নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় মুক্তিযোদ্ধা

সায়েমুজজ্জামান

কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]

সায়েমুজজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দক্ষিণ কোরিয়ার করোনা রাজনীতি

০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৫৩


দক্ষিণ কোরিয়া রাষ্ট্রপতি শাসিত প্রজাতন্ত্র। প্রেসিডেন্টের নাম মু জে ইন। ২০১৭ সালের মে মাসে তিনি ১২ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। আমি বর্তমানে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, কিউং হি ইউনিভার্সিটির সাবেক ছাত্র তিনি। বলতে গেলে প্রেসিডেন্ট বড় বিপদে আছেন। করোনা ভাইরাস তার চলার পথকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন করে দিয়েছে। দেশটিতে উদার গণতন্ত্র রয়েছে। প্রেসিডেন্ট অফিসের ওয়েব সাইটে প্রেসিডেন্টের কাছে যেকোন বিষয়ে আবেদন বা দাবি করা যায়। আবেদনের প্রক্রিয়াটা অনেকটা চেঞ্জ ডট ওআরজির মতোই। জনগণ তাতে সমর্থন করেন। প্রেসিডেন্ট অফিস ইচ্ছা হলে যেকোন আবেদনের জবাব দেন। তবে আবেদনে স্বাক্ষরের বা সমর্থনকারীর সংখ্যা দুই লাখের অধিক হলে এর উত্তর দিতে বাধ্য থাকেন।

দক্ষিণ কোরিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে কোরিয়ার নাগরিকরা বিভিন্ন মাধ্যমে সরব ছিলো, যাতে চীনা নাগরিককে কোরিয়াতে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে মুন প্রশাসন কিছুতেই চীনা নারিগকদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন নি। আর এদিকে দিন দিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বাড়তে থাকে। বেড়ে যায় ফেস মাস্কের চাহিদাও। তবে চীনের আকাশচুন্বী চাহিদা ও বেশি মুনাফা পেতে ব্যবসায়ীরা চীনে মাস্ক রপ্তানী অব্যাহত রাখে। সরকার অনেক দেরি করে মাস্ক রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যা ভালোভাবে নেয়নি কোরিয়ান জনগণ। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ার একজন নাগরিক প্রেসিডেন্ট দপ্তরের ওয়েব সাইটে প্রেসিডেন্ট মুনের ইমপিচমেন্ট দাবি করে একটি আবেদন করে। এরপর যা ঘটেছে তা ইতিহাস। এ যাতবকালের সবচেয়ে বেশি সমর্থন পায় ওই আবেদনটি। এ পর্যন্ত তাতে সমর্থন জানিয়েছে ১৪ লাখ ১১ হাজার ৮১১ জন কোরিয়ান নাগরিক। সমর্থনের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। প্রতিদিন বিষয়টি নিয়ে নিউজ হচ্ছে। এখনো প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে এ আবেদনের উত্তর আসেনি। একটা জবাব আসবে হয়ত। কী জবাব দেবেন মুন সেদিকে তাকিয়ে আছেন কোরিয়ানরা।

এখন প্রশ্ন আসবে প্রেসিডেন্ট মুন কেন জনগণের দাবি এড়িয়ে গিয়ে চীনকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কোরিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সরাসরি উপস্থিতি রয়েছে। এই বাহিনীর নাম ইউনাইটেড স্টেটস ফোর্স ইন কোরিয়া বা ইউএসএফকে। এই বাহিনীর ২৩ হাজার ৪৬৮ জন সৈন্য বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছে। সেখানে চীনকে গণনায় না ধরলেও চলে দক্ষিণ কোরিয়ার। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। ২০১৭ সালে চীনের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে দক্ষিণ কোরিয়া দেশটিতে এন্টি মিসাইল প্রতিরক্ষা সিস্টেম স্থাপন করে। এ সিস্টেমটি টার্মিনাল হাই এলটিটিউট এরিয়া ডিফেন্স বা থাড ডিফেন্স সিস্টেম নামে পরিচিত। এর ফলে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের একটা টানা পোড়েন শুরু হয়। চীন ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার থেকে কিছুটা হলেও মুখ ফিরিয়ে নেয়। এর ফলে কোরিয়ায় ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দাভাব শুরু হয়। বেকারত্ব বেড়ে যায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এদেশে বেকারত্বের হার গিয়ে দাড়ায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশে। ২০১০ সালের পর এটাই সবোর্চ্চ বেকারত্বের হার। করোনা ভাইরাসের পর পুরো বিশ্ব যেখানে চীনের জন্য দড়জা বন্ধ করেছে, দক্ষিণ কোরিয়া সেটাকে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সুযোগ হিসেবে নিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন চীনের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে প্রতিবেশির ব্যথাটা নিজের বলে মন্তব্য করে সকল সহযোগিতা করবে বলে জানায়। চীনে মাস্ক রপ্তানিও অব্যাহত রাখে। তবে করোনা ভাইরাসে কোরিয়ার অবস্থা গুরুতর হতে থাকলে চীনারাই আসা কমিয়ে দিয়েছে। প্রতিদিন যেখানে ২০ হাজার চীনের নাগিরক কোরিয়ায় আসতো সেখানে তা এক হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। মাস্ক রপ্তানিও বন্ধ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে করোনা ভাইরাসের কারণে কোরিয়া এখন শোচনীয় অবস্থার দিকে যাচ্ছে।

