নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংক্ষেপে নিজের সম্পর্কে মূল্যায়নঃ ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! একটু introvert টাইপের। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্জের মত স্বপ্ন দেখে যাই। স্বপ্ন দেখি আকাশ ছুবো, মেঘের ভেলায় উড়ে যাব, নিজের রঙে রাঙ্গিয়ে দিব, সত্য ও সুন্দরের আলো ফোটাবো। জানিনা পারব কি ব্যর্থ হবো। চেষ্টা তবু করেই যাবো।
প্রাচীন কালের পূণ্যভূমি "কাশ্যপমর " , যার নামকরণ ভারতীয় ঋষি কাশ্যপ থেকে , পরবর্তীকালের কাশ্মীর। মহাভারতে এই জায়গার উল্লেখ আছে। মূল অধিবাসী হলেন কাশ্মীরি পন্ডিতরা ,যাদের মনে করা হয় ঋষি কাশ্যপের উত্তরসূরী ১৩৪৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন হিন্দু রাজা কাশ্মীর শাসন করে। এখানে যারা হিন্দু আছেন, তারা হয়তো কাশ্যপ মুনির কথা শুনে থাকবেন হিন্দু ধর্মের গল্পগুলিতে (৬-১০ম শ্রণীর )।
এর পরে শুরু হয় একের পর এক বহিরাগত মুসলমানদের আক্রমণ। শুরু হয় ধর্মান্তকরণ। এরপর ১৫৮৭ থেকে ১৭৫২ পর্যন্ত কাশ্মীর থাকে মুঘল বাদশা দের দখলে। সবথেকে বেশী ধর্মান্তকরণ করা হয় ঔরঙ্গজেব এর শাসনকালে। বর্তমানকালের বেশীরভাগ কাশ্মীরি মুসলমান ধর্মান্তরিত কাশ্মীরি পন্ডিত। ঔরঙ্গজেবএর পর মূঘল সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত গেলে কাশ্মীরে আসে আফগান লুঠেরা রা (১৭৫২-১৮১৯) । এরপর আফগানদের থেকে কাশ্মীর ছিনিয়ে নেয় শিখরা। শিখরা রাজ্য হারায় ব্রিটিশদের কাছে। ১৮৪৬ সালে ব্রিটিশদের থেকে কাশ্মীর কিনে নেয় হিন্দু ডোগরা রাজা গুলাব সিং , কাশ্মীরের শেষ স্বাধীন রাজা হরি সিং কে মনে রাখুন , ১৯৪৭ সালের পর তাঁর ভুমিকা ছিলো ভীষণ গুরুত্বপুর্ণ। ১৯৪৭ পরবর্তী নাটকের প্রধান কুশীলবরা ছিলেন : মহারাজা হরি সিং , জওহরলাল নেহেরু , মো : আলি জিন্নাহ এবং শেখ আবদুল্লা (১৯০৫-১৯৮২) .
কে এই শেখ আবদুল্লাহ? এক সাধারণ গরীব কাশ্মীরি মুসলমান পরিবারে জন্ম। ১৭২২ সালে তাঁর পূর্বপুরুষ কাশ্মীরি পন্ডিত রঘুরাম কাউল ইসলামে ধর্মান্তরিত হন। ১৯৩০ সালে ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিস্ট্রি তে M.Sc করেন। ছিল তাঁর অনেক রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা। ১৯৩৭ সালে নেহরুর সাথে পরিচয় এবং তৈরি হয় বন্ধুত্ব। দুজনেই কাশ্মীরি -একজন কাশ্মীরি হিন্দু পন্ডিত অন্যজন converted কাশ্মীরি মুসলমান।দুজনের কেউই মহারাজা হরি সিং কে পছন্দ করেন না , তাঁর পতন চান। দুজনেই 'সেক্যুলার' এবং মহাত্মা গান্ধিকে গুরু মানেন। আবদুল্লাহর আত্মজীবনী "অতীশ -এ -চিনার" থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
১৯৩৮ সাল। শেখ আবদুল্লাহ কোন কারনে পাঙ্গা নিলেন হরি সিংহ এর সাথে। মহারাজএর মান সম্মান বলে কথা। হরি সিং তাঁকে জেলে ভরে দেন ৬ মাসের জন্য। এর আগে আবদুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজনৈতিক দল মুসলিম কনফারেন্স যা পরবর্তী কালে নাম পাল্টে হয় ন্যাশনাল কনফারেন্স। মহাত্মা গান্ধীর হস্তক্ষেপে হরি সিং তাঁকে তাড়াতাড়ি মুক্তি দিতে বাধ্য হন। শুরু হয় হরি সিং এর সাথে আবদুল্লার খুল্লাম খুল্লা দুশমনী। ততদিনে আবদুল্লা মোটামুটি কাশ্মীরের নেতৃস্থানীয় স্তরে পৌঁছে গেছেন।
১৯৪৭-১৫ই আগস্ট -ভারত ভাগ -স্বাধীন ভারত বর্ষ -মহারাজা হরি সিং কি করবেন ?
