নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি যে লিখি ছাই মাথা ও মুণ্ডু আমিই কি বুঝি তার কিছু?/হাত উঁচু আর হ\'ল না ত ভাই, তাই লিখি ক\'রে ঘাড় নীচু!

স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা

এখন থেকে লিখব না আর সত্যিকারের কিছু/ বলব না আর, চলব শুধু ছায়ার পিছুপিছু।// সবাই যখন নামছে নীচে, আমার তখন কী দায়? / অন্ধকারের সঙ্গী হলাম—আলোক তোমায় বিদায়।// এখন আমি থমকে রব, জীবন হবে থ-ময়,/ মাথা নেড়ে আজ্ঞে বলেই কাটিয়ে দেব সময়।// মিথ্যেটাকে সত্যি জেনেই করব কারাবরণ—/ এখন থেকে জানবে, হে দেশ, কবির হলো মরণ।//

স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিয়ানমারে হবুচন্দ্র

২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:২৯

১.
হবুচন্দ্র রাজা তখন ক্ষমতায়।নাম শুনে যা-ই মনে হোক, তিনি যথেষ্ট বিচক্ষণ এবং বুদ্ধিধর।প্রজাসাধারণকে তিনি প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন।রাজ্যপাট চলছিল বেশ।কিন্তু হঠাৎই একটা মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন — তার পোষা বাঘটা কেমন করে যেন পশুশালার বিরাট লোহার দরজাটা ভেঙে পালিয়েছে।দ্বাররক্ষীকে তো তক্ষুণি পেটে চালান করেছে,চলতি পথে আরও দু-তিনজনকে ঘাড় মটকে ফেলে রেখে গেছে!
এটা গতকালের ঘটনা।এরপর কাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আরও বিশ-পঁচিশটা লাশ এখানে-সেখানে পাওয়া গেছে।আধমরা আরও প্রায় পঞ্চাশজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা কষছে।
সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি মন্ত্রী গবুচন্দ্রকে ডেকে পাঠালেন।গবুচন্দ্র রাজ্যের সবচে দক্ষ বিশজন কামারকে ডেকে নিয়ে এল।
তারা যখন এসে পৌঁছাল, রাজা হবুচন্দ্র তখন প্রজাদের দুর্দশা চিন্তা করে ক্ষোভে-আতঙ্কে দিশেহারা।তিনি,কামারবাহিনীর যিনি প্রধান,তার হাতদুটো ধরে ভারি গলায় বললেন—তোমরা কি পারবে বাঘের হাত থেকে জনগণকে বাঁচাতে?ভেবে দেখ,এটা শুধু দায়িত্ববোধ নয়;এটা তারচেয়েও বড় কিছুর প্রশ্ন।এটা মানবিকতা।তোমরা কি পারবে?
মহারাজারের কথার আবেগে কামার-প্রধান তখন টগবগ করে ফুটছে।সে মনশ্চক্ষে দেখতে পাচ্ছে,ইয়া বড় বাঘটার পায়ে শেকল লাগিয়ে সে হিড়হিড় করে টেনে আনছে।মুহূর্তমাত্র দ্বিধা না করে দৃঢ়তার সাথে সে বলল—আপনি শুধু আদেশ করুন মহারাজ।
হবুচন্দ্র ভরাট গলায় বললেন— তবে যাও।লোহালক্কড় সব এক জায়গায় করো ।বিরাট বড় একটা মজবুত ঘর বানাও।তারপর বন্দী করো।বন্দী করো, আমার জনগণদের।নইলে,বাইরে থাকলে বাঘ ওদের সবাইকে মেরে ফেলবে।জনগণকে বাঁচাও।এটা তোমাদের মানবিক দায়িত্ব!

২.
হবুচন্দ্র রাজা মহাচিন্তিত আজ—এই রাজ্যের ভবিষ্যৎ—তার একমাত্র ছেলেটার শেষপর্যন্ত এত অধঃপতন!চরিত্রই যদি না থাকে তবে আর রইল কী!শেষ পর্যন্ত কি না যে-নারীপুরুষদের সম্পদ আর সম্মান রক্ষার জন্য তিনি রাজ্যশাসনে হাত দিয়েছেন, সেই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে তারই ছেলে!এ লজ্জা তিনি রাখবেন কোথায়।

তিনি মন্ত্রী গবুচন্দ্রকে ডাকলেন।বললেন—মন্ত্রী!রাজপুত্র তো একটার পর একটা অপকর্ম করেই চলেছে!অথচ তোমরা করছ কী?আইন-কানুন দূর হোক।মানবিকতা বলেও কি তোমাদের কিছু নেই?

