নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হৃদয়ে বাংলাদেশ

ঢাবিয়ান

ঢাবিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনায় কুরবানি : বিকল্প চিন্তার ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:১৬

কোভিড মহামারীতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। এখন পর্যন্ত কাযর্করী কোন ভ্যক্সিন আবিস্কৃত না হওয়ায় উন্নত বিশ্বের দেশগুলো সোস্যাল ডিস্টেন্স ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই ভয়াবহ সংক্রামক ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় বেশিরভাগ দেশেই এখনও গন জমায়েত হয় এমন সব ধরনের কর্মকান্ড অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন শপিং মলে সেফ ডিস্ট্যন্স মেইন্টেইন এম্বাসাডর নিয়োগ দেয়া হয়েছে , যারা শপিং মলে সোস্যাল ডিস্টেন্স মেনে চলাটা কঠোরভাবে দেখভাল করছে। এছাড়াও প্রতিটা শপারের কন্টাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে । অর্থাৎ যে কোন দোকানে ঢোকার আগে ও পরে কিউ আর বার কোডের মাধ্যমে শপারকে চেক ইন ও চেক আউট করতে হচ্ছে। এতে করে কারো করোনা পজিটিভ হলেই তার সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও স্টে হোম নোটিস দেয়া হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, চায়না, হংকং ইত্যাদি দেশগুলো উপড়ের নিয়মগুলো কঠোরভাবে পালনের মাধ্যমে করোনা সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছে।

আমাদের দেশের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই মহামারীতে আমরা অনেকেই আমাদের প্রিয়জন হারিয়েছি। অনেকেই এখনও করোনার সাথে জীবন বাজি রেখে লড়াই করছে। স্বাস্থ্যবিধি, সোস্যাল ডিস্ট্যন্স কোনটাই মেনে চলা হচ্ছে না। তার উপড় ভুয়া টেস্ট, সুচিকিৎসার অভাব করোনা পরিস্থিতিকে করে তুলেছে আরো ভয়াবহ। প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন আতংক বিরাজ করছে।

আর পাঁচদিন পরই কোরবানির ঈদ।ধর্মকে আমরা মনে প্রানে ও কাজে কর্মে ধারন না করে , ধারন করি কেবল বাহ্যিক লেবাসে। লোক দেখিয়ে ধর্ম পালনের কুৎসিত নিয়ম যে শুধু এই উপমহাদেশেই প্রচলিত তা উন্নত দেশে না এলে টের পেতাম না।কুরবানি প্রক্রিয়াকে পরিবেশবান্ধব করতে বিভিন্ন দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠলেও আমাদের দেশে হাটে গিয়ে পশু ক্রয় এবং দলবদ্ধ হয়ে বাসা বাড়িতে জবাই করা এখন পর্যন্ত একমাত্র রীতি। কিন্ত এই রীতি যে এবার করোনা পরিস্থিতিকে আরো উদ্বেগজনক করে তুলবে তা বলাই বাহুল্য।

ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, (সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ) এবং মুহাম্মদ মোস্তফা হোসাইন শাহীন,( পিএইচডি গবেষক, ইউনিভার্সিটি অব মালায়া, মালয়েশিয়া) '' করোনায় কুরবানি : বিকল্প চিন্তার ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি '' লেখাটার কিছু চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ইসলামে কোন ইবাদত রহিত করার উদাহরণ পাওয়া যায় না; বরং বিকল্প পদ্ধতিতে সে সব ইবাদত পালন করার নজির রয়েছে।‘ফিকহুল ওয়াকি’ তথা পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ইসলামী শরীয়তের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রসিদ্ধ নীতি। পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মু’মিনগণ তোমরা সতর্কতা অবলম্বন কর’ (নিসা : ৭১)।

