নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্

অতনু কুমার সেন

সংক্ষেপে নিজের সম্পর্কে মূল্যায়নঃ ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! একটু introvert টাইপের। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্জের মত স্বপ্ন দেখে যাই। স্বপ্ন দেখি আকাশ ছুবো, মেঘের ভেলায় উড়ে যাব, নিজের রঙে রাঙ্গিয়ে দিব, সত্য ও সুন্দরের আলো ফোটাবো। জানিনা পারব কি ব্যর্থ হবো। চেষ্টা তবু করেই যাবো।

অতনু কুমার সেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোটা পদ্ধতি কি পরিমান বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং নিরাশ করে দেয় নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। কোনোদিন মনে হয়নি এই বিষয় নিয়ে লিখতে হবে।

১৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৫৮

২০০৯ সালের দিকে রেগুলার টিউশনি করাতাম। প্রায় প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হতো কারণ আমার টিউশনি শুরু হতো সকাল সাতটায় এবং আমি থাকতাম মিরপুর রুপনগরে আর রূপনগর থেকে মিরপুর এক নাম্বার অথবা গাবতলী বাস স্ট্যান্ডে হেঁটে আসতে হতো বাস ধরার জন্য। একদিন টিউশনি শেষ করে সাভার থেকে মিরপুর ১ বাসে করে ফিরছিলাম। চোখে ঘুম ঘুম ভাব ছিল কিন্তু মোবাইলের রিংটোনে ঘুম ভেঙে যায় এবং ফোন রিসিভ করে দেখি বাবা কল দিয়েছে। কল দিয়ে বাবা বলল কয়েক মাস আগে আমি তোর জন্য রেকর্ড কিপার পদে এপ্লাই করেছিলাম কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, আগ্রাবাদ চট্টগ্রাম। ওইখানে পরশুদিন নিয়োগ পরীক্ষা দিতে হবে তোর, তুই তোর হাসি দিদির বাসায় থাকিস। আজকে রাতের আমরা ট্রেনে চট্টগ্রাম যাব। বাবার কথামতো আমি গাবতলী নেমে, আজিমপুরের দিকে যাই।

ওই সময়ে আমি রানিং স্টুডেন্ট ছিলাম সবেমাত্র ইন্টার পাশ করেছি। আজিমপুরে হাসিদির বাসায় গিয়ে সজলাদাদা কে বললাম, পরীক্ষা দিতে যাবো চট্টগ্রাম কিন্তু দাদা আমার তো কোন প্রিপারেশন নেই এবং আমি এর আগে কোনদিনও নিয়োগ পরীক্ষার সম্মুখীন হই নাই। সজল দাদা, আমাকে কিছু প্রাথমিক ধারণা দিল কিভাবে নিয়োগ পরীক্ষা হয় এবং পরীক্ষার পরে ভাইবা দিতে হয় এবং দাদার একটা ব্যবহৃত ফরমাল শার্ট দিল। রাতের ট্রেনে বাবার সাথে আমি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হই এবং দেখতে পেলাম পুরো ট্রেনে প্রায় সকল যাত্রীই পরীক্ষার্থী। পুরো ট্রেন পরীক্ষার্থীতে ভরপুর ছিল, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না এমন ঠাসাঠসি। একজন আমার বয়সী পরীক্ষার্থীকে, আমার সিট্ এর পাশে বসতে দিয়েছিলাম এবং ওর সাথে কি কি প্রশ্ন আসতে পারে তা নিয়ে পুরো ট্রেন জার্নিতে আলোচনা হয়েছিল এবং বাবা তার সাধারণ জ্ঞান আমাদের সঙ্গে শেয়ার করছিল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। ট্রেন চট্টগ্রাম পৌঁছানোর পরে আমি এবং আমার বাবা আমার মাসির বাসায় গিয়ে উঠলাম।

