নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার চাকরকে কিছু জিনিসপত্র কেনার জন্য বাজারে পাঠালেন৷ তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই চাকর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ফিরে এসে বলল, হুজুর, আমি বাজারে যাওয়ার পর এক মহিলা আমাকে ধাক্কা দেয়। ভিড়ের মধ্যে আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম৷ দেখলাম, সে আসলে মৃত্যু৷ মৃত্যুই আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে ধমক দিয়েছে৷
চাকর বললো, এই মুহূর্তে আমাকে আপনার ঘোড়াটা ধার দিন৷ আমি এই শহর থেকে পালিয়ে গিয়ে আমার ভাগ্য এড়াতে চাই। আমি সামারায় চলে যাব৷ আর সেখানে মৃত্যু আমাকে ধরতে পারবেনা৷
ব্যবসায়ী তাকে তার ঘোড়া ধার দিলেন৷ চাকর ঘোড়ায় চড়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ধূলা উড়িয়ে যত দ্রুত ঘোড়া ছুটতে পারে তত দ্রুত সামারার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেল।
ব্যবসায়ী কৌতুহল নিয়ে বাজারে গেলেন এবং মৃত্যুকে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। তিনি মৃত্যুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আজ সকালে তুমি আমার চাকরকে দেখে ধমক দিয়েছিলে কেন?
মৃত্যু বললো, আমি তাকে হুমকি দেইনি, চোখও রাঙ্গাইনি। ওটা ছিল আমার অবাক হওয়ার পালা। তাকে বাগদাদে দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম, কারণ আজ রাতে তার সাথে সামারায় আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। সে বাগদাদে কী করছে!
দুই.
এবার খৃস্টধর্মের একটা গল্প বলি। বাদশাহ সলোমন বা হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের সময়ও এরকম একটি ঘটনার কথা জানা যায়৷ তিনি একদিন তার এক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এসময় দামি পোশাক পরা সুদর্শন এক ব্যক্তি সুলাইমান আ. এর দরবারে প্রবেশ করে এবং কিছুক্ষণ বসে থেকে চলে যায়।
পরে মন্ত্রী হজরত সুলাইমান আ. কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর নবি! আপনার কাছে যে লোকটি এসেছিলো, সে কে?
হজরত সুলাইমান আ. বললেন, সে ‘মালাকুল মাউত’ মৃত্যুর ফেরেশতা।
মালাকুল মাউত-এর কথা শুনে মন্ত্রীর চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়৷ তার শরীর কাঁপতে থাকে৷ তিনি বলতে লাগলেন, অনুগ্রহ করে বাতাসকে হুকুম দেন, সে যেন আমাকে বহূদূরে হিন্দুস্তানে পৌঁছে দেয়। কারণ মৃত্যুর ফেরেশতার বসার জায়গায় আমার বসা অসম্ভব৷
বাতাস হজরত সুলাইমান আ. এর অনুগত ছিল৷ তিনি মন্ত্রীকে হিন্দুস্তান পৌঁছে দিতে বাতাসকে নির্দেশ দেন। বাতাস সাথে সাথে তা বাস্তবায়ন করে।
কিছুক্ষণ পরে মৃত্যুর ফেরেশতা পুনরায় সুলায়মান আ. এর কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর নবি! আপনি কী জানেন, আপনার মন্ত্রী কোথায়?
হজরত সুলাইমান আ. জানালেন, আপনার ভয়ে বাতাস তাঁকে হিন্দুস্তান পৌঁছে দিয়েছে।
মৃত্যুর ফেরেশতা বলল, কিছুক্ষণ আগে আপনার মজলিসে এসে ওই মন্ত্রীকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। কেননা আল্লাহ আমাকে হিন্দুস্তান থেকে তার প্রাণ হরণের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন৷ অথচ আমি এসে দেখলাম তিনি কয়েক হাজার মাইল দূরে আপনার কাছে বসে আছেন৷
মৃত্যুর ফেরেশতা জানায়, আমি নির্দিষ্ট সময়ে হিন্দুস্তান পৌঁছে আপনার মন্ত্রীকে নির্দিষ্ট জায়গায় দেখতে পেয়েছি৷ পরে তার জান কবজ করে আবার আপনার কাছে ফিরে এসেছি।
তিন.