রাজপুত্রের অপকর্মে মন্ত্রীও ফুঁসছিলেন।তিনি দৃপ্তস্বরে বললেন— মানবতার শপথ করছি মহারাজ।অবশ্যই আমাদের মানবিকতা আছে।বলুন, কী করতে হবে।

হবুচন্দ্র বললেন—শুধু রাজপুত্রই নয়।শয়তানের পূজারী আরও অনেক যুবকই জঘন্য এ অপকর্মের দোসর!তোমার লোকজনদেরকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দাও।কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে সেখানে যথাশীঘ্র উপস্থিত হবে।তারপর পদক্ষেপ নেবে।মনে রাখবে মেয়েগুলো কিন্তু নির্দোষ।
গবুচন্দ্র বললেন—সে তো বুঝলাম।কিন্তু কী পদক্ষেপ নেব?

হবুচন্দ্র দৃঢ় গলায় বললেন—তোমরা মেয়েগুলোকে সান্ত্বনা দেবে, আর এগুলোও ওদেরকে দেবে।তিনি গবুচন্দ্রের হাতে একবস্তা "ওরাল পিল" দিয়ে বললেন—এগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত করা তোমার কর্তব্য।মানবতা যেন তোমার দ্বারা ভুলুন্ঠিত না হয়।

৩.
সময় এগিয়েছে! হবুচন্দ্র এখন গোটা পৃথিবীর রাজা!মডার্ন যুগে ওইসব বস্তাপচা পুরাতন নাম চলে না।তাই তিনি “চন্দ্র”টাকে “মুন” বানিয়ে নিয়েছেন ।তিনি যে জাতপাতের ঊর্ধ্বে, সারা বিশ্বের কর্ণধার এটা বুঝানোর জন্য নামের আগে “বান কি” নামের একটা আধুনিক পদবীও লাগিয়ে নিয়েছেন।মোদ্দাকথা, হবুচন্দ্রের নাম এখন “বান কি মুন”।

বান কি মুন আজ মহাচিন্তিত।তিনি তার সবচেয়ে বড় মিডিয়া—মন্ত্রী গবুচন্দ্রকে ডেকে পাঠিয়েছেন।কোথাকার কোন মায়ানমারের বৌদ্ধরা নাকি মুসলমানদের কচুকাটা করছে!কত্ত বড় সাহস!
চোখমুখ লাল করে গবুচন্দ্র উপস্থিত হলেন।বললেন—মহারাজ!মানবতা আজ কোথায়?যারা বলে—জীব হত্যা মহাপাপ,তারাই কিনা কচুকাটা করছে মানুষকে!আজীব ব্যাপার!মানবতার দোহাই।আমরা আর বসে থাকতে পারছি না।আদেশ করুন।
বান কি মুন বললেন—ডাকো সবাইকে।দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাও।এগিয়ে যাও তোমার বাহিনী নিয়ে।যাও।গিয়ে বাংলাদেশকে বলো, তারা যেন, সীমান্ত খুলে দেয়!সীমান্ত বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের কষ্ট দেওয়া কোন ধরনের মানবতা?

পুনশ্চ:
ক.রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবতা প্রদর্শন করার জন্য হবুচন্দ্রের শাহী এলান এই লিংকে—
http://www.bbc.com/bengali/news-38026018

খ.হবুচন্দ্রের উপরেও আকাশের চন্দ্র-সূর্য আছে।তারও উপরে আছেন সুমহান একজন।তিনি তথাকথিত মানবতার ধার ধারেন না।তিনি শুধু চান আমরা যেন সত্য জানি,সত্য মানি।সত্য খুঁজি,সত্য বুঝি।আমরা যেন,অন্যের অবিচারের ভয় না করে তার সুবিচারের ভয় করি।সেই সুমহান স্বত্তার শাহী এলানের সামান্য একটা অংশ সবাইকে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন মনে করি,বিশেষ করে সেইসব মুসলিম নামধারী সেনাবাহিনী-পোষা দেশের রাষ্ট্রনেতাদেরকে—

