নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am drunk,officer.punish me when I am sober.(Zahir ud din Muhammad,Babur)
এঈ প্রবন্ধটি ২৭ মার্চ ২০২০ এ প্রকাশিত হিস্ট্রি .কম এ প্রকাশিত ‘হাউ হিস্ট্রিস ওর্স্ট প্যানডেমিক ফাইনালি এন্ডেড’শীর্ষক প্রবন্ধের আংশিক অনুবাদ।অনুবাদক আমি নিজেই।
মানবজাতির ইতিহাসে মহামারি গুলো মহা দুর্যোগ নিয়ে এসেছে বারবার,তবে মানব্জাতি তার স্বভাবজাত লড়াকু মানুষিকতা নিয়ে বারবার রুখে দাড়িয়েছে।এই প্রবন্ধে মাহামারির বিরুদ্ধে মানব্জাতির মহাবিজয়ের কয়েকটা ঘটণা আলোচিত হয়েছে।
১)জাস্টিনিয়ান প্লেগ-নো ওয়ান লেফট টু ডাই
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর তিনটি মহামারীর জন্য দায়ী ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যকটেরিয়া যা প্লেগ এর নামে পরিচিত
সম্রাট জাস্টিনিয়ান
জাস্টিনিয়ান প্লেগ বাইজেন্টাইন সম্রাজ্যের রাজধানী কন্সট্যান্টিনোপল এ পৌছায় ৫৪১ খীষ্টাব্দে। মিসর থেকে মেডিটোরিয়ান সাগরপথে আসা গমের মাদ্ধ্যমে,সম্রাট জাস্তিনিয়ান অল্পকিছুদিন আগেই এই অঞ্চলটি দখল করেছিলেন এবং এই অঞ্চলের প্রদেয় কর গমের মাদ্ধমে পরিশোধ করতে হত।মিসরে উৎপন্ন গমের সাথে গমের লোভে কিছু আফ্রিকান কালো ইদুরও কন্সট্যান্টিনোপলগামী জাহাজে চড়ে বসে যেগুলো প্লেগের জন্য দায়ী উকুনজাতিয় পোকা বহন করছিলো।
প্লেগের কারনে কন্সট্যান্টিনোপল সম্পুর্নভাবে ধ্বংস হয়ে যায় এবং এখান থেকেই ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য উত্তর আফ্রিকা ও আরব অঞ্চল দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে।ধারনা করা হয় এই প্লেগে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো যা তৎকালীন পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।
কিভাবে এই প্লেগ মহামারির সমাপ্তি হয়েছিলো সেটা জানা না গেলেও দ্যপল বিশ্ববিদ্যালয় এর অদ্ধ্যাপক থমাস মকাইটিস মনে করেন তৎকালীন মানুষেরা আক্রান্তদের সম্পুর্ন রুপে এড়িয়ে চলতে শুরু করেছিলো যা প্রাথমিক ভাবে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।এছাড়াও অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠা ও বেচে যাওয়া মানুষদের শরীরে প্লেগের ইমিউনিটি তৈরী হয়েছিলো।আধুনিক বিজ্ঞানের কোনরকম সাহায্য ছাড়াই মানবজাতি এই মহামারীকে পরাজিত করতে পেরেছিলো তার টিকে থাকবার তীব্র আকাঙ্খা দিয়ে।
২)ব্লাক ডেথ-কোয়ারেন্টাইন এর উদ্ভাবন
জাস্টিনিয়ান প্লেগ মহামারির পর থেকে ইউরোপ কখনোই প্লেগ থেকে সম্পুর্ন মুক্ত হতে পারে নি তবে তা মহামারির আকারে ছিলো না তবে ঠিক ৮০০ বছর পরে ১৩৪৭ সালে প্লেগ আবার ইউরোপে ফিরে আসে মহামারির আকারে এবার আগের চেয়েও ভয়ংকর রূপে মাত্র চার বছরে কেড়ে নেয় ২০০ মিলিয়ন মানুষের প্রান।
মাকাইটিসের মতে যদিও তখনো সংক্রমণের বৈজ্ঞানিক কারনগুলো আবিষ্কার হতে এখনো অনেক দেরী তবে সামাজিক মেলামেশার সাথে যে এই রোগের ছড়িয়ে পড়ার একটা সম্পর্ক আছে সেটা ঠিকই বুঝতে পারে তৎকালীন বিশেষজ্ঞরা বিশেষ করে ইতালির ভেনিস শহরের বিজ্ঞানমনষ্ক নগর কর্মকর্তারা(সম্ভবত বর্তমান সিটি কর্পোরেশন এর মত কোন দপ্তর)তারা সমুদ্রবন্দর রাগুসা তে পৌছানো সমস্ত নাবিককে একটা আলাদা এলাকায় আটকে রাখার ব্যাবস্থা করেন,যতদিন না তারা প্রমান করতে পারতো যে তারা সুস্থ।
প্রথমে নাবিকদের তাদের জাহাজেই ৩০ দিন আটকে রাখা হত ইতালিয়ান ভাষায় যাকে তেরেন্তিনো বলা হয়।ক্রমে এই আটকে রাখার সময় চল্লিশ দিনে পৌছায় ইতালিয়ান ভাষায় যাকে বলা হয় কোয়ারেন্তিনো,বর্তমানে প্রচলিত কোয়ারেন্টাইন শব্দটাও এখান থেকেই এসেছে।মকাইটিস এর মতে প্রতিষেধক আবিষ্কারের আগে এটাই সংক্রামন প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর প্রচেষ্টা ছিলো।
