নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে,গ্রীসের নামকরা কবি,সাপ্পোর সমসাময়িক,বিলিতিস নামের কোন এক কবির অনুবাদ হিসাবে,ফরাসী লেখক পিয়ের লুইসের অনুবাদ।বিরাট এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে লেখাটা অনুরাগীদের মনে-খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ সালের এ ধরনের সর্ম্পূন লেখা খুঁজে পাওয়া ছিল অনেকটা অবিশ্বাস্য।আর প্রকাশ্য ভাবে সমকামিতা নিয়ে প্রকাশনা সেটা তো আরও অভাবনীয়।পরে অবশ্য জানা যায়-বিলিতিস বলে কোন কবির অস্তিত্বই ছিল না,ঐ সময়।ওটা আর কিছু না পিয়ের লুইসের তৈরী করা একটা অভাবনীয় ফেরেপবাজী।সাজানো হলেও, তবুওএক পুরুষের লেখা মেয়েদের সমকামিতা নিয়ে বেশ সাহসী এক প্রকাশনা,লেখার মর্যাদাটা আজও কমে যায়নি।
(৩) ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা
ছোট্ট খালটা একেবারেই শুকানোঃছোট ছোট লতাপাতাগুলো হারিয়ে গেছে শুকনো কাদায়ঃগরম আগুন ছড়ানো বাতাস,দুরে বাঁধের একধারে ছোট্ট একটা স্রোত বয়ে যাচ্ছে তবু বালুর ফাঁকে।
সকাল থেকে সন্ধ্যা খেলা করে ওখানে উলঙ্গ ছেলেমেয়েরা।মাঝে মাঝে গোসল করার চেষ্টা করে হয়তো কিন্ত পানি তো তাদের পা ই ছেড়ে উঠে না,পানি আর কোথায় ঐ ছোট্ট খালে।
কিন্ত তবুও তারা ঝাপাঝাপি করে আনন্দে,মাঝে মাঝে পড়ে যায় পাথরেও।
ছেলেরা পানির ছটা ছিটিয়ে দিচ্ছিল আনন্দে মেয়েদের হাসি মুখে।
কজন ব্যাবসায়ী তাদের সাদা বাছুরগুলোকে নিয়ে গেছে পানি খাওয়াতে,হাত দুটো পেছনে দিয়ে কিছুট অবাক হয়ে দেখছিল তারা বাছুরের পানি খাওয়ার দৃশ্যটা।
গল্প
ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সবাই খুবই ভালবাসে,আমাকে।দেখলেই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে কাপড় টানাটানি করে আমার,আর তাদের ছোট্ট হাতে জড়িয়ে থাকে পায়ে আমার।
ফুল যদি থাকে হাতে সেগুলো সব আমার।একটা ফড়িং ধরলে তুলে দেয় আদরে আমার হাতে।আর কিছুই যদি না থাকে তাদের, আদরে চুমুতে পাগল করে আমাকে,আর অযথার কথার ঝড়ে।
চুমু খায় গালে,মাথাটা স্তনে আর তাদের ঝকঝকে চোখ তাকিয়ে থাকে,অবাক সুরে।জানা আমার ভাষাগুলো তাদের!
হয়তো বলতে চায়, ‘বিলিতিস,সুন্দরী বিলিতিস,বলো না গল্পটা আবার,আমরা তো সবাই বেশ চুপচাপ ছিলাম,আজকে।বল না পারসিয়াসের কাহিনী,কি ভাবে হত্যা করলো মেডুসাকে,না হয় বল রাজকুমারী হেলির মৃত্যুর গল্পটা।বল না কি ভাবে তার সৎমা আর ভাই ফ্রিক্সোস তাকে ঠেলে দিল মৃত্যুর দিকে।
বন্ধুর বিয়ে
মা সাথে করে নিয়ে গেল আমাদের,আজ রাতে আমার প্রিয় বন্ধু মেলিসার বিয়ে।ছড়ানো গোলাপের পাপড়িগুলো এখনও পড়ে আছে পথের ধারে,দপদপ করে জ্বলছে মশাল,জ্বলে যাচ্ছে দপদপ করে…।
মায়ের সাথে একই পথে ফেরার সময় চোখ দুটো আমার ভরা ছিল স্বপ্নে।কিছুটা হতাশা যদিও,হয়তো বব্ধুর মতই আনন্দে ভঁরা থাকতো আকাশটা আমার
আজকে,ঠিকমত শরীরটা যদি ভরাট হতো?
