নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !
তোমরা আজ মোট ক'জনে আত্মহত্যা করবে ??
কেন করবে ? রেজাল্ট খারাপ হয়েছে তাই ? A+ পাওনি তাই ? ফেইল করেছ তাই ??
যারা পাশ করবে, আশানুরূপ ফলাফল করতে পারবে তাদের নিয়ে আমার চিন্তা নেই, আমার সকল চিন্তা, উদ্বিগ্নতা আজ তাদের নিয়ে, তোমরা যারা ঊনিশ বিশ হলে আত্মহত্যা করে বসবে বলে ঠিক করেছ, তোমার লজ্জিত মুখ কাউকে দেখাবে না বলে ঠিক করেছ । আজ আমি পাশ নয়, ফেইলের পক্ষে ।
তোমরা এটি নিশ্চয়ই জানো, এডিসন বলেছিলেন, "মাত্র পরীক্ষার কয়েকটি খাতাই আমার ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে না ।"
তুমি A+ পাওনি তো কী হয়েছে ? A+ পেলেই বুঝি তুমি কোনো ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে যাবে ?
খেয়াল করে দেখ, কয়টা A+ পাওয়া ছেলে ভার্সিটিতে চান্স পায় ? হাজার হাজার এ প্লাস, অথচ ভর্তি পরীক্ষায় বেশি টেকে A গ্রেড পাওয়া ছেলেমেয়ে । এটাই বাস্তবতা । A+ এমন কোন মোক্ষ বস্তু নয় । ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে তোতা পাখির মত পৃষ্ঠাকে পৃষ্ঠা ভর্তি মুখস্ত কপি পেইস্ট করা বিদ্যা কাজে আসে না, ওখানে সবচেয়ে বেশি যেটি জরুরি, তা হল আই কিউ, উপস্থিত বুদ্ধি । অতএব, এইসব লোক দেখানো A+ নিয়ে মাথা ঘামানোর কোন দরকার নেই । আরেকটি বড় যুদ্ধের জন্য নিজেকে প্রস্তুত কর ।
এবার যারা ফেইল করেছ তাদের বলি, তুমি নিজে ভালো করেই জানো যে তুমি কেমন পরীক্ষা দিয়েছ । যদি তোমার পরীক্ষা খারাপ হয়, তবে তো আগে থেকেই তোমার মনে একটা ধারণা তৈরি হয়ে থাকবে রেজাল্ট নিয়ে । তো দুশ্চিন্তা কিসের ? পরীক্ষা ভালো দিইনি অতএব রেজাল্টও ভালো হয়নি । খুবই সহজ ব্যাপার ।
মুখ দেখানো নিয়ে ভয় পাচ্ছ ? কেন লজ্জা কী ? তুমি তো আর এমন কোন 'শেরে বাংলা' টাইপ ছাত্র হিসেবে এলাকায় পরিচিত না যে সবাই তোমার কাছ থেকে ফার্স্ট ক্লাশ ফার্স্ট প্রত্যাশা করে তাকিয়ে আছে । আরে গুলি মারো ওসবে । তোমার পরীক্ষা তুমি দিয়েছ, নিজের খুশিতেই দিয়েছ । যেমন দিয়েছ তেমনই রেজাল্ট হয়েছে । লা পরওয়া !