এখানে সতর্কতার কথা মূলতঃ শত্রু ও বিপদের মাত্রা নির্ণয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে শত্রুর অবস্থার আলোকে তোমাদের উপর সম্ভাব্য যে নেতিবাচক পরিস্থিত তৈরি হতে পারে, সে অনুযায়ী তোমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ কর। আল্লাহ বলছেন, ‘তোমরা মানুষদেরকে প্রজ্ঞা এবং উত্তম নসীহতের সাথে ইসলামের দিকে আহবান করো; আর সুন্দর যুক্তিতে তাদের যুক্তিগুলো খন্ডন কর’ (নাহল: ১২৫)।
বিস্তারিত লেখাটি সবাইকে নীচের লিংকে গিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।

https://www.jagonews24.com/religion/news/599660

ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেক এলাকার এপ্রার্টমেন্ট সমিতি এবার এপার্টমেন্ট বিল্ডিং এর নীচে গরু কোরবানি নিশিদ্ধ ঘোষনা করেছে।তাই অনেকেই এবার বিকল্প ব্যবস্থার দিকে ঝুকে পড়ছে।ফেসবুকে দেখছি অনেক খামার গরু বিক্রয় ও গরুর মাংশ ডেলিভারীর বিজ্ঞাপন দিচ্ছে ।এই ব্যবস্থাটাই সবচেয়ে ভাল বলে মনে হচ্ছে। এতে করে কোরবানির সাথে যুক্ত মানুষের জীবিকা অক্ষুন্ন থাকবে এবং খামারিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। গ্রাম থেকে যেসব দরিদ্র কৃষক শহড়ে আসেন গরু বিক্রি করতে , তাদের বরং গ্রামেই বিক্রি করার জন্য উৎসাহিত করা প্রয়োজন। গ্রামের এই দরিদ্র কৃষকেরা গরুর হাটে বিড়াট অংকের চাঁদা দেয়ার পর আসলে বিশেষ লাভবান হয় না। তাই গ্রামে যাদের পরিচিত মানুষ আছে তারা গ্রামেই টাকা পাঠিয়ে সেখানেই কোরবানির ব্যবস্থা করতে পারেন।

খুব কাছের এক প্রিয়জন এই মুহুর্তে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যূর সাথে লড়াই করছে। মহামারীর শুরুর পর থেকে তিনি চার মাস বাসা থেকে বেরই হননি। তারপরেও তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। এর কারন হচ্ছে সবাই মিলে নিয়ম না মানলে জীবানু সংক্রমন রোধ করা যায় না।এই বোধটা সবার মাঝে জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: ডিজিটাল কসাই খানা তৈরী করা দরকার - এক পাশে দিয়ে গরেুা ঢুকানো হবে -অন্য পাশে কুরবানী হয়ে গোশত প্যাকেট হয়ে যাবে- গ্রাহকের কাছে প্রসেসিং ফি দিয়ে প্যাকেট গ্রহণ করে বাসায় নিয়ে যাবে।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪০

ঢাবিয়ান বলেছেন: ফান করার জন্য পোস্টটা দেয়া হয়নি।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শহরে বা গ্রামে, সব জায়গাতেই কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করে কোরবানির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে, বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্যও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। গ্রামেগঞ্জে তেমন সমস্যা না হলেও, শহরে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। এতদিনে আমাদের শহরে কোরবানির জন্য একটা ফুপ্রিফ সিস্টেম ডেভেলপ করা দরকার ছিল। তাহলে আজকে 'বিকল্প' চিন্তার প্রয়োজন পড়তো না, ওটাই হতো মূল কনসেপ্ট।

গ্রামের গরু ব্যবসায়োদের শহরে আসা বন্ধ করা যাবে না, কারণ, শহরের মানুষ গ্রামের খামারিদের কাছ থেকেই গরু কিনে থাকেন :)

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪২

ঢাবিয়ান বলেছেন: এতদিনে আমাদের শহরে কোরবানির জন্য একটা ফুপ্রিফ সিস্টেম ডেভেলপ করা দরকার ছিল। তাহলে আজকে 'বিকল্প' চিন্তার প্রয়োজন পড়তো না, ওটাই হতো মূল কনসেপ্ট। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর কমেন্টের জন্য।


৩| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি বলেছেন, "লোক দেখিয়ে ধর্ম পালনের কুৎসিত ...."

