নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের সস্তা চিন্তা-ভাবনার সর্বশেষ উদাহরণ হল কোরবানীর সাথে বন্যাকে টেনে নিয়ে আসা। সস্তা ও অগভীর ভাবনায় নিজেকে আলোচনায় আনার প্রচেষ্টা এই দেশে হর হামেশা হয়ে থাকে, সুতরাং এইটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই সমস্ত ভাবনা প্রকাশের মাধ্যমে চিন্তার দৈন্যতা ও মনের সংকীর্নতা প্রকাশ হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে লোকসংখ্যার আধিক্যের কারনে যেকোন মত যাহির করলে তা নিয়ে লাফালাফি করার জন্য আরো দু একজন সংকীর্নমনাকে খুব সহজেই পাওয়া যায়
সমাজের ও ব্যক্তির অপ্রয়োজনীয় কোনকিছুই এই বন্যার কারনে বন্ধ হয়নি। কোটি টাকা খরচ করে বিয়ের - জন্মদিনের প্রোগ্রাম, বিলাসী রেস্তোরাঁয় আয়েশী খানাপিনা কোনকিছুই বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়নি শপিং মলগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বিলাসী শপিং। আধুনিক পুঁজিবাদী সমাজে অপচয় করাকে স্ট্যাটাস হিসেবে গন্য করা হয়। যার যত অপচয়ের ক্ষমতা আছে সে তত বেশি উপরের শ্রেনীর। পুঁজিবাদে অপচয় এমনই সংক্রামক এবং এতবেশি আচরিত হয় যে একসময় এই অপচয়কে আর অপচয় মনে হবে না, মনে হবে এটাই প্রয়োজন। যাই হোক, আমাদের দৈনন্দিন এইসমস্ত অপচয় কিন্তু আমাদের সস্তা চিন্তাধারীমাথাগুলোর চোখে পড়ে না। তাই তাদের আহবান কখনোই বলে না, নিজেদের অপচয় হতে কিছু বাঁচিয়ে সেটা বন্যার্তদের দান করুন।
আমাদের দেশে ৭৫% লোক শুধুমাত্র কোরবানীর সময়ে গোশ্ত খেতে পায়। ( কয়েক বছর আগের পত্রিকার রিপোর্ট, অনলাইনে সার্চ দিলে পেতেও পারেন।) এই পুষ্টিহীনতার দেশে কোরবানীর সময়ে নিম্ন আয়ের লোকজনের কিছুটা হলেও আমিষের স্বাধ মিটে।
সারা দেশে কোরবানীর হাটে বেচার জন্য প্রচুর গরু পালিত হয়। সেই গরুগুলো পালে সমাজের প্রান্তিক লোকজনই। তারা এই সময়ে কিছু পূঁজিপাট্টা সংগ্রহ করে আরো ভাল কিছু করতে চায়। হয়ত এই টাকা দিয়েই সে ছেলেমেয়েকে স্কুলে পড়াতে চায়, বউ সন্তানের কাপড় চোপড়ের ব্যাবস্থা করে। অথবা নিজের অবস্থানের সামান্য পরিবর্তনে আরো বেশি কিছু করতে চায়।
দেশের যে বিস্তীর্ন অঞ্চল মহাপ্লাবনে ডুবে আছে সেইসব অঞ্চলেও প্রচুর লোকজন গবাদি পশু পেলে-পুষে বড় করেছেন কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য। আপনি যদি কোরবানী বন্ধ করেন এই সব প্রান্তিক বন্যার্ত মানুষের কি হবে সেটা ভেবে দেখেছেন?
বন্যার্তদের দান করা জন্য কোন অজুহাত দরকার হয় না। আপনি আপনার সর্বস্ব দিয়ে দেন। আপনাকে দেখে আরো লোকজন উৎসাহিত হবে। কিন্তু কোরবানী বন্ধ করে দান করব এই ধরনের ভাঁড়ামি এবং হিপোক্রেসী করা থেকে বিরত থাকুন। যারা বলে কোরবানী বন্ধ করে দান করব প্রকৃত অর্থে তারা কোরবানীই দেয় না অর্থাৎ কোরবানীর মানে তারা বুঝে না। কোরবানী তাদের কাছে ত্যাগ নয় তাদের কাছে ভোগ। তাই এত সহজে তারা কোরবানী বন্ধের কথা বলতে পারে।
আপনি কোরবানী বন্ধ না করে কোরবানীর মাংস, চামড়া বন্যার্তদের জন্য পাঠিয়ে দিন। কোরবানীর পশু বন্যার্তদের থেকে ক্রয় করুন। বাস্তব সম্মত ও মানবিক চিন্তা করুন। হিপোক্রেট ও সস্তা লোকজনের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না।
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৭
কানিজ রিনা বলেছেন: আপনার কথার সুরেই বলব যেসব সামর্থবান
মানুষ পঞ্চাশ হাজার টাকার গরু কিনবে
তার থেকে ১০০০/৫০০ টাকা বাঁচিয়ে যদি
বন্যার্ত মানুষের দান করলে কুরবানীর মাহাত্ব
বাড়বে বৈ কোমবে না। সেই সাথে নিজের
মনের প্রফুল্লতা প্রকাশ পাবে। আপনার যুক্তি
ঠিক আছে। এলাকা ভিত্তিক উদ্যোগ নিলে
বন্যার্তরা অনেক উপকৃত হবে। আপনাকে
ধন্যবাদ।
৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০১
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক মানুষ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিবন্দী মানুষদের জন্য এগিয়ে এসেছেন। তাতে আমি খুব খুশি।
৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ মানবিক হলে দুনিয়ায়তে আর কোনো সমস্যা থাকতো না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৯
ঋদ্ধি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন আনু মোল্লাহ সাহেব
আসলে বাস্তব সমস্যার বাস্তব সম্মত সমাধান খোঁজা উচিত।
কার্যকরী সমাধান না খুজে বিতর্ক সৃষ্টিকরা প্রকারন্তরে সমস্যাকে সংকটে পরিণত করার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বন্যার্তদের এখন প্রয়োজন ত্রাণসেবা এবং বন্যা পরবর্তি পূনর্বাসনসেবা। এটা কিভাবে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আলোচনায় এমন কোনো বিষয় নিয়ে আসা উচিত হবে না যা মানুষকে পরষ্পর বিতর্কে লিপ্ত করবে। সংকটকালীন সময়ে বিতর্ক নয় সহমত বেশি প্রয়োজন।