নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের আনন্দে লিখতে থাকি, আনন্দ শেষ তো লেখাও শেষ! কেও না পড়লেও কোন অসুবিধে নেই! সবাইকে শুভেচ্ছা!
করিম সাহেব আজ হটাত করেই গৃহ ত্যাগ করলেন। সব কিছু চলছিল ঠিকই; তবু কোথায় যেন তাল কেটে গেল। কি যেন এক চাঁপা অভিমান বুকে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার বদলে তিনি হারিয়ে গেলেন। নির্বিরোধ করিম সাহেবের এমন ক্ষ্যাপা কর্মকাণ্ডের কোন পুর্ভাবাস পায়নি কেও। সকালে ২০ বছরের সহধর্মিণী বাজারের ফর্দ ধরিয়ে দিয়েছিলেন; রোজগারের হিসেবে সেটা একটু ব্যায়বহুল ছিল বৈকি। তবে এতো আর নতুন কিছু নয়। এমন তো আগেও হয়েছে। একবার পুরো মাসের বেতন মোড়ের মস্তানের হাতে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। মাসটা কেটেছে বাকির উপরে, উপরি ছিল নানা রকমের কটুবাক্যের বর্ষণ।
-"এতো হাবাগোবা হলে চলবে বল? আর কারোটা নিলনা কেন?"
তা মোড়ের সেই মস্তানটাকে একবার জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলেন করিম সাহেব, সাহসে কুলায় নি। এমন নিরীহ করিম সাহেব আজ বাড়ি ফেরেননি। সহধর্মিণী অনেকক্ষণ অপেক্ষায় রইলেন জানালা ধরে। তারপর ছেলে রাহাতকে একটু সামনে এগিয়ে দেখতে বললেন; হয়ত রাস্তার মোড়ের সেই চায়ের দোকানটায় আড্ডা জমিয়েছে। যেখানে করিম সাহেবের একটি ভিন্ন পরিচয় রয়েছে। চায়ের কাপে তুমুল ঝড় তোলেন তিনি; সরকারের উত্থান, পতন, যুবসমাজের অধঃপতন,ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, আমেরিকা, ইত্যাদি ইত্যাদি। সাত্তারের লাল চা গলায় ঢেলে তিনি হয়ে ওঠেন একজন সাচ্চা বাগ্মি, কিছুক্ষনের জন্যে। সেখানেও আজ নেই তিনি। রাহাত আরেকটু এগিয়ে যায়, যদি দেখা মেলে তার বাবার। বাবার সাথে রাহাতের বেশ একটা সমঝোতার সম্পর্ক আছে। বয়ঃসন্ধিতে থাকা রাহাতের মনের অস্থিরতা করিম সাহেব অনুভব করেন; অনেকটা সময় তিনি ব্যয় করেন রাহাতের পেছনে। রাহাত আজ তার সদ্য ভালো লাগার কথা জানাতে চেয়েছিল বাবাকে। কোথায় গেলেন করিম সাহেব? রাহাত গলিটা পেরিয়ে মূল রাস্তা পর্যন্ত ঘুরে আসে। আরও একটু যদি সামনে এগুতো, তাহলে হয়ত দেখা হয়েই যেত করিম সাহেবের টিফিন বাটিটার সঙ্গে। করিম সাহেব বাসার খাবার ছাড়া খেতে পারেন না। আসিয়া বেগমকে যখন বিয়ে করে আনলেন সেদিন থেকে তিনি তার রান্নার প্রেমে পড়ে আছেন। আসিয়া বেগম করিম সাহেবের বিভিন্ন বিষয়ে বিরক্ত হলেও এই একটি বিষয় এখনও তাকে যৌবনের সেই দিন গুলিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। প্রতিদিন অনেক যত্নে তিনি ভড়ে দেন টিফিন বাটির প্রতিটি ইঞ্চি। আজকের মেনু ছিল মুরগি আর আলুর ঝোল। রাস্তার নেড়ি কুকুরটা বেশ আগ্রহ নিয়েই চেটে খাচ্ছিল পড়ে থাকা বাটিটা থেকে। ঠিক তার পাশেই পড়ে আছে অফিসের ব্যাগটা! করিম সাহেব আজ গৃহ ত্যাগ করেছেন। ফেলে গিয়েছেন তার নিত্য সঙ্গী অফিস ব্যাগ আর টিফিন বাটি। গৃহ ত্যাগের কোন কারণ ছিল না। অবশ্য কারণ কি লাগে? হটাত মনে হলেই তো বাধন ছিড়ে যায় অনেকের। হটাত মনে হলেই ছিড়ে খুঁড়ে ফেলা যায় তিলে তিলে জমে ওঠা স্বপ্ন গুলোকে। রহিম সাহেবের গল্পটা অনেকটা সেরকমই। উহু কলমের ভুলে নয়, সত্যি রহিম সাহেবের গল্পটা আমি এই ফাঁকে বলে যেতে চাচ্ছি। একদেশে ছিলেন একজন রহিম সাহেব। তার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল দেশে আলুর চাষ করে রফতানি করবেন। দেশের মানুষ বলল আমরা আলু রফতানি করতে চাইনা, আমরা চাল রফতানি করতে চাই। রহিম সাহেব দেশের সব মানুষ মেরে তাদের চামড়া রফতানি করা শুরু করলেন। রহিম সাহেবের গল্পটা এই খানেই শেষ।
করিম সাহেব অবশ্য বাংলাদেশেই বাস করেন। বাংলাদেশের ঢাকা শহরের মিরপুর এলাকার মনিপুরে দু'রুমের একটি বাসা নিয়ে তিনি থাকেন। তার গৃহ ত্যাগ নিয়ে আমি আজকের এই গল্পটা লিখতে বসেছিলাম। শুরুতে মাথার ভেতরে একটা অস্থিরতা কাজ করছিল। কিভাবে করিম সাহেবের গৃহত্যাগটাকে বাস্তব সম্মত রূপ দেব। ভাবছিলাম কি করে পাঠক কুলের মাথায় এই ধারণা গেঁথে দেব, করিম সাহেব আসলেই গৃহত্যাগী হতে চেয়েছিলেন। আসলে আমার এত কষ্ট করার দরকার ছিলনা। বাংলাদেশে কোন কারণ ছাড়াই ২০ দিনে ১০০ এর বেশি মানুষকে হত্যা করা যায়। তাই করিম সাহেবের গৃহত্যাগের আসলে কোন কারণ ছিল না। তার পড়ে থাকা অফিস ব্যাগ আর টিফিন বাটির পাশেই তার পোড়া শার্ট এর টুকরো ছিল। করিম সাহেব গৃহ ত্যাগ করেননি, তার তেমন ইচ্ছেও ছিল না। কোন কারণ ছাড়াই পুড়ে কয়লা হয়ে তিনি ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে শুয়ে ছিলেন। অপেক্ষায় আছেন তার ২০ বছরের সহধর্মিণী, অপেক্ষায় আছে রাহাত, অপেক্ষায় আছে এই লেখক; একটি রুপকথা লেখার আশায়!
