নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় মুক্তিযোদ্ধা

সায়েমুজজ্জামান

কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]

সায়েমুজজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশাসনে ঘি আর তেলের দাম এক হলে যা হয়!

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৬

গল্প
আজকে অনেক দিন পরে একটা গল্প বলবো। মূল গল্পটি লিখেছেন শেখ সাদী। পল্লীকবি জসীম উদ্দীন তার বাঙালির হাসির গল্প নামের বইতে এই গল্পটি নিজের মতো লিখেছেন। তিনি গল্পের শিরোণাম দিয়েছিলেন, ‘কে আগে শূলে যাইবে’। গল্পটি অনেকেরই জানা রয়েছে। এবার আমি আমার মতো গল্পটি বলছি।

পশ্চিমের দেশে একজন পীর বাস করতেন। তার কিছু মুরিদ বা শিষ্য ছিল। একসময় শিষ্যরা অভিযোগ করলেন, হুজুর এদেশে অনেক গরম। শুনেছি পূর্ব দিকের দেশে গরম কম। সেসব দেশে বসবাস আরামদায়ক। আমরা এরকম একটা দেশে বসবাস করতে চাই। পীর সাহেব তার মুরীদদের পীড়াপিড়িতে সবাইকে নিয়ে পূর্ব দিকে রওয়ানা হলেন। তবে এক জায়গায় কিছু দিন থাকার পর বিপত্তি দেখা যেতো। মুরীদরা বিভিন্ন অভিযোগ ও সমস্যার কথা তুলে ধরতেন। পীর সাহেব অগত্যা তাদের সাথে আবার পূর্ব দিকে পথ ধরতেন। একসময় তারা একটি দেশে উপস্থিত হলেন। সবুজ শ্যামল দেশ। গরম কম। দিনের পর দিন চলে যায়। মুরীদরা কোন সমস্যা উত্থাপন করেন না। পীর সাহেব অবাক হলেন। তিনি কারণ অনুসন্ধান করতে লাগলেন। একসময় জানতে পারলেন, এদেশে তেলের চেয়ে ঘিয়ের দাম কম। এ কারণে তার শিষ্যরা তেলের বদলে ঘি খাচ্ছেন। এতে সবাই এত মজা পেয়েছেন যে, সবকিছু ভুলে গেছেন। তেল আর ঘিয়ের দাম এক শুনে পীর সাহেব আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন। তার জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝলেন, যে দেশে তেল আর ঘিয়ের দাম একই হয়, সেদেশে কোন বিচার থাকার কথা নয়। এটা জুলুম আর নির্যাতনের দেশ হবে। প্রাপ্য ব্যক্তির সম্মান থাকেনা। শিক্ষিত ও মুর্খদের একই মূল্য। তার ওপর এদেশে তেলের চেয়ে ঘিয়ের দাম কম। এটা আরো বেশি মারাত্মক ব্যাপার। তিনি দ্রুত শিষ্যদের পাততাড়ি গুটাতে বললেন। দ্রুত এদেশ ছাড়তে হবে। নয়তো সামনে সমূহ বিপদের সম্মুখিন হতে হবে।

পীর সাহেব লক্ষ্য করলেন, তার সকল শিষ্য তার সাথে ওই দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। তবে একজনের মধ্যে কোন ভাবান্তর নেই। পীর সাহেব তাকে কারণ জিজ্ঞাসা করলে শিষ্য কাচুমাচু হয়ে জানালেন, তিনি এদেশে থেকে যেতে চান। কারণ তার শরীরে মাংস নেই। সব হাড্ডি। তিনি কম দামে ঘি খেয়ে স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে চান। পীর সাহেব যতই তাকে বুঝালেন, শিষ্য তার সিদ্ধান্তে আরো বেশি শক্ত হন। অবেশেষে পীর সাহেব তার অন্য শীষ্যদের নিয়ে ওই দেশ ছাড়েলেন। রয়ে গেলেন তার ভগ্নস্বাস্থ্যের অধিকারী প্রিয় শিষ্য।

