নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উত্তরবঙ্গের কোন এক জেলার অধিবাসীদের কৃপণতার কথা সবাই জানে। তাদের এই কার্পণ্য নিয়ে অনেক মুখরোচক গল্প খোদ উত্তরবঙ্গেই চালু আছে। এই জেলার লোকজন নাকি পোস্ট অফিস ও রেল স্টেশনের কাউন্টারে গিয়ে খাম-পোস্টকার্ড ও ট্রেনের টিকিটের দাম নিয়ে দরাদরি করে। আমি নিজে অবশ্য এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন না হলেও একটু ভিন্ন রকম ঘটনা ঘটতে দেখেছি। এই জেলার বাসিন্দা আমার এক অফিস কলিগকে দেখেছি ফার্মেসীতে গিয়ে সামান্য বেশি দামের কারণে ডাক্তারের লেখা প্রেসক্রিপশনের বাইরে অন্য ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরতে। বেশি দামের ওষুধটি ছিল একটি নাম করা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির। ক্যাপসুল প্রতি মাত্র পঞ্চাশ পয়সা বেশি দিতে হবে বলে তিনি এক অখ্যাত কোম্পানির ওষুধ কিনে দাঁত বের করে হেসে বললেন, ‘শুনলেন তো, দোকানদার কী বললো? একই ওষুধ। শুধু শুধু বেশি দাম দিতে যাবো কেন বলুন?’
আমি বললাম, ‘হক সাহেব, এটা বোধহয় ঠিক হলো না। ওষুধের মান কিন্তু একটা ফ্যাক্টর। দামে এত সামান্য পার্থক্যের জন্য আজে বাজে কোম্পানির ওষুধ না খাওয়াই ভালো। ডাক্তার তো ভালো কোম্পানির ওষুধই লিখে দিয়েছেন।’
‘আরে রাখেন আপনার ডাক্তার!’ আব্দুল হক তুড়ি মেরে ডাক্তারকে উড়িয়ে দিয়ে তার স্ত্রীর জন্য অখ্যাত কোম্পানির ওষুধ কিনে নিয়ে গেলেন।
কিন্তু এক সপ্তাহ ওষুধ খেয়েও তার স্ত্রীর ব্যথা ভালো হলো না। ডাক্তারকে দ্বিতীয় দফা দেখাতে গেলে আবার ফি দিতে হবে এবং ঝাড়ি খেতে হবে বলে হক সাহেব তার কাছে না গিয়ে প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ কিনে নিয়ে বাসায় গেলেন। তার আগে বাজে ওষুধ দেওয়ার জন্য ফার্মেসীর সেই কর্মচারীর সাথে তার ঝগড়াঝাঁটি ও হাতাহাতি হলো। এতে তার চশমার একটা কাঁচ ভেঙ্গে গেল। তবে ভালো খবর হলো এই যে, নতুন ওষুধ খেয়ে তার স্ত্রীর ব্যথা কমে গেল।
আব্দুল হক অফিসে বসে মনে মনে একটা হিসাব কষে আমাকে বললেন, ‘হেনা সাহেব, আপনার কথা না শুনে আমার আটানব্বই টাকা গচ্চা গেল। সেদিন আপনি আমাকে আর একটু ভয় দেখালেন না কেন? তাহলেই তো ওই ওষুধটা আর নিতাম না। ওফ্! আটানব্বই টাকা! ভাবতে পারেন?’
আমি বললাম, ‘ভেবে আর কী হবে? হিসাবের গরমিল হলো এখন ভাবনার বিষয়। আপনার গচ্চা যাওয়া টাকার হিসাবে একটু গরমিল আছে। আরও কিছু টাকা বোধহয় যোগ হবে।’
‘কী রকম, কী রকম?’ আব্দুল হক নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে আমার কাছে এসে উদ্বিগ্ন কণ্ঠে তার মানসাঙ্কের হিসাবটা বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, ‘সাত টাকা করে একটা ক্যাপসুলের দাম। প্রতিদিন দু’টা করে খেলে চৌদ্দ টাকা হয়। আমি এক সপ্তাহের ওষুধ নিয়েছিলাম। তাহলে চৌদ্দ ইনটু সাত মোট আটানব্বই টাকা হচ্ছে না?’