যে স্কুল এন্ড কলেজে পরীক্ষা হয়েছিল, সম্পূর্ণ স্কুল এবং কলেজটি নিয়োগ পরীক্ষার্থীতে ভরপুর ছিল। কম করে হলেও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার হবে মাত্র কয়েকটি পদ এর জন্য। লিখিত পরীক্ষা শেষ করে বাইরে বেরোনোর পর আমার মেসো জিজ্ঞাসা করল করলো কিরে বাপজান পরীক্ষা কেমন হইছে তোমার? আমি উত্তরে বললাম পরীক্ষা মোটামুটি হইছে কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক বেশি টিকতে পারব বলে মনে হয় না। মেসো বলল দেখা যাবে আগামীকাল, দশটায় রেজাল্ট দিবে। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই দেখি মেসো এবং বাবা রেডি হয়ে আছে পরীক্ষার রেজাল্ট দেখতে যাওয়ার জন্য। পরীক্ষার রেজাল্ট পেপার এ আমার নাম এবং রোল নম্বর প্রথম দিকে দেখেই আমরা সবাই অবাক হয়েছি কিছুটা। কারণ লিখিত পরীক্ষার রেজাল্টে আমি প্রথম স্থান অধিকার করেছি। আমার রোল নাম্বার ছিল ৪১। মেসো বললেন, কিরে বাপজান তুমি তো প্রথম হইছো এখন ভাইবার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে (আমাদের সবাই খুশিতে কান্না পাওয়ার অবস্থা)। আরো বললেন, আগামীকাল পিএসসি ভাইবা বোর্ডের লোক তোমাদের ভাইবা নিবে। এই প্রথম আমি পি.এস.সি শব্দটি সঙ্গে পরিচিত হই পি.এস.সি মানে হল পাবলিক সার্ভিস কমিশন। বর্তমানে পি.এস.সি শব্দটির সঙ্গে প্রায় সবাই যুক্ত কিন্তু ২০০৯ সালে ব্যাপারটা এমন ছিল না।

ভাইবা দিতে যাই সজল দাদার দেয়া ফরমাল টি-শার্টটি পড়ে কিন্তু ভালো করে ইন করতে পারছিলাম না। লিখিত পরীক্ষার দিন এক সিনিয়র ভাই এর সাথে পরিচয় হয়। হঠাৎ করেই ওই বড়ো ভাইয়ের সঙ্গে দেখা, বড় ভাই আমাকে জিজ্ঞাসা করলো আরে অতনু তুমি উত্তীর্ণ হয়েছো!! দেখে ভালো লাগলো। আমি বললাম ভাইয়া আমি প্রথম স্থান অধিকার করেছি রেকর্ড কিপার পদের পরীক্ষার্তীদের মধ্যে। ভাইয়া বলল, আমাদের সিনিয়র অফিসার পরীক্ষার্তীদের মধ্যে আমিও প্রথম হয়েছি। বড় ভাই আমার প্যান্ট এর ইন ঠিক করে দিলেন এবং আমাকে সাহস দিয়ে বললেন ভাইবা নিয়ে মোটেই চিন্তা করোনা তুমি সব চাইতে বেশি নম্বর পেয়েছো লিখিত পরীক্ষায় এবং রানিং স্টুডেন্ট তুমি সবার চাইতে ভালো উত্তর দেবে আমি শিওর আমি তোমার কনফিডেন্স দেখেছি ঐ দিন।

বড় ভাইয়ের কথায় বেশ সাহস পেলাম এবং কনফিডেন্স লেভেল আরো বেড়ে গেল। ভাইবা রুম থেকে প্রথমেই আমার নাম ধরে ডাক দিলো। আমি ভিতরে ঢুকলাম নমস্কার দিয়ে। সজল দাদা আমাকে যেভাবে প্রফেশনালি বসতে বলেছিল আমি ওইভাবেই বসলাম চেয়ারে। ভাইবা বোর্ডের প্রায় সকলেই আমাকে বেসিক কিছু প্রশ্ন করলেন বাংলায় এবং আমি তার যথাযথ উত্তর দিলাম যেমন আপনার বাবা কি করেন? আপনি কি করেন? এত অল্প বয়সে কেন চাকরি করবেন? আপনি কম্পিউটার জানেন?

