![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমার কাছে পৌছতে পারিনি পথে হয়েছে দেরী। তবু আজো স্বপ্ন দেখি - বন্ধ দড়জায় কড়া নাড়ি ।। আমি এক অতি সাধারণ মানুষ, আড়ালে থাকতেই পছন্দ করি ...
১ম পর্ব
"চাঁদের পাহাড়"
পাহাড়ের আঁকাবাকা রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলছি। মাঝে মাঝে রাস্তা মেঘে ঢেকে যাচ্ছিল। এক সময় তনুমা’য় ঢুকলাম। নিরিবিলি রাস্তায় তেমন মানূষজন চোখে পড়ল না। আমরা উঠলাম কচি ভাইয়ের বাসায়। আজ রাত থাকব।
সন্ধায় আমরা ছেলেরা সবাই বের হলাম শহর দেখতে। কচি ভাই আমাদের গাইড করছিলেন। তেমন কিছু নেই, ছোট শহরে সুযোগ সুবিধাও অল্প। তবে এই নীরবতা’র মাঝেও একধরনের আলাদা সৌন্দর্য্য আছে। এদিক সেদিক ঘুরে কচি ভাই আমাদের একটি রাস্তার মুখে নিয়ে আসলেন। রাস্তাটি ঢালু হয়ে নীচের শহর “তাহমা” চলে গেছে। রাস্তাটি এতটাই শার্প যে দক্ষ ড্রাইভার ছাড়া কেউ সেই রাস্তায় নামার কথা চিন্তাও করে না। আমরা এক জায়গায় থেমে রাস্তাটি দেখলাম। সৌদিরা কত সহজেই রাস্তা দিয়ে নেমে যাচ্ছে, ভয় বলে তাদের কিছু নেই।
বাসায় ফিরতেই মেয়েরা আবদার করল, তারাও ঘুরতে যাবে। জামান ভাই গাড়ী নিয়ে আবার বের হলেন। আমি সাঈদ রয়ে গেলাম। কিন্তু সময় কাটছে না। আমরা দু’জন বাসার নীচে নেমে আসলাম। সামনেই একটি খাবার দোকান। সেখানে আরশাদ নামে এক বাংলাদেশি ড্রাইভারের সাথে পরিচয় হল। চিটাগাং বাড়ী। সাঈদও সেখানকার ছেলে। শুরু হল তাদের ভাষায় কথোপোকথন। কিছু বুঝি, কিছু বুঝি না- বাংলা ভাষা এমন দূর্বোধ্য হতে পারে? আরশাদ ভাইয়ের হাইলাক্স গাড়ী। তিনি হঠাৎই বললেন, চলেন একজায়গায় ঘুরে আসি।
আমাদের সামনের রাস্তার ওপাশেই বিশাল এক পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে। আরশাদ ভাই আমাদেরকে তার চূড়ায় নিয়ে যাবেন। সেই রাস্তাও নাকি “তাহমা’র” রাস্তার মতোই ভয়ংকর। এমনিতেই সাঈদের ভয়ডর কম, সৌদি এসে আমারও ভয় কিছুটা কমেছে। দু’জনেই এককথায় রাজী হয়ে গেলাম। সে রাতে পূর্নিমা ছিল কিনা, জানিনা। তবে চারপাশ চাঁদের আলোয় প্লাবিত। ৪৫ ডিগ্রি খাড়া রাস্তা ধরে পাহাড়ের চূড়ায় উঠলাম। ভয় আর ভালোলাগার মিশ্রণ সত্যিই অসাধারণ। পাহাড় চাঁদের আলোয় আলোকিত, চারপাশে কোন যান্ত্রিক আলো ছিল না।
উপর হতে নীচের তনুম শহরটি দেখা যাচ্ছিল। সাঈদ মনে হয় কিছুটা প্রেমী হয়ে উঠল। নাহ, শিমুকে এই সৌন্দর্য্য দেখাতেই হবে। আমিইবা বাদ যাই কেন? তাহলেতো শাকিলাকেও দেখাতে হয়। আমরা নীচে নেমে মেয়েদের খোঁজ করলাম, তারা তখন শহরের একমাত্র ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে শপিং করছে। জামান ভাইয়ের কাছ থেকে তাদেরকে রীতিমত হাইজ্যাক করে নিয়ে আসলাম। আবার সেই রাস্তা ধরে পাহাড়ে উঠলাম।তারা পাহাড়ের এই রূপ দেখে অভিভূত।শিমুকে তৃপ্ত করতে পেরে সাঈদের মুখেও তৃপ্তির হাসি।
