নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

Lucius Apuleius(Metamorphoses of Apuleius)- The Golden Ass(ধারাবাহিক) অনুবাদ

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৫৩

লুসিয়াসের রূপান্তর-পঞ্চম অধ্যায়


রূপান্তর পর্ব

বেশ কটা দিন এভাবেই ভেসে গেলাম আমরা আদিম কামনার স্রোতে-খুঁজে নিলাম সৃষ্টির প্রথম রহস্য তার পুরোনো ভাষায়।ফটিসের কাছে শুনলাম-পামফিলি তার মন্ত্রের ক্ষমতায় বোহেসিয়ান তরুণকে বশ করতে না পেরে বেশ ক্ষেপে আছে,ফটিস এটাও বললো হয়তো নতুন কোন মন্ত্রের আশ্রয় নেবে,পামফিলি।হয়তো নিজেকে পাখিতে বদলে নিয়ে পামফিলি যাবে সেই বোহেসিয়ানের ঘরের জানালায়,তার যাদুর নতুন প্রভাব ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যে।ভঁয় যদি না থাকে,মানসিক প্রস্ততি থাকে যদি,তবে এটাই কৌতুহল মেটানোর সুযোগ,পামফিলির যাদু মন্ত্রের পর্বটা দেখার।

সন্ধ্যার আলো ছড়ানো সময়টা ছাড়িয়ে রাতের মাঝামাঝি তখন,অমাবস্যার ঘুটঘটে অন্ধকার-ফটিস টিপিটিপি,আলতো পায়ে নিয়ে গেল,আমাকে চিলে কোঠার ঘরটায়।তার একটাই অনুরোধ ছিল-জানালার ফাঁক দিয়ে শুধু নিস্তব্ধে যেন সবকিছু দেখে।কিছুক্ষন পর,পামফিলি উঠে আসলো চিলে কোঠায়,সর্তক হয়ে চারপাশটা দেখে নিয়ে,পামফিলি এক এক করে খুলে ফেললো,সব পোষাকআষাক।নগ্ন এক মূর্তি আমার চোখের আলোতে তখন-পামফিলি তার হাতের মলম সারা শরীরে পা থেকে মাথা পর্যন্ত মাখিয়ে-কিছুটা ফেলে দিল ধুপধুনোয়,হাতের ঘুঙুরে শব্দ করে বিড়বিড় করে মন্ত্র আওড়ালো তার মন্ত্র।অবাক হয়ে দেখলাম-পামফিলির হাতদুটো টানা হয়ে, হয়ে হলো পাখা,নাকটা বেকে গিয়ে আকার নিল,ঠোঁটের।পামফিলি বদলে হলো একটা পেঁচা পাখী।

নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিল না-নিজের হাত নাকগুলো টেনে দেখছিলাম,মন্ত্রের প্রভাবে বদলে যায়নি তো,আমি।ফটিসের হাত ধরে বললাম-ফটিস প্রেয়সী আমার,একটা অনুরোধ করবো, ঐ মলমের কিছুটা এনে দাও আমাকে,আমিও পাখী হয়ে দুই ডানা মেলে ঘুরে আসতে চাই আকাশ ছাড়িয়ে পৃথিবীর চারপাশটা।কিউপিডের মত ঘুরে আসতে চাই তোমার আমার ভালবাসার ছুঁয়ে যাওয়া জগতটা,এটা আমার বিশেষ অনুরোধ।

ফটিস মুছকি হেসে বললো-‘তা হলে এটাই তোমার আসল উদ্দেশ্য,তুমি ভালবাসার কিউপিড হতে চাও।তুমি চাও,নিজের হাতের কুড়োল দিয়ে নিজের পা কেটে ফেলি,হতে চাও ভালবাসার দেবতা, কি কষ্টে তোমাকে আগলে রেখেছি,ওই থিসালীর ডাইনীর হাত থেকে,জানা আছে?তুমি ডানা মেলা কিউপিড হয়ে ঘুরবে-আমি কি ভাবে তোমাকে রক্ষা করবো ঐ ডাইনিদের হাত থেকে?আর তুমি ফিরে আসবে কি না কে জানে’?