ব্রিটিশরা তাঁকে তিনটি অপশন দিলো ১) ভারতের সাথে সংযুক্তি ২) পাকিস্তানের সাথে সংযুক্তি অথবা ৩) স্বাধীন হওয়া। হরি সিং সময় চাইলেন। তিনি তাঁর প্রজাদের সাথে কথা বলতে চান। শেখ আব্দুল্লাহ ধুরন্ধর রাজনীতিবীদ , তিনি আঁচ করতে চাইছিলেন মহারাজা কি চান। শেখ আবদুল্লাহ বুঝতে পেরেছিলেন নতুন পরিস্তিতিতে স্বাধীন ভাবে কাশ্মীরের টিঁকে থাকা মুশকিল , মনে মনে ইচ্ছা শর্তসাপেক্ষে ভারতের সাথে যুক্ত হওয়ার। প্রতিরক্ষা ,বিদেশ, কারেন্সী মূদ্রণ ইত্যাদি কয়েকটি বিষয় ছাড়া বাকী সবকিছুর নিয়ন্ত্রন থাকবে কাশ্মীরের হাতে। মনে উচ্চাকাঙ্খা ছিলো যে মহারাজার বিদায় হলে তিনি হবেন কাশ্মীরের সর্বেসর্বা। এদিকে মহারাজা হরি সিংএর তরফ থেকে কোন উচ্চবাচ্য শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু তিনি মনে মনে বিভিন্ন পার্মুটেশন -কম্বিনেশন ছকে যাচ্ছেন।
২০ অক্টোবর ১৯৪৭ , জিন্নাহর নবগঠিত পাকিস্তান করলো কাশ্মীর আক্রমণ। মহারাজের সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করতে রাজি নয়। তাদের লক্ষ্য মহারাজ কে জোর করে অপসারিত করে কাশ্মীর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা। জিন্নাহর শ্লোগান -কাশ্মীর বনেগা পাকিস্তান। মহারাজ প্রমাদ গুনলেন। তাঁর রক্ষীরা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কাছে খড়কুটোর মত উড়ে গেলো। নৃশংস হত্যালীলা চালাতে চালাতে তারা পৌছে গেল শ্রীনগরের দোরগোড়ায়। কাশ্মীরের এক বিরাট অংশ চলে গেল তাদের দখলে।বিষম বিপদ বুঝে তিনি ছুটে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর কাছে। তিনি ভারতের সাথে যুক্ত হতে চান। লর্ড মাউন্টব্যাটেন এর উপস্থিতিতে সাক্ষরিত হল "Instrument of Accession" . দিনটা ছিল ২৬ অক্টোবর ১৯৪৭। জম্মু -কাশ্মীর হল এক ভারতীয় রাজ্য।
প্রধানমন্ত্রী নেহেরু ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আদেশ দিলেন পাকিস্তানীদের হটানোর। শুরুহোল স্বাধীনতার পর ভারত এবং পাকিস্তানের প্রথম যুদ্ধ। ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীর ভ্যালীর প্রায় দুই -তৃতীয়াংশ পুনুরুদ্ধার করে এবং তাদের আশা ছিল বাকি এক-তৃতীয়াংশ এবং গিলগিট -বল্টিস্তান ও উদ্ধার করতে সমর্থ হবে। এমত অবস্থায় নেহেরু যুদ্ধ থামাতে বলেন। কেন ? প্রসঙ্গতঃ , ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ ভারত স্বাধীন হলেও ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ভারতের গভর্ণর জেনারেল ছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। নেহেরুর মুসলিম প্রীতি এবং লেডি মাউন্টব্যাটেন এর প্রতি নেহেরুর আসক্তি ছিল তাদের সম্পর্কের কথা তো সবাই জানে ছবিতেও দেখা যায় নেহেরু ও লেডি মাউন্টব্যাটেন এর অন্তরন্গতা। লেডি মাউন্টব্যাটেন প্রতি বেহায়া আসক্তির জন্য নেহেরু তার কথাতে নাচেতেন সেজন্য দেশের লোকসান হবে জেনেও নেহেরু দেশের সন্গে বেইমানি করতে ভাবেতেন না সেজন্য তাড়াতাড়ি যুদ্ধ থামাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গতঃ , ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ ভারত স্বাধীন হলেও ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ভারতের গভর্ণর জেনারেল ছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন।
