নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংক্ষেপে নিজের সম্পর্কে মূল্যায়নঃ ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! একটু introvert টাইপের। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্জের মত স্বপ্ন দেখে যাই। স্বপ্ন দেখি আকাশ ছুবো, মেঘের ভেলায় উড়ে যাব, নিজের রঙে রাঙ্গিয়ে দিব, সত্য ও সুন্দরের আলো ফোটাবো। জানিনা পারব কি ব্যর্থ হবো। চেষ্টা তবু করেই যাবো।
আমরা গণরুমে থাকি। আমরা নোংরা।
আমরা এক রুমে পঁচিশজন ঘুমাই।
আমাদের প্রাইভেসি নেই।
সাতটা টা বালিশে পঁচিশজন ঘুমাই।
আমরা উদ্বাস্তুর মতো থাকি।
যে ছেলেটা কোলবালিশ ছাড়া ঘুমোতে পারতো না,সেই ছেলেটাও এখন ঘুমের মধ্যে পাশ ফিরতে পারে না।
জায়গা থাকে না বলে।
আমাদের বিছানায় চাদর নেই।
আসলে আমাদের বিছানাই নেই।আমরা ফ্লোরে ঘুমাই।
পুরো ফ্লোরটাই বিছানা। নিচে কখনো একটা কাঁথা বিছানো থাকে,কখনো থাকে না। তোষকগুলোকে তোষক বলে চিহ্নিত করতে কষ্ট হয়।
আমরা শরনার্থীদের মতো জীবনযাপন করি।
আমাদের একটা শার্ট দিয়ে গোটা বিজনেস ফ্যাকাল্টি প্রেজেন্টেশন দেয়,আমাদের একটা ক্যালক্যুলেটর দিয়ে গোটা সাইন্স ফ্যাকাল্টি পরীক্ষা দেয়,কলাভবনের একটা ছেলের ধার করে আনা গল্পের বই রুমের সবাই পড়ি।
আমরা রুমমেট না।
আমরা ভাই।
আমরা গ্রুপমেট না।
আমরা ভাই।
আমরা এক থালায় পাঁচজন খাই।
পাঁচটাকার বাদাম দশজন মিলে খাই।
এখানে এমন ছেলে আছে যার বাবার কয়েকটা ফ্যাক্টরি আছে।আবার এমন ছেলেও আছে যার সারামাসের খরচ আরেকজনের সিগারেটের খরচের থেকে কম।
আমরা গণরুমে থাকি।
আমরা রাতের খাবারের জন্য জমিয়ে রাখা মাসের শেষ বিশটাকা বন্ধুর জন্মদিনের কেক কিনার জন্য দিয়ে দেই।
সকাল ৮ টায় পরীক্ষা থাকলেও রাত তিনটায় অসুস্থ বন্ধুকে মেডিকেলে নিয়ে যাই।
খাবার টেবিলে একটা বেগুনী কয়জনের থালায় যায় সেই হিসাব আমরা মেলাতে পারি না।
আমরা পলিটিক্যাল ছেলে বলে আমাদের দেখে নাক সিঁটকাও।
হে ভদ্রলোক,তোমাকে জিজ্ঞেস করছি,জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কয়টা মিছিল করেছো?
স্বাধীনতা দিবসে কয় ঘন্টা প্রোগ্রাম করেছো?
গত ছয়মাসে কয়বার তোমাকে রাস্তায় মিছিল করতে নামতে হয়েছে?
কয়দিন রাত একটায় তোমাকে ছোটখাট ভুল ধরার জন্য বড়ভাইরা ডেকে নিয়ে গেছে?
শুনো ভদ্রলোক,যখন বিপদে পড়ি,এই বড়ভাইয়েরাই সবার আগে উপস্থিত হয়।
যে বন্ধুটার সাথে আধাঘন্টা আগে ঝগড়া করেছি,সেই বন্ধুটাই সবার আগে সেখানে উপস্থিত হয়।
ঢাকা শহরে আমার কেউ নাই।
শুধু কয়েকজন বড় ভাই আর কয়েকটা পাগলা বন্ধু আছে,যাদের রেখে আমাকে কেউ একটা ফুলের টোকাও দিতে পারবে না।
আমরা গণরুমে থাকি।আমরা পলিটিক্যাল ছেলে।
আজ দেশের একটা বিপদ হোক।
সবার আগে আমরা রাস্তায় দাড়াব।
আজ বাইরের কেউ আমার দেশ নিয়ে বাজে কথা বলুক,সবার আগে আমরা তার বিরুদ্ধে কথা বলবো।
আজ তোমার বিপদে যখন পাশে কেউ দাড়াবে না,জেনে রেখো,কিছু পাগল ছেলে আছে তোমার জন্য।যারা গণরুমে থাকে।
যারা বন্ধুর জন্য সব করতে পারে।
যাদের দেখে তুমি নাক সিঁটকাও।তারাই আছে।তোমার বিপদে,তোমার পাশে।
কয়বার রক্ত দিয়েছো জীবনে?
