নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি। প্রকাশিত গল্পের বইঃ প্রত্যুষের গল্প (পেন্সিল)\nউপন্যাসঃ এমনি এসে ভেসে যাই (তাম্রলিপি)।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিন

০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬



মামুনঃ শোন, কাল আমি সারাদিন ব্যস্ত থাকব। আমাকে ফোন দিও না। দিলে ধরতে পারব না। আর দুপুরের পরে তো ফোন বন্ধই করে দেব।
শীলাঃ কেন?
মাঃ কাল তো সেমিনার আছে।
শীঃ সে তো দুপুর দুইটা থেকে। আর তোমার প্রেজেন্টেশন তো তিনটার দিকে।
মাঃ হ্যাঁ। কিন্তু আমাকে প্রিপারেশন নিতে হবে না!
শীঃ তা নাও কোন। সমস্যা নেই। কিন্তু তাই বলে ফোন বন্ধ করে দিতে হবে, দু মিনিটের জন্যও কথা বলা যাবে না?
মাঃ না।
শীঃ তুমি তো পড়িক্ষার সময়ো এরকন কর না।
মাঃ করি না। তবে করা উচিত ছিল। তাহলে হয়ত এরকম ডাব্বা মারতাম না। আর এই সেমিটার টা আমার জন্য অনেক গুরত্বপূর্ণ, সেটা তুমি জান। আমি এটা তাই পড়িক্ষার চেয়ে সিরিয়াসলি নিয়েছি।
শীঃ তার চেয়ে বল না, আমার জন্যই তোমার ডাব্বা মারতে হয়েছে। আমিই তো তোমার জন্য সব সম্য অভিশাপ নিয়ে আসি।
মাঃ তুমি মনে হয় ঝগড়া করতে চাচ্ছ?
শীঃ সত্য কথা বললে তোমার কাছে সব সময় ঝগড়া মনে হয়।
মাঃ দেখ কাল আমার একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ আছে। আমি সে দিকে মন দিতে চাচ্ছি। তোমার কোন ঝগড়া টগড়া থাকলে সেটা পরে করিও। আজকের মত আমাকে রেহাই দাও।
শীঃ তার চেয়ে বল না, একেবারেই রেহায় দাও।
মাঃ আচ্ছা সে পরে দেখা যাবে। আপাততঃ আজকের মত রেহায় দাও।
শীঃ তোমার কি মনে হয় না, তুমি বেশি বাড়াবাড়ি করছ?
মাঃ সে জন্যই তো অল্পের মধ্যে রাখতে চাচ্ছি।
শীঃ থাক, তোমাকে অল্প বিস্তর কোনটার মধ্যেই রাখতে হবে না
ফোন কেটে দিল শীলা।