মাঝপথে যুদ্ধ থেমে গেলো। নেহেরুর এই অমার্জনীয় ভুলের প্রায়শ্চিত্ত ভারত করতে থাকবে চিরকাল। যুদ্ধ বন্ধ হওয়া সময়ে পাকিস্তান যতটা জায়গা ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছিলো তা হল পাকিস্তানের কাছে "আজাদ কাশ্মীর" এবং ভারতের কাছে Pakistan Occoupied Kashmir বা POK . ভারতের নিজেদের অংশের কাশ্মীর হল জম্মু & কাশ্মীর বা J&K . পাকিস্তানীরা এটাকে বলে Indian Occupied Kashmir বা IOK . এরপর সিন্ধু দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। পাকিস্তান তাদের অধিকৃত কাশ্মীরের একটা অংশ পেয়ারা দোস্ত চীন কে দান খয়রাতি করেছে, যেটাকে বলা হয় China-Occupied -Kashmir বা (COK).ভারত এবং পাকিস্তান ১৯৬৫ , ১৯৭১ এবং ১৯৯৯ সালে কাশ্মীর নিয়ে যুদ্ধ করেছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধে পরাজয়ের পর পাকিস্তান ভারতের সাথে "সিমলা চুক্তি " করে , --এখানেও ইন্দিরা গান্ধী তার মুসলিম প্রীতির কারনে পাকিস্তানের প্রতি খুব দয়া দেখান এবং সেখানে সিদ্ধান্ত হয় কাশ্মীর নিয়ে শত্রুতা দু দেশ আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটিয়ে নেবে।১৯৯০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় কাশ্মীর বেশ শান্ত ছিল। বিচ্ছিন্নতা বাদ বা আজাদী চাওয়া ইত্যাদি বিষয় সেখানে ছিল না।
১৯৯০ সালে কি হলো ?? ১৯৯০ সালে ভারতের কাশ্মীরে কি হল বুঝতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে আরো বেশ কয়েক বছর এবং দেখতে হবে ১৯৭৫-১৯৯০ এই সময়ে পাকিস্তানে কি হল। সত্তরের দশকের শেষ দিকে আফগানিস্তানে হানা দেয় তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া। আমেরিকার সাথে সোভিয়েত রাশিয়ার ঠান্ডা যুদ্ধ তখন তুঙ্গে। আমেরিকার দোসর পাকিস্তান।সামরিক অভ্যুথান করে ক্ষমতায় এসেছেন জেঃ জিয়া-উল-হক। জুলফিকার আলি ভুট্টো কে ফাঁসি তে ঝুলিয়েছেন। তাঁর ওপর বর্ষিত হচ্ছে আমেরিকার আশীর্বাদ।মহাশক্তিশালী সোভিয়েত কে আফগানিস্তানে আটকাতে আমেরিকার বলির পাঁঠা হতে রাজী পাকিস্তান। বিনিময়ে চাই ডলার। আফগানিস্তানে গিয়ে লড়াই করার জন্য পাকিস্তান তৈরী করবে হাজার হাজার ঈমানী জোশে উদ্বুদ্ধ জিহাদী। তৈরী হল কয়েকশত জিহাদী ট্রেনিং ক্যাম্প। আর এই ক্যাম্প গুলো স্থাপনা করা হল পাকিস্তানের দখল করা 'আজাদ কাশ্মীর " অংশে। তৈরী হল পাকিস্তানী এবং আফগান তালিবান।এই জিহাদী যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলেদিলো আমেরিকা। ঈমানী জোশ দিলো সৌদি আরব। ১৯৭৩ সালের আরব -ইস্রায়েল যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে পেট্রো-তেলের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে।পেট্রোডলারএ সৌদি রাজাদের তখন আঙুল ফুলে কলাগাছ। অশিক্ষিত ,বর্বর সৌদি রাজবংশের এখন শুধু তেল রপ্তানী করে মন ভরছে না , তারা বিশ্ব জুড়ে রপ্তানী করা শুরু করল ওয়াহাবী ইসলাম। সৌদি অর্থে বিভিন্ন দেশে তৈরী হল একের পর এক মসজিদ।এগুলিতে সৌদীরা তাদের ওয়াহাবী প্রপাগান্ডা ছড়াতে শুরু করল বিশ্ব জুড়ে। তৈরী হল ধর্মের ভাইরাস এবং অর্থের মিশ্রনে তৈরি এক ভয়ংকর টাইমবম্ব। পাকিস্তানে প্রশিক্ষিত জিহাদী /মুজাহীদ/আফগান/পাঠানরা আফগানিস্তানে গিয়ে সোভিয়েতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।শহীদ হওয়ার পর তাদের জন্য আছে জান্নাত।
পাকিস্তান খুশীতে ডগমগিয়ে উঠল। একদিকে আফগান যুদ্ধে সাহায্য করার জন্য আমেরিকা দিচ্ছে বিলিয়নস অফ ডলার অন্যদিকে দেশের হাজার হাজার জিহাদী যুবক "শাহাদাত " বরণ করছে। সুতরাং তাদের শিক্ষা ,স্বাস্থ্য ,কর্মসংস্থান এবং ভবিষ্যতের কোন দায়-দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেই। পাকিস্তানী আর্মি, ISI অফিসার এবং রাজনীতিবিদদের বিদেশী ব্যাংকে উপচে পড়ছে আমেরিকান ডলার।