প্রচন্ড প্রতিবাদ করে বললাম-স্বর্গের সব দেবতাদের নামে শপথ করে বলছি-আমার সে রকম বদ ইচ্ছা নাই,মনে।আমি হতে চাই বাজপাখী-জুপিটারের বাহন।দেবতাদের দেবতা,তার বাহনের পক্ষে কি সম্ভব এ ধরনের ঠকানোর উদ্ভট চিন্তা ধারা।আমার মনে তুমি ছাড়া আর কেউ নাই,থাকতে পারে না।তোমার চুলের মিষ্টি গন্ধ,ঠোঁটের ভালবাসার শ্বাদ,এ তো স্বপ্নের স্বপ্ন,আর কিছু চাই না আমার।তবে পেঁচা হতে চাই না আমি,মানুষ পেঁচা দেখলে ভাবে ওটা কুলক্ষন,পেঁচাকে ধরে নিয়ে পেরেক দিয়ে বাইরের দরজায় লাগিয়ে রাখে।পেঁচা হয়ে কার ও প্রেমিক হয়ে তোমার কাছে ফিরেই আসবো আর কোন মুখে?আচ্ছা একবার মলম লাগিয়ে পাখী হলে ফিরে আসার উপায়টাই বা কি?

কিছুটা সময় নিয়ে ভেবে উত্তর দিল ফটিস-ঠিক আছে তোমার অনুরোধটা রাখছি এই প্রথম এই শেষ কিন্ত,চিন্তার কারন নেই,পামফিলি আমাকে মোটামুটি সবকিছুই শিখিয়েছে,ভেব না স্নেহ ভালবাসায়,প্রয়োজন আছে বলে।পামফিলির ফিরে আসার পর আরেকটা মলম শরীরে লাগিয়ে তাকে মানুষ হিসাবে ফিরে আনার দায়িত্বটাও তো আমার।একেকদিনের অভিযানের জন্য একেক ধরনের মলম তৈরী করা আছে।বিশেষ কিছু জড়িবুটি আর মন্ত্রের জোর,এই আর কিছু নাই।যেমন ধরো-আজকে আনতে হবে মৌরির বিচি,তেজপাতা,ঝর্নার পরিষ্কার পানি।এই মেশানো পানি কিছুটা খেতে হবে আর বাকীটুকু সারা শরিরে মাখানো,তুমিও ঠিক তাই করবে’।

বার বার প্রশ্ন করে আমি ফটিসের কাছে ঠিকঠাক শিখে নিলাম-মানুষ হয়ে ফিরে আসার যথাযথ উপায়টা,কোন ভুল যেন না হয় কোন ভাবে।এক ফাঁকে ফটিস গিয়ে নিয়ে আসলো-পামফিলির বাক্স থেকে একটা মলম।জড়িয়ে আলতো করে চুমু দিয়ে কিছু শ্লোক বিড়বিড় করে আওড়ানো শুরু করলো ফটিস,আমার প্রার্থনা ছিল স্বর্গের দেবতাদের কাছে সার্থকতার জন্যে।কাপড়চোপড় খুলে সারা শরীরে মলম ঘষে প্রস্তত আমি-কিন্ত পাখা তো গজালো না,
অদ্ভুত ভাবে আমার শরীরে পাখা না গজিয়ে গজালো একগাদা লোম,চামড়াটাও বদলে হয়ে গেল কেমন জানি একটা বিশ্রী খসখসে ভাব,হাত পা গুলো একসাথে হয়ে তৈরী হলো এক একটা করে খুঁড়,আর পেছনে বিরাট এক লেজ।নিজের চোখকে আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না, পাখী না হয়ে আমি তখন একটা গাধা,সাদামাটা ওজন বয়ে নেওয়ার এক গাধা।রাগে দুঃখে চীৎকার করে ফটিসকে গালাগালি দিতে ইচ্ছা হচ্ছিল-তবে কোন কথা বলার ক্ষমতা নাই আর,অসহায় মাল বয়ে নেওয়া গাধা আমি এক।




ফটিস হতবাক এই অভাবনীয় কান্ডে,কান্নায়,দু;খে ভঁরা মনটা-
‘তাড়াহুড়া করতে গিয়ে আমার অজান্তে মনে হয়,আমি অন্য মলম নিয়ে এসেছি।চিন্তা করো না,লুসিয়াস,ভালবাসা আমার,এর ফিরে আসার মলমটা আর কিছু না,লাল গোলাপের পাপড়ির রস মেশানো,ঝর্নার পানি।কেন যে আজ সকালে এটা তৈরী করিনি।একটা রাত যে তোমাকে গাধা হিসাবে কাটাতে হবে,আমি দায়ী এজন্য,এ দুঃখ রাখার জায়গা নেই মনে আমার’।