-ধর্ম পুরোটা হলো লোক দেখানো, ইহা ব্যতিত ইহার অন্য কোন প্রয়োজনীয় দিক নেই

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৪

ঢাবিয়ান বলেছেন: এটা একান্তই আপনার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই এটা ওয়াজীব।
এটা বাদ দেয়া সম্ভব না। এড়িয়ে যাবার কোন উপায় নেই। বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকলে দিতেই হবে।
আপনাকে অনুরোধ, কেউ এর বিকল্প কিছু বললে তার সপক্ষে সহী সনদ সহ হাদিস এবং কুরআনের সার্পোটিং ডকুমেন্টস চাইবেন।
আমি একজন উচু পর্যায়ে ইমামের সাথে কথা বলেছি। এই দেশে এটা সম্ভব না। দিতেই হবে।
ভাল থাকুন ভাই এবং নিরাপদে।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩২

ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনি খুব সম্ভবত পোস্টটি পড়ে দেখেন নাই। কোরবানি বাদ দেয়ার কথা কোথাও বলা হয়নি। প্রচলিত ধারার বদলে সিস্টেমেটিক বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

৫| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৫

সাইন বোর্ড বলেছেন: সব কিছুই যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, এখন হতাশা ছাড়া আর যেন কিছুই করার নেই ।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০২

ঢাবিয়ান বলেছেন: যে দেশে সরকারের কোন জবাবদিহিতা থাকে না, জনগনের কল্যানে কাজ করার বাধ্যবাধকতা থাকে না সে দেশে সংকটকালে তীব্র হতাশা ছাড়া আর কি বা বাকি থাকে! এখন ব্যক্তিগত পর্যায়ে যতটুকু ভাল থাকা যায় সেই চেষ্টা করা ছাড়া আর কোন বিকল্পতো দেখি না।

৬| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০৯

ডার্ক ম্যান বলেছেন: এবার ফার্মে গরু বিক্রি ভাল হচ্ছে । ভবিষ্যতে ফার্মে কোরবানির ব্যবস্থা হবে বলে আমার বিশ্বাস ।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১৪

ঢাবিয়ান বলেছেন: একমত আপনার সাথে। পরিচিত অনেকেই এবার ফার্মে গিয়ে গরু দেখে সিলেক্ট করে এসেছে। কোরবানির দিন ফার্ম কতৃপক্ষ মাংশ ডেলিভারী দিয়ে দিবে। শুধু ভয় যে গরুর হাটের চাঁদাবাজরা না আবার গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করে!

৭| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১০

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: ফান করার জন্য লিখিনাই; হজ্জে যারা কুরবানী দেয় ওখানে একটা জবাই খানা আছে শুধু কোরবানীর পশু ওখানে জবাই করে প্রসেস করা হয়। যা ২ নং মন্তব্যে তুলে ধরেছে। হজ্জের লাখ লাখ পশু যদি সহি তরীকায় প্রসেস হতে পারে এবং পরবর্তীতে সংরক্ষণ ও বিতরণ হতে পারে তাহলে আমাদের ভাবতে দোষ কি??

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২১

ঢাবিয়ান বলেছেন: এবার বুঝতে পেরেছি । ধন্যবাদ সুন্দর করে ব্যখ্যা করার জন্য।

৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ধর্ম আপনাকে মানতেই হবে যদি আপনি নাস্তিক হন। তবে করোনার প্রকোপে দেশের মানুষ আজ ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। তাই সাবধান থেকে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। খামার থেকে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জবহ করে আনলে ভালো হবে।চ

২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:০৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য। আমার লেখা বা যে লিংক দিয়েছি সেখানে ধর্মীয় অনুশাষন না মানার কথা কোথাও বলা হয়নি।
https://www.jagonews24.com/religion/news/599660