১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের মধ্যে এক বিমান দুর্ঘটনায় জেঃ জিয়া-উল-হক নিহত হন।দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। নিন্দুকেরা বলে আমেরিকানদের কাছে তাঁর প্রয়োজনীতা শেষ হয়ে যাওয়াতে তাঁকে "ডাম্প" করা হয়। তাঁর আমলে পাকিস্তানে হাজার হাজার শিয়া মুসলমানদের হত্যা করা হয়। অনেক নিন্দুক বলে বিমানের শিয়া পাইলট প্রতিশোধ নেবার জন্য বিমানটিতে দুর্ঘটনা ঘটায়।
৮০র দশকের শেষ দিকে আফগানিস্তান থেকে হটতে থাকে রুশ বাহিনী। পুল-আউট কমপ্লিট হয় ১৯৮৯ সালে। আফগানিস্থান থেকে আমেরিকাও হাত ধুয়ে ফেলে। পাকিস্তান সমস্যায় পরে এই জিহাদীদের নিয়ে -ধর্মের নামে মারা এবং মরা ছাড়া যারা আর কিছু শেখেনি।
পাকিস্তান চড়ে ছিল বাঘের পিঠে। থামার আর কোনো উপায় নেই। এই জিহাদী গুলোর কিছু অংশ কে পাকিস্তান ভিড়িয়ে দিল ভারতীয় কাশ্মীর অংশে। এরা স্থানীয় মুসলিম যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলে দিলো এবং অনুপ্রাণিত করলো জিহাদে। কাশ্মীরে প্রবেশ করলো টক্সিক ওয়াহাবী মতবাদ। কাশ্মীরি মুসলমান এতকাল অনুসরণ করে এসেছে বুল্লেশা র সুফী ইসলাম। শত শত বছর ধরে তারা পাশাপাশি বাস করেছে কাশ্মীরি পন্ডিতদের সাথে। তৈরী হয়েছে এক অসাধারন অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাকে বলা হয় "কাশ্মীরিয়াত"।
কিন্তু ধর্মের বিষ মেরে ফেললো প্রতিবেশী সুলভ ভালোবাসা কে।
কাশ্মীরের হিন্দু পন্ডিতদের নিধন শুরু হল । ১৯৯০’এর ১৯শে জানুয়ারি একদিনে ঘটে নি। তার আগের বছর থেকেই ফারুখ আবদুল্লা সরকার সেখানকার কুখ্যাত জঙ্গীদের জেল থেকে ছাড়তে শুরু করেন। অন্তত ৭০ জন জঙ্গী ১৯৮৯’এর জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে জেল থেকে ছাড়া পায়। কাশ্মীরী পণ্ডিতদের নিহত হওয়াটা তখন যেন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। এবারে গোটা কাশ্মীর জুড়ে বেছে বেছে নামজাদা পন্ডিতদে’র চিহ্নিত করে হত্যালীলা আরম্ভ হল। সমাজসেবী শ্রী টিকালাল টাপলো’কে প্রকাশ্য দিবালোকে নিম্ন শ্রীনগরে হত্যা করা হল। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হলেন জাস্টিস নিলাকান্ত গাঞ্জো। ঘন্টার পর ঘন্টা তার সেই শবদেহ রাস্তায় পড়ে রইল। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে এডভোকেট প্রেমনাথ ভাট’কে অত্যন্ত নিষ্ঠুর ভাবে মারা হল। ১৯৯০’এর ৪ঠা জানুয়ারি, .... হিজবুল মুজাহিদিন-এর আফতাব একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষনা করলেন, - সমস্ত হিন্দুদের কাশ্মীর ছাড়তে হবে। আল-সাফা বলে অন্য একটি সংবাদপত্রেও একই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল। ক্রমশঃ পন্ডিতদের ঘরের দরজায় দরজায় কাশ্মীর ছাড়ার নোটিশ লটকানোর প্রক্রিয়া শুরু হল।
তখন উপত্যকা জুড়ে শুধু একটাই আওয়াজ, .... “পণ্ডিত মুক্ত কাশ্মীর”। রাস্তায় রাস্তায় এবং উপত্যকা জুড়ে এমন মিছিল আর স্লোগান, ... এই কাশ্মীর "কাশ্মীরিয়াত" আগে কখনও দেখেনি। কাশ্মীরের সমস্ত মসজিদ একসঙ্গে ঘোষনা করল যে, কাশ্মীর’কে পাকিস্তান বানাতেই হবে। মুজাহিদিন’দের উজ্জীবিত করে, এমন সব গান সর্বত্র বারবার বাজতে থাকে।
“(“ওঠো, জাগো, রাশিয়ার পতন হয়েছে। ভারতও চলেছে সেই পথেই, সময় এসেছে কাশ্মীর’কে স্বাধীন করার” .... ।।)
“হাম কেয়া চাহতে ...?
স্বাধীনতা” ... ।
(আমরা স্বাধীনতা চাই ...।।)
“আজাদি কা মতলব কেয়া?
লা ইল্লাহ ই লাল্লাহ ...
(স্বাধীনতা’র অর্থ লা ইল্লাহ ই লাল্লাহ...।)
(কাশ্মীরে থাকতে হলে আল্লাহ-উ-আকবার বলতে হবে।)
(ওরে পাষন্ড, ওরে কাফের আমাদের কাশ্মীর ছেড়ে পালা...।)
“ইঁহা কেয়া চলেগা ...?
– নিজাম-ই-মুস্তাফা...”