শাকিলা ও শিমু জানাল, জামান ভাইয়ের সাথে ঘুরতে গিয়ে তারা বন্য গাধার পাল দেখে এসেছে। গাধাগুলো নাকি রাস্তার পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আমার আফসোস শুরু হয়ে গেল। আহা! এতো কাছ থেকে বন্য গাধার পালতো দেখা হলো না।নাজরানে একটা পাল দেখেছিলাম কিন্তু অনেক দূর থেকে। ড্রাইভার আরশাদ ভাই আমাদের সঙ্গ বেশ উপভোগ করতে শুরু করেছেন।বললেন, "চলেন তাহমা'র রাস্তায় নামি।" আমার গলা শুকিয়ে গেল,"পাগল নাকি? আমাদের মারতে চায়।"
কিন্তু আরশাদ ভাই জোড় দিয়ে জানালেন যে, তিনি ঐ পথে প্রায়ই আসা যাওয়া করেন।কৌতুহল আর নতুন অভিজ্ঞতা নেবার তাড়নার কাছে ভয় পরাজিত হল। শাকিলা ও শিমু সহ আমরা পাঁচজন সেই ভয়ংকর পথে নামতে শুরু করলাম।
এটা তাহমা'র রাস্তা নয়, কিন্তু এর চেয়েও ভয়ংকর।
রাস্তা খাড়াভাবে নীচে নেমে গেছে। গাড়ীর হেডলাইট আর চাঁদের আলো ছাড়া আর কোন আলো নেই। অল্প প্রশস্ত রাস্তা কিছুদূর পরপরই ভয়ংকর বাঁক নিয়েছে। এই রাস্তা আগে থেকে জানা না থাকলে গাড়ী নিশ্চিতভাবেই নীচের খাদে পড়ে যাবে।মাঝে মাঝে এত খাড়াভাবে নীচে নামছিলাম যে মনে হচ্ছিল পেট শূণ্য হয়ে গেছে। আরশাদ বেশ ভালোভাবেই ড্রাইভ করছিল। আরো অনেক গাড়ী ছিল। ছেলেরা দলবেধে এখানে সেখানে জড়ো হয়েছে।পাহাড়ের প্রসস্থ জায়গায় ছাউনি করে দেয়া আছে। সেখানে তারা রান্না বান্না করবে। আমরা অর্ধেক পথ এসে থেমে গেলাম। আরো নীচে নামতে সাহস করলাম না। আরশাদ ভাই রাস্তার পাশের এক প্রসস্থ জায়গায় থামলেন। নেমে অবাকই হলাম। এত আলো? চারিদিকে সাদা আলোর বিচ্ছুরণ। জ্যোৎস্নায় প্লাবিত আরবের পাহাড়। সবাই অনেকক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম।এটাই কি তবে বিভূতিভূষণের সেই "চাঁদের পাহাড়"?
"চাঁদের পাহাড়ে" বাস করত ভয়ংকর এক দানব যে রত্ন খনি পাহাড়া দিত। বাঙালি যুবক কিন্তু ঠিকই সেই রত্নখনির সন্ধান পায়। আরবের পাহড়ে কি আমরা সৌন্দর্যের খনি খুঁজে পাইনি?
ফেরার পথে ভাগ্যক্রমেই গাধাদের দেখা পেলাম। রাস্তার পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, জ্যোৎস্না খাচ্ছে। এক পাহাড় ভালোলাগা নিয়ে বাসায় ফিরলাম।
কচি ভাই ব্যাপক খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করেছেন। আমাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। খাবার পর মোশতাক ভাইয়ের রুমে গেলাম। ছুটিতে দেশে যাবেন, তাই অনেক শপিং করেছে। বিভিন্ন রকম আর ডিজাইনের জায়নামাজ আর সুগন্ধি। একটি একটি করে সব আমাদের দেখালেন। সবার শরীরে পারফিউম স্প্রে করলেন। গায়ে ৬/৭ রকম পারফিউমের ককটেল গন্ধ নিয়ে ঘুমুতে গেলাম।
(চলবে)
সামু’র গোলযোগে পোস্ট করতে দেরী হয়ে গেল।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬
মধুমিতা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। ১ম পর্বটি পড়েছেন?
