নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাঙা আমার ছোটবেলার বন্ধু; লম্বা, চওড়া কাঁধের মানুষ, শিস দিয়ে গান গাইতে ভালোবাসে। সেই গান কোন শব্দমালা দিয়ে গাঁথা নয়, খুশি আর আনন্দের গান তার অন্তঃস্থল হতে উৎসারিত। ছোটবেলা থেকেই এ গান করে আসছে, স্কুলে শিক্ষকের বকুনির পরও দিনশেষে এ গান গাইতো, কোন দুঃখকষ্টে এ গান সে ভুলেনি। এই এডিথ পাহাড়ে হাঁটতে যেয়ে রাঙার শিস দেয়া গান দূর থেকে ভেসে আসে, আমি হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকি, খুঁজতে খুঁজতে তাঁর সাথে আমার দেখা হয়ে যায়।
সাত দিন অনেক হেঁটে হেঁটে এ পাহাড়ের পাদদেশে সে বিশ্রাম নেয় এবং একটা কবিতা লেখে। সেটাই সম্ভবতঃ তাঁর প্রথম কবিতা। অন্তহীন চলার মাঝে কি জানি কি মনে করে একটা পেন্সিল আর কাগজ নিয়ে আঁকিবুকি আঁকা শুরু করে। সে আঁকিবুকিতে কখনো আকাশ, কখন রংধুনু, কখনো হৃদয় আঁকা হয়ে যায় মনের অজান্তে, সেই এক সুরে বোনা গান ধরা দেয় পেন্সিলের আঁচড়ে, কাউকে পরম আদরে জড়িয়ে ধরার প্রবল আকুতি পেন্সিলের রংঙে জীবন্ত হয়ে উঠে। কতদিন সন্তানের হাত ধরে পার্কে হাঁটে না! সকালে স্কুলে যাবার সময় তাঁর জুতার ফিতা বেঁধে দেয় না! এসব ছবিগুলো সে আকাশে ছড়িয়ে দেয়, কি এক দুর্নিবার টানে এখানে একলা হেঁটে চলে!
খোলা আকাশের নিচে চারিদিকে পাহাড়ঘেরা শ্যামলীমা, মনে মনে ভাবতে লাগলো একদিন এখান থেকে ফিরে যেয়ে সন্তানদের নিয়ে ক্যাম্পিংয়ে যাবে, মাছ ধরবে, ঝর্ণার নিচ থেকে রাফটিং করবে, রাতে প্রজেক্টরে ‘লর্ড অফ দি রিংস’ মুভি দেখবে। স্ত্রীর জন্য একটি কবিতা লিখে ফেললো, সে কবিতায় স্ত্রীকে মখমলের চাদরে শুয়ে আদর করলো আর দিঘীর গ্লেসিয়ার গলা পানিতে দুজনে অনেকক্ষন সাঁতার কাটলো। দিবা স্বপ্ন ভেঙে দেখলো চোখের পানিতে কবিতার পঙতিমালা ভেসে গেছে, পেন্সিলের লেখা সব আবছা। রাঙার এ গল্প শুনতে শুনতে আমার পা ধরে এলো, আমি আর নিজেকে টানতে পারছিলাম না, বসে পড়লাম। রাঙা বললো, এ পাহাড়ে তাঁর মাইলের পর মাইল যেতে হবে, এই প্রকৃতির কাছে তাঁর প্রতিজ্ঞা অনেক। তাঁর সাথে অনেক কিছু দেখার ছিল, জানার ছিল কিন্ত সন্ধ্যায় ফিরে আসতে হলো। সে রাতে অনেক স্বপ্ন দেখলাম, স্বপ্নে শুধু হাঁটছি আর হাঁটছি রাঙার সাথে পাহাড় বেয়ে বেয়ে, কালকে অতিক্রম করে মহাকালের টানে হেঁটে চলেছি।
[https://en.wikipedia.org/wiki/Mount_Edith_Cavell
কৃতজ্ঞতা সেইসব মানুষদের জন্য যারা জগৎ সংসার ত্যাগ করে দিনের পর দিন জঙ্গলে, পাহাড়ে, দুর্গম স্থানে গবেষণা করে চলেছেন। ছবিগুলো আমার ক্যামেরায় তোলা]
২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৫৯
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: ধন্যবাদ নুরু ভাই, হাঁ, অনেক দিন পর এলাম, ব্যাস্ততার সাথে কিছুটা শরীর ও মন দুইই ভালো ছিলো না।
৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৫১
বাংলার এয়ানা বলেছেন: অপূর্ব সব ছবি ও লিখা।
৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০২
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৫| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০১
অপু তানভীর বলেছেন: ছবি গুলো দুর্দান্ত হয়েছে !
৬| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০০
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৫৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অনেক দিন পরে এল্লেন!
খুব ব্যস্ত নাকি?
এডিথ পাহাড়ের ছবিগুলো খুব সুন্দর হয়েছে।