হাদিস শরীফেও এ বিষয়ে বলা হয়েছে, হজরত আবু আযযাতা ইয়াসারি ইবনে আবদিল্লাহ আল-হুজালি রা. বর্ণনা করেছেন, নবি দ. বলেছেন, ‘আল্লাহ তার কোনো বান্দাকে নির্ধারিত স্থানে মৃত্যু চাইলে; তাকে সেখানে যেতে কোনো না কোনো প্রয়োজন সৃষ্টি করে দেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)
পবিত্র কুরআনেও মৃত্যু সম্পর্কিত আয়াতগুলোর ভাষ্য একই৷ আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মৃত্যুর সময় নির্ধারিত। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো মৃত্যু হতে পারে না। (সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৪৫) ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু তোমাদের আটক করবেই। তা সুরক্ষিত দূর্গের ভেতরে অবস্থান করলেও।’ (সুরা নিসা আয়াত ৭৮) ‘হে নবী দ. ওদের বলুন, যে মৃত্যু থেকে তোমরা পালাতে চাচ্ছ, তোমাদেরকে তার মুখোমুখি হতেই হবে।’ (সূরা জুমআ, আয়াত ৮)
চার.
কিছুদিন আগে বিশ্বের অগণিত অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষকে কাঁদিয়ে আটলান্টিকের গভীর জলে হারিয়ে যায় টাইটান৷ সাথে সলিল সমাধি হয় পিতাপূত্রসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির৷ সৃষ্টির শুরু থেকে অজানাকে জানার যে অসীম আগ্রহ তাতে বলি হয়েছেন অনেক অভিযাত্রী৷ তবুও থেমে থাকেনি বিপদযাত্রা৷ কেউ এই যাত্রায় মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন৷ হিমালয়ের চূড়ায় উঠতে গিয়ে অনেক লাশের দেখা মেলে৷ মৃত্যই তাদের হিমালয়ে ডেকে নিয়ে গেছে৷ টাইটানের যাত্রীদের ডেকে নিয়ে গেছে আটলান্টিক মহাসাগরের অনেক গভীরে৷
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়। মৃত্যু অবধারিত৷ সময়মতো সে হাজির হবেই৷ এটা নিশ্চিত৷
১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:২১
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
২| ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫১
রানার ব্লগ বলেছেন: ভয় জাগানীয়া গল্প!!
১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৫
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আসলেই।
তবে অবধারিত বিষয়ে ভয় না পাওয়াটাই শ্রেয়।
৩| ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫
রাসেল বলেছেন: আমার সামনে ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার কথা বলতে চাই। যদিও, আমাদের দেশে দুর্ঘটনা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। একদিন আমি ঢাকা বিমানবন্দরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি দেখলাম যে, একজন লোক দুর্ঘটনায় পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে দশ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা যান, যিনি ছেলেকে বিদায় দেয়ার জন্য গ্রাম থেকে এসেছেন।
তারপরও আমরা নিয়মিতভাবে অপরাধ করছি এবং নিজেকে একজন অত্যন্ত সৎ ধার্মিক মানুষ হিসাবে জাহির করছি।
১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: চমৎকার বলেছেন। আমরা সবাই এ
টাই করি।
নিজে যা নই; বাইরে তা জাহির করি।
একবার শেখ শাদী রহঃ সফরে গেছেন। লোকজন তাকে চিনে ফেলে তার চারদিকে জড়ো হয়ে যায়। তারা তার প্রশংসা করছে। বলছে, আপনি এমন একজন মহান কবি যিনি গুলিস্তার মতো কাব্য গ্রন্থ লিখেছেন। এ
মন একজন ব্যক্তিত্বের দেখা পেয়ে আমরা সৌভাগ্যবান।
জবাবে শেখ সাদী রহঃ বললেন, من آنم کہ من دانم মন আনম কেহ মন দানম। আমি যে কে সেটা আমার চেয়ে আর কেউ ভালো জানেনা।
দার্শনিক হেগেলও একই কথা বলেছেন। মানুষ নিজেই ভালো জানে যে সে কে! বাইরে তার যতই অন্য পরিচয় থাকুক না কেন!
ভালো থাকবেন।
৪| ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪
রাসেল বলেছেন: সায়েমুজজ্জামান মন্তব্যে শেখ সাদী রহঃ এর বক্তব্য উদৃত্ত করেছেন "আমি যে কে সেটা আমার চেয়ে আর কেউ ভালো জানেনা"।
আমরা আমাদের নিজেদের জীবনে এই মন্তব্য থেকে শিক্ষা নিতে পারি। ধন্যবাদ।
১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৮
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অনেক কৃতজ্ঞতা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
৫| ১৭ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০০
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ভালো হয়েছে।
১৭ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৭
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
৬| ১৭ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: মৃত্যুর কোন ফেরেস্তা নাই।মানুষের দেহেই আছে জীবন এবং মৃত্যুর সহ অবস্থান।
১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: যার যার বিশ্বাসের ব্যাপার!
