নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোল্লা- বিদ্বেষ: প্রাসঙ্গিকতার এপিঠ ওপিঠ

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৮

মোল্লা শব্দটি আপনারা অবজ্ঞার্থে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাই আপনাদের মনোযোগ কাড়তে আমি 'মোল্লা' শব্দটিই ব্যবহার করলাম।

মোল্লা বলতে আমরা বুঝি দাড়ি টুপি পরা এবং পাঞ্জাবী বা যোব্বাধারী ব্যক্তিদেরকে। এঁদেরকে আমরা সম্মান করে হুজুরও বলি। এছাড়াও হুজুর বলতে আমরা আবার আলেমও বুঝে থাকি। এখন মোল্লা, হুজুর এবং আলেমের পার্থক্যটা একটু দেখানো আবশ্যক।

দাড়ি আছে, টুপি মাথায় দেয় এবং পাঞ্জাবী ইত্যাদি পরে এমন ব্যক্তিই আপাত জ্ঞানে মোল্লা।

নামাজ এবং মিলাদ ইত্যাদি পড়ান এমন মোল্লা ব্যক্তি হচ্ছেন হুজুর।

আর শরিয়াহ ও ইসলামী ব্যাপারসমূহ সম্পর্কে সিদ্ধ যে ব্যক্তি, তিনি হলেন আলেম। আলেম শব্দের অর্থ জ্ঞানী। কতটা জ্ঞানী হলে যে একজন আলেম হওয়া যায়, তা কল্পনা করেও আপনি থৈ পাবেন না। ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এই পূর্ণ জীবন বিধানের খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে বিরাট বিরাট ব্যাপারগুলো সম্পর্কে উপযুক্ত জ্ঞান থাকলে তবেই তাঁকে আলেম বলা যায়। একজন আলেমকে শরীয়াহ সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ জাননেওয়ালা হতে হয়। আর শরীয়াহ হচ্ছে জ্ঞানের মহাসমুদ্র। নখ কাটা, থুতু ফেলা থেকে একেবারে রাজনীতি, সমাজনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান- মহাকাশ গবেষণা পর্যন্ত সব বিষয়েই আলোচনা আছে শরীয়াহতে। একজন আলেমকে এর সবই জানতে হয়, এর সব নিয়েই তাঁকে গবেষণা করতে হয়।

আমরা এই পার্থক্যটা বুঝতে ব্যর্থ হই, ফলে ঠিকমতো সুরা পড়তে জানে না, অথচ দাড়ি টুপি আছে বলেই তাকে আমরা আলেম বলে ধরে বসি। আর এই মূর্খগুলোর দোষ দিয়েই আমরা গোটা আলেম সমাজকে দোষ দিয়ে বসি!

হুজুরদের ওয়াজ নিয়ে অন্যদিন সমালোচনা করব, আজ শুধু হুজুরদের সম্পর্কেই বলি→

আপনি যখন দাড়ি টুপি পরছেন, যোব্বা পরছেন— হুজুর বা আলেম হচ্ছেন, তখন আপনি ইসলামের প্রতীক হয়ে যাচ্ছেন। আপনার আচরণ ইসলামকেই মানুষের সামনে প্রতিভাত করছে। এটা অনেক বিরাট দায়িত্ব ভাই! আপনার মধ্যে হিংসে থাকা চলবে না, মিথ্যাচার থাকা চলবে না, স্বার্থপরতা থাকা চলবে না এবং এমন একটি খারাপ দিকও থাকা চলবে না, যা মানুষের মনে ঘৃণার উদ্রেক করে। আপনাকে তখন আচরণে বিনয়ী হতে হবে, মনেপ্রাণে নেক হতে হবে, মিষ্টভাষী হতে হবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে আপনাকে এমন হতে হবে যে, মানুষ আপনাকে দেখামাত্রই শ্রদ্ধায় লুটিয়ে পড়বে, আপনাকে অন্তর থেকে ভক্তি করবে। তারা অন্তর থেকে বলবে— আহ, বড় নেক লোক, বড় আল্লাহওয়ালা লোক!
আপনাকে দেখে মানুষ শিখবে, মানুষ আপনার মত পবিত্র হতে চাইবে, আপনাকে অনুকরণ করবে। এই না হলে আপনার হুজুর হওয়ার সার্থকতা! আপনি ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেবেন আপনার চারপাশে ফতোয়া বা বক্তৃতার মাধ্যমে নয়, আপনার আমলের মাধ্যমে, আচরণের মাধ্যমে। ইসলাম যারা জানে না, তারা আপনাকে দেখেই ইসলামের মাহাত্ম্য অনুধাবন করবে। এটাই আপনার দায়িত্ব।

এখন, আমরা বুঝি যে, আপনিও মানুষ, আর দশটা মানুষের মত আপনারও কিছু স্বাভাবিক দোষ বা প্রবৃত্তি থাকবে। আপনাকে সেগুলো জয় করতে হবে, কারণ আপনি ইসলামকে লালন করছেন, ইসলামকে ধারণ করছেন আপনি। ইসলামকে যে অনুধাবন করেছে, যে প্রকৃত মু'মিন হয়েছে, সে তো এসব তুচ্ছ মানবীয় ত্রুটিকে জয় করবেই, নইলে সে কিসের ইসলামী শিক্ষা পেল? নইলে কী সে ইসলাম বুঝল?