( আমরা চাই এই কাশ্মীর পাকিস্তান হোক, যেখানে পণ্ডিতরা না থাকলেও থাকবে তাদের মেয়েরা ...।। )
....নিশ্চিত আসন্ন মৃত্যুও কাশ্মীরী পন্ডিত’দের ততটা ভয় দেখাতে পারে নি, যতটা তারা আতঙ্কিত হলেন এই শেষ স্লোগানটির মর্মার্থ অনুধাবন করতে পেরে।
এবং তাদের বার্তাটি ছিল সুস্পষ্টঃ “ রালিভ, গালিভ ইয়া চালিভ” ... (এসো আমাদের সঙ্গে, মরো ... কিংবা মুক্ত হও...।)
অতএব নিজেদের সম্মান ও জীবন বাঁচাতে, তখন হাতের কাছে যে যা পেলেন তাই নিয়েই বেশীরভাগ পন্ডিত-ই তাদের বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে পড়িমরি করে পালাতে শুরু করলেন। যেনতেন প্রকারেন সেখান থেকে পালাবার জন্য তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। ট্রাক-লরির ক্যানভাসের ছাউনীর আড়ালে, বাস কিংবা ভাড়ার ট্যাক্সিতে চড়ে শুরু হল পণ্ডিতদের ঘর ছেড়ে পালানোর নির্মম কাহিনী। শুরু হল কাতারে কাতারে হিন্দুর উপত্যকা ত্যাগের রক্তাক্ত ইতিহাস।
সরকার, গোয়েন্দাবাহিনী, সেকুলার মানুষজন, দেশ রক্ষকদের বিবেক ... সবাই রইলেন নিরুত্তর! একটি শব্দ ভুলেও কেউ উচ্চারণ করলেন না।
সেই বীভৎস অত্যাচারের নমুনা জানতে চান? বিখ্যাত কাশ্মীরী শিক্ষাবিদ, সর্বানন্দ কাউল প্রেমী প্রতিদিন যেখানে তিলক পরতেন, কপালের ঠিক সেই অংশে হাতুড়ি দিয়ে পেরেক ঠুকে তাঁকে হত্যা করা হল। বি কে গাঞ্জোকে তার বাড়ীতে খুন করে সেই রক্ত মাখানো ভাত খেতে নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁর সদ্যবিধবা পত্নী’কে। নার্স শ্রীমতী সরলা ভাট’কে গনধর্ষন করে তাঁর উলঙ্গ মৃতদেহটিকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা হয়। মাট্টানের রবীন্দর পন্ডিতা’র শবদেহের উপর আততায়ীরা আনন্দে নৃত্য করে। সোপিয়ানে শ্রী ব্রিজলাল ও ছোটি’র মৃতদেহকে জীপের সঙ্গে বেঁধে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্দীপুরার স্কুলশিক্ষিকা শ্রীমতী গিরজা টিক্কো’ও নৃশংস ভাবে মৃত্যুবরণ করার আগে কাশ্মীরীদের হাতে গণধর্ষনের শিকার হন। বিট্টা কারাটে নামের এক কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ২০ জনেরও বেশি পন্ডিত হত্যা করলেও তার মধ্যে কোন তাপ-উত্তাপ পরিলক্ষিত হয় না। শুধু তাই নয়, তাকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গেই এই কথা সর্বত্র বলে বেড়াতে দেখা যায়।
জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট-ই (JKLF) ছিল ১৯৯০’এর সেই ব্যাপক ও অভিশপ্ত হিন্দু গণহত্যার জন্য অধিকাংশে দায়ী। কাশ্মীরের হাজার হাজার পন্ডিতেরা সেদিন নিহত হয়েছিলেন। হয়েছিলেন পাশবিক ভাবে ধর্ষিতা বা অত্যাচারিতা...।।
এইভাবেই শুরু হওয়া কাশ্মীর হিন্দুশূন্য হবার প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে চলতেই লাগল এবং ১৯৯১’এর মধ্যেই অধিকাংশ পন্ডিত উপত্যকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলেন। সন্ত্রাসবাদী এবং কাশ্মিরী মুসলমানেদের একটি বৃহৎ অংশ কাশ্মীরের অমুসলিম জনগোষ্ঠী’কে উচ্ছেদ করার পাশাপাশি লাগাতার তাদের মঠ, মন্দির তথা দেবস্থান অপবিত্র ও লুঠপাট করে, তাতে অগ্নি সংযোগ করতেও কুন্ঠিত হয় না। হাজার হাজার পণ্ডিতদের বাড়ি-ঘর এবং শ’য়ে শ’য়ে মন্দিরে আগুন লাগিয়ে সম্পূর্ন ধ্বংস করে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ধীরে ধীরে সেই সমস্ত ভূ-সম্পত্তি গ্রাস করে নেওয়া হয়। এই সবকিছুই ঘটে একটি বিবিধসংস্কৃতি সম্পন্ন ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষের বুকে
ইন্টারনেটে আপনি এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আপনি সম্পূর্ণ তথ্য গুলো পেয়ে যাবেন। আমি পুরো আর্টিকেলটি প্রায় ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করেছি ।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২১
অতনু কুমার সেন বলেছেন: ভাই, আপনি ইউটিউব সার্চ করেন এবং ভিডিওটি দেখেন আমার পোষ্টের। তাহলে আপনি সম্পূর্ণ তথ্য গুলো পেয়ে যাবেন। কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ !!
