নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি। প্রকাশিত গল্পের বইঃ প্রত্যুষের গল্প (পেন্সিল)\nউপন্যাসঃ এমনি এসে ভেসে যাই (তাম্রলিপি)।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মত প্রকাশের স্বাধীনতা

১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

পৃথিবিতে বিভিন্ন মানসিকতার, মত ও পথের মানুষ আছে। গণতন্ত্রের কথা হল এই সকল মতের সকল পথের মানুষের মত প্রকাশের অধিকার থাকবে। সকলে সকলের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। একটা সুন্দর যুক্তি তর্কের সমাজ হবে। সোজা কথা সকলেরই মত প্রকাশের অধিকার থাকবে। সেই প্রকাশটা হবে যুক্তি বুদ্ধির নিরিখে। গালাগালি ও আক্রমন করে নয়। পৃথিবির সমস্ত মানুষ ইসলামের অনুসারি নয়। কেউ ইসলামকে অনুসরন না করতে পারে। সেটা অবশ্যই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ধর্মের ব্যাপারে সবাই তার বিবেক ও চিন্তার নিকট দায়বদ্ধ। যার কাছে যে ধর্ম গ্রহন যোগ্য। কেঊ ইসলামের অনুসারি না হলে সে তার মতামত ব্যক্ত অবশ্যই করতে পারে। সবাই ব্যক্তিগত ধর্ম পালন করবে। এমন কি প্রচারও করবে। সবাই চায় যে তার মতের অনুসারি বৃদ্ধি পাক। যে জন্য তাকে তার মতকে অন্যের কাছে গ্রহন যোগ্য করে তুলবে। সেটা হবে যুক্তি উপাত্তের ভিত্তিতে। বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে। তেমনিভাবে তার যুক্তি তর্ক কারোকাছে গ্রহন যোগ্য হবে আবার কারো কাছে হবে না। কিন্তু এই প্রক্রিয়া কোন ভাবে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, ব্যাঙ্গ, বিকৃতি, সংঘাত, গালাগালি, রুচিহীন অশালীনতার আশ্রয়ে হতে পারে না। অন্যের ধর্মীয় গুরু, আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাই সব সময় গণতন্ত্রের দাবি। ব্যক্তি স্বাধীনতার অর্থ কখনোই এটা হতে পারে না রাজপথের মাঝখানে পায়খানা করে দেওয়া। বরং কেউ যদি তা করে তাকে নিবৃত করাই হল ব্যক্তি স্বাধীনতা। কিন্ত এখন অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যেন উলটো।





আমাদের দেশে ইসলাম অবমাননা করা যেন কোন বিষয়ই না। বাকস্বাধীনতার সমার্থক করার চেষ্টা চলছে ধর্ম বিশেষ করে ইসলামের নামে কুৎসা রটনা কে। ইসলাম ধর্ম, আল্লাহ ও রাসূল ( দঃ ) কে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক, কুরুচিপূর্ণ এবং যুক্তি, বুদ্ধি ও বিবেকের সাথে সম্পর্কহীন লেখালেখি ও প্রচারণা চালানোকে প্রগতিশিলতা বলা হচ্ছে। যারা এই সমস্ত অপকর্ম করে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার লোকের অভাব নেই। বাংলাদেশে মেরুদন্ডহীন মিডিয়া গুলো তাদের অপকর্মকে সাপোর্ট দেয়াকে নিজেদের দায়িত্ব করে নিয়েছে। যে সমস্ত ব্লগারদের নামে এই সমস্ত অভিযোগ রয়েছে তারা যে ভাষায় লিখেছে তা পড়লে বুঝা যায় এরা কত রুচিহীন এবং আদিম মানসিকতা সম্পন্ন। সাংস্কৃতিক দেউলিয়াত্বের চূড়ান্ত বহি প্রকাশ রয়েছে এই সমস্ত লেখায়।