আমি বললাম, ‘সেটা তো ঠিক আছে। কিন্তু ফার্মেসী দোকানের কর্মচারীর সাথে ঘুষোঘুষি করে যে চশমার একটা কাঁচ ভেঙ্গে এলেন, ওটার দাম ধরবেন না? চশমা ছাড়া তো আপনি একটা লেখাও পড়তে পারেন না। অফিসে কাজ করবেন কীভাবে?’
‘তাই তো! ওহ্ সর্বনাশ! আপনি তো ঠিক কথাই বলেছেন।’ আব্দুল হক উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন, ‘আচ্ছা, চশমার একটা কাঁচের দাম কত হবে আপনার আইডিয়া আছে?’
‘না ভাই। আইডিয়া নাই। চশমার দোকানে গেলেই জানতে পারবেন। তবে সেখানে গিয়ে পয়সা বাঁচানোর জন্য যদি আবার কম পাওয়ারের কাঁচ নেন তো পরে খরচা আরও বেড়ে যাবে বলে দিচ্ছি।’
‘আরে না! কী যে বলেন না! চশমার কাঁচে যে পাওয়ার লাগবে সেটাই তো নিতে হবে। কম পাওয়ার নিলে ওই কাঁচ কী কাজে লাগবে? মাঝখান থেকে চোখটা আরও খারাপ হবে।’
‘এই তো বেশ বুঝতে পারছেন। তাহলে এবার দোকানে গিয়ে চশমার কাঁচ লাগান আর কাঁচের দাম ওষুধের দামের সাথে যোগ করে দেখুন মোট কত টাকা গচ্চা গেল। চশমার জন্য এ ক’দিনে আপনার কিন্তু অনেক ফাইল পেন্ডিং পড়ে গেছে।’
আব্দুল হক বিরক্তির সাথে হাত নেড়ে বললেন, ‘আপনি তো বলেই খালাস। আরে ভাই, আমার দুই চোখে দুই রকম পাওয়ার। ডান চোখের পাওয়ার যে কত ছিল সেটা তো এখন আমার মনে নেই। আট দশ বছর আগে নেওয়া চশমা। এতদিন কী আর মনে থাকে?’
‘চশমার প্রেসক্রিপশনটা নিয়ে দোকানে যান।’
‘অতদিন আগের প্রেসক্রিপশন যদি বাসায় খুঁজে না পাই? আট দশ বছরে তিনবার বদলী হয়েছি। ওই প্রেসক্রিপশন কী আর আছে? মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
‘তাহলে চোখের ডাক্তারকে দেখিয়ে নতুন প্রেসক্রিপশন নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে চোখের ডাক্তারের ফিও গচ্চা যাওয়া টাকার সাথে যোগ করতে হবে। তিনি তো আর বিনে পয়সায় প্রেসক্রিপশন দেবেন না। এ্যামাউন্টটা তাহলে আর একটু বাড়বে।’
আব্দুল হক দু’হাতে মাথার চুল খামচে ধরে হতাশ গলায় বললেন, ‘নাহ্, আপনি একের পর এক আমার খরচ শুধু বাড়িয়েই যাচ্ছেন। এত টাকা আমি পাবো কোথায়?’
‘ওই ফালতু ওষুধ কোম্পানির নামে একটা ক্ষতিপূরণের মামলা ঠুকে দেন। দেখবেন আপনার সব টাকা পেয়ে গেছেন।’
‘আমার এই বিপদের দিনে আপনি ঠাট্টা করছেন?’
