নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !
প্রথম খণ্ড
(পর্দা ও সংযম পর্ব)
সমকামিতা কী জিনিস তা আমরা সবাই বুঝি। আশা করি ব্যাখ্যা করতে হবে না।
পুরুষে পুরুষে সমকামিতা আর নারীতে নারীতে সমকামিতা দুটোই মানব সমাজে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে সেই সুদূর অতীত হতেই, বিশেষ করে যখন নারী পুরুষে মধ্যে একটি সংস্কারগত দেয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে।
আমি বললে তো অনেকেই মানতে চাইবেন না, বিরোধিতা আর কটাক্ষ করতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, তাই এই সংস্কারের দেয়াল প্রসঙ্গে বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব আবুল হাসানাত এর মন্তব্যটি তুলে দিচ্ছি এখানে—
"যে সমস্ত জাতির মধ্যে নারীর জন্য অবরোধ প্রথা প্রচলিত আছে, সেই সমস্ত জাতির পুরুষেরা নারীর দিকে সহজ সরল দৃষ্টি দিতে পারে না বলিয়াই তাহাদের বক্র দৃষ্টির অবিচ্ছেদ্য সহচর কাম-লালসা। কিন্তু যে জাতির মধ্যে নারীর অবরোধ প্রথা নেই সে জাতির পুরুষেরা অনেকটা নিষ্কাম ও নির্লিপ্তভাবে শুধু পরস্ত্রীর মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত নয়, তাহাদের সহিত বাক্যলাপ করিতে এবং তাহাদের গাত্রস্পর্শও করিতে পারে।"
আশা করব, সম্পূর্ণ বক্তব্য না শুনেই কেউ লাফিয়ে উঠবেন না। পত্রিকায় লেখার বেলায় এই ঝামেলাটা থাকে না। এখানে লিখতে গেলেই অসংখ্য গবেষক আর আবেগী পাঠকের আক্রমণের শিকার হতে হয়। যাঁরা আমার লেখা নিয়মিত পড়ে আসছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই মানেন যে, আমি আবোল তাবোল লিখি না।
যাইহোক, আবুল হাসানাতের মতামত প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য আগে সম্পূর্ণ করি। আমি জানি, উক্ত উদ্ধৃতি পাঠ করে অনেকেই নাখোশ হবেন এজন্য যে, ওখানে পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে বলা হয়েছে।
অনেকে যুক্তি নিয়ে আসবেন এই বলে যে, সবচেয়ে লাগামহীন অবরোধহীন উন্নত মহাদেশ আমেরিকাতে প্রতি মিনিটে ছয় জন ধর্ষিত হয়!
জ্বী ভাই, এসব আমার জানা আছে। এটাও বিবেচনায় আছে যে, সেখানকার আইন, সেখানকার অপরাধ সংক্রান্ত সংজ্ঞার সঙ্গে আমাদের এখানকার হিসেব কিতেবে বেশ ফারাক। সে ব্যাখ্যা আলাপ করতে গেলে আসল বিষয়টির আলোচনা থেকে যাবে অনেক দূর। আমি সহজ কথায় মূল ব্যাপারটা বলি, নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানুষের কৌতুহল চিরন্তন। ধুমপানের বদলে আজ যদি দুগ্ধপানকে নিষিদ্ধ আর ধুমপানকে স্বাস্থ্যকর ঘোষণা করা হত, তবে কী হত পরিস্থিতি— ভেবে দেখুন তো!
দেখা যেত, বাবা মা বিড়ি ধরিয়ে বাচ্চাদের পেছনে ছুটছে আর অনুনয় করে বলছে, আর একটা টান বাবা, আর একটা টান দে।
বাচ্চা ঘাড় বাঁকা করে দৌড়াচ্ছে আর বলছে, আর না। আর খাব না। বুক জ্বলে।
আরও দেখা যেত, বাচ্চারা অলিতে গলিতে লুকিয়ে লুকিয়ে দুধ কিনে পান করছে।
এটাই মানব প্রবৃত্তির রেওয়াজ।
পর্দা ইসলামে বিধান করা হয়েছে শুধু নারীকে কাপড়ের পুটুলিতে আড়াল করে রাখার জন্য নয়, নারীকে কেবল চৌকাঠের গণ্ডিতে লুকিয়ে রাখার জন্য নয়। পর্দার বিধান হয়েছে আমাদের কুপ্রবৃত্তিকে দমন করার জন্য আপন আপন চেষ্টায়।
নিয়ম হল, নারী এমনভাবে পরপুরুষের সামনে চলাফেরা করবে না বা অঙ্গ প্রদর্শন করবে না যাতে সে পুরুষটির মধ্যে কোন খারাপ চিন্তা জাগ্রত হবার সুযোগ পায়।
আবার পুরুষও কোন নারীর প্রতি এমন কোন দৃষ্টি বা চিন্তা পোষণ করতে পারবে না যা অনৈতিক, যা পাপের ইঙ্গিতবহ।
আপনি খুব বিরাট মুমিন, রাস্তা দিয়ে একটি বেলেল্লা পোশাকের মেয়ে হেঁটে গেলে আপনি প্রথমে চোখ বড়ো বড়ো করে আগা মাথা তিনবার দেখবেন, আর তারপর কিছু করতে না পারার প্রতিহিংসায় চেঁচিয়ে উঠবেন বেহায়া বেশরম মেয়েমানুষ বলে !
