নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি। প্রকাশিত গল্পের বইঃ প্রত্যুষের গল্প (পেন্সিল)\nউপন্যাসঃ এমনি এসে ভেসে যাই (তাম্রলিপি)।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় সঙ্গীত বিতর্ক

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৯

আগে আমাদের এইটা বুঝতে হবে যে জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে কি না। অন্য যেকোন বিষয়ের মত জাতীয় সঙ্গীত বিষয়েও কি সবার মতামত দেয়ার অধিকার আছে?

একটা সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশে যে কেউ যে কোন বিষয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে মত দিতে পারে। জাতীয় সঙ্গীতও তাই।

আমার জাতীয় সঙ্গীত ভালো লাগে। সেই ভালোলাগা যদি আরেক জনের উপরে চাপায়া দিতে হয় তাহলে সেইটা তো আর জাতীয় থাকে না। সেইটাকে জাতীয় করতে হলে যার ভালো লাগে না তার কথাটাও মনযোগ দিয়া শুনতে হবে। তার সাথে তর্কবিতর্কের রাস্তাটা খোলা থাকতে হবে। এখন যদি তর্ক-বিতর্কের রাস্তা বন্ধ করে বলা শুরু করি তুমি জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে বলেছো মানে তুমি আসলে একটা শয়তান তখন সমাজে সুস্থ মতপ্রকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এবং এর ফাঁকতালে ফ্যাসিজম ঢুইকা পড়ে।

এখন এই প্রজন্মের কেউ যদি প্রশ্ন করে এই যে জাতীয় সঙ্গীত আপনারা যখন ঠিক করছিলেন, তখন কি আমারে জিগায়া ঠিক করছিলেন। যখন আমারে জিগান নাই তখন আমার ঠেকা কি সেই জিনিস মানার? এর উত্তরে যদি বলেন, এইটা সবাই জাতীয় সঙ্গীত বইলা মাইনা নিচে তুমিও মাইনা নেও। তাহলে তার উপরে এইটা চাপায়া দিলেন। ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা ভাষাগত অথবা অন্য যে কোন কারণে এইটা তার ভালো না লাগতে পারে। তাহলে তার সেই ভালো না লাগাকে আমরা ডিল করব কিভাবে?
সুতরাং জাতীয় সঙ্গীতের এই প্রশ্নটা একটা তাত্ত্বিক প্রশ্নও বটে।

প্রথমত আমাদেরকে তার সেই ভালো না লাগার অধিকারকে স্বীকার করতে হবে, সম্মান জানাতে হবে। তারে বলব, যেহেতু দেশেরভাগ মানুষ এইটারে জাতীয়সঙ্গীত হিশাবে ওন করে, তুমি এইটা মাইনা নেও। গণতন্ত্রে যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকারকে সংখ্যালঘিষ্টরা মাইনা নেয়। তুমিও এইটারে জাতীয় সঙ্গীত মাইনা নেও।

সে কি তাহলে নতুন কোন সঙ্গীতকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে হাজির করতে পারে?
হ্যাঁ পারে। অর্ধশত বছর আগে তারে না জিগায়া কেউ যদি তার জন্য জাতীয় সঙ্গীত ঠিক কইরা দিতে পারে, তবে সেও নিজের পছন্দের জাতীয় সঙ্গীত নিয়া হাজির হইতে পারতে হবে। আর তার সঙ্গীতরে যদি সবাই জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে মাইনা নেয় তবে সেইটাই জাতীয় সঙ্গীত।
সমাজে যদি এই তর্ক বিতর্কে অবকাশটুকু না থাকে তবে সেই সমাজে ফ্যাসিবাদের রাস্তা উন্মুক্ত। বেহুলার বাসর ঘরে যেভাবে সাপ ঢুকেছিল সেভাবে।

এটুকুন বুঝলে বর্তমান জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কথা বলতে পারি।
এই জাতীয় সঙ্গীত নিয়া আগেও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছিল। ঢাকার একজন বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আফতাব আহমাদ একবার জাতীয় সঙ্গীত নিয়া প্রশ্ন তুলেছিলেন। সম্ভবত বলেছিলেন, জাতীয় সঙ্গীত কোন ঋষিবাণী নয় যে একে পরিবর্তন করা যাবে না। তখন তাকে বেশ হেনস্থা হতে হয়। তাঁর রুম-টুম পোড়ানো বা ভাংচুর করা হইছিল।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের নজীর আছে। গুগল করলে পাইবেন।
আমি এত কথা কইতেছি শুধু এইটা বোঝানোর জন্য যে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করা যায়, এ নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। এইটা বেদবাক্য না। এইটারে বেদবাক্য বানানোও ঠিক না।
তো আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি পরিবর্তন করতে হবে?
আমাদের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে অনেকের অনেক প্রশ্ন আছে। যৌক্তিক প্রশ্ন। এইটা যেমন একটা দিক, তেমনি এর বিপরীত দিকও আছে। এত বছরে এই সঙ্গীতকে ঘিরে অনেকের আবেগ-অনুভূতি তৈরি হইছে। এই পাল্টানোর কথা বললে, তাদের খারাপ লাগবে।
একটা তর্ক উপস্থিত হবে। যেমনটা অলরেডি হইছে।
এখন এই তর্ক বিতর্কের সময় না। আরো অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজ আছে দেশে। সেই সব কাজে মনোনিবেশ করা উচিত।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০৪