এখন যদি মনে কর যে, না, ভুল হয়েছে, চেষ্টা করলেই আরো ভালো করা যেত, আরো মন দিয়ে পড়া উচিত্ ছিল, তো ভালো কথা, এবার আর ভুল করো না, এই অনুশোচনাকে কাজে লাগাও । এমনভাবে এবার কোমড় বেঁধে পড়ো যে, আগামি বার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে পারো ।
আরে ধুর, তুমি এক বছর ফেইল করেছ বলে তোমার পরিবার পথে বসবে না । তোমার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি কিচ্ছু । সার্টিফিকেইট দিয়ে পেটে ভাত হয় না, পেটে ভাত হয় কর্মে । আমরা আমাদের জীবনে দেখেছি, যারা আমরা ফার্স্ট বেঞ্চের স্ট্যুডন্ট ছিলাম, যাদের রোল ছিল এক থেকে পাঁচের মধ্যে, যারা আমরা লেটার পেযে স্ট্যান্ড করে বিরাট সার্টিফিকেইট পেয়েছি, তারা আমরা উত্সাহে উত্সাহে আরো পড়েছি, আরো সার্টিফিকেটের পেছন ছুটেছি । আর যখন খুব সফল হয় শেষে একটা আট হাজার টাকার কি তের হাজার টাকার সরকারি বা বেসরকারি কেরাণীর চাকরি জুটিয়ে গৌরবে 'ঔ শিট' বলে সব কিছুকে অবজ্ঞা করে বুক ফুলিয়ে রাস্তায় হাঁটছি, তখন আমাদেরই ক্লাশের সবচেয়ে মুর্খ স্ট্যুডন্ট কামরুল মার্সিডিজ গাড়ি হাঁকিয়ে রাস্তা কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে । বেচারা আমাদের মত বইয়ের পোকা না থেকে বই ছুড়ে ফেলে কাজে নেমে পড়েছে । টাকার পেছনে ছুটে মুঠো মুঠো টাকা কামিয়েছে । আমার বেতনের স্কেল সর্বোচ্চ ঊনচল্লিশ হাজার পাঁচশো হবে, আর ও এখনই মাসে ষাট হাজার টাকা দেয় শুধু কর্মচারীর বেতন !
তাহলে কে সফল ? কে প্রকৃত ট্যালেন্টেড ? কে জীবন বাস্তবতায় যোগ্য ? আমি না কামরুল ?
পাশ ফেইল কিছুই নয় । জীবনটা আরো বড়ো কিছু । আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু, আরো অর্থপূর্ণ কিছু । এটিই একমাত্র উপায় নয় যা দিয়ে তুমি তোমার পরিবারকে সুখী করতে পারো । পরিবারকে খুশি করার আরো হাজার উপায় আছে । তুমি যে উপায়ে দক্ষ সেটিই বেছে নাও । তুমি আত্মহত্যা করলে যে পরিবার তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে তোমাকে আশার আলো করে বেঁচে আছে, তারা শেষ সম্বলটুকুও হারাবে । অতএব, জীবন থেকে পালিয়ে নয়, যোগ্য সময়ে যোগ্য পদক্ষেপটি নিয়েই জীবনকে অর্থবহ করে তোল, সার্থক করে তোল । প্রত্যেক মানুষই তার সুপ্ত প্রতিভায় অসাধারণ । আমরা প্রত্যেকেই অনন্য । জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মানেই নিরন্তর সম্ভাবনা । যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ ।
১৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:১৬
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: আপনারাই ওসব হতাশ ছাত্রদের কাছে ভরসার প্রতীক । ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য । সাথেই থাকুন সবসময় ।
২| ১৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:২৯
*অর্জুন* বলেছেন: ভাল লাগলো।
৩| ১৬ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৫
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ব্লগ কর্তৃপক্ষ কি এই লেখাটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে না ?
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:১১
অরণ্যতা বলেছেন: ক্লাস সিক্সে সরকারী স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে টিকি নাই কিন্তু ঠিকই সরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ, এমবিএ শেষ করেছি এবং ভাল রেজাল্ট করেছি।
আমার এসএসসি,এইচএসসি রেজাল্ট একটাও ৩.৮০ এর উপরে যায় নাই।
এইচএসসি পাশ করার পরে অনেকেই বলেছিল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আশা ছেড়ে দিতে কিন্তু আমি শুনেছি আমার মনের কথা।
এখনো অনেক বাকী আছে।
নিজের ব্যাপারে এভাবে বলতে নাই তাও বললাম ছোট ভাই-বোনদেরকে সাহস দেবার জন্যে।