রাগে দুঃখে কান্নায় ভাষা হারানো আমি-ফটিস,সে ও তো এক ডাইনি,ইচ্ছে হচ্ছিল যেন,খুঁড়ের গোঁড়ালি দিয়ে মেরে ফেলি ওই ডাইনীকে।তবে উপায় নাই-ফটিস ছাড়া আর কেউ নেই আমাকে রক্ষা করার।কোন রকম মাথা নিচু করে চুপচাপ ফটিসের সাথে গেলাম আস্তাবলের দিকে,ভাগ্যে এই ছিল আমার।


আশা ছিল-আস্তাবলে আমার ঘোড়া,হয়তো বুঝবে পারবে আমার এই রূপান্তর,কিছুটা দুঃখের হলেও রাতটা হবে না অত যন্ত্রনার। কিন্ত অবাক হওয়ার আর কি শেষ আছে,আমার নিজের ঘোড়াই আস্তাবলে যাওয়ার সাথে সাথে মিলোর গাধার সাথে জোট মিলিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করার জন্যে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো,খাবারে আরেকজন অংশীদার এটা ছিল তাদের কাছে অসহনীয়।হায়,জুপিটার,স্বর্গের দেবতারা শেষমেষ এই দূর্ভাগ্য ছিল,কপালে আমার।আর উপায় নেই,কোন রকমে আস্তাবলের এক কোনায় রাতের মাথা গোঁজার আস্তানা জোগাড় করে রাতটা কাটানো।

রাতটা কাটাতে হবে এই চারপেয়ে জন্তদের আশ্রয়ে-সকালে ফটিস জোগাড় করে আনবে সব সরঞ্জাম,অব্যাহতি পাবো এই দূরবস্থা থেকে।আমার ঘোড়াটাকে এই অপমানের জন্য শাস্তি দিতেই হবে অবশ্যিই।দেয়ালের একপাশে পেছনের পা ভঁর দিয়ে-শরীরের আরেকটা অংশ সামনের খুঁটিতে ভঁর দিয়ে রাত কাটানোর প্রস্ততই নিলাম,আমি।তবু সেটাতে ও অসন্তষ্ট আমার চারপেয়ে বন্ধুরা আর ধাক্কাধাক্কি করে আমাকে বাইর করে দেয়ার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।বাইরে শুয়ে ছিল সহিস-এ গোলমালের জন্য আমাকেই দায়ী করে,হাতের লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করলো-নতুন গাধা আমি,অযথা আস্তাবলের ঘোড়া,গাধাটাকে জালাত্বন করার শাস্তি।

হঠাৎ হৈচৈ-দেখি দরজা ভেঙ্গে ঢুকছে একদল ডাকাত,বাড়ির লোকজন যদি ও চেষ্টা করলো সাধ্যমত থামানোর,তবে ডাকাতদের সংখ্যা আর অস্ত্রশস্ত্রেঁর বহরে সম্ভব হলো না তাদের পক্ষে।মিলোর,কাজের লোকজন সবাইকে মারধর করে ডাকাতদের দল বেঁধে একপাশে রেখে,
অলঙ্কার,টাকা পয়সা নিয়ে পালানোর প্রস্ততি নিল।তবে লুটপাটের পরিমাণ ছিল অনেক,বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না তাদের পক্ষে,সব কিছুবস্তার মধ্যে ভঁরে-আস্তাবলের তিন ঘোড়া আর দুই গাধার পিঠে চাপিয়ে নিয়ে চলা,তাদের আড্ডার দিকে আর শুরু হলো আমার জীবনের অভাবনীয় নতুন এক অধ্যায়।