২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:০৯
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: কাশ্মীর নিয়ে সাম্প্রতিক একপেশে পোস্টগুলোর উত্তর অন্য কোন একপেশে পোস্টের মাধ্যমে হওয়া উচিৎ নয়। অথচ, আপনি তা-ই করলেন কি!
আপনার ভাষ্যমতে- 'মুঘল'-রা দখলবাজ, 'আফগানর'-রা লুঠেরা। অথচ, শিখদের শাসন সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেন
'আফগানদের থেকে কাশ্মীর ছিনিয়ে নেয় শিখরা'!!!!
আপনার শব্দ-চয়ন প্রমাণ করছে আপনি মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
এটা কাম্য নয়।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৩৫
অতনু কুমার সেন বলেছেন: ভারতবর্ষ, কখনো আফগান এবং মোগলদের আক্রমন করে নি: মোগল এবং আফগান তারাই নিরীহ ভারতবর্ষকে আক্রমণ করেছিল বিশ্বাস না হলে আপনি ইন্টারনেট সার্চ করতে পারেন। আশা করি সব তথ্য পেয়ে যাবেন।
আর কোন না কোনভাবে শিখরা ভারতীয় জনসংখ্যার একটি বড় অংশ ছিল!! আমার শব্দচয়নের ভুল হতে পারে তার জন্য আমি দুঃখিত
৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ১০:০২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৩
অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ !!
৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ১০:০৩
অগ্নিবেশ বলেছেন: পোষ্টে হিন্দু নির্যাতনের কথা আছে। মুসলমানদের কমেন্টের আশাকরা বোকামী।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৩
অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মূল্যবান কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ !!
৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:১৮
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কঠিন লিখেছেন।
মার্কিন পাকিস্তানি ও বর্বর সৌদি রাজবংশের তৈরি ফ্যাসিষ্ট ওহাবি-সালাফি জঙ্গিরা মানব সভ্যতার শত্রু।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৪
অতনু কুমার সেন বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ
৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বাংলাদেশ বিশ্বের সামনে রোল মডেল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশ ভ্রমণ করা উচিত। ভারত সফররত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ মন্তব্য করেন মোদি।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৫
অতনু কুমার সেন বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৩৭
আজিব ভাই বলেছেন: পক্ষপাতদুষ্ট আধাসত্য লেখা।
৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:১৬
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: লর্ড মাউন্টব্যাটেন হাতেই ভারতবর্ষ খণ্ডিত হয়েছিলো অর্থাৎ পাকি তৈরি হয়েছিলো। তিনি তখনও (কাশ্মীর নিয়ে পাক ভরত যুদ্ধের সময়ও) ভারতবর্ষের(ভারত-পাকি) সেনাপ্রধান ছিলেন।
সাম্প্রদায়িক হিন্দুরা ইদানীং নেহরুকে ভিলেন বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন, যেটা দুঃখজনক! ইতিহাস সময় পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনা না করে সাম্প্রদায়িকতা মনে পুষলে যা হয় আরকি!!
* সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি দেশের জন্য অর্থনীতি শক্তিশালী না করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াটা কতটা যৌক্তিক ছিলো?
৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৮
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: পোস্টে পন্ডিত নেহেরুকে নিয়ে জঘণ্য মিথ্যাচার করা হয়েছে। সুবিধাজনক ঘটনাগুলো ডালপালা গজিয়ে এসেছে, অনেক ঘটনা বাদ পড়েছে। বিজেপি যেটা করে থাকে আরকি....
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে কাশ্মীরকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা বাতিলের পরিকল্পনায় গত সপ্তাহের রোববার থেকে উপত্যকাটিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা হয়; শ্রীনগরে সভা-সমাবেশের ওপরও আরোপ করা হয় নিষেধাজ্ঞা। ৩০০ রাজনীতিক আটক, গৃহবন্দি করা হয়েছে।
লক্ষ্য তো একটাই, সান্তি ফিরে আসা। কিন্তু আদৌ কি সেটা আসবে? আরেকটা গিনিপিগ চেস্ট করে দেখা যাক....
১০| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৬
আদিল ইবনে সোলায়মান বলেছেন: অতিমাত্রায় সাম্প্রদায়িকতা লক্ষ করা যাচ্ছে। মুসলিমদের ক্ষেত্রে আপনার শব্দ চয়ন horrible আর অমুসলিমদের ক্ষেত্রে unreliable!!!!!