Click This Link
২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৫
শাহরিয়ার নীল বলেছেন: ভালো লাগলো, সুযোগ পেলে যাবো
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬
শামীম সুজায়েত বলেছেন: সামুতে লেখাগুলো এত দ্রুত চলে যায় পরের পাতায়.............. স্বল্প সময়ে কোন লেখা পড়া হয়না ধৈর্য্য ধরে। দেখুন না, বেলা সাড়ে এগারোটায় দিলাম আমার প্রথম ধারবাহিক গল্পের প্রথম পর্ব মিনতি লতা।
এখন দেখি ২য় পাতা শেষে চলে গেছে।
লেখার লিঙ্ক : Click This Link
তবে সামুকে ধন্যবাদ যে ভাল লেখাগুলো বিশেষ নির্বাচন হিসেবে রাখায় থেকে যায় প্রথম পাতায়। পড়াও হয়।
ভ্রমণ কাহিনী সবসময় ভাল লাগে। সাবলীল ভাষায় লেখা বলে পড়েও মজা পেলাম। ভাল থাকবেন।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৮
মধুমিতা বলেছেন: ১ লাখের উপর ব্লগার। এমটা হবারই কথা। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭
তুষার কাব্য বলেছেন: অনেক কিছু ঘুরে দেখলাম।কবে যে আসব
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
মধুমিতা বলেছেন: ঘুরে দেখাতে পেরেছি তাহলে? পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪১
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: গায়ে ৬/৭ রকম পারফিউমের ককটেল গন্ধ নিয়ে ঘুমুতে গেলাম।
লেখা ভালো হয়েছে, ভয়ংকর ঐ রাস্তাটার ছবি দিলে আরও ভালো লাগতো, আপনার বর্ননা পড়ে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছিল। ভালো থাকবেন।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৮
মধুমিতা বলেছেন: রাতের বেলায় রাস্তাটির ভালো ছবি তুলতে পারিনি। ভবিষ্যতে সুযোগ হলে ছবি দেবার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০২
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমাদের এই সামু ব্লগে অন্যতম সেরা ভ্রমন কাহিনী লিখেন আপনি। প্রতিটি লেখা পড়ে মনে মিশ্র অনুভুতি হয়। এক মনে হয়, আমি নিজেই ঘুরে আসলাম, আর দ্বিতীয়ত আপনার লেখা পড়ে এত লোভ লাগে, মনে হয়, ইস! কবে যে যাব।
দারুন একটা পোষ্ট! প্লাস রইল মধুমিতা ভাই।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫
মধুমিতা বলেছেন: কি যে বলেন, লজ্জায় ফেলে দিলেন।
আমি খুব সাধারণভাবে লিখতে চেষ্টা করি বলেই বোধয় আপনাদের কাছে তা খুব আপন মনে হয়।
ভালো থাকবেন।
৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৩
মুহিব বলেছেন: ভাই কি আমাকে ভুলে গেলেন?
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০২
মধুমিতা বলেছেন: না ভাই। কেমন আছেন?
৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:৩৪
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: সৌদি গো রে আল্লাহ জায়গা দিচ্ছে! প্রান ভরে!
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:১২
মধুমিতা বলেছেন: হুম
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৩৫
খেয়া ঘাট বলেছেন: এতো সুন্দর বর্ণনা। যেকোনো ভ্রমণ কাহিনীই আমার পড়তে ভালো লাগে। কিন্তু এর সাথে যদি এমন নিটোল বর্ণনা তবে তো কথাই নেই।
মেয়েরা মনে হয় চাঁদে গেলেও শপিং স্টোর খুঁজে বের করে চাঁদের রুপ না দেখে শপিং নিয়েই ব্যস্ত থাকবে।