নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এবার হয়ত কমতে যাচ্ছে জমি-জমা নিয়ে ভোগান্তির। অন্তত কিছুটা হলেও। সরকার এ ব্যাপারে আইন করতে যাচ্ছে। হয়ত এটিই হএ পারে যুগান্তকারি আইন। আসুন যেনে নেই সেইসব আইনের খুঁটিনাটি…………………………………………………………………………………
কেউ জাল দলিল করলে ২ বছর এবং মালিকানার অতিরিক্ত জমি রেজিষ্টি করে নিলে ৫ বছর কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। কারও জমি জোরপূর্বক দখল করে নিলে জেল জরিমানা হবে ৩ বছর। এভাবে ৩০টি ধারায় পৃথকভাবে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানার বিধান রেখে দেশে প্রথমবারের মতো ভুমি প্রতিরোধ আইন হচ্ছে। শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে কারাদন্ডের পাশাপাশি জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ভুমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২২ শিরোনামের নতুন এ আইনের খসড়া এরই মধ্যে চুড়ান্ত করেছে ভূমি মন্ত্রনালয়।
প্রস্তাবিত আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৪ ও ৫ ধারায় বলা হয়েছে,ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কেউ সরকারী কিংবা বেসরকারি জমি জাল অলিলের মাধ্যমে নিজের নামে লিখে নেন তাহলে তাকে অনধিক ২ বছর এবং কমপক্ষে ৬ মাসের জেল বা ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্ছ ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। অপরদিকে ৬(১) ধারা অনুযায়ী দাতার মালিকানা ও দখল না থাকা সত্ত্বেও কেউ অতিরিক্ত জমি লিখে নিলে ২ থেকে ৫ বছর জেল এবং তিন থেকে দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এ ধরনের জালিয়াতি প্রতারনামুলক বেশ কিছু অপরাধে করা হয়েছে জামিন অযোগ্য।
যদি কোনো ব্যক্তি তার জমি পূর্বে বিক্রি বা হস্তান্তর করার তথ্য গোপন করে পুনরায় কোনো ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন তাহলে ৫ বছর কারাভোগের মুখোমুখি হতে হবে। একই শাস্তি হবে যদি কেউ একজনের সঙ্গে বায়া দলিল করার পর পুনরায় অন্য কারও সঙ্গে বায়না চুক্তি করেন। এছাড়া কেউ যদি কোনো ব্যক্তিকে ভুল বুঝিয়া বা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রতারণামুলকভাবে কোনো জমির দান দলিল সৃষ্টি করেন তাহলে ২ বছর কারাদন্ড হবে।
যদি কেউ উত্তরাধিকারীকে বঞ্ছিত করে নিজের প্রাপ্যতার বাইরে বেশী জমি নিজের নামে দলিল করে নেয় তাহলে তাকেও অনধীক ২ বছরের কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।
এছাড়া কেউ যদি বৈধ কাগজপত্র না থাকা সত্বেও ব্যক্তি মালিকানাদীন বা স্রকারী খাস জমিসহ সরকারী যে কোন প্রতিষ্টান বা সংবিদিবদ্ধ সংস্থার মালিকানাধীন ভুমি জোরপূর্বক দখল করেন অথবা দখল অব্যাহত রাখেন তাহলে অনধিক ৩ বছরের কারাদন্ড হবে।
কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে সরকারি বা বেসরকারি ভূমি,নদীর পাড়,তলদেশ বা অন্য কোন ভূমি ইত্যাদি হতে মাটি কাটেন বা কাটান, বালি উত্তোলন করেন বা করান,তাহলে প্রকৃত ক্ষতিসাধন হোক বা না হোক এই অপরাধের জন্য জড়িত ব্যক্তিকে অনধিক ২ বছরের জেল দেওয়া হবে। এছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে মাটি ভরাট করে বা অন্য কোনোভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেন বা করান তাহলে ২ বছরের কারাদন্ড হবে। কেউ যদি ভূমির উপরের স্তর হতে মাটি কেটে নেন বা কাউক দিয়ে সে কাজ করা তাহলেও ২ বছরের কারাভোগ গ্রহন করতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ করার বিষয়টি জানতে পেরে দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে অধিগ্রহনের পূর্বে নির্ধারিত মূল্যের অতিরক্ত মুল্যে জমি রেজিষ্ট্রি করেন তাহলে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির অপরাধ প্রমানিত হলে তাকে অনধিক ২ বছরের জেল দেওয়া হবে।