তবে মৃত্যু অবধারিত!
জীবন থাকলেই মৃত্যু থাকবো। এটাই আসল কথা।
৭| ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:১৩
নতুন বলেছেন: ধর্মের নামে মিথ্যা গল্প কেন মানুষ সাজায়?
ধর্ম তো মিথ্যা বলতে নিরুতসাহিত করে.
১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৩
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: মৃত্যু এমন একটা বিষয় যে এর সাধ্যমেই প্রতিটি ধর্মের পথ আলাদা হয়ে যায়!
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৮| ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১০
জোবাইর বলেছেন:
বিশ্বের সব জীবজন্তু মরণশীল। মানুষের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হচ্ছে বিপদ, দুর্যোগ, দুর্ঘটনা এবং এমনকি প্রিয়জনের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে এরা একটা সময়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। যারা ফিরতে পারে না তারা বাকী জীবন ট্রমার মধ্যেই থাকে।
মৃত্যু যেভাবেই হোক মানুষকে সান্তনা দেওয়ার জন্য এবং একে মেনে নিয়ে আবার সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য অনেকগুলো প্রবাদ বাক্য শুনা যায়া:
"আল্লার মাল আল্লায় নিয়ে গেছে।"
"হায়াত-মাউত আল্লার হাতে।"
"যার মৃত্যু যেভাবে লেখা আছে সেভাবেই হবে।"
আপনার পোস্টের শিরোনাম - "মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়"- সে ধরনের একটি সমার্থক বাক্য।
রুঢ় বাস্তবতা ও বিজ্ঞানের আলোকে "মৃত্যু অবধারিত" এটা মেনে নেয়া যায়। "সময় মতো সে হাজির হবেই" -এটা মেনে নেয়া যায় না। ক্লিনিকের ইনটেনসিভ কেয়ারে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস ও বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে মাসের পর মাস বাঁচিয়ে রাখা হয়, যাদেরকে আমরা 'ক্লিনিকেলি ডেথ' বলি। এখানে আজরাইল বা মৃত্যুদূতের সিদ্ধান্তে রোগীর প্রকৃত মৃত্যু হয় না, মৃত্যু হয় ডাক্তার ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের সিদ্ধান্তে। অর্থাৎ সব কৃত্রিম ব্যবস্থা বন্ধ করে দিলেই কাহিনী শেষ।
বাংলাদেশে গাড়ির চালকদের দায়িত্বহীনতা, ত্রুটিপূর্ণ ট্রাফিক সিস্টেম ও যাত্রীদের অসতর্কতার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন শতশত মানুষের যে মৃত্যু হচ্ছে তাকে কোনোভাবেই "মৃত্যু অবধারিত ও সময় মতো সে হাজির হবেই" -এই যুক্তিতে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসাবে মেনে নেয়া যায় না। এগুলো অপমৃত্যু বা হত্যা।
উন্নত বিশ্বে এখন স্বেচ্ছামৃত্যু (Euthanasia/Assisted Suicide) বেশ জনপ্রিয়। বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে এসে ভরণপোষণ, চিকিৎসা, সেবা-শুশ্রুষা ইত্যাদি সব কিছুর ব্যবস্থা থাকার পরেও বৃদ্ধাশ্রমে আনপ্রোডাক্টিভ ও অথর্ব বিছানায় শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা না করে অনেকে এখন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কখন, কোথায় এবং কিভাবে স্বেচ্ছামৃত্যুর মাধ্যমে হাসিমুখে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে।
স্বেচ্ছামৃত্যুর তালিকায় সবচেয়ে বেশি আছে বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব অর্থাৎ শিল্পী, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী এবং রাজনীতিবিদ। তাই "মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়" কথাটি এখন আর সঠিক নয়। বরংচ বলা যেতে পারে "মানুষ মৃত্যুকে ডেকে নিয়ে আসে হাতের ইশারায়"।
Famous People Who Died of Euthanasia
১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আপনি অদৃষ্ট শব্দটি ভালো করে যাচাই করেন নি। অদৃষ্ট মানে ভাগ্য। যা লেখা হয়েছে। কারো স্বেচ্ছা মৃত্যু বা সুইসাইড লেখা থাকলে সে সেটাই করবে।
তবে ইসলামের চ্যালেঞ্জটা হলো- সবাইকে মরতেই হবে। কোনো দিন মানুষ মৃত্যুহীন হলে ধর্মের অস্তিত্ব থাকবেনা।
ভালো লিখেছেন।
ভালো থাকবেন।
৯| ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৩
রাসেল বলেছেন: ব্লগার জোবাইর বাস্তব জীবনের কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন, ধন্যবাদ। আমার জীবনের শুরুটাই আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শুরুর উপর ভিত্তি করে, আমাদের জীবনে সমস্ত ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলেছে। অবশ্যই, ঘটনা ঘটার জন্য আমার ভূমিকা আছে। আমার ভূমিকার পাশাপাশি পারিপার্শ্বিকতা, প্রকৃতিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাই আমি বলতে চাই, সবকিছু আপনার/ আমার ইচ্ছা মতো হবে না । পারিপার্শ্বিকতার উপর ভিত্তি করে আমি সিদ্ধান্ত নেব এবং সেই সিদ্ধান্তের জন্য আমি দায়ী থাকব। কিন্তু সেই দায় একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত থাকবে।
১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৪
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ইসলামে অদৃষ্টবাদের ওপর দুইটা মতবাদ রাসুল দঃ এর আমলেই তৈরী হয়েছিল। এরা জবরিয়া ও কদরিয়া। প্রশ্নটি হলো মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা রয়েছে কীনা!