কথাবার্তা সেন্টিমেন্টাল পর্যায়ে চলে যাচ্ছে দেখে আমি আর কিছু বললাম না। আব্দুল হক আমার ওপর বিরক্ত হয়ে চলে গেলেন। বাসায় গিয়ে তিনি সম্ভব অসম্ভব সব জায়গায় লাঙ্গল চষা করে খুঁজেও প্রেসক্রিপশন পেলেন না। অগত্যা কী আর করা! ডাক্তারের ফি এড়ানোর জন্য লায়নস চক্ষু হাসপাতালের আউটডোরে কুড়ি টাকা দিয়ে টিকিট কেটে তিনি চোখ দেখালেন। সেখানে তার বাঁ চোখের পাওয়ারও বদলে দেওয়া হলো। কিন্তু তিনি চশমার দোকানে গিয়ে বিস্তর দরদাম করে শুধু ভেঙ্গে যাওয়া চশমার ডান চোখের কাঁচ লাগিয়ে নিয়ে চলে এলেন।
এরপর একদিন অফিসে বসে কাজ করতে করতে আব্দুল হক ফিস ফিস করে আমাকে বললেন, ‘আচ্ছা, মামলা করলে কী সত্যিই ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে?’
আমি বললাম, ‘ভেজাল বা নকল ওষুধের জন্য তো ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা যায় বলে শুনেছি। এখন ক্ষতিপূরণ কী পাবেন না পাবেন সেটা একজন উকিলের সাথে পরামর্শ করে দেখতে হবে।’
‘তাহলে তো আবার উকিলকে ফি দিতে হবে। তাই না?’
‘শুধু ফি বলছেন কেন? মামলার অন্যান্য খরচ আছে না? স্ট্যাম্পের খরচ, মুহুরীর খরচ, ওকালতনামা...............।’
হক সাহেব দু’হাতে মাথার চুল খামচে ধরে ডুকরে উঠলেন। আমার দুই হাত তার নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, ‘আর বলবেন না প্লিজ!’
************************************************************************************************************
রি-পোস্ট।
ছবিঃ নেট।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৫
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
ধন্যবাদ ভাই শোভন শামস।
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৪
শাহ আজিজ বলেছেন: সস্তার তিন অবস্থা । ওনার বাড়ি কি বগুড়া ??
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৯
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ব্লগে ওই জেলার মানুষ থাকতে পারেন। জেলার নাম বললে তিনি হয়তো মনঃক্ষুণ্ণ হবেন। তাই জেলার নাম বলছি না ভাই।
ধন্যবাদ শাহ আজিজ ভাই।
৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: কৃপণতা আমার মোটেও পছন্দ না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৭
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আসলে দু'দিনের জীবনে কৃপণতা করে কি লাভ?
ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।
৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৩
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: হে হে হে, রংপুর বোধহয়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৮
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বলবো না। হে হে হে।
ধন্যবাদ সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ।
৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১১
শেরজা তপন বলেছেন: মজা পেলাম!