শীলাঃ হ্যালো --নিরব ভাই--------
নিরবঃ হ্যালো----শীলা, কেমন আছ?
শীঃ হ্যাঁ, ভাল আছি। আপনার কি অবস্থা?
নীঃ আমি ভাল আছি। কিন্তু তুমি হটাৎ---
শীঃ কেন আপনাকে কি আমি ফোন দিতে পারি না?
নিঃ তা পার। কিন্তু সাধারনত দেও না। কোন সমস্যা---?
শীঃ সমস্যা একটু আছে। আপনার বন্ধু কোথায়? ফোন বন্ধ করে রেখেছে। আমি ট্রায় করে করে পাচ্ছি না।
নিঃ ও। তোমাকে বলেনি? ওর তো সেমিনার আছে আজ। সেজন্যই হয়ত। আমার বন্ধু তো বিরাট বুদ্ধিজীবী হয়ে যাচ্ছে দেখি।
শীঃ বলেছে। কিন্তু এই জন্য ফোন বন্ধ করে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করার কি আছে, বলেন তো নিরব ভাই?
নিঃ ও আসলে এই সেমিনার টা নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিল। কয়েকদিন ধরে আমরাও ওকে ঠিকমত পাচ্ছিলাম না।
শী: কিন্তু নিরব ভাই, আমার তো টেনুশন হয়। কাল রাত থেকে তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। আমার সাথে দু মিনিট কথা বললে কি সেমিনার পান্সা হইয়ে যেত ?
নিঃ সেটা তো মামুনই ভাল জানে। এই টা ঠিক সে তোমার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারত।
শীঃ এটা আপনি বুঝলেও আপনার বন্ধু কখনো বুঝে না। সে সব সময় এরকম করে। এবার তো তার সেমিনার তাও যাক একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। একটা লজিক আছে। গতবার কি করল? একটা বিয়েতে গেছে তাই সে ফোন বন্ধ করে রাখল। ফোন খোলা রেখে নাকি বিয়েতে এনজয় করা যায় না।
নিঃ বিয়েতে গেলে ফোন বন্ধ করবে কেন? হয়ত চার্জ টার্জ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
শীঃ আরে না নিরব ভাই, ও ঐ রকম। তাছাড়া আমি জিজ্ঞেস করলে সে তো আমাকে তাই বল্ল। আমি বার বার ফোন করে ডিস্টার্ব করি। বিয়েতে আত্মিয় স্বজনের মাঝে এই সব নাকি খুব এমব্যারাসিং তাই সে ফোন বন্ধ রাখে।
নিঃ না এইগুলা আবার খুব বাড়াবাড়ি।
শীঃ আমি বলে সহ্য করে আছি ভাইয়া। আপনি বলেন অন্য কোন মেয়ে এই সব সহ্য করত?
নিঃ আমি কিভাবে জানব, বলো? আমি তো আর মেয়ে না। কোন মেয়ের সাথে প্রেমও করি না।
শীঃ হা হা তাই তো , আপনি তো মেয়ে না। পুরুষ --, প্রেম করেন না ক্যান।
নিঃ আমার সাথে কে প্রেম করবে বল?
শীঃ কি যে বলেন না আপনি। প্রেম করবে না কেন?
নিঃ করলেও সবাই কি আর তোমার মত ভাল, না তোমার মত সুন্দরী।
শীঃ কি বলেন এই সব নিরব ভাই। আমি তো দেখতে পঁচা। আর ভাল হইলে আপনার বন্ধু কি আমার সাথে এরকম করে? আমাকে সারাদিন টেনশনে রাখবে। আমি নাকি তার লাইফ হেল করে দিয়েছি। সারাক্ষণ এই সব কথা বলে। ফোন করলে বিরক্ত হয়। আজ যে ফোন বন্ধ করে রাখছে কেন? শুধু আমি যাতে তাকে না পাই সে জন্য। বলুন তো নিরব ভাই এই সব কত সহ্য হয়।
নিঃ তাকে বুঝিয়ে বল। আর তার তার সমস্যা কোথায় সেটাও বোঝার চেষ্টা কর।
শীঃ অনেক বুঝিয়েছি। বলেছি আমার টেনশন হয়। তার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারি না। কিন্তু লাভ হয়নি। আসলে আমাকে তার আর ভাল লাগে না। একটা সময় ছিল যখন ঘন্টায় ঘন্টায় তাকে ফোন না দিলে সে রাগ করত। আমার সাথে কথা না বললে তার অস্থির লাগত। এখন আমার সাথে কথা বললে তার বিরক্ত লাগে। আপনারা পুরুষরাই এরকম। প্রথমে গদগদ, তারপর আমরা পুরনো হয়ে যাই।
নিঃ এটা ঠিকনা শীলা। সব পুরুষ একরকম নয়। আমি কি ঐ রকম বল।
শীঃ আপনার সম্পর্কে তো আর জানি না। তবে পুরুষ মানুষতো একই রকম।
নিঃ না শীলা এটা তোমার ভুল ধারনা। জানলে দেখবে আমি এক রকম না।
শীঃ আপনার সম্পর্কে তো আর জানার সুযোগ নেই ভাইয়া। আপাতত আপনার বন্ধুকে একটু বুঝিয়ে বলুন। আমাকে এরকম কষ্ট দিয়ে কি লাভ তার। এক সময় তো আমিও বিরক্ত হয়ে যাব। এভাবে তো আর সম্পর্ক কন্টিনিউ করা কষ্টকর।
নিঃ আচ্ছা বলব। তুমি অত টেনশন নিয়ো না। শোন আর চোখকান খোলা রেখ।
শীঃ আচ্ছা ভাইয়া। খোদা হাফেজ।
নিরবঃ খোদা হাফেজ।