ডাকাতদের যাওয়ার রাস্তা ছিল পাহাড়ী-অনেক চড়াই উতরাই,পিঠের ভারী বোঝা,আর যেন সামনে চলার ক্ষমতা নেই আমার,তবু বেঁচে আছি কপালগুনে।চীৎকার বলতে ইচ্ছা হচ্ছিল-জুপিটার উদ্ধার করো আমাকে এই বিপদ থেকে।আমি তো রোমের বাসিন্দা,আমার স্বাধীনতায় অযথার হতক্ষেপ,সিজার ওগাস্টাস কোথায় তুমি,তোমার গনতন্ত্র,রোমের অধিবাসীদের জন্য,
রক্ষা করো আমাকে,আমার যেন চিৎকার অনুরোধ ছিল থিসালীর বাসিন্দাদের কাছে-তবে কোন কথাই বের হলো না মুখ দিয়ে।

বেশ কিছু আবাসিক এলাকা ছাড়িয়ে-পৌছালাম শহরের শেষ দিকটায় কটা খামার বাড়ি ছাড়িয়ে,সুন্দর একটা বাগানবাড়ী-নানান ধরণের ফুল গাছে সাজানো,কটা গোলাপ গাছ সেখানে ফুটে আছে কটা কলি।আনন্দে ভেসে গেলাম আমি-হয়তো মুক্তি পাব জুপিটারের কল্যানে।আবার ভাবলাম-হঠাৎ যদি ফিরে যাই গাধা থেকে লুসিয়াসে,ডাকাতদের কেউই ছেড়ে কথা বলবে না,নির্ঘাত সেটাই হবে আমার জীবন কাহিনীর ইতি।

বাগানবাড়ি ছাড়িয়ে গেলাম এক ছোট্ট এক গ্রামের বাড়ীতে,বাড়ী থেকে বের হয়ে এলো কয়েকজন বয়স্ক লোক,কতাবার্তায় বোঝাঁ গেল ওরা ডাকাতদলেরই লোক।পিঠের মালপত্র নামিয়ে-আমাদের ছেড়ে দেওয়া হলো পাশের মাঠটায়,আমার দুজন সঙ্গী তাড়াতাড়ি চিবিয়ে ঘাস খাওয়ায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।খাওয়ার জন্যে ঘাসটা তখনও আমার পচ্ছন্দের খাতায় ছিল না।মাঠটার পরেই পেছন দিকে সবজীর বাগান-ক্ষুধার্ত আমি ঝাঁপিয়ে পড়লাম কিছু একটা খাবারের আশায়।

কিছু সবজী চিবানোর পর চারপাশটা দেখে খোঁজা আরম্ভ করলাম-গোলাপের বাগান,গোলাপের পাপড়ি দরকার,আমার।বেশ নির্জন এপাশটা,এখানে চারপেয়ে গাধা থেকে দু পায়ের লুসিয়াসে বদল কারও চোখে পড়বে না,হয়তো।

আমার একনিষ্ঠ প্রার্থনার ফল-মনে হলো দুরে ছোট্ট এক বয়ে যাওয়া পাহাড়ি ঝর্না,তার পাশে গোলাপের গোছা কটা,ভেনাস যেন তার সঙ্গিনীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাকে অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে।তর সইছিল না আমার,তাড়াতাড়ি ছুটে গেলাম গোলাপ গাছের দিকে, বাতাসের মত দূরন্ত ঘোড়ার গতিতে,ভুলে গেলাম যে এ শরীরটা একটা গাধার।

স্বপ্ন,আশা নিয়ে ছোটার গতিটাই ছিল অন্যরকমের-চোখের কোনের গোলাপের গাছগুলো আমার হিসেব ছাড়িয়ে অনেক দূরে।শেষমেষ যখন পৌছালাম-কোন শক্তি ছিল না আর,শরীর ছেড়ে গেছে শেষ নিশ্বাস।তবে সবকিছুই শেষ হলো হতাশায়,কান্না আমার সারা আকাশটায়-গোলাপের গাছ ছিল না সেটা,জংলী ফুলের গাছ অনেকটা গোলাপের চেহারায়,চার পাশের ঝোপগুলোর মাঝে।তবে সেখানেই শেষ ছিল না আমার ভোগান্তির,জঙ্গল থেকে সরে আসার পর-লাঠির পেটা,দেখি এক কম বয়সী লোক,তার মনের সব রাগগুলো সাজিয়ে নিয়ে পিটিয়ে চলয়েছে আমাকে,সবজী বাগানের মালিক হবে মনে হয়।মেরেই ফেলতো আমাকে-পেছনের পা দিয়ে যদি ধাক্কা মেরে সরিয়ে না দিতাম তাকে,তবে দূর্ভাগ্যের শেষ হয়নি সেখানে,কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিল এক সুন্দরী।তার কুকুরগুলোকে চিৎকার করে লেলিয়ে দিল-আমার পেছনে।জীবন বাঁচানোর জন্যে কোনরকমে ছুটে গেলাম আস্তাবলে।কুকুরগুলো ছিল না আর পেছনে-তবে বাড়ীর লোকজনের হাতে আরেকদফা মারধর, বেধে রাখলো আমাকে একপাশের খুঁটিতে।