তবে লোকটা কৃপন হলেও অর্থনৈতিক সমস্যাও আছে- কষ্ট পেলাম তার জন্য
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১২
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: না, না, তার কোন অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল না। চাকরি ছাড়াও পৈতৃক জমি থেকে তার আয় হতো। কৃপণতা তার স্বভাব ছিল।
ধন্যবাদ ভাই শেরজা তপন।
৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলদেশের মানুষের হাতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ টাকা কোন কালে ছিলো না। চট্টগ্রামের মানুষ বেকুবের মতো নিজ আয়ের থেকে বেশী টাকা খরচ করে বিপদে পড়ে সব সময়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৫
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ, এরকম এক শ্রেনির মানুষ তো আছেই আমাদের সমাজে। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করে সব সময় বিপদে পড়ে।
ধন্যবাদ ভাই চাঁদগাজী।
৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
রম্য পড়ে হাসি পেলেও বেচারার জন্য সত্যি দুঃখ হচ্ছে। কৃপন কি মানুষ এমনিএমনি হয়! আমাদের দেশে নূন আনতে অনেকেরই তো পান্তা ফুরোয়! +
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৭
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধার করেও ঘি খাওয়া লোক আছে ভাই আমাদের সমাজে।
ধন্যবাদ ভাই নতুন নকিব।
৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
দারুন একটি বিষয় উঠে এসেছে রম্য লেখাটিতে ।
আপনার কলিগ হক সাহেবের এই দর কশাকষির মাধ্যমে অর্থ বাচানোর অভ্যাসটি একটি অবিবেচনা প্রসুত আচরণ বলেই গন্য করা যায় । কমদামে নিন্ম মানের বিশেষ করে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ক্রয়ের খেসারত অনেক সময় দিতে হয় জীবন দিয়ে । উনার ওয়াইফের যে জীবন নিয়ে টানাটনি হয়নি তাতেই বড় রক্ষা পেয়েছেন তিনি ।
তার এই আচরন মিতব্যয়িতা, অমিতব্যয়ীতা কিংবা কৃপনতা কোনটির মধ্যেই পড়েনা । বরং অনাবশ্যকভাবে প্রয়োজনীয় মানের চেয়ে নিন্মমানের দ্রব্য বা সার্ভিস ক্রয় করাকে একটি বাজে খরচ হিসাবে বিবেচনা করা যায় । তবে বাজে খরচ মুলত অতিমিতব্যয়িতার পর্যায়ভুক্ত আর বড় দাগে সেটা কৃপণতা বা কার্পণ্যেরই সমার্থক। কৃপণ ব্যক্তি সব সময় প্রয়োজন মতো অর্থ করা ব্যয় থেকে নিজেকে দূরে রাখে।
তবে অপ্রয়োজনীয় ভাবে অর্থ ব্যয় না করে মিতব্যয়ি হলে সেটি হতো তার জন্য একটি ভাল গুণ। মিতব্যয়ী ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে। তিনি দেশ ও সমাজের জন্য ভালো ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত। জীবনে চলার পথে মিতব্যয়ী ব্যক্তিকে খুব কমই অর্থসঙ্কটের মুখাপেক্ষী হতে হয়। তার ব্যক্তি ও সংসার জীবন সচরাচর সুখময় হয়ে থাকে। কিন্ত অবিবেচনা প্রসুতভাবে অর্থ ব্যয় বরং এই গল্পের মত তাঁর জন্য আরো অনেক unavoidable ব্যয়ের খাত সৃষ্টি করে ।
অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে মানুষের মধ্যে তিন ধরনের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এর একটি হলো মিতব্যয়িতা এবং অপর দু’টি অপব্যয়িতা ও কৃপণতা। এ কারণে ইসলাম ধর্মে অপব্যয় ও কৃপণতাকে নিরুৎসাহিত করে মিতব্যয়কে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই কৃপণতা এত খারাপ জিনিস যে, এর কারণে অনেক ফরয ওয়াজিব পর্যন্ত আদায় হয় না। যেমন- যাকাত দেয়া, কুরবানী করা, অভাবীকে সাহায্য করা, গরীব আত্মীয়-স্বজনের উপকার করা ইত্যাদি।তবে আপনার কলিগ যে একজন কৃপন ব্যক্তি তা কিন্তু আমি নির্দিষ্ট করে বলছিনা, আআপনার কলিগ বলে উনার প্রতি আআমার শ্রদ্ধার কোন কমতি নাই । তাঁর অর্থব্যৈর আচরণটিকে একটু অবিবেচনা প্রসুত বলেছি ।