এই শিক্ষা তো ইসলাম আপনাকে দেয়নি। আপনি আপনার কলবের, আপনার দৃষ্টির পবিত্রতা রক্ষা করছেন কতটুকু?
আপনার ঈমান ঠিক কতটুকু?
আল্লাহ আপনাকে অসংখ্য পাপের উপকরণ, এবং পাপ করার স্বাধীনতা দিয়ে পাঠিয়েছেন পৃথিবীতে। এটাই আপনার ঈমানের নিরন্তর পরীক্ষা। আপনার চারপাশে হরেক রকমের অসভ্যতা। আপনি চাইলেই সে সব পাপে মত্ত হতে পারেন। আর এসবের মধ্যে বাস করেও যদি নিজের ঈমান আর নৈতিকতাকে ঠিক রাখতে পারেন তবেই আপনি প্রকৃত মুমিন।
সংযমের আরেকটি ছোট্ট উদাহরণ দেই, বন্দী তাতারীর কাছে সুদক্ষা রূপবতী নর্তকী বুসায়নাকে মনোরঞ্জনের মাধ্যমে তাতারীর মুখে হাসি ফোটাবার নিমিত্তে পাঠানো হলে বুসায়না সর্বাত্মক চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে নগ্ন হয়ে তাকে আকৃষ্ট করতে চায়।
তাতারী তখন নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলে, "মানবীর যৌবনই কি যথেষ্ট ? তাহলে জননী-রূপে সে কিরূপে মর্যাদা পায়?
ও কি! তোমার সদরিয়া খুলে ফেলছ কেন?
জানো, জননীর খোলা স্তন আমি বহুদিন পান করেছি।
বুঝলাম, তোমার তূণে আদিম কয়েকটা শর আছে মাত্র।"
তাতারী আরো বলে, "অঙ্গসন্ধিক্ষণে আনন্দ-আহরণ আমার কাছে অজ্ঞাত কিছু নয়— জন্তুদের কাছেও না। আমি মানুষ। আমার মন প্রয়োজন হয়।" (ক্রীতদাসের হাসি)
আসলে ঈমান এটাই।
করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পাপকে প্রত্যাখ্যান করতে পারার নামই নৈতিকতা। আমার মতো এখানে লেকচার দিলেই নৈতিকতার পরিচয় হয় না।
নিন্দুকদের ঠেকাতে আমাকে এতখানি অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে হল। যাইহোক, আলোচনা কেবল শুরু করলাম। আজ নাহয় এই পর্দা পর্যন্তই থাক। আসল ব্যাপারটা দ্বিতীয় খণ্ডে আলোচনা করি বরং।
পর্দা নিয়েই যখন লেখা এগুল, তখন পর্দা প্রসঙ্গে আরো কয়েকটি কথা বলি—
১.
পর্দার মূল রহস্য ও উদ্দেশ্য আমি মূল আলোচনায়ই বলে দিয়েছি। যাঁরা পর্দা করতে চান, এবং পর্দা মানেন, আগে নিয়্যত ঠিক করে নিন, মন ঠিক করে নিন। কেবল বোরখা পরলেই কিন্তু মুমিন পরহেজগার হওয়া যায় না।
২.
পোশাক হিসেবে বোরখার উপকারিতার শেষ নেই। আপনি বোরখায় শরীর ঢেকে হাঁটলে বখাটেরা আপনার প্রতি আগ্রহী হবে না।
যেহেতু, আপনার সৌন্দর্য দেখা যাচ্ছে না, সেহেতু হিন্দি সিনেমার মতো কোন ছেলে লাভ য়্যাট ফার্স্ট সাইট এ আক্রান্ত হয়ে আপনার পিছু লাগবে না।
বোরখা আপনার সানস্ক্রিনের কাজ করবে, রাস্তার ধুলাবালি থেকে আপনার চেহারাকে রক্ষা করবে।
৩.
আমি কিন্তু বোরখা বিক্রেতা নই। গোঁড়া ইসলামিস্টও নই। আপনি বোরখা পরবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার।
৪.
যাঁরা বোরখা পরতে চান না, তাদেরকে আমি পাতলা ফিনফিনে কাপড়ের বদলে জিন্স আর ফতুয়া পরতে পরামর্শ দেই।
কিছু ইসলামিস্ট মেয়েদের জিন্স পরা নিয়ে রসালো কটুক্তি করে। এদের এই কটুক্তি ভিত্তিহীন। অন্য কাপড়ের তুলনায় জিন্স স্মার্ট য়্যান্ড সেইফ।
ব্যাখ্যা দেবার স্পেইস নেই।
৫.
দয়া করে কেউ কনসেপ্ট চুরি করবেন না। লেখাটা আমাকে শেষ করতে দিন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫২
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: একটি ছবি সংযুক্ত করেছিলাম । সেটি এখন প্রদর্শিত হচ্ছে না ! :-(