নতুন সকালটায় ছিল না তেমন একটা নতুনত্ব-আবার একগাদা মালপত্র চাপিয়ে নতুন যাত্রার প্রস্ততি-এবার ওজন সব মিলিয়ে দ্বিগুনই হবে,আমার পায়ের খুরগুলোতে কোন নাল পরানো ছিল না,তাই ব্যাথায় যন্ত্রণায় আমি কাতর।ভাবলাম কোন না কোনভাবে আমার এই যন্ত্রনার থেকে উদ্ধার দরকার,মালপত্র নিয়ে বসে পড়লাম পাহাড়ের একপাশে,কোন চেষ্টাতেই আমাকে নিয়ে যেতে পারলো না,ডাকাতের দলের লোকজন।শুরু হল মারধর-কিন্ত আমি যে ক্লান্ত,অক্ষম।

আমার দেখাদেখি-অন্য গাধাটাও মাটিতে শুয়ে পড়লো,ভাব এই যেন তার শেষ সময়,একেবারেই অচল সে,নড়ার শক্তিটাও নাই।এই অবস্থায়-ডাকাতের দল,মালপত্রগুলো ভাগ করে দিল আমার ঘোড়া আর আমার পিঠে।আর ওরা গাধাটাকে টেনে নিয়ে ফেলে দিল পাহাড়ের নীচে।চিন্তাধারা বদলাতেই হলো-সাহস ছিল না আর নতুন তেমন কিছু করার-বেচে থাকাটাই যে প্রথম।

ডাকাতদের কথায় কথায় বুঝতে কষ্ট হ্যনি-তাদের লুকানো আস্থানা একটা পাহাড়ি গুহা,সেটা খুব একটা দুরেও নয়।আরেকটা পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাত্রা হলো শুরু-তবে খুব একটা চড়াই ছিল না,কিছুটা রক্ষা তাই।অজানা যাত্রার পথটা শেষে-ক্লান্ত,পিপাসায় শুকানো গলা,একটু মাটিতে শুয়ে শান্তির গড়াগড়ি।

পাহাড়ির গুহার কথা কিছুটা বলে নেই-এটা হয়তো বলে দেবে গাধা হলেও আমার পর্যবেক্ষনের ক্ষমতা হারায়নি তেমন একটা।প্রথমত পাহাড় সমন্ধে বলাটাই স্বাভাবিক-বেশ উঁচু আর দূর্গম-চারপাশের ঘন জঙ্গল দিয়ে ঢাকা একটা দূর্গ যেন।সরু সরু কটা হেটে যাওয়ার রাস্তা-এর মাঝে মাঝে লুকানো গুহাগুলো একেবারেই অজানা বাইরের চোখে।গুহার মুখটার ওপর থেকে ঝর্নার ধারা-আরও কিছুটা ঢেকে রাখা ঢোকার পথ।ঢোকার মুখ ছাড়িয়ে-পাহাড়ের একটা অংশ এসে পড়া,প্রাকৃতিক দূর্গের মত।তার পেছনে কটা ঝোপ দিয়ে তৈঁরী একটা ঘর-পরে আমার জানা সেটা পাহারা ঘর,পালা করে পাহারা দেয়া।তার পেছনে কাঠের তৈঁরী দোতলা ঘর-নীচের তালা চার পাশে খোলা,এক পাশটায় চুরি করে আনা ভেড়ারা।দোতলায় ওঠার পর একটা বসার জায়গা-ডাকাতের দলের সকলেই সেখানে বসেই তাদের পরের অভিযানের পরিকল্পনা।

০০০০০০০




মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: ঘোড়া আর মানুষ আলাদা।

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:২০

ইল্লু বলেছেন: কোন সন্দেহ নাই
ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.