ভাইবা পরীক্ষার একদম শেষের দিকে একজন মহিলা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি ট্রান্সলেশন করতে পারেন যে, আমি রেকর্ড কিপার পোস্টটির জন্য এপ্লাই করেছি এবং আমি সাথে সাথেই ইংলিশে উত্তর দিলাম "I have applied for the post of record keeper" তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে প্রশ্ন করলেন সে ঢাকা যায় তার ইংলিশ কি হবে আমি তার উত্তর দিলাম " He goes to Dhaka" তিনি হাসিমুখে আমার সামনে তিনি একটি কাগজে লিখে রাখলেন যে আমি নয় নাম্বার পেয়েছি দশের মধ্যে।

ভাইবা রুম থেকে বের হয়ে দেখি ঐ বড় ভাই, বাবা এবং মেসো আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। আমি বের হওয়ার পরে সবার আগে ঐ বড় ভাই জিজ্ঞেস করলেন ভাইবা পরীক্ষা কেমন হয়েছে অতনু? আশা করি তোমার ভাইভা পরীক্ষা অনেক ভালো হয়েছে। আমি বললাম ভাইয়া, আমি সকল প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছি সঠিকভাবে এবং আমি দেখতে পেয়েছি একদম শেষে একজন ম্যাডাম নয় নম্বর দিয়েছেন আমাকে ১০ এর মধ্যে। ভাইয়া বলল আমাকেও নয় নাম্বার দিয়েছে ১০ এর মধ্যে তাহলে তোমার চাকরি কনফার্ম। ভাইয়া আমাকে অফিস এর দারোয়ানের ফোন নাম্বার দিলেন এবং আমার ফোন নাম্বার নিলেন এবং তার ফোন নাম্বার দিলেন যোগাযোগ করার জন্য।

প্রায় কিছুদিন পরপরই আমি ওই সিকিউরিটি গার্ডকে কল দিতাম এবং খোঁজখবর নিতাম। হঠাৎ একদিন ওই বড় ভাইয়ের আমাকে কল দিয়ে বলল সে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়েছে যোগদানের জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন এবং আমার কি খবর। আমি উত্তরে বললাম ভাইয়া আমাকে তো ডাকিনি ওরা। ভাইয়া বলল তুমি সিকিউরিটি গার্ডকে এখনই কল দিয়ে খোঁজ নাও। আমি সিকিউরিটি গার্ড কে সাথে সাথে কল দিলাম এবং তিনি বেশ নম্র হয়ে বললেন বাপজান আপনার চাকরি হয় নাই। বিভাগীয় কোটায় অন্য আরেকজন এর চাকরি হয়েছে। আপনার পিরোজপুর জেলায় কোন কোটা নাই। বিভাগীয় কোটা বলতে কোন বিষয় আছে ঐদিনই জানলাম প্রথম। কি পরিমান কষ্ট পেয়েছিলাম ওই সময়টাতে তা বলে বোজানোর কোনো শব্দ আমার কাছে নেই। ঐ দিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে দেশেই থাকবো না এবং কোনদিন আমি সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করব না।

সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমি সবগুলো কথাই নিজের সাথে রাখতে পেরেছি। পড়াশোনা শেষ করে আর চাকরি পিছনে ছুটতে হয়নি একবারের জন্যও বরং BBA দ্বিতীয় বর্ষের সেকেন্ড সেমিস্টার থেকেই আমি ছিলাম একজন সফল উদ্যোক্তা।

With the blessings of the Great Spirit, I have honored all my commitments. Upon completing my studies, I walked a path that required no pursuit of employment. Instead, from the second semester of my second year as a BBA student, I found success as a freelancer, novice investor, and entrepreneur

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ২:০৮

নতুন বলেছেন: মেধায় যারা ভালো করবে তাদের জন্য ওয়েটিং লিস্ট থাকা উচিত যাতে তাদের পরের কোন পদে নেওয়া যায়।

দেশে আরো কত কোটা আছে, প্রশ্নফাস, তদবির, ঘুষ.. :(

১৯ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৪:০৭

অতনু কুমার সেন বলেছেন: দেশে আরো কত কোটা আছে, প্রশ্নফাস, তদবির, ঘুষ.. :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.