কয়েক বছর পর পীর সাহেব নিজের ওই শিষ্যের জন্য মায়া অনুভব করলেন। ভাবলেন, নিজে গিয়ে শিষ্যকে দেখে আসবেন। তাছাড়া তেলের চেয়ে ঘিয়ের দাম যেদেশে কম সেখানে বিপদ আসবেই। পীর সাহেব শীষ্যকে দেখতে ওই দেশে চলে গেলেন। এসে যা দেখলেন, তার জন্য তিনি আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। দেখেলেন, তার শিষ্যকে বেঁধে রাখা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর শূলে চড়ানো হবে।

পীর সাহেব তার শিষ্যকে শূলে চড়ানোর কারণ জানতে পারলেন। ওই দেশে এবছর হঠাৎ ফসল কম হয়। রাজা গণকদের ডাকলেন। কারণ অনুসন্ধান করতে বললেন। গণকরা চন্দ্র সূর্য তারার অবস্থান গণনা করে দেখলেন, এক ব্যক্তি বেশি খাবার খেয়ে ফেলেছেন। খেয়ে দেয়ে বেশি মোটাসোটা হয়ে গেছেন। তার কারণে প্রকৃতি রুষ্ট হয়েছে। শুনে রাজা রেগে গেলেন। বললেন, তাকে খুঁজে বের করো। এবার রাজ্যজুড়ে সবচেয়ে মোটাসোটা ব্যক্তির অনুসন্ধান চলতে লাগলো। ওদিকে পীর সাহেবের শিষ্য কম দামে ঘি পেয়ে খেয়ে খেয়ে এমন স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েছেন যে, তার নিজের দিকে খেয়াল নেই। মোটাসোটা হওয়াও যে অপরাধ হতে পারে সেটা তার আগে জানা ছিলনা। একপর্যায়ে রাজার লোক এসে তাকে ধরে বেঁধে রাজার কাছে নিয়ে গেলেন। রাজা তাকে শূলে চড়িয়ে হত্যা করার আদেশ দিলেন। শিষ্য অবাক হয়ে তার অপরাধ জানতে চান। রাজার স্রেফ একটাই জবাব। তিনি বেশি খেয়ে ফেলেছেন। এতে প্রকৃতি রুষ্ট হয়েছে। ফসল কমে গেছে। তাকে হত্যা না করলে প্রকৃতিকে সন্তষ্ট করা যাবেনা। একজনের জন্য সকল প্রজার ক্ষতি তিনি করতে পারবেন না।

পীর সাহেব তার শিষ্যের কাছে গেলেন। তাকে দেখেই শিষ্য বলে উঠলেন, হুজুর আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে বাঁচান। পীর সাহেব বললেন, এবার আমার কথা শুনবে তো! শীষ্য কাকুতি মিনতি করতে থাকেন। পীর সাহেব বুদ্ধি দেন, বিপদে ভেঙ্গে গেলে চলবেনা। বরং বিপদটা কৌশলে মোকাবেলা করতে হবে। তিনি শিষ্যকে কানে কানে কিছু বুদ্ধি দেন। শিষ্য শুনে হো হো করে হাসতে থাকে।

রাজার কাছে উজির গেছেন। রাজা জিজ্ঞাসা করছেন, যাকে শূলে চড়োনো হবে তার কী কোনো শেষ ইচ্ছা রয়েছে? উজির জবাব দেন, তার আবার কী ইচ্ছা! সে কথা বলেনা। শুধু হো হো করে হেসে যাচ্ছে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলেছে, এটা তোমাদের বলা যাবেনা। একমাত্র রাজা জিজ্ঞাসা করলে তাকে বলা হবে। রাজা কৌতুহলী হলেন। তিনি নিজে ওই শিষ্যের কাছে গেলেন। শিষ্য তাকে বললেন, প্রকৃতিকে খুশী করার জন্য শূলে চড়ানো হলে সে পুনরায় এদেশে রাজা হয়ে জন্মাবে। রাজা বললেন, তাই নাকি! উপস্থিত পীর সাহেব বললেন, সে সঠিক বলছে। তার বদলে আমাকে শূলে চড়ান। রাজার উজির ছিলেন অসুস্থ। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছেন, তিনি বেশি দিন বাঁচবেন না। তার রাজা হওয়ার খুব শখ ছিল। তিনি বললেন, তাহলে আমি শূলে চড়বো। আমি রাজা হাবো। এবার উজির, শিষ্য ও পীর সাহেব তিনজনেই আমি আমি করতে থাকেন। রাজা দেখলেন, তার বয়সও শেষ। তিনি পরের জন্মেও এদেশের রাজা হতে চান। এ সুযোগ ছাড়বেন কেন! বললেন, খামোস! তোদের কারো কথা চলবেনা। শূলে আমি চড়বো।

