নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম বেশ কিছু কাল। খুব অল্প বয়সেই বন্ধু গাছ বাইতে পারতো , পুকুরে সাঁতার কাটতে পারতো, নৌকা বাইতে পারতো। তাকে অনেকটাই মার্ক টোয়েনের ' হাকল বেরি ফিন ' এর হাকল বেরি বলে মনে হত। তার সাথে থাকা মানে ছিল অসাধারন সব অভিজ্ঞতা সঞ্চয়। গাছ উঠে কিভাবে ফল পেরে গাছের ডালে বসে খেতে হয় , তা তার থেকেই শেখা। বড়ই , কামরাঙ্গা , পেয়ারা এরকম আরো অনেক ফল এভাবে খাবার অভিজ্ঞতা হয়েছে তার সাথে। ছোট মফস্বল শহরে সবাই সবাইকে চেনে। সবার বাসার উঠানেই গাছ গাছালি ছিল। বাচ্চারা গাছে চড়লে কেউ কিছু বলত না। শুধু সাবধানে থাকার উপদেশ দিত।
স্কুল ছুটির পর তার কাজ ছিল পুরো শহর জুড়ে ঘুরে বেড়ানো। মাঝে মাঝেই তার সঙ্গী হতাম। কত কি বুদ্ধি যে ছিল তার মাথায়! শহড়ের পাশ ঘেসে চলা সরু নদীতে মাঝে মাঝে কলাগাছের ভেলা ভাসতে দেখা যেত। গাছের ডাল ভেঙ্গে সেটাকে দাড় বানিয়ে সে মাঝি হয়ে যেত। কিযে ভাল লাগতো এভাবে ভেলায় চড়ে বেড়াতে। একবার অবস্য ভেলা কাত হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। তবে পানি কম থাকায় বেচেঁ গিয়েছিলাম। শহড়ের একপাশে শষ্য ক্ষেত ছিল। ক্ষেতের মাঝ দিয়ে যে সরু আল, সেখান দিয়ে সে দিব্যি দৌড়ে বেড়াতো। চেষ্টা করতে গিয়ে আমি অবস্য ক্ষেতে পড়ে যেতাম। ছোট ছোট ডোবা, নালার ওপড় তৈরী সরু বাশেঁর সাকোও সে অনায়াসে পার হতে পারতো। বৈশাখ মাসে ঝড়ের আগমনী সংকেত দেখা দিলেই্, আমাকে বলত তৈরী থাকতে। কারন ,আম কুড়াতে যাবার মোক্ষম সময় সেটা। ঝড়ের মাঝে দুরদার গাছ থেকে আম পড়ত আর পাড়ার ছেলেমেয়েদের মাঝে প্রতিযোগিতা চলত কে কত বেশি আম কুড়াতে সক্ষম হয়েছে। কাঁচা সেই আম পরদিন মরিচ ও লবন মাখিয়ে খাওয়া হত। এমন ছোট ছোট আরো কত যে মজার স্মৃতি আছে তার সাথে! জ্বিন পরীতে তার ছিল অগাধ বিশ্বাস। প্রায়ই নানান গল্প বলত আমাকে। তার বলার বাচনভঙ্গি ছিল অতি চমকপ্রদ। তার জ্বিনের গল্প শুনে অবস্য আমার ভয় পাবার চাইতে হাসি পেত বেশি।
সে একাধারে ছিল বন্ধু আবার আত্মীয়, যে কারনে তার সাথে সবসময়ই কম বেশী যোগাযোগ আছে। পড়ালেখায় সে খুব বেশি অগ্রসর হতে পারেনি। তবে সব মিলিয়ে ভাল আছে। কয়েকমাস আগে তার সাথে ফোনে কথা হয়। মাঝে কয়েক বছর যোগাযোগ ছিল না। কেমন আছে জিজ্ঞাসা করায় বলল যে , এখন ভাল আছে তবে মাঝখানে ভাল ছিল না। কারন জিজ্ঞাসা করায় বলল যে, তাকে নাকি এক দুষ্টূ জ্বিনে ধরেছিল। জ্বিনটা প্রায়ই তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিত। আমি হেসে ফেলে বললাম '' তোর দেখি এক ফোটা পরিবর্তন হয় নাই। আগের মতই আছিস।''
১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:১৫
ঢাবিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ। মাঝে মাঝে লিখুন সে সময়ের স্মৃতি। কমেন্টেই লিখুন।
২| ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ছোটবেলার বিশ্বাস খুব গভীরে গেঁথে থাকে।
ভালোলাগা ভাই।
১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:১৬
ঢাবিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপু । আসলেই কিছু বিশ্বাস মনে হয় মন থেকে ঝেরে ফেলা কঠিন।
৩| ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫২
শায়মা বলেছেন: সাচু ভাইয়ার জ্বীন ধরেছিলো মনে হয় !
