নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !
"কবি, আমি তোমারে ছাড়িয়া গেলাম" —সে ছিল অনেক আগের কথা;
এরপর, অনেক গড়ালো যমুনার জল, অনেক জোয়ার-ভাঁটা !
নজীরের বাড়ির ভরাট উঠোন দাবিয়া গর্ত প্রায়,
চিতিয়ে থাকা হৃষিকেশ মাঝির পাঁজর শীর্ণকায় !
এখন আর কোনো মেঠোপথ নেই, নেই কোনো চৌচালা,
বাবুরা আসিয়া কাড়িয়া নিয়াছে পুতুলের পাঠশালা !
আমারও বাপু কম যায়নি চুলোব্দি গেছে পেকে,
ধনযৌবন সব নিলো হরি স্মৃতির পসারী রেখে !
চোখে ছানি পড়েছে তবু পথের ঠাহর আছে,
কবি, তোমার দখিনের দাওয়া কোথায় হারিয়ে গেছে ?
কোথায় তোমার পাঠের আসর, কোথায় দরাজ গলা ?
ঝিয়ের বেশে তোমার উঠোনে এ কোন সুরবালা ?
কবি, হা গো, চিনেছ আমায়, ঠিক মতো দেখ চেয়ে—
বুড়িয়ে যাওয়া, কুঁজো খাওয়া পিঠে সেই ঠাকুরের মেয়ে !
কবি, তুমি তো আরো বুড়িয়েছ আমার চেয়েও বেশী,
শুয়ে কাতরাও লিকলিকে হাড় চিমসে মাংসপেশী !
আহা রে যৌবন, আহা রে স্মৃতি— কত উদ্দাম প্রেম;
তুমি নাচালে লাখো নর্তকী— রাখালি হইতে মেম !
আমিও দেমাকি, যাইনিকো কম, তোমারে পাল্লা দিয়ে
হাজারে কাঁদিয়ে মেদিনী মাসীর ছেলেরে করেছি বিয়ে !
তুমিও ঘুরেছ, আমিও ঘুরেছি দোনেই ঘুরিয়ে মুখ
রীষের তরাসে জ্বালিয়ে দিলেম এক জীবনের সুখ ।
ও কবি, কী হল ? ঠোঁট কাঁপে কিবা ? হাসিতে নাগিছ তুমি ?
ঠাকুরবাড়ির সেই মেয়েটি সত্যি সত্যি আমি ।
হেসো না, কবি, বুড়িয়ে গেছি মরণের নাই বাকি,
জনমের সাধ ছিলো মোর মনে শেষবার যেন দেখি—
সেই কবিবর, সেই সে কবিতা, সেই সে দরাজ গলা,
সেই সে চাহনি, সেই শিহরণ জোয়ান সন্ধ্যাবেলা ।
একান্ন বছর করেছি সোংসার পরপুরুষের ঘরে,
নিজের পুরুষ পেলে না কিছুই অবহেলা অনাদরে !
পেটে ধরেছিনু পরের ছাওয়াল নিজের হয়নি তারা,
তোমারে ঠকিয়ে নিজেই ঠকেছি মনের মানুষ ছাড়া !
আজ বুড়ো বেলা বিতয়ে জীবন স্মৃতি হাতড়ে ফিরি,
পেট ভরে শুধু পানি গিলে খাই শূন্য ভাতের হাড়ি !
এখন আর কবি, যৌবন নেই
নেই ভোমরের দল,
তোমারও তো আজ কোন নাম নাই— ভক্তের মণ্ডল !
কবি গো, আমি সত্যি এসেছি একবার দেখ চেয়ে—
তোমার কবিতার প্রেয়সী অবন্তি ঠাকুরবাড়ির মেয়ে ।
©somewhere in net ltd.