পীর সাহেব ও শিষ্য পালাচ্ছেন। পীর সাহেব তার শিষ্যকে জিজ্ঞাসা করলেন, কী শিক্ষাটা পেলে? শিষ্য জবাবে দিলেন, হুজুর আগে পালাই। তারপর কথা হবে। যে দেশে তেল আর ঘিয়ের দাম সমান সেদেশে ন্যায় বিচার নেই।

বাস্তবতা
গল্পটা শুনে যারা মজা পেয়েছেন এবার বাস্তবতা শুনে আহত হবেন। ছোট বেলায় দেখতাম, গুড় আর চিনি দিয়ে জিলাপি বানানো হতো। তবে গুড়ের জিলাপির চেয়ে চিনির জিলাপির দাম বেশি ছিল। অনেক বছর জিলাপি খাওয়া হয়নি। হঠাৎ একদিন দেখি গুড়ের জিলাপি পাওয়া যায়না। পাওয়া গেলেও চিনির জিলাপির চেয়ে দাম বেশি। বাস্তবে গুড়ের দামও বেশি। এখন গুড় তৈরি হয় চিনি দিয়ে। সবচেয়ে বেশি অবিচারটা হয় মুগরির ওপরে। ছোটবড় সব ডিমের দাম সমান! এরপরেও কমিউনিস্টরা এদেশে কেন বড় কিছু করতে পারেলেন না এটা নিয়ে মাঝে মাঝে ভাবনা হয়।

এদেশে এখন সবাই অফিসার। যাদের পদবিতে অফিসার শব্দটা নাই তারাও এজন্য আন্দোলন করছেন। এখন সন্তানের কথার চেয়ে বাবার কথার মূল্য কম। শিক্ষকের চেয়ে শিক্ষার্থীদের কথার মূল্য বেশি। পীরের চেয়ে মুরিদরা বুঝে বেশি। নেতার চেয়ে অনুসারীরা এক ধাপ এগিয়ে।

আমি যে পেশায় রয়েছি, এবার সেদিকে একটু আলোকপাত করি। সিভিল সার্ভিস সরকারের অনির্বাচিত অংশ। সিভিল সার্ভিসকে শাসন ব্যবস্থার খুঁটি হিসাবেও বিবেচনা করা হয়। সরকার চলে যায় তবে সিভিল সার্ভিস থেকে যায়। বৃটিশদের মার্কেন্টাইল সিভিল সার্ভিস থেকে এদেশের সিভিল সার্ভিসের জন্ম। এর ধারণাই বনেদি ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। যারা ভদ্র ও কুলীন পরিবারের হবে। যাদের আচার আচরণে কৌলিণ্য থাকবে। এরা মেধায় হবে তুখোড়। দুর্নীতি এদের স্পর্শ করতে পারবেনা। এরা সংখ্যায় হবেন কম। কারণটা কী! রবীন্দ্রনাথ শেষের কবিতায় বলেছলেন, ‘ভালোর সংখ্যা যত কম হয় তত ভালো। ভালোর সংখ্যা বেশি হলে তা হয় মাঝারি’। ঘি আর তেল, চিনি আর গুড় আলাদা থাকতে হয়। সমস্যাটা হচ্ছে, এদেশে সিভিল সার্ভিসে তেল আর ঘিয়ের দাম সমান করে দেয়া হয়েছে। কে করেছে; কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছে-এসব বলবোনা। শুধু গল্পটাই বলে যাবো।