১১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৫
পুকু বলেছেন: এরপর আর কিছু বলার নেই।এই পোস্টটি অনেককে কাশ্মিরের আসল চেহারার সাথে পরিচয় করাবে।এখন যা হচ্ছে তাহল তাদের পাপের প্রয়শ্চিত্ত।ভারতে তাদের প্রতি কোনো সহানুভুতি নেই কারোর। কিছু মতলববাজ মানুষ ছাড়া কেউ কিছু বলে না।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৬
অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মূল্যবান কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ
১২| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:০৮
অর্ক বলেছেন: বীভৎসতা, বর্বরতা, পৈশাচিকতা, হিংস্রতা... মাত্র চার পাঁচ শতাংশ হিন্দু ছিলো সে সময় কাশ্মীর ঘাঁটিতে। তাদেরকে সহ্য করতে পারেনি তারা! এরকম আরও বীভৎসতা, বর্বরতার উদাহরণ আছে। সবটা আসেনি আপনার পোস্টে। কাশ্মীর নিয়ে কী বলবো, নিজের দেশের দিকে তাকাই! ২০০১ সালে বি এন জামাত জোট ক্ষমতায় আসার পর এখানে হিন্দুদের সাথে কী হয়েছিল! বাগেরহাটে এরকমভাবে উগ্র শ্লোগান দিতে দিতে বর্বর জঙ্গি এক দল লোক মায়ের সামনে কন্যা পুত্রবধূকে ধর্ষণ, যুবকদের হাত পা কেটে দেয়া। কী হয়নি সে সময়! এটা হাজারো ঘটনার একটি। আবার কখনও ওই পক্ষ ক্ষমতায় আসলে, এই রাষ্ট্র আবার সেই অন্ধকার সময়ে ফিরে যাবে। আমরাও তখন সাধারণ কাশ্মীরিদের মতো নীরব ছিলাম।
ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য। শুভেচ্ছা রইলো। ইতিহাস ইতিহাসই।
১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:৫৮
অতনু কুমার সেন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান কমেন্টের জন্য!!
১৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২৫
মাহের ইসলাম বলেছেন: সত্য পথিক শাইয়ান ভাইয়ের সাথে পূর্ণ সহমত পোষণ করছি।
আলোচনার খাতিরে যদি আপনার কথা সত্যি বলেও ধরে নেই, তাহলেও পুরো লেখা এক পেশে হয়েছে।
বরং উচিৎ ছিল, ভিন্ন আঙ্গিকটাও তুলে ধরা।
কিছু প্রশ্নের উত্তর আপনি এই পোষ্টের কারনেই দিতে পারবেন নাঃ
১। ৯০ এর পরের যে প্রেক্ষাপট , তার সাথে মোদি'র বর্তমান পদক্ষেপের কারণ কি? লাখ লাখ সৈন্য দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করবে বলে আপনি বিশ্বাস করেন?
২। হরি সিং এর সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল আপনার কাছে। কারণ সে ভারতে যোগ দিতে চেয়েছিল। তাহলে রাজ্যের সংখ্যাগরিস্ট মুসলমানদের মতামতের কথা একবারও তুললেন না কেন?
৩। ৯০ এর আগে ভারত কার বিরুদ্ধে কাশ্মিরে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে?
৪। কতজন কাশ্মিরি হিন্ডু পণ্ডিত নিহত হয়েছে? যার জন্যে এমন শিরোনামের লেখা লিখলেন। বিপরীতে যে পরিমাণ মুসলমানকে হত্যা এবং নির্যাতন করা হয়েছে ( এক শিশুকে আশ্রমে কয়েকদিন ধরে রেপ করা হয়েছিল, পুলিশও জড়িত ছিল) তাদেরকে একটা লেখা লিখা যাবে? কার পাল্লা ভারী হবে?
৫। ইন্টারনেট থেকে পেয়েছেন বলেই বলছি, যারা এমন একপেশে দৃষ্টিতে কোন বিষয় দেখে, তাদের কাছ থেকে উপযুক্ত সমাধান পাবেন না। পছন্দের লোকদের বাহবা পাবেন। কিন্তু সমস্যা রয়ে যাবে। কারণ, মূল সমস্যাকে আইডেন্টিফাই করা হয়নি। আপনি যেহেতু দিয়েছেন , আপনি নিজেই বিশ্বাস করেন যে, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করা হয়েছে, পুরো লেখার কোথাও ?