An-Nisa' 4:75
وَمَا لَكُمْ لَا تُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَآءِ وَٱلْوِلْدَٰنِ ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ ٱلْقَرْيَةِ ٱلظَّالِمِ أَهْلُهَا وَٱجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَٱجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا

তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে এবং অসহায় নারী-পুরুষ আর শিশুদের (রক্ষার) জন্য লড়াই করছ না, যারা দু‘আ করছে- ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এ যালিম অধ্যূষিত জনপথ হতে মুক্তি দাও, তোমার পক্ষ হতে কাউকেও আমাদের বন্ধু বানিয়ে দাও এবং তোমার পক্ষ হতে কাউকেও আমাদের সাহায্যকারী করে দাও।’

And what is [the matter] with you that you fight not in the cause of Allah and [for] the oppressed among men, women, and children who say, "Our Lord, take us out of this city of oppressive people and appoint for us from Yourself a protector and appoint for us from Yourself a helper?"
সুরা নিসা-৭৫

গ.বিশিষ্ট ইসলামী গবেষকরা কী ভাবেন এই বিষয়ে?তাঁদেরকেও কি নাড়া দেয় অন্য মুসলিমদের গগনবিদারী আর্তচিৎকার?জানতে হলে দেখুন—
https://m.youtube.com/watch?v=dIsf7MYBwSw


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১০

আলোরিকা বলেছেন: মর্মান্তিক! কিই বা বলার আছে আর কেই বা শুনছে সারা পৃথিবী জুড়ে একই অরাজকতা :( আপনার লেখাটিতে স্যাটায়ার হিসেবে ১-৩ অনুচ্ছেদ-ই যথেষ্ট ছিল । ভাল থাকুন। শুভ কামনা ।

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবকিছুই আজ শ্বাপদের দখলে!!!!!!!!!!!

মিডিয়া, বিবেক, বিবৃতি, কর্মসূচী অফলাইন অনলাইন শ্বাপদের ইশারায় চলে!

তাইতো অন্যকারো গাঁয়ে আচরটি লাগলে তোলপাড়- আর মুসলমান পরিচয় হলে কচুকাটা করলেও বিকারহীন! নিস্তব্ধ মৃত্যু সম নিরবাতায় সকল বোধ!!!!!
দোষ অন্য কারো নয়। দোষ আমাদেরই। কথিত মুসলিম নামধারীদের। মুসলিম কথিত ইমামদের! কথিত মুসলিম বিশ্বের!

নিজের ঘরই আগে ঠিক করতে হবে। কারো অনুকম্পার অপেক্ষায় না থেকে। জ্ঞানে, চেতনায়, বিশ্বাসে।

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৯

কুহুক বলেছেন: পরের দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য আপনাদের মন কাদে কিন্তু নিজের দেশে হিন্দু বৌদ্ধ সাওতাল্ রা যে আপনাদের অত্যাচারে দেশ ছেড়ে পালাছে টা নিয়ে তো কিছু বলেন না । আজ আমিরিকা সহ সারা দেশ থেকে মুসলিম দের বিতারিত করা হচ্ছে এর জন্য আমারাই দায়ী কারণ ইসলামিক দেশগুলতে আমরা অমুসলিমদের উপর বর্বর অত্যাচার করি

৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৬

স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা বলেছেন: ভাই কুহুক, আপনি আসলে ঠিকই বলেছেন।নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের কথা আসলে আমরা কমই ভাবি।আর নজরুলের সেই পুরনো কথাটা বোধহয় সত্যি—
যুগের ধর্ম এই
পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই!

মিয়ানমারের বৌদ্ধরাও সেটা ফিরে পাবে।আমরা যারা অন্যদের উপর নির্যাতন করছি, তারাও সেটা ফিরে পাব।আজ হোক, আর কাল হোক!

৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: লিখেছেন সুন্দর

৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২৩

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: 'খুক, খুক' হাসির ইমো কেন যে সামুতে নেই!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.