৩)স্মলপক্স- যে ইউরোপীয়ান রোগটি নতুন বিশ্ব কে ছারখার করে দিয়েছিলো
(উল্লেখ্য,নতুন বিশ্ব বা নিউ ওয়ার্ল্ড বলতে উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকা মহাদেশকে বুঝায়।স্মল পক্স বা গুটিবসন্তে আমেরিকার আদিম অধিবাসী দের শতকরা ৯৫ জনের মৃত্যু হয় অনেকে এটাকে ব্রিটিশদের পরিচালিত সিস্টেম্যাটিক গনহত্যাও বলেন)
কয়েক হাজার বছর ধরে গুটি বসন্ত ইউরোপ,এশিয়া এবং আরব অঞ্চগুলর স্থানীয় রোগ,যা মাঝে মাঝেই মহামারীর আকার ধারন করতো এর মৃত্যু হার ছিলো প্রায় ৩৩% এই রোগ থেকে বেচে গেলেও সারাজীবন ধরে মুখমন্ডলে অসঙ্খ্য দাগের ক্ষত নিয়ে বেচে থাকতে হত।কিন্ত নিউ ওয়ার্ল্ডে এই রোগ যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তা ইউরোপ বা এশিয়ার যে কোন মাহামারীর তুলনায় অনেক বেশী ভয়ংকর।
কলম্বাস আসার আগে আমেরিকানদের এই রোগ ছিলো না তাই তাদের এই রোগের ইমিউন সিস্টেমও থাকার কথা নয়।তাই কলম্বাস আসার মাত্র ১০০ বছরের ভেতরে এই রগে মৃত্যুর সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যায়,মকাইটিসের মতে শুধুমাত্র মেক্সিকোতেই জনসংখ্যা ১১ মিলিওন থেকে কমে ১ মিলিওন এ নেমে আসে।
অবশ্য কয়েকশ বছরের মদ্ধেই গুটি বসন্তকে নিয়ত্রনে আনা সম্ভব হয়।প্রথম রোগ হিসেবে গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার হয় এবং গুটি বসন্তই পৃথিবীর প্রথম রোগ যা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।গুটি বসন্তের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ জয়ের প্রথম ধাপটি সম্পন্ন করেন ডাঃ এডওয়ার্ড জেনার,একজন ব্রিটিশ ডাক্তার।উনি লক্ষ করেন যে যে সমস্ত গোয়ালারা গরু বাহিত কাউপক্স এ আক্রান্ত তাদের গুটি বসন্ত হয় না।ডাঃ জেনার এই প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করেন তার বাগানের মালির ৯ বছরের শিশু পুত্রের উপর,জেমস পিপস নামে ঐ শিশুটির শরীরে জেনার প্রথমে কাউপক্স এর জীবানু প্রবেশ করান এরপর তাকে গুটিবসন্তের সব ধরনের বাহকের সংস্পর্শে নিয়ে আসা হলেও দেখা গেল সে সুস্থ আছে।
ডাঃজেনার নিজেই এই বিষয়ে লিখেছেন “মানবজাতির সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু গুটি বসন্তের বিলুপ্তিই হবে এই পরীক্ষার সর্বশেষ ফলাফল”
দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এই ডাক্তার তার আবিষ্কারের গুরুত্ব ঠিকই বুঝেছিলেন,এবং তার ভবিষ্যতবানীও সঠিক প্রমানিত হয়েছে।১৭৯৭ সালে ডাঃজেনার শুরু করা যাত্রা শেষ হয়েছে ১৯৮০ সালে যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুটি বসন্তকে বিলুপ্ত ঘোষনা করেছে।
০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১২
এইচ তালুকদার বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ
২| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে পৃথিবী জন্মের পর থেকেই মহামারী দেখা দিচ্ছে। ভবিষ্যতেও দেখা দিবে।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫০
এইচ তালুকদার বলেছেন: বিজ্ঞান আসলে অনেকদুর এগিয়ে গেছে।তাই ভবিষ্যতে কোন মহামারী আসলেও সেটা প্লেগ বা স্মল পক্সের মত প্রানঘাতি হবে না
৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৪৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন:
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫৫
এইচ তালুকদার বলেছেন: শিশুদের ভালো হয়ে যাবার হার বেশি বলে শুনেছি।বেশি সাবধান থাকতে হবে বৃদ্ধদের
৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫১
শের শায়রী বলেছেন: পোষ্টে ভালোলাগা। তথ্যমুলক
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫৭
এইচ তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তখ্যসমৃদ্ধ লেখা
গুরুত্বসহকারে পাঠ
জানলাম অনেক
ধন্যবাদ লেখক