ভারতের রাজনীতিকদের নৈতিক স্টান্ডার্ড আামাদের দেশের নেতাদের মতোই। তবে এত বড় দেশটি আইএএস কর্মকর্তারা চালাচ্ছেন। সেখানকার জেলা পয়ায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে আইএএস কর্মকর্তারাই ইমাম হন। বাকী সরকারি কর্মকর্তারা তাদের অনুসরণ করেন। জেলার উন্নয়নে তাদেরকেই সহায়তা করেন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা করতে সরকারকে বেগ পেতে হয়না। কীভাবে আইএএস কর্মকর্তারা বিশ্বমানের হলেন! ভারতের নেতা সরদার বল্লভ প্যাটেল ব্রিটিশ সরকার এবং তাদের আইনের কট্টর বিরোধী ছিলেন। এজন্য ব্রিটিশদের পক্ষে কাজ না করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অথচ তিনিই ভারতের স্বাধীনতার পর বৃটিশ গভর্ণর মাউন্ট ব্যাটেনকে ভারতের গভর্ণর হিসেবে বহাল রাখেন। তাকে এক বছর মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদমর্যাদায় রাখা হয়। রেখে দেয়া হয়েছিল বৃটিশ আইসিএস অফিসারদের। যাতে বৃটিশদের প্রবর্তিত প্রশাসনিক আচার আচরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যত্যয় না হয়। কর্মকর্তাদের মান যাতে পড়ে না যায়।

ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের মাত্র তিনটি ক্যাডার রয়েছে। অথচ আমাদের দেশের মতো একটা দেশে ৩০ টি ক্যাডার করা হয়েছে। এর মধ্যে সচিবালয় ক্যাডার ও ইকোনোমিক ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একত্রিত করা হয়েছে। বাকী অনেকগুলো জেনারেল ক্যাডারও প্রশাসনের সাথে একত্রিত হতে চায়। প্রশ্ন হলো-আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ও প্রশাসনিক কাঠামোতে সকল ক্যাডারকে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সমতা দেয়া কী সম্ভব! আমার মনে হয়না। তাহলে এতগুলো ক্যাডার করে দ্বন্দ্ব তৈরি করার কারণ কী আমি বুঝতে পারিনা। প্রশাসন ছাড়া বাকী ২৫ টি ক্যাডার আন্দোলন করছে। তাদের দাবী দাওয়ার বিষয়ে কথা বলে ব্যক্তিগতভাবে কারো বিরাগভাজন হতে চাইনা। তবে তথ্য, সমবায়, ট্রেড ক্যাডারসহ জেনারেল অনেক ক্যাডারের এমন কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা প্রশাসন ক্যাডারের একজন সেই কাজ করতে পারবেন না! তবে ক্যাডার হওয়ার দৌড় ৩০টিতে থেমে নেই। এখন আরো কমপক্ষে চার-পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ক্যাডার হতে চান। তারা এনিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। এদেশে ভালোর সংখ্যা এখন এমন পর্যায়ে যে সবার মান মাঝারি হয়ে গেছে।

এতো গেলো ক্যাডারের সংখ্যা নিয়ে কথা। এবার ঘি কে তেলে রূপান্তরিত করতে আরেকটি পদক্ষেপ নেয়া হয়। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য হতেই নন ক্যাডারে নিয়োগ দেয়া শুরু হয়। শুধু কী তাই! ক্যাডার নন ক্যাডার এখন নবম গ্রেডে যোগদান করেন। এখন বিসিএসটাকে ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের পর্যায়ে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। তারাও বিসিএস লিখেন। কয়েকদিন পর তাদের আন্দোলনও দেখতে পাবো। সমস্যাটা হচ্ছে, এদের কয়েকজন উচ্চ আদালতে রীট করে বলেছেন, আমরা বিসিএসের জন্য আবেদন করেছি। নন ক্যাডারের জন্য আবেদন করি নাই। আমরা বিসিএস পাস করেছি। আমাদের নন ক্যাডার কেন দেয়া হবে। শুনেছি, এ যুক্তি দেখিয়ে রায় এনে কয়েকজন প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্যাডারেও যোগ দিয়েছেন। বাকীরা এ তথ্য হয়ত জানেনা। জানলে তারাও একই লাইন ধরবেন। এরপর থেকে বিসিএস পাস করার পর উত্তীর্ণ প্রার্থীরা যারা ক্যাডার পাচ্ছেননা তাদের কাছ থেকে নন ক্যাডারের জন্য আবেদন নেয়া হচ্ছে। শুধু নন ক্যাডারের জন্য একটা কেন্দ্রীয় পরীক্ষা না নিয়ে ক্যাডারের জন্য পরীক্ষা থেকে নন ক্যাডার নিয়োগ করার কারণ কী আমি বুঝতে পারিনা। এতে তেলের দামে এখন বিসিএস পাওয়া যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো আরো কত দ্বন্দ্ব তৈরি হবে-তা আল্লাহ মালুম।