বর্তমানে তিন হাজার পাঁচশ’র ও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন দুইশ থেকে পাঁচশ পর্যন্ত করোনার রোগী চিহ্ণিত করা হচ্ছে। কোরিয়ার দেগু শহর যা রাজধানী থেকে ২৫০ কিলোমটার দূরে, কার্যত তা রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। পুরা শহর জনশূন্য মনে হয়। আমাদের স্প্রিং সেমিস্টার পনের দিন পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এটি আজ ১ মার্চ থেকে চালু করার কথা ছিল। চীনের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছে। তারা ডরমিটরিতে উঠছে। আর আমাদেরকে আরেকটি ডমরিটরিতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাদেরকে আগামী ১৫ দিন কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমাদের শরীর চেক আপ করা হচ্ছে। রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে সরকারের কাছে। আজকে মেইল পেলাম, পনের তারিখের পর আরো পনের দিন ক্লাসরুমে যেতে হবেনা। অনলাইনে কোর্স শুরু হবে। ক্লাসও হবে অনলাইনে। এদিকে অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চীন থেকে আসা একজন শিক্ষাথীর শরীরে ভাইরাস ধরা পড়েছে। এনিয়ে পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক। ডরমিটরির কক্ষেই দিন রাত কাটিয়ে দিচ্ছি। এ ডরমিটরিতে রান্নার ব্যবস্থা নেই। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। সরকার ডিসইনফেকশনের কাজ করছে। পুরো রাস্তাঘাট। পরিবহন। কোন কিছু বাদ নেই। মাস্ক কিনতে গিয়েও পাইনি। পরে কোরিয়া সরকারের সংস্থা কইকা আমাদের কাছে মাস্ক, থার্মোমিটার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাঠিয়েছে। প্রতিরোধের কোন কিছুর কমতি নেই। এত উন্নত প্রযুক্তি তারপরেও বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছেনা।

দক্ষিণ কোরিয়ানরা চীনাদের পছন্দ করেনা। কারণ এদেশে বিদেশীদের সংখ্যা বাড়ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা ৫ কোটি ১২ লাখের মতো। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ দেশে বিদেশীদের সংখ্যা দাড়িয়েছে ২৫ লাখেরও বেশি, যা মোট জনসংখ্যার ৪ দশমিক ৯ ভাগ। অথচ ২০০৭ সালে বিদেশীদের সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ লাখ। বিদেশীদের মধ্যে চীনের লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ২০১৮ সালের হিসেবে চীনা বংশোদ্ভূত ১০ লাখ ৭০ হাজার ৫৬৬ জন কোরিয়ায় বসবাস করছে। চীনা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাটাও বেশি। ৭১ হাজার ৭১৯ জন চীনের শিক্ষার্থী দক্ষিণ কোরিয়ার পড়াশুনা করছে। এ কারণেই চীনকে নিয়ে আতংক বেশি। এখানে একটা বিষয় বলে নেই, দক্ষিণ কোরিয়ায় বিদেশীদের তালিকায় বাংলাদেশিদের অবস্থান ১৮ নম্বরে। ১৬ হাজার ৬৪১ জন বাংলাদেশি এখানে বসবাস করছেন।