জাবারিয়ারা মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। তারা বলে আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটি গাছের পাতাও নড়েনা। পড়েও না। মানুষ হলো পুতুল। যেমনি নাচাও তেমনি নাচে পুতুলের কী দোষ।
কোরআনের যেসব আয়াতে মানুষের দায়িত্ব কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে জবরিয়ারা সেগুলো এড়িয়ে যায়। তারা মনে করে কর্মের স্রষ্টা আল্লাহ। মানুষ কোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারেনা।
অন্যদিকে কাদারিয়ারা বলে মানুষ তার কৃত কর্মের জন্য দায়ী। দায়ী না হলে তাকে সৎ কাজের জন্য পুরস্কার হিসেবে জান্নাত এবং অসৎ কাজের জন্য শাস্তি দেয়াটা যৌক্তিক হয়না। তারা আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার নির্দেশক আয়াতগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত আয়াতগুলোকে প্রামাণ্য হিসেবে গণ্য করে। তারা মনে করে, মানুষ স্বভাবতই স্বাধীন। তার কর্মের স্বাধীনতা রয়েছে। সে যা খুশী করতে পারে। মানুষ নিজেই নিজের কর্মের স্রষ্টা।
তবে নবী দঃ বলেছেন, এরা দু'দলই জাহান্নামি। ইসলাম ধর্মে এদের কোনো স্থান নেই।
তাহলে ইসলামের অবস্থান কী! এ বিষয়ে ইসলাম বলে, কর্মের স্রষ্টা আল্লাহ। এটা ঠিক রয়েছে। আবার মানুষের সামনেও চয়েজ রয়েছে। তাকে ভালো মন্দ বুঝার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সৎ কাজের জন্য সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। অসৎ কাজের জন্য শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে মানুষের ইচ্ছাই সব নয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তাই ঘটে থাকে। এটা সুন্নী মুসলমানের ছয়টি মৌলিক বিশ্বাসের একটি। ভালো মন্দ আল্লাহর কাছ থেকে আসে। এই বিশ্বাস ঘোষণার মাধ্যমেই আমরা মুসলমান হয়েছি।
তবে ইসলামের বুদ্ধিবৃত্তিক আনেকটি ভ্রান্ত দল মোতাঝিলারা এটা মানেনা। তারা বলে আল্লাহর পূর্ব নির্ধারিত বিষয়ে একজন মানুষ শাস্তি পাবেন তা অচিন্তনীয়।
শিয়াদের ঈমানে পাঁচটি মৌলিক বিশ্বাস রয়েছে। এতে অদৃষ্টের পূর্ব নির্ধারণ নেই। শিয়া ইসলামে তকদির ঈমানের অংশ না। একজন শিয়া পন্ডিত নাসের মাকারেম শিরাজি যুক্তি দিয়েছেন "পূর্বনির্ধারণে বিশ্বাস ন্যায়বিচারকে অস্বীকার করার শামিল"।
যাই হোক সুন্নী বিশ্বাসটা মানলে বলতে হবে- আল্লাহর ইচ্ছাতেই সব হয় তবে মানুষের ভালো মন্দ বুঝার ক্ষমতা রয়েছে। মানুষ তার কর্মের মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছাটাই বাস্তবায়ন করে। একজন ব্যক্তি আইসিইউতে রয়েছে। তার মেশিন খোলা হবে এটা পূর্বনির্ধারিত। মানুষ কাজের মাধ্যমে সেটা বাস্তবায়ন করে মাত্র।
ধন্যবাদ। সুন্দর গঠনমূলক যুক্তি দিয়েছেন।
ভালো থাকবেন।
১০| ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৮
নতুন বলেছেন: জোবাইর বলেছেন:
বিশ্বের সব জীবজন্তু মরণশীল। মানুষের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হচ্ছে বিপদ, দুর্যোগ, দুর্ঘটনা এবং এমনকি প্রিয়জনের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে এরা একটা সময়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। যারা ফিরতে পারে না তারা বাকী জীবন ট্রমার মধ্যেই থাকে।