১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৯
ঢাবিয়ান বলেছেন: সাচু ভাই এর কমেন্ট পড়েই এই বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেল
৪| ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪
শায়মা বলেছেন: হাহাহা আর আমি সেইব মনের খবরটা জেনেই এই কমেন্ট করলাম।
১৩ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩২
ঢাবিয়ান বলেছেন:
৫| ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার শৈশব খুব আনন্দে কেটেছে বোঝা যাচ্ছে। বন্ধুও পেয়েছিলেন সেই রকম।
আসলে শহরে জীনের উপদ্রব কম বলে শহরের মানুষ জীন বিশ্বাস করতে চায় না। জীনে ধরলেও বুঝতে পারে না যে জীনে ধরেছে। উপরের মন্তব্যেই একজন জীনের নাম শুনে দাঁত বের করে হেসেছে। শহরের লোকেরা মানসিক রোগের ডাক্তার দেখিয়ে ব্রেনের স্থায়ী ক্ষতি করে ফেলে। আসলে ডাক্তার না দেখিয়ে ভালো কোন জীনের চিকিৎসক দেখানো উচিত। আপনার বন্ধু ভালো কাজ করেছে। ডাক্তার দেখালে ওনাকে পাগল বানিয়ে ছাড়তো।
১৩ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার কমেন্ট পড়ে আরেক দফা হাসলাম। আপনার জ্বিনের গল্প শুনতে চাই। অফিসের জ্বিনের উৎপাতের গল্পটা মনে হচ্ছে খুবই উপভোগ্য হবে।
৬| ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমার ছোটবেলাটা কেটেছে খেলায় খেলায়। ছোটবেলা প্রায় সব বন্ধু এখনো বন্ধুত্বের বন্ধনেই আছি।
১৩ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫
ঢাবিয়ান বলেছেন: আসলেই ইন্টারনেট বীহিন আমাদের শৈশব আসলেই অনেক মধুর ছিল
৭| ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অনেকেই আছে দিন বদল হলেই ছেলেবেলার বন্ধুদের ভুলে যায়। আপনার বন্ধু কথন ভালো লাগল।
১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৩
ঢাবিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ। ছেলেবেলার বন্ধুরা হয় অকৃত্রিম। অবস্থান দেখে বন্ধুত্ব হয় না সেই সময়ে।
৮| ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪১
নতুন বলেছেন: গতপরশু আমার স্কুলের এক বন্ধুর সাথে দেখা হলো ২৯ বছর পরে। এক সাথে এসএসসি পরিক্ষা দেবার পরে আর দেখা হয় নাই। স্কুলের সৃতি মনে করতে ভালোই লাগে...
১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৫
ঢাবিয়ান বলেছেন: বন্ধু বিষয়টা এতটাই চমকপ্রদ যে , বহু বছর পর দেখা হলেও মনেই হয় না যে মাঝে এত বছর পেরিয়ে গেছে।
৯| ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: পড়তে বেশ লাগলো। ছোট বেলার বন্ধুত্বই সারা জীবন মনে থাকে। আমার এখনো বন্ধুত্ব আছে একদম ছোটবেলার বন্ধুর সাথে।+++
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ। দেশের বাইরে থাকায় যোগাযোগ রাখা অনেক কঠিন। তবে অনলাইনে যোগাযোগ রাখাটা ফেসবুক অনেক সহজ করে দিয়েছে।
১০| ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কয়েকদিন আগে আমার অফিসের এক কলিগের বাসায় প্রচণ্ড জীনের উৎপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল। সবার সামনে দিনের বেলায় বাসার বিছানার চাদর, তোষকে আগুন লেগে যাচ্ছে। অফিসের কাছেই উনি থাকেন। আরও কয়েকজন সহকর্মী ওনার বাসায় গিয়েছিল দেখার জন্য। সবার সামনেই ঘটনাগুলি ঘটছে। কয়েকবার ঘটে এই ঘটনা। আগে জীনদের মোবাইলের প্রতি নেশা ছিল না। কিন্তু এই দুষ্ট জিনগুলি বাসার মোবাইলগুলিও গায়েব করে দিয়েছে। বড় একটা পুরনো ওয়াল ঘড়ি নিয়ে গেছে।
দোয়া দরুদ পড়ানোর পরে প্রায় ১ সপ্তাহ পরে জীনগুলির উপদ্রব থেমে যায়। আরও কিছু ঘটনা আছে।
১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১০
ঢাবিয়ান বলেছেন: জীনদের মোবাইলের প্রতি নেশা ছিল না। কিন্তু এই দুষ্ট জিনগুলি বাসার মোবাইলগুলিও গায়েব করে দিয়েছে।
হা হা জ্বিনেরা এখন মোবাইল চোর হয়ে গেছে আপনি আসলেই এইসব বিশ্বাস করেন ??