ভালো থাকবেন।
১৪| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২৮
মাহের ইসলাম বলেছেন: এমজেডএফ ভাই,
মুল্যবান কিছু তথ্য তুলে ধরার জন্যে ধন্যবাদ, জানাচ্ছি।
ভালো থাকবেন।
১৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ১০:১২
মাহের ইসলাম বলেছেন: আজকের প্রথম আলোর একটা সংবাদের কয়েকটা তথ্য না শেয়ার করে পারছি না।
১। ১৯৬৬ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য সরকারকে ৯৫ বার বরখাস্ত করেছিল।
২। সরকার ও বিজেপির তরফে বলা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণই নাকি লাভবান হবে। তবে বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) রাজনৈতিক আদর্শ সম্পর্কে যাঁর ন্যূনতম ধারণাও আছে, তিনিও এই আশ্বাসে আস্থা রাখবেন বলে মনে হয় না।
৩। হাফিংটন পোস্টের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা রদ করার ক্ষেত্রেও সেই ‘চাপিয়ে দেওয়ার’ নীতিই অনুসরণ করা হয়েছে। ঘোষণা আসার আগ থেকেই ওই অঞ্চলে মোতায়েন করা হয় ৩০ হাজার সেনা। ঘোষণার পর পাঠানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর আরও ৮ হাজার সদস্য। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেটসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের।
৪। ভারত সরকারের ওপর কাশ্মীরিদের অনাস্থা আরও বাড়বে। আগে থেকেই ভোটযুদ্ধে কাশ্মীরিদের আগ্রহ কম। এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে যেখানে পুরো ভারতের গড় ভোটার উপস্থিতি ৬২ শতাংশ, সেখানে কাশ্মীরে তা ৩০ শতাংশের কম। আর রাজধানী শ্রীনগরে তা নেমেছে ১৪ শতাংশে।
৫। কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সূচনা ১৯৮৭ সালের দিকে। ওই সময় স্থানীয় নির্বাচনে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনের সূচনা হয়।
৬। এবার জম্মু-কাশ্মীর দুই টুকরো করে মূলত হিংসাত্মক জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় বিভেদের পথেই দৌড়ানো শুরু করলেন মোদি। এটি আর যা–ই হোক, ভালো কোনো ফল বয়ে আনবে না।
আমার নিজের কোন মন্তব্ব্য নেই।
১৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:১৫
বুবলা বলেছেন: দারুন তথ্যবহুল লেখা
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৫:৪৫
এমজেডএফ বলেছেন: সময়োপযোগী লেখাটির জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
"নেহেরুর মুসলিম প্রীতি এবং লেডি মাউন্টব্যাটেন এর প্রতি নেহেরুর আসক্তি ছিল তাদের সম্পর্কের কথা তো সবাই জানে ছবিতেও দেখা যায় নেহেরু ও লেডি মাউন্টব্যাটেন এর অন্তরন্গতা। লেডি মাউন্টব্যাটেন প্রতি বেহায়া আসক্তির জন্য নেহেরু তার কথাতে নাচেতেন সেজন্য দেশের লোকসান হবে জেনেও নেহেরু দেশের সন্গে বেইমানি করতে ভাবেতেন না সেজন্য তাড়াতাড়ি যুদ্ধ থামাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। " –তথ্যটি পুরোপুরি সঠিক নয়।
কাশ্মীরের এক পাশে যেহেতু পাকিস্তান সীমান্ত, রাজা হরি সিংহ কোন দেশের সাথে যুক্ত হলে ফায়দা বেশী হবে সেই ফন্ধি-ফিকির খুঁজতে থাকেন। কিন্তু এই দেরি পাকিস্তানের সহ্য হয়নি। তাছাড়া কাশ্মীরের অমুসলিম রাজা ভারতের সাথে যুক্ত হতে পারে - এই সন্দেহে ১৯৪৭ সালের ২২ অক্টোবর পাকিস্তান, পাকিস্তান-সমর্থিত পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলার বিদ্রোহী নাগরিক এবং পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের পশতুন উপজাতিরা কাশ্মীর রাজ্য আক্রমণ করে এর বৃহৎ অংশ দখল করে নেয়। রাজা হরি সিংহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলেও অবস্থা বেগতিক দেখে ভারতের সহায়তা চান। ভারত তখন এই সুযোগের সদব্যবহার করে শর্ত জুড়ে দেয় যে ভারতের সাথে যুক্ত না হলে তারা রাজা হরি সিংহকে সামরিক সাহায্য করবে না। তখন নিরুপায় রাজা আর দেরি না করে ২৬ অক্টোবর ভারতের সাথে যুক্ত হওয়ার চুক্তি করে। ভারতীয় সেনা বাহিনী তখন কাশ্মীরে যুদ্ধ করে কিছু অংশ (পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর) বাদে বাকী কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করে।
যেহেতু কাশ্মীর ভারতের অংশ হওয়ার চুক্তি হওয়ার আগেই পাকিস্তান কাশ্মীরকে দখল করে রেখেছিলো, তাই পাকিস্তান কাশ্মীরকে নিজের ন্যায্য হিস্যা মনে করে জাতিসংঘের কাছে ভারতের আগ্রাসনের বিচার দেয়। জাতিসংঘের উদ্যোগে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে তখন যুদ্ধ থামলেও দেনদরবার চলতে থাকে। জাতিসংঘ রায় দেয়, কাশ্মীরের লোকজন ভোট দিয়ে নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নির্ধারন করবে। কিন্তু ভারত তা মানতে রাজী নয়। যেহেতু রাজা হরি সিংহ ভারতের সাথে যুক্ত হওয়ার চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেলেছে এবং তার ভিত্তিতে ভারত পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করে কাশ্মীর মুক্ত করেছে। তাই চুক্তি মোতাবেক কাশ্মীর ভারতের। অনেক দেন-দরবারের পর ভারত জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নেয়। কিন্তু শর্ত দেয় যে, কাশ্মীরে ভোট হতে হলে আগে পাকিস্তানকে তাদের দখলকৃত আজাদ কাশ্মীর (পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর) ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু পাকিস্তান ভারতকে বিশ্বাস করে না, তাই দখল ছাড়ে না। পাকিস্তানের অভিমত আজাদ কাশ্মীরের দখল ছাড়লে পাকিস্তান আম ও ছালা দুটোই হারাবে। পাকিস্তান তার অধিকৃত অংশের দখল ছাড়ে না, আর দখল না ছাড়লে ভারতও নির্বাচন দেবে না। এইভাবে দুই দেশের একগুঁয়েমীর কারণে কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান আজও বাস্তবতার মুখ দেখেনি।