আগেকার দিতে রাতে ভুত, পিশাচ, নানান রকমের অধৌভৈতিক ক্ষমতা মানুষকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখতো। সেগুলু হত্যা কিন্তু মানুষকে অলৌকিক কাহিনি বিশ্বাস করিয়ে গোজামিল দিতো।
আমাদের দেশে অপমৃত্যুর হার অনেক বেশি। উন্নত বিশ্বে দূঘটনা অনেক কম কারন তারা চেস্টা করে কিভাবে মানুষের ভুলে ঘটা দূঘটনাগুলি এড়ানো যায়।
১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: একটি জেলায় চাকরি করতে গিয়ে একটা গল্প শুনেছি। সত্যি ঘটনা। বৃটিশ আমলে এক গ্রামের বট গাছের মাথায় ডালে আটকানো অবস্থায় একটা বাচ্চার লাশ পাওয়া যায়। লোকজন নিশ্চিত যে, ওই বটগাছে ভুত থাকে। এর আগে কয়েকজনকে সংজ্ঞাহীন করে পাশের ক্ষেতের কাঁদায় ফেলে রেখেছিল। আরেকজনকে সংজ্ঞাহীন করে গাছের মাথায় ঝুলিয়ে রেখেছিল। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওই গ্রামে পরিদর্শনে যান। গিয়ে তিনি সবার মুখে ভুতের কান্ড-কারখানা শুনেন। এবার যে ব্যক্তিকে গাছের মগডালে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাকে দেখতে চাইলেন। ওই লোককে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আনা হলো। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ভালো কর তাকে দেখলেন। কথা বললেন। পরে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন।
পরবর্তীতে ঘটনা উদঘাটিত হয়। যে ব্যক্তিকে গাছের মগডালে পাওয়া গেছিলো সেই আসল হত্যাকারী। সে ওই বাচ্চাটিকে মারার জন্য ভুতের অভিনয় করে। সাদা কাপড় পড়ে রাতের আঁধারে গাছের উপরে অবস্থান করে। গাছের নিচ দিয়ে একাকী কাউকে যেতে দেখলে তার সামনে লাফ দিয়ে পড়ে। এতে ওই ব্যক্তি ভয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে পাশের ক্ষেত্রে কাদায় ফেলে রাখে। কয়েকটে ঘটনার পর সে নিজেই মগডালে উঠে বেহুশ হয়ে ডালে ঝুলে থাকার অভিনয় করে। পরে তাকে দেখে লোকজন গাছ থেকে নিচে নামায়। এতে বটগাছ কেন্দ্রিক একটা ভৌতিক গল্প তৈরি হয়। এদিকে সে তার ভাইয়ের একমাত্র ছেলেকে সম্পদের উত্তারাধিকারী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। ওই ছেলে না থাকলে ভাই হিসেবে সব সম্পত্তি পাবে। এ ধারণার বশবর্তী হয়ে তাকে খুন করার ফন্দি আঁটে। পরবর্তীতে বাচ্চাটাকে মেরে গাছের মগডালে রেখে দেয়।
এই হচ্ছে এদেশে ভুত আর ভৌতিক কাহিনী! এর রহস্যের উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলায় ভুতের আনাগোনা কমে গিয়েছিলো। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লোকটিকে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন আসলে সে মানসিক রোগী কী না। দেখা যায় সে মানসিক রোগী নয়। তাহলে সে গাছের মগডালে কীভাবে গেলো! ভুত বলতে কিছু নেই। নিজে সেখানে উঠা ছাড়া তাকে সেখানে পাওয়া যাওয়ার কথা নয়। একারণে সে সন্দেহভাজন ব্যক্তি হিসেবে ধরা পড়ে।
ভালো থাকবেন।
১১| ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২১
নতুন বলেছেন: মানুষ সাধারন হিসাবটাই করেনা।
১+১=২ হবে এটাই সাভাবিক।
যখন ৩ হবে তখনই প্রশ্ন করতে হবে এবং খুজলে ঘাপলা পাওয়া যাবে।
১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৫
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: একমত। আপনার ব্যাখ্যাটা্ সহজেই বোধগম্য। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৯
ফিনিক্স পাখির জীবন বলেছেন: সুন্দর লেখা। ধন্যবাদ।