৯| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: একই দিনে এত এত পশু কোরবানী!!! বিষয়টা আমার কাছে ভালো লাগে না।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:০১

ঢাবিয়ান বলেছেন: বিষয়টা ধর্মীয় । তবে ধর্মীয় দ্বায়িত্বটাকে সিস্টেমেটিক উপায়ে করা মানুষের দ্বায়িত্ব।

১০| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৩৯

লরুজন বলেছেন: খুব ভালা কতা কইছেন, কিন্তুক মানব কেডা? সবাই তাল পাকনা

২৮ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:২৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: করোনার এই সময় পশুর হাট মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদ মুস্তাক হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সংক্রমণে পশুর হাট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এবার রাজধানীতে পশুর হাট ইজারা না দিতে সুপারিশ করেছিল জাতীয় কারিগরি কমিটি। একই বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কোনো নির্দেশনা মানেনি।সুত্র ঃ প্রথম আলো

কোটি কোট টাকার চাঁদাবাজির বানিজ্য চলে গরুর হাটে। করোনা পরিস্থিতি এবার কোথায় পৌছায় ঈদের পর ভেবেই ভয় হচ্ছে।

১১| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: বিষয়টা ধর্মীয় । তবে ধর্মীয় দ্বায়িত্বটাকে সিস্টেমেটিক উপায়ে করা মানুষের দ্বায়িত্ব।

কথাটা সুন্দর বলেছেন।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩০

ঢাবিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ । মহল্লার চারপাশের মানুষকে এবার বাসা বাড়ীতে কোরবানি না দিতে উদ্বুদ্ধ করুন।

১২| ২৯ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরবানির ক্ষেত্রে আধুনিক, স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি আনতে হবে যা অনেক দেশে আরও অনেক আগেই এসেছে। খরচ বাড়লেও সবার জন্য কল্যাণকর হবে।

৩০ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: আধুনিক, স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশ বান্ধব বিকল্প পদ্ধতির কথাই পোস্টে বলতে চেয়েছি। খরচ আসলে বাড়বে না। এবার পরিচিত বেশ কিছু মানুষ এভাবে বাইরে কোরবানির ব্যবস্থা করেছে। খরচ কোনভাবেই বেশি পড়েনি। বরং বিড়াট এক ঝামেলার হাত থেকে বাঁচা গেছে বলে সস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।

১৩| ২৯ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:০৯

নীল আকাশ বলেছেন: আমি আপনার পোস্ট পড়েই মন্তব্য করেছি।
আপনি পোস্টে লিখেছেনঃ ইসলামে কোন ইবাদত রহিত করার উদাহরণ পাওয়া যায় না; বরং বিকল্প পদ্ধতিতে সে সব ইবাদত পালন করার নজির রয়েছে।
এটার অর্থ আমাকে বুঝিয়ে বলুন?
আমি এর উত্তরে বলেছিঃ এটা বাদ দেয়া সম্ভব না। এড়িয়ে যাবার কোন উপায় নেই। বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকলে দিতেই হবে।
ধন্যবাদ।

৩০ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৪৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: @ নীল আকাশ, কোরবানি বাদ দেয়া বা এড়িয়ে যাবার কথা বলা হয়নি।যে লিংকের আলোকে আমি পোস্টটি লিখেছি সেটা নীচে কপি পেস্ট করলাম। আশা করি আপনার ভ্রান্ত ধারনা দূর হবে।

করোনায় কুরবানি : বিকল্প চিন্তার ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

করোনা জীবনের বিভিন্ন বিভাগের মত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ব্যপক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আসন্ন জিলহজ মাসের সাথে ইসলামের অন্যতম ইবাদত হজের পাশাপাশি কুরবানির বিষয়টিও জড়িত।