যাই হোক, আল্লাহর কাছেও সব মানুষ সমান নয়। আল্লাহ বলেছেন, হাল ইয়াস তাওইল লাজিনা ইয়ালামুনা ওয়াল লাজিনা লা ইয়া লামুন? যারা জানে আর জানেনা তারা কী এক? আল্লাহ সবার সৃষ্টিকর্তা। তিনি সরাসরি মানুষ সমান না এটা বলতে পারেন না। এজন্য প্রশ্ন করে ছেড়ে দিযেছেন। বালাগাত অনুযায়ী এর অর্থ কস্মিনকালেও এক নয়। কোন কিছুই মেধার সমান হতে পারেনা। প্রতিযোগিতায় যারা এগিয়ে থাকবেন তারাই মেধাবি। তাদের আলাদা সম্মান ও মূল্য থাকা দরকার। ঘিয়ের দাম তেলের চেয়ে বেশি থাকা দরকার।

যা বলছিলাম, শেখ শাদীর লিখে যাওয়া গল্পের ঘি আর তেলের দাম সমান দেশটা যে আমাদের হবে এটা কে জানতো।

(সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছি কমেন্টে)

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৭

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: তাহলে সমাধানটা কী!
১। এর সমাধানে ১৯৯৭ সালের এটিএম শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ি তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা দরকার।

২। প্রত্যেক ক্যাডারের আলাদা সার্ভিস গঠন করা প্রয়োজন। জেনারেল ক্যাডারগুলো প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একত্রিত করা যেতে পারে। এরপর বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস, সিকিউরিটি সার্ভিস বা পুলিশ সার্ভিস, শিক্ষা সার্ভিস, চিকিৎসা সার্ভিস, কৃষি সার্ভিস, টেকনিক্যাল সার্ভিস ও রেভিনিউ বা অর্থনৈতিক সার্ভিস নামে আলাদা সার্ভিসের আলাদা করে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। প্রত্যেক সার্ভিসের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো হতে পারে।

৩। একটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস, সিকিউরিটি সার্ভিস বা পুলিশ সার্ভিস ও রেভিনিউ বা অর্থনৈতিক সার্ভিসের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রতিটি সার্ভিসের ভেতর ক্লাস্টার করে কর্মকর্তাদের পদায়ন করা যেতে পারে।

৪। দ্বিতীয় টেকনিক্যাল পাবলিক সার্ভিস কমিশন শিক্ষা সার্ভিস, চিকিৎসা সার্ভিস, কৃষি সার্ভিস, টেকনিক্যাল সার্ভিসের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সেবাখাতকে গুরুত্ব দিতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও টেকনিক্যাল সার্ভিসের বর্ধিত বেতন কাঠামো থাকা দরকার।

৫। সর্বশেষ পাবলিক সার্ভিস কমিশন ( নন ক্যাডার) প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির নন ক্যাডারের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বছরে একটি করে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে অপেক্ষমান তালিকা থেকে নন ক্যাডারে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। কেউ অন্য চাকরিতে চলে গেলে তার শূন্য স্থান দ্রুত পূরণ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ গ্রেডেও সাধারণ, সিকিউরিটি, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। এসব কর্মকর্তারা পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়ে যাতে ক্যাডার পোস্টে যেতে পারেন তার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

৬। তৃতীয় শ্রেণি হতে নিম্নপদের নিয়োগ সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়ের হাতে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে।
এসব পদক্ষেপ নিলে সরকারি চাকরিতে দ্বন্দ্ব নিরসন সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি।

২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

আরাফআহনাফ বলেছেন: সুন্দর ও গঠনমূলক আলোচনা।
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম - ভালো লাগলো।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। পড়ার জন্য। সাথে থাকবেন।

৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


পশ্চিমের পীর ও প্রাচ্যের পীরের মধ্যে পার্থক্য কি?

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৬

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আমার এক প্রফেসরকে প্রশ্ন করলে সেটাই তাকে অ্যাসাইনমেন্ট দিতেন। পরের দিন সেই প্রশ্নটির বিষয়ের উপর প্রেজেন্টেশন করতে হতো। আপনার প্রশ্নের জবাব আপনিই দেন। পোস্টের সাথে রিলেভেন্ট প্রশ্ন না হলে এখানে উত্তর পাবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.