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: মন বিশেষ ভালো নেই; লিখতে ইচ্ছে করে না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা আপনাকেও।
২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৬
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: শেষের দিকে এসে মন খারাপ হলো
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪০
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: কি করব বলুন। আশে পাশে মন ভালো করা ঘটনা ঘটছেনা খুব বেশি
৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই
৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৯
তোমার গল্পের মৃত রাজকন্যা বলেছেন:
অনেকদিন পর ...ভাই!
দেশের যা অবস্থা! আসলেই কিছু ভালো লাগে না ... এরকম কত রহিম সাহেব ঝলসে গেলো...হারিয়ে গেলো ...আমরা তার কজনার খবর রাখি!
ভালো থাকুন সবার সাথে...প্রিয়জনের কাছে থাকুন, সুস্থ থাকুন...
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১০
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: লিখতে ইচ্ছে করে না; কয়েক লাইন লিখে মুছে ফেলি। সব কেমন মেকি মনে হয়। সত্য গুলো অবাস্তব লাগে, মিথ্যে গুলোই অনেক সুন্দর, সাজানো গোছানো। তাই লেখা হয় না। বউ বাচ্চা আর বাবা মাকে নিয়ে ভালই আছি; আমার গায়ে তো কিছু লাগছে না!
৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
এহসান সাবির বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা!
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৭
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ এহসান ভাই। আপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা!
৬| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১৯
সায়েম মুন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ভাললাগা রইলো।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৮
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ মুন ভাই। অনেক ভালো থাকবেন
৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩
তোমার গল্পের মৃত রাজকন্যা বলেছেন:
কেমন আছেন ভাই ?
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৯
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: গাধা পিটিয়ে মানুষ বানানোর প্রক্রিয়ায় ব্যাস্ত আছি; আপনার কি খবর?
৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: লেখার ভঙ্গিমা ভাল লাগল।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০১
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ প্রফেসর; সব সম্ভবের দেশে আসলে গল্পের প্লট খুঁজতে হয়না। Truth is stranger than fiction!!
৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৩
সকাল রয় বলেছেন:
স্ব-ভঙ্গিতে প্রকাশ।
ভালো লাগা
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০০
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ সকাল ভাই। অনেক ভালো থাকবেন
১০| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৫
অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: ভাললাগা রইলো লেখায় ।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। শুভকামনা
১১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:১২
শান্তির দেবদূত বলেছেন: মানুষের জীবনের মূল্য মনে হয় সবচেয়ে কম আমাদের দেশে! এত সস্তা! কত সহজেই যে না জীবন্ত কতগুলো মানুষ শুধু মাত্র একটা সংখ্যা হয়ে যায়!
এখানে নাটকের বাকের ভাইকে বাচানোর জন্য আন্দোলন হয়, আর আকের-বাকের জীবন্ত দগ্ধ হয়ে যায়! অদ্ভুত এই দেশ, আজব এই দেশের মানুষগুলো!
অনেকদিন পরে আপনাকে ব্লগে দেখলাম! এখন কি দেশে?
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৫৮
এই সব দিন রাত্রি বলেছেন: ইদানিং দেশেই আছি। লেখা লেখি মন থেকে আসেনা দেখে ব্লগে আসিনা। গল্প লিখতে বসলে কেমন অভিমান হয়। মনে হয় কল্পনায় সাজানো চরিত্রগুলোকে প্রাণ তো দিতে পারছিনা;বাস্তবের চরিত্র গুলো কত অসম্ভব সুখ এবং দুঃখের গল্প সাজিয়ে বসে আছে। ভালো থাকুন ভাই; খাস্তগীরকে কিছু একটা করতে বলুন!!
১২| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:২৯
রাগিব নিযাম বলেছেন: ভালো লেগেছে। + + বেশ কিছু সুপারন্যাচারাল/থ্রিলার গল্প পোস্ট করেছি। একটু দেখে বলবেন কেমন হয়েছে?
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৭
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: অনেক দিন পর আপনার লেখা পড়লাম এবং যথারীতি চমৎকৃত হলাম। আপনার বর্ণনা ভঙ্গীর একটা অদ্ভুত দ্যোতনা আছে।
এমন গৃহত্যাগ যেন আর কারোরই না ঘটে এই কামনা করি।
ভালো থাকুন। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।