কুরবানি ইসলামের অন্যতম একটি শিআর বা প্রতীক। কুরবানি সক্ষম ব্যক্তির উপর ওয়াজিব কিংবা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। ব্যক্তি কুরবানির দিবসেও সক্ষমতার অধিকারি হলে তাকে বিধানটি পালন করতে হবে।

কুরবানির সাথে প্রান্তিক মানুষদের জীবন-জীবিকার প্রশ্ন রয়েছে। সামান্য কিছু মুনাফা অর্জন করার আশায় তারা বছরব্যাপি পশু পালন করেন। অন্যদিকে সারা বছর গোশত ক্রয়ে অক্ষম দরিদ্র মানুষেরা কুরবানির জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকে। দেশের চামড়া শিল্প কেন্দ্রীক অর্থনীতি কুরবানি নির্ভর।

ইসলামে কোন ইবাদত রহিত করার উদাহরণ পাওয়া যায় না; বরং বিকল্প পদ্ধতিতে সে সব ইবাদত পালন করার নজির রয়েছে। কুরবানি বাস্তাবয়নে বিভিন্ন দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠলেও আমাদের দেশে হাটে গিয়ে পশু ক্রয় এবং দলবদ্ধ হয়ে সেটি জবাই করা এখন পর্যন্ত একমাত্র রীতি।

তাছাড়া এখানে পশুর নিরাপদ কেনা-বেচার জন্য উন্নত বিশ্বের মত ‘লাইভস্টক মার্কেট’ যেমন নেই, তেমনি নিরাপদ জবাই ব্যবস্থাপনা হিসেবে ‘পাবলিক এবাট্রর’ও গড়ে উঠেনি। ফলে করোনার সংকটকালীন সময়ে ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও জবাই ব্যবস্থাপনায় সনাতন পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয কৌশল অবলম্বন পরিস্থিতির একান্ত দাবি।


‘ফিকহুল ওয়াকি’ তথা পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ইসলামী শরীয়তের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রসিদ্ধ নীতি। পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মু’মিনগণ তোমরা সতর্কতা অবলম্বন কর’ (নিসা : ৭১)।

এখানে সতর্কতার কথা মূলতঃ শত্রু ও বিপদের মাত্রা নির্ণয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে শত্রুর অবস্থার আলোকে তোমাদের উপর সম্ভাব্য যে নেতিবাচক পরিস্থিত তৈরি হতে পারে, সে অনুযায়ী তোমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ কর। আল্লাহ বলছেন, ‘তোমরা মানুষদেরকে প্রজ্ঞা এবং উত্তম নসীহতের সাথে ইসলামের দিকে আহবান করো; আর সুন্দর যুক্তিতে তাদের যুক্তিগুলো খন্ডন কর’ (নাহল: ১২৫)। এখানে প্রজ্ঞা দ্বারা মূলতঃ পরিস্থিতির আলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপকেই বুঝানো হয়েছে।

হাবশা এবং মদীনায় মুসলমানদের দুটো হিজরতই ছিলো মূলতঃ উদ্বুত পরিস্থিতি কেন্দ্রিক। মক্কার প্রাথমিক দিনগুলোতে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও বিশ্বাসগত নৈকট্যের কারণে মুসলিমরা রোমান পরাশক্তিকে সমর্থন করতেন আর কুরাইশরা পারস্য পরাশক্তিকে সমর্থন করতেন।

মদীনায় হিজরত পরবর্তী সময়ে নবীজী (সাঃ) পরিস্থিতি অনুযায়ী অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। মদীনার সনদ এবং হুদাইবিয়া সন্ধি পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়ার বাস্তব উদাহরণ। মুয়ায ইবনে জাবালকে (রাঃ) ইয়েমেনের প্রশাসক নিযুক্ত করার সময় নবীজী (সাঃ) কুরআন ও সুন্নাহতে কোন বিষয়ের সমাধান না পাওয়া সাপেক্ষে পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুমতি দিয়ে ছিলেন (মুসনাদে আহমাদ)।