ভাই, এর পরেও যদি আপনি বোঝেন যে, আপনার এই ত্রুটিগুলো আপনি কিছুতেই সংশোধন করতে পারছেন না, তবে আপনি খুলে ফেলুন টুপি পাঞ্জাবী, কামিয়ে ফেলুন দাড়ি কোন সমস্যা নেই, তবুও ইসলামের নাম এভাবে ডোবাতে আসবেন না।

এবার বিদ্বেষের দিকটা একটু বলি আমরা মুক্তমনারা হুজুর দেখলেই নাক সিটকাই, আমাদের চেতনায় চুলকানি খোঁচা দেয়, কেন ভাই?
হুজুর মানেই কি পাকিস্তানী?
হুজুর মানেই কি রাজাকার?
হুজুর মানেই কি ভণ্ড?
কোথায় পেয়েছেন এসব ফাজলামি চেতনা?

পুরুত ঠাকুর দেখলে তো ঠিকই ভক্তি করেন, পাদ্রি ভিক্ষু দেখলে তো উদার-বুক চিতিয়ে এগিয়ে যান কথা বলার জন্য, তবে হুজুরে কেন এত য়্যালার্জি?

কোন হুজুরটা আপনার মত ফ্ল্যাটে মুক্তচর্চার নামে মেয়ে নিয়ে ফূর্তি করছে?
কোন হুজুরটা একজন সাধারণ যুবকের মত ধর্ষণ করতে গিয়েছে কোন দিন?

[হুজুরদের কেলেঙ্কারী এবং দোষসমূহ নিয়েও আমি সমালোচনা করেছি অন্যত্র। পরে দেব।]

আপনার স্ক্যান্ডাল বেরুলে সমস্যা হয় না, কিন্তু একটা হুজুরের scandal বেরুলে আর আপনার মুখ থামে না! বড়ই হাস্যকর!
কয়েকদিন আগে ভারতের পুরোহিত না কী বাবা যেন যৌনতার দায়ে ধরা পড়ল সেটা নিয়ে তো কেউ কিছু বললেন না! আরো সম্প্রতি ভ্যাটিকানসিটির পোপ গির্জার মধ্যে যে Nunদের নিয়ে যৌনলীলার আসর বসালো তখন তো আর আপনারা ঘেন্না প্রকাশ করলেন না, ভণ্ড বলে নিন্দা করলেন না! কেবল হুজুরদের বেলায়ই কেন আপনাদের এই রেষাত্মক মানসিকতা?

আমাদের নাটক সিনেমায় হুজুর মানেই কূট চরিত্র, হুজুর মানেই ভিলেন। পত্রিকায় নিউজ ছাপে অমুক জেলার অমুক এলাকায় ফতোয়ার শিকার হয়েছে এক নারী!
কেন রে? যত্তসব ফাজিলের দল!
জুতাপেটা করা উচিত এগুলোকে। গ্রাম সম্পর্কে, ভিলেইজ পলিটিক্স সম্পর্কে এসব রিপোর্টার আর নাটক সিনেমা নির্মাতাদের হয় কোন ধারণাই নেই, নুতবা তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এই কাজগুলো করে।

আপনি গ্রামে থাকেন?
গ্রামে গিয়েছেন কখনও?
গ্রামের সালিশি দেখেছেন কখনও?
বলুন তো, বিচারটা কে বা কারা করে? মসজিদের হুজুর না গ্রামের মোড়ল?

মুক্তমনা সাহেব, আপনি তবে কেন অপবাদ দিচ্ছেন এভাবে অকারণে?
কোথায় পেয়েছেন এই ফাজলামি?

গ্রামের হুজুরদের অবস্থা জানেন তো?

হুজুরের কাজই হল নামাজ, মসজিদ, কেতাব এবং ঘর। হুজুর কখনও চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে পারে না, কারো সাথে ঠাট্টা মশকরা করতে পারে না, রাস্তাঘাটে অকারণে ঘুরঘুর করতে পারে না; বলতে গেলে একধরনের বন্দী জীবনই যাপন করতে হয় তাকে।
মোল্লা একটু বেশি ফটফট করলেই তার চাকরি যায়। সমাজ মোল্লাকে চালায়, মোল্লার কথায় কখনও সমাজ চলে না। সমাজই মোল্লাকে একঘরে আলাদা করে রেখেছে।

হ্যাঁ, ফতোয়া। ফতোয়া হুজুররাই দেয়। এবং হুজুরকে সেই ফতোয়াই দিতে হয়, যে ফতোয়া ভিলেজ পলিটিক্স অনুযায়ী মোড়ল দিতে বলে। মোড়লের স্বার্থ রক্ষা করে মোড়লের চাল অনুযায়ীই হুজুরকে ফতোয়া বানাতে হয়। নইলে হুজুরের চাকরি নট। সমাজে বাস করার উপায় থাকবে না।

ব্যাপারগুলো কি আপনারা এবার একটু নিরপেক্ষ হয়ে ভেবে দেখবেন?
আরো অনেক কিছুই বলার ছিল তবে জায়গা শেষ।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

আমিনুর রহমান বলেছেন:




চমৎকার একটা বিষয় উপস্থাপন করেছেন। ২/১ জন কাঠমোল্লা'র কারনে সকল ধার্মিক মানুষদের নিয়ে কুতুক্তি করা হয় এই আমাদের দেশে।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: সেটাই আফসোস

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো পোস্ট +++++++++

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৫৫

কলাবাগান১ বলেছেন: আমাদের দরকার আলেম যারা ছিলেন মানবজাতির কল্যানে কাজ করতেন। খলিফা হারুন-উর-রশীদের সময়কার... বিজ্ঞানের সকল শাখায় তাদের অবদান আজকের বিজ্ঞানের ভিত্তি...... আগের কালে পুরোহিতরা ছিলেন বিজ্ঞানীর মত...... গ্রেগর মেন্ডেল ছিলেন যাজক কিন্তু তার আবিস্কারের ফসল আজকের জেনেটিস্ক/মেডিসিন বিদ্যা

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ঠিক বলেছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.