নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি। প্রকাশিত গল্পের বইঃ প্রত্যুষের গল্প (পেন্সিল)\nউপন্যাসঃ এমনি এসে ভেসে যাই (তাম্রলিপি)।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অণুগল্পঃ নিশাচর

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৩

শীতের রাত। উত্তুরে বাতাসও আছে। ঝোপের নিচে আর কতক্ষণ বসা যায়। আচ্ছামত মশারা সুখ মেটাচ্ছে। থাপ্পড় টাপ্পর দেয়ার উপায় নেই। কোন সাউন্ড করা যাবে না। মশারা বেশ সুখেই আছে। খাওয়া পরার চিন্তা নাই। ইচ্ছে মত রক্ত খাও। উড়ে বেড়াও। অবশ্য মরতেও হয়। মশাদের সাথে চোরদের বেশ মিল আছে। ধরা পড়লে শুধু উত্তম মধ্যম নয়, মশাদের মত জীবনও যায়। মশাদের জন্য মজু চোরার কেমন মায়াই হয়। খা বেটারা খা।

কিন্তু এবাড়ির বউগুলা কেমন? এত রাত হয়ে গেল ঘুমানোর নাম নাই। উঠানে চারকোনা একটা টেবিল পাতানো আছে। এর তিন দিকে তিনজন ধান মাড়াইয়ের কাজ করছে। ধুপ ধাপ ধুপধাপ চলছেই। এরা ঘুমাতে গেলে একবস্তা ধান নিয়ে সরে পড়তে হবে। সোজা চলে যেতে হবে আবুল বেপারির বাড়ি। পাকা কথা হয়ে গেছে। একবস্তা নগদ একশ টাকা দিবে। পাকা কথার দরকার ছিল না। বেপারির সাথে তার বহু দিনের কারবার। সকাল বেলা বেপারিরে কইছিল একশ টাকা অ্যাডভান্স দিতে। মাল ছাড়া টাকা দিতে রাজি না বেপারি। ছোট ছেলেটার জ্বর। তুকতাক অনেক কিছু করেও জ্বর কমে নি। বেপারি টাকা দিলে পোলাড়ারে নিয়া গঞ্জে যাইতে হবে। বড় ডাক্তার দেখান দরকার।

যাক ধুপধাপ বন্ধ হয়েছে। বউগুলা এখন হাত-মুখ ধোবে। খাবে। তার পর ঘুমাবে। বহুত ঝামেলা এখনো বাকি। বিড়ির টক উঠছে। উপায় নাই। আগুন জ্বালানো যাবে না। গন্ধ ছড়ানো আরো রিস্কি ব্যাপার। কোন রিস্ক নেয়া যাবে না। টাকাটা খুব দরকার। শালা চুরি করার ঝক্কি ঝামেলাও কম না। আবার ধরা পড়লে তো কথা নাই। নিজের শরীরও বেশ একটা জুত না। রহিম শেখের ক্ষেতে কাজ করছিল দুই দিন। পঞ্চাশ টাকা পাওনা আছে। এত বলার পরেও দিলনা। বলে জ্বরে মানুষ মরে না। জ্বর এমনি এমনি সাইরা যায়। রহিম শেখের মুখের উপর কথা চলে না। আর সমাজে যার চোর হিসেবে সুখ্যাতি আছে তার তো প্রশ্নই উঠে না। চোরের পোলা তো মাইনষের পোলা না। সে জ্বরে মরলেই কি।

মোটামুটি সব শুনশান হয়ে আসছে। এইবার অপারেশনে যেতে হবে।
ওমা একি আবার লাইট জ্বলে কেন! দরজা খোলার আওয়াজ। একি টের পেয়ে গেল নাকি? সারা রাতের মশার কামড়। এখন জান নিয়ে ফিরতে পারলে হয়। না, না কে যেন পায়খানার দিকে যাচ্ছে। এই শীতের রাতে হাগা মুতার দরকার কি?
একজন করে প্রায় সবাই উঠে পড়ছে। হৈ চৈ। ছোটাছুটি। এরা কি দল বাইন্ধা হাগা মুতা করে নাকি।
ও আল্লাহ, কয় কি? ডায়রিয়া!
ছোট বউয়ের ডায়রিয়া।
কে জানি ডাক্তার ডাকতে ছুটল।
এবার না মজু চোরার ডায়রিয়া হয়!

পা টিপে টিপে বাগানের ভিতর দিয়ে বেরিয়ে আসে মজু। বাড়ি পেরিয়ে ধানক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে একটা বিড়ি ধরিয়ে হাটতে থাকে সে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবনের কত রুপ কত যন্ত্রনা কত কষ্ট

জীবনের কাছে না গেলে দেখা যায় না!

মজুর কষ্টটা দারুন ফুটিয়েছেন।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় বিদ্রোহী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.