নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন থেকে লিখব না আর সত্যিকারের কিছু/ বলব না আর, চলব শুধু ছায়ার পিছুপিছু।// সবাই যখন নামছে নীচে, আমার তখন কী দায়? / অন্ধকারের সঙ্গী হলাম—আলোক তোমায় বিদায়।// এখন আমি থমকে রব, জীবন হবে থ-ময়,/ মাথা নেড়ে আজ্ঞে বলেই কাটিয়ে দেব সময়।// মিথ্যেটাকে সত্যি জেনেই করব কারাবরণ—/ এখন থেকে জানবে, হে দেশ, কবির হলো মরণ।//
তখন বাংলা ভাষার বিকাশের যুগ।সাহিত্য আর ব্যাকরণ নিয়ে চলছে নতুন-নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা।“বৌ”কে অনেকেই “বউ” লিখছেন।ভাষাচার্য সুনীতিকুমার এই বানান দেখে মন্তব্য করলেন—ছি ছি!শেষ পর্যন্ত বৌ হলো এমন! বউ, তো বৌয়ের মাথায় ঘোমটা কই?বাস্তবিকই!অক্ষরের চেহারার সঙ্গে তার অর্থের দিকটাও কেমন করে যেন জড়িয়ে যায়।ৌ-কারের মাথার বাঁকা অংশটা যে ঘোমটার মতো দেখতে এটা কে অস্বীকার করবে?
তেমনিভাবে “ঈদ”কে যখন বলি ইদ, তখন কি মাথায় প্রশ্ন জাগে না—"ব্যাটা, ঈদের নতুন চাঁদটা গেল কোথায়?" চাঁদমামা এসে যখন “ই”-এর লেজে চড়ে বসে তখনই তো সেটা “ঈ” হয়, নয় কি?
ওই একই দৃষ্টিগ্রাহ্য কারণে ইদকে অনেকের কাছে ইঁদুর বলেও ভ্রম হয়!এটাকে হয়ত অস্বীকার করা যায়।কিন্তু অগ্রাহ্য করা যায় না।
মানুষ সবসময় কোনও এক অদৃশ্য কারণে ফিরে যেতে চায় ছেলেবেলায়।হয়তো একমাত্র সে-সময়টাতেই লাভক্ষতির চুলচেরা হিসেব না করে আনন্দটাকে বাঁধাহীন উপভোগ করা যায় বলে।ছেলেবেলার ঈদের মাঠে গিয়ে দেখা ইমামের খুতবার ছোট্ট জায়গাটাতে “ঈদ মোবারক” লেখাটির মধ্যে যে শিহরণ,যে আবেগ —সেটাকে অস্বীকার করবে কোন অভাজন?কোন অভাগা?
“ঈদ”-এর চাঁদকে সরিয়ে “ইদ” বানিয়ে এই কোটি-কোটি মানুষের কোমল আবেগটিকে আঘাত করার অধিকার কোনও ব্যাকরণবিদকে জনগণ তো দূরের কথা, ভাষা নিজেও দেয় কি?
চাঁদকে অন্ধকারে ঢাকা দেওয়া যায় না।অন্ধকার যত গাঢ় হয়, এর উজ্জ্বলতা ততো বাড়তে থাকে।“ঈদ”-এর চাঁদটাকে ঢাকা দিয়ে “ইদ” বানানোর তাই যতই চেষ্টা করা হোক সেটা নিজ মহিমায় প্রকাশ পাবেই।
এই ভাষা আমার ভাষা।আমার মায়ের ভাষা,ভায়ের ভাষা।আমার বাবার ভাষা, বুবুর ভাষা।আমি ছোটবেলার মতো আমার বাবার হাতটি ধরে ঈদের মাঠে যেতে চাই।আমি ঈদের মধ্যে বাঁকা চাঁদের হাসিটি চাই।আমি চাইনা কোনও ইঁদুর দৌড়ের মধ্য দিয়ে ঈদের মাঠে যেতে।
—ঈদ না কি ইদ?
স্নিগ্ধ মুগ্ধতা।
২| ২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩০
নাদিম আহসান তুহিন বলেছেন: এক্কেবারে সোজা কথায় বলি,,
ঈদ/ইদ দুটোই সঠিক,,,,
ঈদ--- প্রচলিত বানান রীতি
ইদ----অপ্রচলিত বানান এবং বিদেশী শব্দের ব্যবহারের রীতি অবুযায়ি।
৩| ২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:১০
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বহুল প্রচারিত তরল পদার্থ গ্রহনকে যদি বাংলা এ্যাকাডেমি "{পান না বলে খাওয়া" বলে গ্রহন করতে পারে, তাহলে ঈদ কি দোষ করলো??!! আসলে বিতর্ক সৃষ্টিই মূল।।
৪| ২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১০
বিজন রয় বলেছেন: উদাহরণটা ভালই দিয়েছেন।
তবে অনেক পুরানো অভ্যাস ছাড়তে অনেক সময় কষ্ট হয়।
বিষাদ সময়ের কথায়ও যুক্তি আছে।
ঈদ মোবারক।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:৪০
বিষাদ সময় বলেছেন: আপনি যে কথাগুলো বলেছেন এটা ইমোশন এর কথা এবং এ বিষয় গুলো আপেক্ষিক। আসলে আরবী শব্দকে বাংলায় লিখতে সঠিক অর্থ বা উচ্চারণ প্রকাশের জন্য বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে অনেকেই বিস্তারিত বলেছেন তাই সেসব কথার আর পুনরাবৃত্তি করছি না। সে কারণেই "ঈদ" লেখা হয়। তবে বাংলা একডেমি বিদেশী শব্দের বানানের ক্ষেত্রে অহেতুক জটিলতা এড়ানো জন্য কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী "ইদ" লিখতে হয়। যদি আরবী শব্দ গুলোর উচ্চারণ বা অর্থ ঠিক রেখে বানান লিখার সিদ্ধান্ত হয় তবে বেশ কিছু জটিলতা সৃস্টি হবে। বিদেশি শব্দগুলোর সহজ বানান রীতি প্রচলনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আসলে আমরা ধর্মীয় ব্যাপারে খুব স্পর্শকাতর বলেই "ইদ" নিয়ে এতো বিতর্ক হচ্ছে। এখানে যদি "ঈগল" কে "ইগল" করে দিতো তবে তেমন কোন বিতর্কই সৃষ্টি হতো না।
তবে "ঈদ" বানানটি প্রচলিত এবং প্রতিষ্ঠিত বানান রীতি তাই সেটা নিয়ে বাংলা একাডেমি অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি না করলেই ভালো করতো। ধন্যবাদ।