বরযাত্রী,বাশী,বিয়ের গানঃফুলে সাজানো বর কনের গাড়ীঃশুধু এগুলোই না আরও অনেক আনন্দ লুকানো ঐ জলপাই বনে।
জানি না ঠিক কি যে করছে মেলিসা করছে এখন,খুলে ফেলে কাপড়গুলো রাতের আনন্দে আমিও একসময় মাতাল হবো আমার পুরুষের সাথে,তারপর ছোট ছোট কতগুলো মুখ ভরাট স্তনে,শেষ করবে খাবার।
আত্মবিশ্বাস
বিয়ের পরদিন আবার গেলাম বিয়ে বাড়ীতে,কেন জানি মেলিসা,আমি একে অন্যকে দেখে,লজ্জায় লাল হয়ে ছিলাম।শোবার ঘরে নিয়ে গেল মেলিসা,আলাপ করতে পারি যেন গোপনে।
অনেক কিছুই বলার ছিল আমার,কিন্ত কেন জানি কথা ছিল না মুখে,ভুলে গেছি সবই,তখন।এমন কি সাহসটাও ছিল না তাকে জড়িয়ে ধরার,দেখি তার কোমরের ফিতাটা বেশ উঁচু করে বাঁধা।
অবাক হলাম তার চেহারা দেখে,বেশ একটা বদল,যদিও সে তখনও আমার ভাল বন্ধু।রাতে তার শেখা নতুন খেলার গল্পগুলো শুনে অনেকটা পাগলই হয়ে গেলাম,আমি।
আমি কোলে বসে ফিসফিস করে তার কানে পাগলের মত কথা বলে যাচ্ছিলাম।আমার গালে গাল দিয়ে তার নতুন জানা সব কিছুই বললো আমাকে,মেলিসা।
নীল চাঁদের চোখে
মেয়েদের চুল আর কৃষ্ণচূড়ার পাতা রাতে খেলা করে একই সুরে একে অন্যের সাথে।খালের ধার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম,ভেসে আসছিল কানে গানের সুর দূর কোন অজানা আকাশ থেকে, ‘জানা ছিল তখনই আমার,আছে এক সুন্দরী ঐ অজানায়’।
প্রশ্ন করলাম, ‘কি গান করছো,তোমরা’?’আমরা গান গাচ্ছি আমাদের ভালবাসার ফিরে আসার মানুষটার জন্যে’।একজন অপেক্ষা করছিল তার বাবার ফেরার, আরেকজন পথটা খুঁজছিল তার ভাই এর,তবে অপেক্ষা করছিল যারা প্রেমিকের আসার,দুঃখে কান্নায় ভরা ছিল যেন সেই মেয়েরাই।
বিনুনী করা মালা গলায়,মাথায় মুকুট,তালগাছ থেকে পেড়ে আনা তাল হাতে,
আর পুকুর থেকে তুলে আনা পদ্মফুল।একে অন্যের গলা জড়িয়ে গান করছিল তারা,এক জন থেকে আরেকজন,তারপর অনেকজনে।
হাঁটছিলাম একা নদীর ধার দিয়ে,দুঃখ ভঁরা মনটা আমার,মনে হলো নীল চাঁদটা গাছের পেছনে দাঁড়িয়ে দেখছে আমাকে,কষ্ট যেন না হয় আমার বাড়ীতে ফিরতে।
গান
গাছের ছায়ায় যেখানে আমার প্রেমিকার থাকার কথা ছিল,নেই যে সে সেখানে,বল না আমাকে হারিয়ে গেল কোথায়,প্রেমিকা আমার?...ও কি ছুটে গেছে পাহাড় ছেড়ে নীচে…নাকি ছুটে গেল ঐ খাল দিয়ে অন্য কোথাও,দোহাই তোমাদের বল না কেউ আমাকে,দাও না বলে আমাকে?
