত একটা চেহারা,পুরুষের মত ছোট স্তন আর নিতম্বটাও কেমন জানি বেশ ছোট তার।

আমি পালিয়ে যাব,তার ঘুম ভাঙ্গার আগে।হায়!শুয়ে আছি দেয়ালের পাশে,
তাড়াতাড়ি সরে যাওয়া উচিত এখান থেকে।ভয় হচ্ছে,তার নিতম্বের সাথে আমার নিতম্বের ছোঁয়ায় মাতাল হবো আমি,হয়তো।


গ্লোটিস আর কাইসের নাচ

দুজন কিশোরীর সাথে গেলাম তাদের বাড়ীতে,দরজা বন্ধ করে নাচ আরম্ভ হলো আমার জন্যে।

কোন রকম রং ছাড়াই গাল লাল হয়ে ছিল তাদের,নাভির পান্নার আলোতে চারপাশটা ছেয়ে ছিল আলোয়।এঁকে অন্যের হাত ধরে চলছিল তাদের কথার
ফুলঝুরির আনন্দ।

তোষক দেয়া চেয়ারে বসে ছিল দুজন।গ্লোটিসের বেশ তীক্ষ্ণ সুরের গানের গলাটা ভেসে আসছিল আর সাথে সাথে হাত দুটোও নাচছিল ছন্দে ছন্দে।

কাইসে নাচছিল,ঘুরে ঘুরে,থেমে আবার নতুন একটা তাল ছন্দ খুঁজে নিয়ে,নতুন এক ছাঁদে,একসময় সে ধরলো তার বোনের স্তন দুটো,কামড় দিল কাঁধে আদর করে,আর তারপর তাকে নিয়ে গেল ছাগলের আসনে।


পরামর্শদাতার দল

সিলিকমাস ঘরে ঢুকে,আমাদের এত ঘনিষ্ঠ ভাবে বসা দেখে বেঞ্চে গিয়ে বসলো।গ্লোটিসকে এক হাঁটুতে নিয়ে,কাইসেকে বসালো আরেক হাঁটুতে আমাকে ডেকে বললো,‘ওখানে বসে আছ কেন,এ দিকে আস,প্রিয় আমার’,কিন্ত আমি কাছে যাইনি তার।তবুও সে বলে যাচ্ছিল, ‘তুমি কি ভঁয় পাচ্ছ,আমাদেরকে?এই মেয়েরা সত্যিই ভালবাসে তোমাকে।ওদের জানা আছে অনেক রহস্য,অনেক আনন্দ,অনেক সুখ যা জানা নেই,তোমার-একটা মেয়ের হাতের ছোঁয়ার লুকোনো আকাশ ছোঁয়া আনন্দ,শিখে নিতে পারবে ওদের কাছে।

‘পুরুষেরা খুবই অলস আর ভয়ানক নিষ্ঠুর।তুমি তো খুব ভালভাবেই জান,সেটা।দেখ,এই মেয়েরা তাদের খুবই ঘৃনা করে।পুরুষদের খসখসে চামড়া,কোন বুক নাই,ছোট ছোট চুল।মেয়েরা তার চেয়ে অনেক বেশী সুন্দর।

‘মেয়েরাই শুধু জানে ভালবাসতে,যেও না বিলিতিস,থাক না আমাদের সাথে।
অদ্ভুত একটা সুর ভেসে আসবে তোমার মনে,এই অভাবনীয় শরীর তোমার নিয়ে যাবে প্রেমিকাদের স্বর্গের আনন্দে।


অজানার অস্থির সুর

জানি না কি করবো আমি,ভেসে যাব নাকি,গ্লোটিস না কাইসের সাথে আনন্দে।
তারা দুজনে তো আর এক না,জানি না কি খুঁজে নিবে মনটা আমার।

দুজনের হাতে ছিল আমার হাত,দুজনেই ধরে ছিল আমার স্তন হাতে।জানি না কার ঠোঁটে মেলাবো এ ঠোঁটটা আমার?শরীর না হয় ভাগ করা যায়,হ্রদয় তো আর ভাগ করার না।