কোন ব্যক্তি জনসাধারণের ব্যবহার্য বা পাবলিক ইজমেন্ট, খেলার মাঠ, জলাশয়, প্রভৃতি দখল করলে বা ওয়াকফ এষ্টেট ,দেবোত্তর কবরস্থান ,মসজিদ, মন্দির, গির্জা, ঈদ্গাহ, প্যাগোডা, মাজার শরিফ, দরগা, শ্মশান, প্রভৃতির জমি দখল করলে অনধিক ২ বছরের জেল হবে। এছাড়া চিকিৎসা , শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন প্রভৃতি দাতব্য উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত জমি বেআইনিভাবে দখল করেন বা দখল গ্রহণে সহায়তা করেন তাহলেও একই শাস্তি হবে। মালিকনা না থাকা সত্ত্বেও পাআড় বা টিলার পাদদেশে এ কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করে বসতি স্তাপন করলে ৩ মাসের কারাদন্ড হবে।
আইনের ২০ ধারায় বলা হয়েছে,রিয়েল এষ্টেট কতৃক জমি, ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে একটি জমি একাধিক ব্যক্তির বরাবর দলিল সম্পাদন করলে,চুক্তি মোতাবেক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রাপ্তির পর ঘোষিত সময়ের মথ্যে জমির হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হলে অনধিক ২ বছরের জেল দেওয়া হবে। কম করেও ৬ মাসের জেল হবে। এছাড়া জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। ক্ষেত্র বিশেষ উভয় দন্ড হতে পারে। এছাড়া এ আইন বাস্তবায়নের সময় রিয়েল এষ্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর সঙ্গে যাতে এই আইনের সাংঘ…অবস্থা তৈরী না হয় সেটি আইনে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
সরকারি –বেসরকারি জমি দখল করে সেখানে কেউ স্থাপনা গড়ে তুললে তাহলে জড়িত ব্যক্তিকে ২ বছরের কারাভোগ করতে হবে। সে সঙ্গে থাকছে জরিমানা। নদী,হাওর, বিল ও অন্যান্য জলাভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। আইনের ২৩ ধারায় এ বিষয়ে বলা হয়েহে,যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে এসব স্থান থেকে মাটি,বালি বা আবর্জনা দ্বারা বা অন্য কোনো উপায়ে আংশিক বা পরপূর্ণ ভরাট করে তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। কেউ আংশিক ভরাট করলে অনধিক ১ বছর এবং পরিপূর্ণ অরাট করলে অনধিক ২ বছর সাজা প্রধানের বিধান রাখা হয়েছে।
কেউ যদি একক বা দলগতভাবে অবৈধভাবে ভুমির দখল গ্রহণ করেন এবং দখল বজায় রাখতে অস্ত্র প্রদশন কিংবা ব্যবহার করেন তাহলে এ অপরাধের জন্য ৩ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হবে। এছাড়া এটি হবে জামিনঅযোগ্য অপরাধ।
এই আইনের অধিনে কেউ একই অপরাধ পুনরায় করলে তাকে নির্ধারিত ধারায় দ্বিগুণ শাস্তি দেওয়া যাবে। এখানেও বিচারের ক্ষেত্রে জামিন পাবেন না। এছাড়া ধারা ৬-এ বর্ণিত দলিল বা কাগজ যদি এক একর অপেক্ষা বেশী হয় বা বিশয়টিতে ল্যান্ড ডেভেল্পার বা রিয়েল এষ্টেট জড়িত থাকে,তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনধিক সাজা হবে ৫ বছর, কম পক্ষে ২ বছর।
এদিকে আইনে সাক্ষীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ৩৪ ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্য বিধিতে যা কিছু থাকুক না কেন,এ আইনের অধিন কোনো প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দোষী সাব্যস্থ ব্যক্তিকে সংষলিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে অনুমোদিত যে কোন অর্থদন্ড আরোপ করতে পারবেন।
এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্তভার পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে দ্রুত তদন্ত শুরু করতে হবে ও দায়িত্ব নেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
তথ্য সুত্রঃ- ১৮ই এপ্রিল প্রকাশিত দৈনিক যুগান্তর ও বাংলাদেশ প্রতিদিন ও অন্যান্য সুত্র। ।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:৩০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: পরপর দুটি পোস্ট প্রথম পাতায়।
প্রথমটা আবার ফুটুস ফাটুস!!