অনেকের মধ্যে আবার দেখা যায় ফাও খাওয়ার প্রবনতা । আমি ছোট সময় দেখেছি বাজারে দোকানে খাবার তৈল কিনতে গেলে দোকানদার প্রতি ক্রেতাকেই কিছু ফাও তেল দিত । অনেকেই বোতল ভর্তী করে তেল কিনতনা । তখন বেশীর ভাগ ক্রেতাই এক ছটাক,দুই ছটাক বা এক পোয়া খাটি সরিষার তেল কিনত খাওয়ার জন্য আর ছটাক খানেক খাটি নারিকেল তেল কিনত মাথার চুলে দেয়ার জন্য । তাতে তার তেলের বোতল ভরতনা, বোতলের কিছুনা কিছু খালি থাকতই , আর সেখানে দোকানদার কিছু ফাও তেল দিয়ে দিতো, যে দোকানদার ফাও তেল দিতনা মানুষ সেখানে তেল কিনতে যেতোনা।
একদিন আমি দোকানে তেল গেছি,সেসময় আমার সামনের একজন এক পোয়া ( এখনকার ২৫০ গ্রাম সমান) সরিষার তেল কিনল ।তাতে তার বোতল ভরে যায়, তাই দোকানদার ফাও তেল দেয়ার জায়গা না পেয়ে তাকে ফাও তেল দেয়নি । কিন্ত ক্রেতা ফাও তেল না নিয়ে কিছুতেই যাবেনা ,সে গো ধরে বসল ফাও তেল তাকে দিতেই হবে ।দোকানদার তাকে বলল ফাও তেল নিবে কিভাবে, তোমার বোতলেতো জায়গা নাই । তার বোতলের নীচে একটি চোঙ্গার মত গর্ত ছিল।(উল্লেখ্য তখনকার দিনে বোতলের ডিজাইনই এমন ছিল যে তাতে বোতলের নীচের দিকে একটি ছোট গর্তের মত খালি জায়গা থাকত, সম্ভবত আপনিও তা লক্ষ করে থাকবেন) সে তার বোতলের মুখ ছিপি দিয়ে না আটকিয়ে তারাতারি বোতলটি উলটিয়ে ধরে বলল এখানে তার ফাও তেল দেয়ার জন্য । দোকানদার সেখানেই তাকে তার পাওনা ফাও তেল দিয়ে দিল । ফাও তেল পেয়ে সে দোকানদারকে বলল ফাও কিভাবে নিতে হয় তা আমার ভাল করে জানা আছে, আরো বলল তুমি কি আমাকে বোধাই পাইছ যে ফাও না দিয়ে আমাকে ঠকাবে। ফাও নিতে গিয়ে সে যে তার আসল খোয়ায়েছে সেটা সে উত্তেজনার বসে বুঝতে পারে নাই। দোকানদার মুচকি হেসে বলল, যাও বাড়ী গিয়ে টের পাবে ফাও নেয়ার মজা কাকে বলে।
যাহোক,আপনার গল্পটি রম্য হলেও বেশ উপভোগ্য হয়েছে, এতে শিক্ষনীয় অনেক বিষয় আছে।
শুভেচ্ছা রইল ।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৬
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ডঃ আলী। আমাদের ধর্মে কৃপণতাকে যেমন অনুৎসাহিত করা হয়েছে, তেমনি অমিতব্যয়িতাকেও অনুৎসাহিত করা হয়েছে। মধ্যপন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী ব্যক্তি সর্বোত্তম।
ফাও তেল নেওয়ার ঘটনাটি পড়ে খুব হাসি পেল। এটা তো আমাদের জাতির চারিত্র্যিক বৈশিষ্ট্য।
ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী।
৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগলো
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৮
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই নেওয়াজ আলি।
১০| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯
দারাশিকো বলেছেন: হা হা। কৃপণতার গল্প পড়ে মজা পেয়েছি। তবে স্যার, এ যুগে অনেকেই কৃপণতা আর মিতব্যয়িতার মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না। স্ট্যাটাস বজায় রাখতে গিয়ে সাধ্যের চেয়ে বেশি ব্যয় করে আর ধার-কর্জ করে।
০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ, এই যুগে এরকমই হচ্ছে। তবে আয় ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখাটা খুবই জরুরী।
ধন্যবাদ ভাই দারাশিকো।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০২
শোভন শামস বলেছেন: সরল জীবন উত্তম সাধারণ মানুষের জন্য, যদিও তা দুর্লভ অনেকসময়