এটাই মূলতঃ ফিকহুল ওয়াকি বা পরিস্থিতিগত ফিকহ। যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করার ব্যপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই জনবান্ধব। ক্বাওয়ায়িদুল ফিকহে যেটি ‘কাঠিন্যতা সহজতার পথকে উম্মুক্ত করা’ ও ‘সংকীর্ণতা প্রশস্ততাকে অগ্রাধিকার দেয়’ নীতির অধীনে পড়ে।

সুতরাং ক্বাওয়েদুল ফিকহের আলোকে করোনাকালীন কুরবানি বিধান বাস্তবায়নে বিক্রেতার জন্য সহজতর পথ উম্মুক্ত করে দেয়ার অর্থ ঝুঁকিমুক্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার মাধ্যমে তার পশুটি বিক্রির ব্যবস্থা করে দেয়া। আর ক্রেতার জন্য সহজতর পথ উম্মুক্ত করার অর্থ হচ্ছে তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সাপেক্ষে কুরবানির পশু ক্রয় ও কুরবানি আদায়ে বিকল্প পথের সন্ধান দেয়া।

বাস্তবপক্ষে আমাদের হাট ও জবাই ব্যবস্থাপনা দুটোই ঝুঁকির কাজ। পরিস্থিতি অনুযায়ী সরাসরি হাটে না গিয়ে অনলাইনে কিংবা খামার থেকে পশু ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। পশুর বাস্তব ছবি ও যৌক্তিক মূল্য, পশুর নির্দিষ্টায়নে কিউআর কোড ব্যবহার, ক্রেতা-বিক্রেতার সম্মতি, পশু ও মূল্য হস্তান্তর, পশুর পরিবহন খরচ ও ক্রেতার পছন্দের ইখতিয়ার ইত্যাদি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয় করে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানো যায়।

খামার ভিত্তিক কেনা-বেচার ক্ষেত্রে খামারের নির্দিষ্ট হটলাইনে যোগাযোগ করে দৈনন্দিন ভিত্তিতে ক্রেতার জন্য সময় নির্ধারণ এবং খামারে ক্রেতার সংখ্যা সীমিতকরণ করা সম্ভব। খামার কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্রেতার কাছে পশু পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারে কিংবা খামারে জবাই করার ব্যবস্থা রাখতে পারে।

পশু জবাইয়ের দিন পর্যন্ত তা রক্ষনাবেক্ষণ করতে যে পরিমাণ খরচ হবে সেটি ক্রেতা বহন করবে কিংবা পশু বিক্রির সময় খামার কতৃপক্ষ প্রাক্কলিত খরচ পশুর মূল্যের সাথে সমন্বয় করে নিবে। পরিবেশ বান্ধব এবং সুবিধাজনক হওয়ায় এ পদ্ধতিটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খুবই জনপ্রিয়।

শহর এলাকায় সরাসরি হাটে গিয়ে পশু কিনতে হলে ক্রেতা এবং বিক্রেতা সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করবে। ক্রেতাদের নির্দিষ্ট টোকেন প্রদান করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আনুপাতিক হারে হাটে যাওয়ার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। দৈনিক নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেতাকে বাজারে প্রবেশের অনুমতি দেয়া যেতে পারে এবং যাতে করে কেউ বারংবার বাজারে যেতে না পারে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এই পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন করার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক ছোট পরিসরে পশু হাট ব্যবস্থাপনা করতে পারলে এক এলাকার অধিবাসীরা অন্য এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

গ্রাম ভিত্তিক বাজার ব্যবস্থাপনা আরেকটি বিকল্প পদ্ধতি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গ্রামের প্রান্তিক চাষীদের পশুগুলো সে গ্রামেরই কুরবানি দাতারা কিনে নিবে। তবে একই গ্রামে যদি প্রয়োজনীয় সংখ্যক পশু পাওয়া না যায়, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণে সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিত করে অনূর্ধ্ব পাঁচটি গ্রাম নিয়ে ছোট পরিসরে হাট বসানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রেও মসজিদ ও ওয়ার্ড ভিত্তিক অগ্রিম তালিকা তৈরি করে গ্রাম ভিত্তিক হাটে যাওয়ার সময় ও দিন নির্ধারণ করে দেয়া যেতে পারে।