কোথায় গেল,প্রেমিকা আমার?... হেঁটে গেছে কি ও,নদীর ধারে?
…সুন্দরী নদী সবই তো দেখা তোমার,দেখেছ কি তুমি ক্ষনকিছু আগে প্রিয়াকে আমার,বল না কোথায় গেল সে?... হারিয়ে গেল কি সে ঐ পথে কোথাও…ছুটে যাওয়া পথ,ছুটে যাওয়া পথ,দেখোছো কি তুমি আমার প্রিয়াকে?...প্রিয়া আমার ছেড়ে গেছে আমাকে পথের মাঝে,জানি না কোথায়,কোন সে দেশে।
… ঝকঝকে সাদা পথ তুমি তো ছুটে যাও শহরের দিকে,বল না তাকে নিয়ে গেলে কোথায়?...সোনালী পথ তুমি তো ছুটে যাও সারডিতে,লিডিয়ার রাজধানীতে…।
…আলোর চুমু ছড়ানো আমার প্রিয়ার খোলা পা কি ছুঁয়ে গেছে তোমাকে?...সে কি গেছে রাজার বাড়ীতে।
…শোন সুন্দর প্রাসাদ,পৃথিবীর আলো,ফিরিয়ে দাও প্রিয়াকে আমার।দেখ!গলার হার তার ছুঁয়ে যায় স্তন,ফুলের ছড়া আটকে আছে তার চুলে,মুক্তার মালা ঝোলানো তার পায়ে,আর দুটো জড়ানো তার কোমরে।
লাইকাস
চল,হারিয়ে যাই আমরা মাঠে কোথাও,ঐ বড় বড় ঝোপগুলোর নীচে।মধু খাব আমরা মৌচাক থেকে,আর ফড়িং ধরবো ডাফোডিলের ডগায়।
চল,যাব আমরা লাইকাসের কাছে,লাইকাস চরায় তার বাবার ভেড়াগুলোকে টাওরোসের ঐ পাহাড়ের গায়ে।দ্বিধা করবে না নিশ্চয়,ও আমাদের একটু দুধ দিতে ।
আকাশ বাতাস জুড়ে,ছড়ানো তার বাশীর সুরটাআ।এত সুন্দর বাশীটা বাজায় ও,জানি না কি ভাবে যে বোঝাই তোমাকে।ঐ দেখ ছাগলের দল আর সাথের শিকারী কুকুর,লাইকাসও বসে আছে গাছের ধারে।দেখতে ও এডোনিসের
(আফ্রোডাইতির পচ্ছন্দের মানুষ) চেয়ে কম কিসে?
লাইকাস,একটু দুধ দাও।আর এই ধর,এটা আমার গাছের ডুমুর।আমরা সময় কাটাবো এখানে,আপত্তি নেই তো তোমার।শোন দাঁড়িওয়ালা ছাগলেরা,লাফালাফি করো না অত,ভঁয় পাবে যে অন্যান্য ছাগলেরা সবাই।
দেবীর জন্যে অর্ঘ
এই যে মালাটা,গাঁথা নিজের হাতে আমার,ওটা কিন্ত আর্টেমিসের জন্যে না,
আছে রাজত্ব যার পার্গাতে,যদিও জানি আর্টেমিস রক্ষা করবে আমাকে প্রসবের যন্ত্রনা থেকে।
এটা সিডোনিয়ার এথেনার জন্যেও না,মূর্তিটা যার সোনার আর হাতীর দাঁতের,
হাতে ধরা একটা বেদানা যা ডেকে আনে পাখীদের।
এটা আফ্রোদাইতির জন্যে,যাকে আমি ধরে রাখি বুকে,ঠোঁট আমার উদগ্রীব হয়ে আশায় তার ঠোঁট ছোঁয়ার,যদি এই গোলাপ কুঁড়ির মালা দিতে পারি তার পূজার গাছে।
কোনদিন বলবো না তবু এই কথাগুলো জোরে কোথাও।ফিসফিস করে বলবো আমি শুধু,স্বপ্নের কথা আমার ঐ গাছের গর্তে।
©somewhere in net ltd.