তিনজনে এভাবে থাকা নিশ্চয় একটা লজ্জার ব্যাপার।এ ধরণের কথাবার্তা হয়তো হয় শুধু হয় মাইটিলেনে।গত কাল যুদ্ধের দেবতা আরেসের
মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একটা মেয়ে ঠিকমত সম্মান দেখায়নি দেবতাকে।

‘আমার পচ্ছন্দ গ্লোটিসকে,তবে কাইসে তো ফেলা দেয়ার মত না।কি করবে সে একা একা?নাকি ছেড়ে দেব যেমন দুজনে ছিল তারা,খুঁজে নিব নতুন এক প্রেমিকা,আমার’?


দেখা-সাক্ষাৎ

একপাশের একটা ঝোপে,পড়ে থাকা গুপ্তধনের মত খুঁজে পেলাম তাকে মাঠে।গলা থেকে পা পর্যন্ত নীল বর্ডার দেয়া হলুদ ফিনফিনে পোশাকে।

‘আমার কোন প্রেমিক নাই’,সে বললো, ‘সবচেয়ে কাছের শহরটা সেটাও প্রায় চল্লিশ স্টাডিয়া(৬০০ ফুট) দূরে।এখানে আমি আর আমার বিধবা মা ছাড়া আর কেউ নাই।যদি পচ্ছন্দ করো আমাকে,আমি ছুটে যাব তোমার সাথে।

‘আমি চলে যাব তোমার পেছন পেছন,যেখানেই নিয়ে যাবে তুমি,
বাড়ীতে,বন্দরের অন্য দিকে,কাটাবো জীবন ওখানেই যতদিন বলবে না তুমি ফিরে যেতে।মাখনের মত নরম তোমার হাত,আকাশের মত নীল তোমার চোখ।

‘চল যাই,কোন কিছু দরকার নাই আমার,শুধু নগ্ন দেবী আসটারটের হার,যেটা ঝুলানো গলায় আমার।ওটা আমরা রাখবো আমাদের কাছে,আর লাল গোলাপের অর্ঘ দেব রাতে’

আসটারটের কাদামাটির ছোট্ট মূর্তিটা

ছোট্ট অভিভাবক আসটারটে যে রক্ষা করে মনাসিডিকাকে,তার মুর্তিটা কামিরোসের একজন দক্ষ কারিগরের হাত দিয়ে তৈরী করা।হলুদ মাটির তৈরী মুর্তিটা খুব বেশী হলেও,হয়তো বড় হবে না তোমার বুড়ো আঙ্গুলের চেয়ে একটুঅ বেশী।

লম্বা লম্বা চুলগুলো,ছুটে গেছে ছোট্ট কাঁধটা ছেড়ে কোমরে।চোখদুটো হরিণীর টানা চোখের মতই দেখতে,মুখটাও বেশ ছোট্ট।আর যাকে বলা যায় অভাবনীয় সুন্দর একটা মুখ,তুলনা নেই যার,আর কোথাও।

ডান হাতটা ইঙ্গিত করে দেখাচ্ছিল ত্রিভুজ এলাকার সৌন্দর্য,ছোট্ট একটা গর্ত সেখানে,নাভির নীচে,দুই উরুর মাঝে।ভালবাসার চরম সুখের মুখ,লুকানো যেখানে,পৃথিবী মাতাল করা নতুন একটা আকাশ।

বাম হাতে ধরা সুডৌল ভারী ভারী স্তন দুটো।দুই বিশাল নিতম্বের মাঝে মাতৃত্বের চিহ্ন।সে যে মা বিশ্বব্রক্ষান্ডের।




মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:২৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: এটা কি কবিতা? :/

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৭

ইল্লু বলেছেন: লেখাটা সাপ্পোর সমসাময়িয়ক কবি বিলিতিসের লেখা হিসেবেই প্রথম জানা।ও ধরণের সম্পূর্ন একটা পান্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া বেশ একটা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।যদিও পরে জানা যায় বিলিতিস বলে কারও অস্তিত্ব ছিল না,ওটা ছিল ফেরেপবাজী,তবে লেখার কদরটা কমে নি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.