১১| ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরআন শরিফে আছে; হজরত সোলাইমান (আঃ) আল্লাহকে বলেছিলেন যে,
সোলায়মান বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে মাফ করুন এবং আমাকে এমন সাম্রাজ্য দান করুন যা আমার পরে আর কেউ পেতে পারবে না। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা। তখন আমি বাতাসকে তার অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে অবাধে প্রবাহিত হত যেখানে সে পৌছাতে চাইত। আমি তাঁর জন্য জিন শয়তানদেরকে বাধ্য করে দেই। যারা তাঁর নির্দেশ মেনে চলে। তাদের মধ্যে রয়েছে নির্মাণকারী। আর রয়েছে ডুবুরী। যারা সাগরে ডুব দিয়ে তা থেকে মূল্যবান রত্ন উদ্ধার করে আনে। (সুরা সাদ - আয়াত ৩৫ থেকে ৩৭)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, 'আর আমি সুলাইমানের অধীন করেছিলাম বাতাস, যা সকালে এক মাসের পথ ও বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝরণা প্রবাহিত করেছিলাম। কতক জিন তার সামনে কাজ করত তার পালনকর্তার আদেশে। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবে, আমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব। তারা সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী দুর্গ, ভাস্কর্য, হাউজসদৃশ বৃহদাকার পাত্র ও চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করত। হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা সহকারে তোমরা কাজ করে যাও। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ।’ (সুরা: সাবা, আয়াত - ১২)
বাইতুল মুকাদ্দাস (মসজিদ আল আকসা) নির্মাণ করেছিলেন হজরত সুলাইমান (আঃ) জীনদের সাহায্যে। ওনার মৃত্যুর পরেও জীনেরা বুঝতে পারেনি যে উনি মারা গেছেন। বাইতুল মুকাদ্দাস নির্মাণ শেষ হওয়ার পরে জীনেরা বুঝতে পারে যে হজরত সুলাইমান (আঃ) আগেই মারা গেছেন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। [সূরা সাবা: 14]
হজরত সুলাইমানের নির্দেশে সেবার রাণী বিলকিসের সিংহাসন নিমিষেই ওনার কাছে হাজির করতে চেয়েছিল একটা জিন। কিন্তু পরে তার চেয়েও দ্রুত গতিতে সেই সিংহাসন হজরত সুলাইমানের (আঃ) কাছে নিয়ে আসে একজন পরহেজগার ব্যক্তি। এই বর্ণনাও কোরআনে আছে।
তাই মোবাইল চুরি করা জীনদের জন্য কোন কঠিন কাজ না।
১২| ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮
শায়মা বলেছেন: বাপরে!!!
জ্বীনেরা আজকাল ডাক্তারী পড়ছে জানতাম না সাড়ে ভাইয়ুর কাছে না জানলে!!!
আবার তাদের আজকাল কথা বার্তা চালানোর জন্য মোবাইলও লাগে!!!
গুড গুড দিনে দিনে জ্বীনেরাও ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে!!!!
১৩| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন:
১৪| ২৩ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: শৈশবের বন্ধুরা অকৃ্ত্রিম, অকপট বন্ধু হয়ে থাকে। তাদের বন্ধুত্বে কোন খাদ থাকে না।
১৫| ২৩ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আহা স্মৃতি । এমন স্মৃতি আমার শৈশব জুড়ে
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৯
কামাল১৮ বলেছেন: ছোট বেলার স্মৃতি পড়ে ভালো লাগলো।নিজের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।