তাফহিমুল ইসলাম রাতুল বলেছেন: সবকিছুই পরিবর্তন করা হোক, দেশের নাম বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে বৈষম্যবিরোধিদেশ করা হোক, ঢাকা পরিবর্তন করে সারজিশনগর রাখা হোক, রাজশাহিকে পরিবর্তন করে নাহিদশাহি রাখা হোক, রংপুরকে পরিবর্তন সাইদ নগর রাখা হোক, এভাবে সব বিভাগ ও জেলার নাম হবে ছাত্রদের নামে। জাতীয় সংগীত বাদ দিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত রাখা হোক, ১৯৭১-এ দেশ স্বাধীন হয় নি, মুক্তিযোদ্ধারা সব দালাল, পাকিস্তানের সাথে তারা অন্যায়ভাবে দেশ ভাগ করেছে, এই দেশের নাম আবার পূর্বপাকিস্তান নয়ত বৈষম্যবিরোধিদেশ নাম রাখা হোক, ১৯৭১-এ যারা পাকিস্তানে পক্ষে ছিলো তারা দেশপ্রেমী ও মুক্তিযোদ্ধা।
জাতীয় ফুল পরিবর্তন করে গোলাপ রাখা হোক নয়ত হাসনা হেনা (আরবি নাম), জাতীয় ফল খেজুর রাখা হোক, জাতীয় পশুর নাম গরু রাখা হোক

এই দেশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দেশ, এই দেশ তারা স্বাধীন করেছে, তাদের কথা অনুযায়ী সবকিছু চলবে, বাকি সবাই তাদের আদশে চললে চলবেন নয়ত ভারতে চলে যান, এই দেশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের - আপনি ভাড়ায় থাকতেছেন এইটাও ভাবতে পারেন। আপনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের কথা না শুনলে ভারত চলে যান বা অন্য দেশে চলে যান

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৭

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনি খুবই যুক্তিবিবর্জিত কথা বলেছেন।
বাস্তবিক পক্ষে এইগুলো আবেগ সর্বস্ব খুবই নিচু মানের কথাবার্তা। এই সমস্ত নিচুদরের কথাগুলো মূলত ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করেই বলেছেন। ফ্যাসিবাদী মগজে কোন যুক্তিতর্ক সুস্থ চিন্তা-ভাবনা প্রবেশ করারো সম্ভব না।
প্রশ্ন হচ্ছে, নিজের দেশে একটা জ্বলজ্যান্ত গণহত্যার সাক্ষী হয়ে আপনি কিভাবে ফ্যাসিবাদকে সাপোর্ট করতে পারেন, সেটাই ভাবছি। ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসকের পলায়নের সাথে সাথে কি কিছু মানুষের বিবেক-বুদ্ধিও নিয়া পলাইছে?
আপনার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এই প্রত্যাশা রইল।

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
সব মানুষের হয়তো এমন প্রশ্ন জাগে না। তবে আপনার শেষ কথা ভালো লেগেছে। আগেতো দেশটাকে ঠিক করি। পরে দেখুন বেশরি ভাগ মানুষ কি চায়? তাই হবে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:২৩

আনু মোল্লাহ বলেছেন: পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়, তাই বলে সময়-অসময় না বুঝে প্রশ্ন তোলা আহাম্মকি। মানুষকে অহেতুক বিতর্কের মধ্যে ফেলে দেয়া। দেখুন, দেশের মানুষ যখন জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক করতেছে এর মধ্যে ইন্ডিয়ার বিএসএফ আমাদের দেশের কিশোরী স্বর্ণা দাস কে গুলি করে মেরে ফেলেছে। এই নিয়ে আমাদের কোন আলাপ নাই। অথচ এই আলাপটা হওয়া জরুরী ছিল।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৯

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করাই বেটার। জাতীয় সংগীত বিতর্কের মূল কারণ উহা হিন্দু রবীন্দ্রনাথ গাইছেন। গু আযম পুত্রের পু*কিতে আগুন লাগার কারণ হইল বাংলাদেশ কেন বাংলাদেশ হইল। এখানে হিন্দু আইল কেন?
কিছু রামছাগল বলবে ১৫ বছর আওয়ামী দু:শাষন, ভারতীয় অত্যাচার, লুটপাট, গুম৷ খুন, ব্যাংল লুট, পাচার ইত্যাদি। হ্যাঁ এর জন্য ঘৃণ্য স্বৈরাচারী হাসিনাকে তীব্র নিন্দা জানাই। কিন্তু তার মানে এই না যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু, পাকিস্তানি গু আযমের পুত বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করার কথা বলবে।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আমাদের উচিত সকলের মত প্রকাশের অধিকারকে সম্মান করা। মতামত প্রকাশে বাধা না দেয়া মানে সেই মতকে মেনে নেয়া নয়। যার ইচ্ছা হয় মানবে। যার ইচ্ছা হয় মানবে না।
একটা গণতান্ত্রিক সমাজ এগিয়ে যায় মত প্রকাশের মাধ্যমে।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৪

কাকভেজা সকাল বলেছেন: একটা জিনিস আওয়ামী লিগাররা কখনই বুজবে না - স্বমত বিরোধী মানেই পাকিস্তান পন্থি না । ফেবুর মত আকাইম্মা প্লাটফরমে কিছু লোক বাদে আমাদের মত প্রায় ৯০ শতাংশ জেন জি রা জানে পাকিস্তান ভারত কেউ আমাদের চিরস্থায়ি বন্ধু না । ইনফ্যাক্ট এই ৭১ এর বহুত গানই কিন্তু উজ্জীবিত করেছে।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ২:০৩

অস্বাধীন মানুষ বলেছেন: এটা নিয়ে একটা জন জরীপ করলে কেমন হয় ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২

আনু মোল্লাহ বলেছেন: এইটা নিয়ে জরিপ, গণভোট সবই হইতে পারে।
তবে এখন না করায় বেটার। এইসব করে সময় নষ্ট করলে কাজের কাজ করতে সমস্যা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.