জবাই ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে সিটি করর্পোরেশন বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে কুরবানি জবাই ও বন্টম টিম গঠন করা যেতে পারে। পশু জবাইয়ের আধুনিক মেশিন ব্যবহার একটি যুগোপযুগি পদ্ধতি হতে পারে। সিটি কর্পোরেশন এলাকা ভিত্তিক মেশিন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে সেবাটি চালু করতে পারে।

সহজ ও কম সময়ে অনেক বেশি সংখ্যক পশু জবাইয়ের সেবাটি প্রদান করলে অনাকাংখিত লোক সমাগম এড়ানো সহজ হবে। চাপ এড়ানোর জন্য একদিনে সব পশু জবাই না করে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক পশু জবাই হারে কুরবানির দিনগুলোতে সব পশু জবাইয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।

ইতিমধ্যে মজুরির বিনিময়ে ঢাকায় পশু জবাই ও কাটার কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ। এটি গ্রাম কেন্দ্রিকও প্রচলন করা যেতে পারে। দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো এ সেবায় এগিয়ে আসতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শহর ও গ্রামের সর্বত্র সমান পরিস্থিতি নয়। শহরে যারা কুরবানীর ব্যবস্থা করতে সক্ষম নয়, তারা গ্রাম কিংবা সুবিধাজনক স্থানে কুরবানীর অর্থ পাঠিয়ে দিতে পারেন। কেবল কুরবানীর দিনগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কেউ কুরবানী করতে ব্যর্থ হলে পশু ক্রয়ের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ দরিদ্র আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অসহায় প্রতিবেশীদের মাঝে বন্টন করতে পারবেন।

দেশের নিম্ম ও মধ্যবিত্তের আর্থিক সংগতির সুরক্ষা দিতে প্রয়োজনে পূর্বের বছরগুলোর অনুরূপ পরিমাণ কুরবানির বাজেট রেখে তার কিছু অংশ দিয়ে কুরবানি ও বাকী অংশ সাদাকাহ করতে পারে। ইসলামে কুরবানি একটি দরিদ্রবান্ধব ইবাদত। কুরবানির পশু বিক্রি করে দরিদ্ররা যেমন আর্থিক স্বচ্চলতা অর্জন করে, তেমনি গোশত থেকে শারীরিক পুষ্টি লাভ করে।

কুরবানি ধনী-গরীবের মাঝে অর্থ প্রবাহে আবর্তন সৃষ্টি করে। ধনীদের উচিত প্রান্তিক মানুষের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে এগিয়ে আসা। কুরবানির জন্য পশু ক্রয় সে প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের নামান্তর। স্মতব্য যে, কুরবানির কোনো বিকল্প নেই। তাই কুরবানি নিশ্চিত করে পাশাপাশি ব্যাপকহারে দান-সাদাকাহ করা এ সময়ের একান্ত দাবি।

করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বিকল্প পদ্ধতি সমুহ অবলম্বন করে কুরবানীর বিধান বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আপামর মুসলিম ইসলামের বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিস্থিতি অনুযায়ী কুরবানীর বিধান পরিপালন করতে পারে।

যৌথ লেখক : ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ এবং মুহাম্মদ মোস্তফা হোসাইন শাহীন, পিএইচডি গবেষক, ইউনিভার্সিটি অব মালায়া, মালয়েশিয়া।

১৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৯

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: সচেতনতা এবং উত্তমরূপে ধর্মীয় আচারাদি পালন করা সম্ভব। সমস্যা হচ্ছে আমরা সচেতন থেকে কাজ করতে অভ্যস্ত হচ্ছি না। আমার কাছে এটা খুবই হতাশাজনক মনে হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.