নিরবঃ কিরে তুই কখন এলি? তরে ত আমি খুঁজতাছি।
মামুনঃ এই তো। কেন, খুঁজছিস কেন?
নিঃ আগে বল তর সেমিনার কেমন অইছে?
মাঃ হইছে। ভাল হইছে। নিয়াজ স্যার বেশ প্রশংসা করল। বলল আমাকে দিয়ে ওনার কিছু কাজ টাজ নাকি করাবে। এই আর কি --- সব মিলায়ে ভালই হইছে। রফিক স্যার প্রথমে একটু বাঁকা বাঁকা কথা বলছিল। পরে অবশ্য বলল আমি বেশ পরিশ্রম করেছি। ওভারল প্রেজেন্টেশন দেখে ওনার মনে হইছে আমি রিসার্চে ভাল করব। আমার তত্থ্য উপাত্ত সংগ্রহে বেশ কষ্ট হইছে – এইটা উনি স্বীকার করলেন। আর আমি যে কাট পেস্ট মারি নাই এইটা নাকি স্পষ্ট।
নিঃ আরে বুঝস না অরা সব কাট পেস্ট মাইরা পন্ডিতি ঝারে। যাক মামা তুমি তো তাইলে বিরাট বুদ্ধিজীবী হয়া যাইতাছ।
মাঃ আর বুদ্ধিজীবি! তুই আমারে খুঁজছিলি ক্যা।
নিঃ শোন শীলা আমারে ফোন করছিল।
মাঃ কি বলল?
নিঃকি আর বলবে। তুই শুধু শুধু মাইয়া টারে কষ্ট দ্যাচ ক্যা? তোর ফোন টোন বন্ধ বেচারি টেনশনে শেষ।
মাঃ ও
নিঃ ও মানে। তুই হালায় তো আসলেই খারাপ। তুই মাইয়াটারে ফোন দে। অহনি ফোন দে।
মাঃ আচ্ছা দিমুনে।



মামুনঃ হ্যালো------ কি অবস্থা?
শীলাঃ ---
মামুনঃ কি ব্যাপার কথা বল না কেন?
শীঃ কি বলব? তোমার ত আমার সাথে কথা বলার দরকার নাই। আমাকে ছাড়া তোমার আরও অনেক কিছু আছে। শুধু শুধু আমি কথা বলে বিরক্ত করব কেন?
মাঃ লক্ষ্মীসোনা রাগ করেছে দেখি। আচ্ছা সরি। একেবারে এত্তোগুলা সরি--------
শীঃ লাগবে না—
মাঃ লাগবে না কেন? লাগবে।
শীঃ তুমি জাননা তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারি না। আমি কতবার ফোন করেছি। বন্ধ বন্ধ বন্ধ। আমার বুঝি টেনশন লাগে না। আমার সাথে দুই মিনিট কথা বললে তোমার সেমিনার কি পান্সে হয়ে যেত? তোমাকে না পেয়ে শেষে আমি নিরব ভাইকে ফোন দিয়েছি। তোমার নামে অনেক বিচার দিয়েছি।
মাঃ বিচার দিয়েছো ভাল করেছো। কিন্তু কখন আমাকে ফোন দিয়েছো। আমি তো টের পেলাম না।
শীঃ ফোন বন্ধ করে রাখলে টের পাবা কিভাবে? আমি কিছুক্ষণ পর পর ফোন দিয়েছি। যদি তুমি অন কর।
মাঃ শোন শীলা, আমি তো ফোন বন্ধ করিনি। সাইলেন্ট করা ছিল। তাই ফোন দিলে তো আমার টের পাওয়ার কথা।
শীঃ না – মানে--

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

ডা: মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: তাইতো, সাইলেণ্ট করা থাকলেতো ফোনে মিসড কল কয়টা আছে এটা উঠবে। এখানে উঠল না কেন?

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৮

আনু মোল্লাহ বলেছেন: উ ঠলো না কারন শীলা ধরে নিয়েছে ফোন বন্ধ আছে। তাই সে আর কল করেনি। কিন্তু কল না করেই চালাকি করে বলেছে কল করেছে।

অনেক ধন্যবাদ প্রিয় জহির ভাই। ভাল থাকুন সতত। শুভকামনা রইল।

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

ডরোথী সুমী বলেছেন: শেষে একটু রহস্যের গন্ধ পেলেও পুরো গল্পটা বেশ লেগেছে। এরকম খুনসুটি না হলে কি আর সম্পর্ক জমে! শুভ কামনা।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনার ভাললেগেছে জেনে আনন্দিত। ভাল থাকুন প্রিয় ডরোথি সুমি। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন।

৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৭:৪৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++++++

শেষের সাসপেন্সটুকু ভালো লাগলো ভ্রাতা :)

ভালো থাকবেন :)

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:১০

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় রায়হান ভাই। আপনার ভাললাগা আমার প্রেরণা ও আনন্দ। শুভেচ্ছা জানবেন আর ভাল থাকুন সতত।

৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:০৬

কলমের কালি শেষ বলেছেন: গল্পের ঝাঁঝালো পরিনতি । ভাল লাগলো । :)

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:১৩

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা নিবেন প্রিয় কলমের কালি। আপনার ভাল লাগায় আনন্দিত হয়েছি। ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.