আমাদের দেশে কিছু ব্লগার মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে যা করছেন তা হল নিতান্তই স্বেচ্ছাচার। তারা যে ভাষায় মহানবী ( দঃ ) ও ইসলাম কে আক্রমন করছেন তাকে কোনভাবেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলা যায় না। কোন যুক্তি তর্কের কিংবা তথ্য উপাত্তের বালাই নেই, ভদ্র অভদ্র জ্ঞান নেই। যা ইচ্ছা তাই লিখে মহানবী ( দঃ ) এর প্রতি অশ্রদ্ধা করা প্রকাশ হচ্ছে। এই সমস্ত লেখা সুস্থ রুচি সম্পন্ন বিবেকবান মানুষের হাতে আসতে পারে না। অত্যন্ত অভদ্র ও অশালীন এই সমস্ত লেখা। মানসিকভাবে অসুস্থ, বিকারগ্রস্থ ছাড়া কারো পক্ষে এই সমস্ত চিন্তা করা অসম্ভব। কিন্তু এই বিকারগ্রস্ত ব্লগারদের ব্লগ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। এই অশালিন অপপ্রচারের বিরোধীতা করলে তাকে বলা হচ্ছে মত প্রকাশে হস্তক্ষেপ। কিছু কিছু প্রচেষ্টা দেখলে মনে হয় এই রুচিহীন বিকৃত মস্তিষ্ক ব্লগারদের যেন তারা হিরো বানাতেই ব্যাস্ত।

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে

তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে

এখানে দুঃখের বিষয় হল তারা এমন এক বিষয়কে তারা নিরঙ্কুশ সমর্থন যোগাচ্ছে যাতে কোন জ্ঞান চর্চা নেই, দর্শনের কোন ব্যাপার নেই, নেই কোন তাত্তিক আলোচনা ও সমালোচনা, যুক্তি তর্কে কোন জিনিস প্রতিষ্ঠিত কিংবা বাতিল করার প্রচেষ্টা নেই। আছে অতি জঘন্য মানসিকতার এক নিকৃষ্ট নোংরামি। আর তা সমাজে জ্ঞান চর্চা এবং স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া প্রতি বড় রকমের হুমকি।







আমি যে জিনিসের বিরোধীতা করব আমাকে অবশ্যই সে সম্পর্কে খুব ভালভাবেই জানতে হবে। না জেনে না বুঝে বিরোধিতা হল নিতান্তই ফাঁকি। এটা উদ্দেশ্য প্রনোধিত।আপনি যদি রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের একটা কবিতা নিয়ে আলোচনা করতে চান অবশ্যই আগে কবিতাটি পড়তে হবে। শুধু তাই নয় কবিতাটি রচনার ইতিহাস, কবি মানস, কবিতা সম্পর্কে আগে জানতে হবে। বুঝতে হবে বাংলা সাহিত্য, বাংলা কবিতা এর ছন্দ ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক বিষয়। কিংবা অর্থনীতি বা বিজ্ঞানের কোন তত্তের আলোচনা সমালোচনার জন্য আপনার চাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গভীর জ্ঞান। কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্র যেন এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়! ইসলাম সম্পর্কে গভীর পড়াশুনা না করে মহানবী ( দঃ ) সম্পর্কে না জেনে, তাঁর জীবন চরিত না পড়ে উগ্র ও অসুস্থ প্রক্রিয়ার তাঁকে যেভাবে আক্রমন করা হয় তাকে আর যাই বলা হোক কোনভাবেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলা যাবে না। সত্য কথা বলতে কি কথিত ব্লগাররা যে ভাবে যে ভাষায় ইসলাম ও মহানবী ( দঃ ) কে আক্রমন করেছে তার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা আমার জানা নেই। এই ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল অসুস্থ ব্লগকে আমরা যদি মত প্রকাশের স্বাধীনতা মনে করি তাহলে বুঝতে হবে সত্যিকারের প্রগতিশিল গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবর্তে আমরা একটা ফ্যাসিবাদি, উগ্র ও আদিম সংস্কৃতিকেই লালন করছি।





আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে সকল মতের সকল ধর্মের লোক শান্তির ও স্বস্তির সাথে বসবাস করে। সকলের মধ্যে একটা সুন্দর সৌহার্দ্য বিরাজ করে। সমাজের শান্তি নষ্ট করার জন্য কুৎসা রটনা করা, উগ্রবাদী বিকৃত রুচিহীন মতামত প্রকাশ কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। ধর্মের নামে মানুষ খুন করা, বোমা মারা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা, গণহত্যা, অরাজকতা সৃষ্টি করা যেমন অপরাধ একইভাবে মতপ্রকাশের নামে এইসব উগ্র অশালীন অন্ধ প্রচার প্রচারণাও জঘন্য অপরাধ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.