নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রুহী বসে আছে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে। হাতে একটা ফর্দ। বাজারের ফর্দ না, কলেজের ভর্তির পে ইন স্লিপ।
ছাত্র বেতন---------------------------
পরীক্ষার ফি------------------------------
কলেজ উন্নয়ন ফি----------------------------------
বোর্ড ফি-------------------------------
রোভার স্কাউট ফি--------------------------
মিলাদ/পুজা--------------------------
কমন রুম ফি---------------------------
সেশন ফি-------------------------
ভর্তি ফি----------------
মসজিদ---------------------
এভাবে আরো বারোটা মোট বাইশটা খাত দেখানো হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন হাজার পাঁচশ সাতষট্টি টাকা জমা দেয়ার হিসাব। সব খাতে টাকা নাই। যেসব খাতে টাকা দিতে হবে কলেজ অফিস থেকে কলম দিয়ে মার্ক করে দেয়া আছে। রুহী এত টাকা দিতে পারবে না। তাই আবেদন করেছিল। আবেদন পত বিবেচনা করে কলেজ থেকে কমিয়ে তা দুই হাজার টাকা করা হয়েছে। আজ ভর্তির শেষ দিন। সে কোন ভাবেই দুই হাজার টাকার হিসেব মিলাতে পারে নি। তাই এবার সরাসরি প্রিন্সিপালের কাছে আবেদন নিয়ে এসেছে আরো কমানোর জন্য।
-তোমার বাবা কি করেন?
-ছোট খাট ব্যবসা করে স্যার।
- ব্যবসা করে আর মেয়ের পড়া খরচ দিতে পারে না! কি বল! তোমার বাবার অবস্থা তো আমার চেয়ে ভাল হওয়ার কথা।
- আসলেই স্যার আমার বাবার অবস্থা এক সময় খুব ভাল ছিল। কিন্তু এখন নেই। এখন আমাদের অবস্থা খুব খারাপ।
-হটাৎ করে খারাপ হল কেন?
- এখন ব্যবসার অবস্থা ভাল না। দেনাদারদের কাছে অনেক টাকা আটকে গেছে। পাওনাদারদের টাকা দিতে পারছেন না। তারাও তাই নতুন করে মাল দিচ্ছে না। দোকানে মালপত্র নাই। বেচা কেনাও নাই।
_ একবার তো কমানো হইছে। এটাও দিতে পারবে না।
-স্যার আসলেই আমার পক্ষে এত টাকা দেয়া সম্ভব না। আমি নিতান্ত অপারগ না হলে আপনার কাছে আসতাম না।
কথা সত্য। রুহী একসময় চিন্তাও করতে পারত না, এই কয়টা টাকা কমানোর জন্য প্রিন্সিপালের রুমে ধর্না দিবে। অথচ একসময় তাদের কি অবস্থা গিয়েছে। টোটাল যে ভর্তির টাকা তার চেয়ে চেশি টাকা তাদের একদিনে বাজার খরচ গিয়েছে। অথচ আজ সকালে সে অনেক হিসেব করেছে। কার কাছে ধার করজ করার উপায়ো নেই। কারো কাছে সাহায্য চাইতে রুচি হয় না। রাহেলের বেতম এখন বাকী। শেষ মেষ ভেবেছে প্রিন্সিপাল্কে ধরবে—
-ফার্স্ট ইয়ারে রেজাল্ট কি?
-জি স্যার?
-ফার্স্ট ইয়ারে রেজাল্ট কি?