দিনে কয়বার তোমার কাছে রক্ত চাওয়া হয়?
রক্ত দেয়ার দুই মাসের মাথায় আবার রক্ত দেয়ার মত সাহস করতে পারবে?
গণরুমে এমন ছেলে তুমি খুব কম পাবে, যাদের রক্ত দেয়ার তিন মাস হয়েছে!
ঢাকা মেডিকেলের এক ডাক্তার সরাসরি বলেছিলেন-এইসব ছেলেরা রক্ত না দিলে ঢাকা মেডিকেলের অর্ধেক রেগী রক্তের অভাবে মারা যেতো।
আমরা গণরুমে থাকি।ছাড়পোকার কামড়ে পিঠ ফুলে যায়।মশার কামড়ে মুখ লাল হয়ে যায়।একজনের পোষাক দশজন ব্যবহার করি।নখ-চুল পাগলের মত বড় বড়,অবিন্যস্ত থাকে।গায়ের উপর ময়লার স্তর পুরু হয়ে জমে থাকে। একজনের পেস্ট-সাবান সবাই ব্যবহার করি।সাতটা বালিশে পঁচিশজন ঘুমাই।একজনের জুতা সবাই ব্যবহার করি।ঘুমানোর সময় একজনের পা আরেজনের কাঁধে তোলা থাকে।একজনের খাবার পাঁচজন ছিনিয়ে খাই।বোর্ডে স্ট্যান্ড করা ছেলেটা বন্ধুর বিপদে স্ট্যাম্প নিয়ে রাস্তার নামে।এডমিশন টেস্টে প্লেস করা ছেলেটা বই কিনার জমানো টাকাটা দান করে দেয় অচেনা কোন গরীব মেয়ের বিয়ের জন্য।
তুমি আমাদের অসভ্য বর্বর বলতে পারো।
কিন্তু তোমাকে বলে দিলাম হে ভদ্রলোক,টিকে থাকার লড়াইয়ে তুমি আমাদের কাছে হেরে যাবে।
আজ যদি দেশে একটা যুদ্ধ হয়,আমরাই সবার আগে যুদ্ধে যাবো।
আমরাই টিকে থাকবো।
জীবনের সেরা কিছু সময় কাটছে গণরুমে।
দেয়ালে বড় বড় করে লিখে রেখেছি,"Proud To Be A গণরুমিয়ান।"
ইয়েস!
#প্রাউড_টু_বি_এ_গণরুমিয়ান
(সংগৃহীত)
২| ০৭ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: আহারে.।.।.।
৩| ০৭ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৩১
করুণাধারা বলেছেন: ঠিক কথা। টিকে থাকার লড়াইয়ে আপনারাই হবেন বিজয়ী। শুভকামনা আপনাদের জন্য।
৪| ০৭ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮
বেনামি মানুষ বলেছেন: আমরা পলিটিক্যাল ছেলে বলে আমাদের দেখে নাক সিঁটকাও।
হে ভদ্রলোক,তোমাকে জিজ্ঞেস করছি,জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কয়টা মিছিল করেছো?
স্বাধীনতা দিবসে কয় ঘন্টা প্রোগ্রাম করেছো?
গত ছয়মাসে কয়বার তোমাকে রাস্তায় মিছিল করতে নামতে হয়েছে?
কয়দিন রাত একটায় তোমাকে ছোটখাট ভুল ধরার জন্য বড়ভাইরা ডেকে নিয়ে গেছে?
পয়েন্ট নোট করা হোক, এগুলো অনেক বড় বড় কাজ!
৫| ০৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:০২
আহমেদ জী এস বলেছেন: অতনু কুমার সেন ,
আজ যদি দেশে একটা যুদ্ধ হয়,আমরাই সবার আগে যুদ্ধে যাবো। গভীর আত্মপ্রত্যয়ের ছবি ।
সশ্রদ্ধ অভিবাদন গণরুমবাসীদের ।
সংগ্রহ করে শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ ।
৬| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:২৬
অতনু কুমার সেন বলেছেন: Thanks
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: লেখাটা পড়ে খুব ভালোলাগল।