স্যারের গলা একটু চড়ে উঠে।
-পাঁচশো তিরানব্বই পেয়েছি স্যার।
-ফার্স্ট ডিভিশন তো পাও নাই। ----------- যাও সব মাফ করে দিলাম। আটশ পঁচাত্তর টাকা দিতে হবে।
- স্যার মসজিদের একশ টাকা একটূ ছেড়ে দিন না।
বলবে না বলবে না করেও বলে ফেলে রুহী। একশ টাকায় বিশ দিনের ট্যাক্সি ভাড়া হয় রুহির। প্রিন্সপালের শখ হয়েছে কলেজ মসজিদ তিনতলা করবেন। তাই সব উপলক্ষ্যেই সবার নিকট একশ টাকা চাঁদা। মসজিদে চাঁদা দিতে তার আপত্তি নাই। কিন্তু তা যে অবস্থা—
-এ পর্যন্ত সবার নিকট থেকে এ টাক নেয়া হয়েছে। মসজিদের টাকা দিতে হবে। আর তোমাদের ত ঠিক নেই। এরকম অনেক ছেলে মেয়েই বাবার কাছ থেকে টাকা এনে ফুর্তি করে শেষে কলেজে মওকুফ এর জন্য এপ্লাই করে-----------
মসজিদের টাকা ছেড়ে দিতে বলা স্যার বোধ করি একটু রাগ করেন।
-না না স্যার আমি ও রকম না—আমি হিসেব করে দেখেছি একশ টাকা হলে আমার বিশ দিনের ট্যাক্সি ভাড়া হয় তাই বএলছি। -------
স্যার ফস করে টাকা টা কেটে দেন।
-যাও টাকা জমা দিয়ে এস। পড়ালেখা করো আর সাজুগুজু কম করো।
বুকের উপর থেকে একটা পাথর নেমে যায় রুহীর। দৌড়াতে থাকে ব্যাংকের দিকে। স্যারের শেষ কথাটা একটু মন খারাপ করে দেয় তার। সে সাজুগুজু কোথায় করল তা বুঝতে পারে না। তার সাজুগুজু করার না আছে টাইম না আছে উপকরণ। রুহী আসলে সাজুগুজু করে না, কিন্তু তার চেহারায় এমন একটা ফ্রেশনেশ আছে যে তাকে দেখে মনে যেন সে বেশ সেজে গুজে আছে। উনি নিজে যে সারাক্ষণ ইতিহাসের ম্যাডামের সাথে সারক্ষণ গুজুর গুজুর করেন তা কিছু না। এই নিয়ে কলেজে কত ফিসফাস শোনা যায়। ইতিহাসের ম্যাডাম এই এক চিজ – সব ক্লাসেই তাকে দাঁড় করাবে---এই বোরকাওয়ালি বল----। সে বলে। কিন্তু কোন দিনই ম্যাডামের পছন্দ হবে না। কোন একটা ছুতা নাতায় তাকে কথা শোনাবেই। তার মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে উনাকে জিজ্ঞেস করে ম্যাডাম আমি কি করেছি যে পুরো একটা বছর আপনি আমার পিছনে লেগে আছেন। প্রিন্সিপাল স্যারের উপর রাগ করতে পারে না রুহী। তেরশ টাকা স্যার ছেড়ে দিয়েছেন। সকালে বেশ ভয় ভয় লাগছিল। সাহস করে গিয়েছিল বলে কাজ হয়েছে। রুহীর অকারনে নিজেকে সাহসী মনে হতে থাকে। আর প্রিন্সিপাল স্যার কে মনে হতে থাকে বেশ ভাল মানুষ।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮
আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনার উপস্থিতির জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় সোহানী আপু
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২২
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: লিখে যান নিরন্তন ......
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯
আনু মোল্লাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ইমতিয়াজ ভাই
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৬
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: স্কুল কলেজগুলো অনেকভাবেই ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। নেই ঐ সব টাকায় যা হওয়ার কথা, তা আর হয়ে উঠে না। পরীক্ষার সময় হলে এই প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।
নামকরণে দেখলাম লিখেছেন অণুগল্প, যদিও বানানটা ভুল হয়েছে। তবে আমার ধারণা এটা অণুগল্প হয় নাই। তাই গল্প বলাই ভালো। আর গল্প হিসাবেও খুব একটা মান সম্মত হয় নাই। কাহিনীর গভীরতা কম হলেও অনেক সময় লেখার গুণে সেটা দারুণ হয়ে উঠে। কিন্তু এই জায়গায় আপনি মুনশিয়ানার ছাপ রাখতে পারেন নাই। বাক্য গঠন এবং শব্দ চয়ন খুবই সাদামাটা। আরও যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন ছিল। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো আনু।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৯
আনু মোল্লাহ বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা নিবেন প্রিয় বিদ্রোহী বাঙালী ভাই।
আপনি ঠিকই লিখেছেন, এটি আসলেই গল্প হিসেবে কিছুই হয়নি। এর জন্য প্রধানত আমার মনোযোগহীনতা দায়ী। গল্পটি সিরিয়াস্লি না লিখা।
ভবিষ্যতে যত্নশীল হওয়ার আশা রাখি।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন। ভাল থাকবেন সবসময়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
সোহানী বলেছেন: সত্যিই। আমার ছেলের ভর্তির ফি দেখে আমি আতকে উঠলাম.... হেন জিনিস নাই সেখানে ঢুকায় নাই...........