যাই হোক ইমপিচ দাবির আবেদনে ফিরে যাই। প্রেসিডেন্টর ইমপিচ দাবি করে বলা হয়েছে, মুন করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় যত বেশি কাজ করবেন তাতে তাকে কোরিয়ার প্রসিডেন্ট মনে হবেনা। চীনের প্রেসিডেন্ট মনে হবে। যেখানে ৬২ টি দেশ চীনের লোকজনের ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেখানে কোরিয়া হুবেই প্রদেশে বিগত দুই সপ্তাহ অবস্থানের ভিত্তিতে কোরিয়া ভ্রমণ সীমিত করেছে। এটা কার্যকর করা অসম্ভব। কে বিগত ১৫ দিনে হুবেই ছিল তা যাচাই করা সম্ভবও নয়। কারণ উহান রুদ্ধ করার আগে ৫০ লাখ মানুষ সরে পরতে সক্ষম হয়েছে। এমতাবস্থায়, এখনো প্রতিদিন ২০ হাজার চাইনিজ দক্ষিণ কোরিয়ায় ঢুকছে। দক্ষিণে কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোরিয়ানদের অগ্রাধিকার দেয়াটা কী উচিত ছিলনা? এটা ভাবলে কোরিয়ায় চাইনিদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হতো। এই পদক্ষেপ না নিয়ে মুন কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারিয়েছেন।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এর কোন জবাব না পাওয়া গেলেও সরকারের পক্ষে কথা বলেছেন, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রী পার্ক নিউং-হু। গত বুধবার জাতীয় পরিষদের আইন ও বিচার বিভাগের কমিটির একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলাকালীন পার্ককে নতুন করোনভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি জবাবে বলেছেন, কোরিয়ায় করোনা ভাইরাস প্রসারের বড় কারণ হ'ল আমাদের কোরিয়ানরা যারা চীন থেকে ঢুকেছে। এর আগেও ২১ শে ফেব্রুয়ারি পার্ক এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন," কোরিয়ায় চীনাদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা ঠিক হবেনা। কিছু ক্ষেত্রে চীনা পর্যটকদের মাধ্যমে সংক্রমণ হয়েছিল ঠিকই, তবে চীন ফেরত কোরিয়ানদের মাধ্যমে সংক্রমণের আরও বেশি ঘটনা ঘটেছে। তার এ বক্তব্যে কোরিয়ার মানুষ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনায় তারা সরব হন। এ সুযোগকে কাজে লাগান কোরিয়ার খ্রিস্টান কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জুন কোয়াং-হুন। তিনি জনসমাবেশের ডাক দেন। যদিও কোরিয়ার সরকার করোনা ভাইরাসে নিয়ন্ত্রণে এ মুহূর্তে যেকোন ধরণের সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। এরপরেও তিনি সিউলের গুয়াংমুন স্কয়ারে তার সমর্থকদের নিয়ে মুন বিরোধী সমাবেশ করেন। সেখানে তিনি আগামি ১৫ এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলকে সমর্থন দেন। আদালত তাকে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের কারণে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান। তবে প্রেসিডেন্ট মুন বিষয়টিকে কতটা সিরিয়াসলি নিয়েছেন তা বুঝা যাবে করোনা আক্রান্ত শহর দেগু সিটি পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উহান পরিদর্শনে যাননি। তবে মুন গেছেন। জাপানি ভাষায় প্রকাশিত জাপানের একটা সংবাদপত্রে দেখলাম, মুন দেগু শহরে যাদের সাথে বৈঠক করেছেন তাদের একজন করোনা পজেটিভ। এখন মুন কী কোয়ারেন্টাইন করবেন? আসলে চীন, জাপান, উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া সংবাদপত্রের কাজ হলো- নিজের দেশ বাদে অন্য তিনটি দেশ নিয়ে মুখরোচক সংবাদ পরিবেশন করা। যাই হোক, সব মিলিয়ে করোনা ভাইরাস কেন্দ্রিক রাজনীতি জমে উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।

এর আগে ২০১৪ সালে ফেরী দুর্ঘটনায় জনসমর্থন তলানীতে গিয়ে ঠেকে দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হি’র। পরে জন অসন্তোষ এমন চরম মাত্রায় পৌছায় যে, তদন্ত করতে হয়। এসময় তার বান্ধবির বিরাট দুর্নীতির সন্ধান পাওয়া যায়, যাতে তার সায় ছিল। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করা হয়। ওই সাবেক প্রেসিডেন্ট এখন দুর্নীতির মামলায় ২৪ বছরের জেল খাটছেন। এই কেলিংকারি নিয়ে একদিন লিখতে হবে। বাংলাদেশের জন্য বড় ধরণের শিক্ষা আছে এ ঘটনায়।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান প্রেসিডেন্টের সামনেও বড় ধরণের একটা ঝুঁকি রয়েছে। সংকটকালে কোরিয়ার রাজনীতিতে একটা ট্রাম্প কাজ করে। তা হলো উত্তর কোরিয়া। দেশে কোন সমস্যা দেখা দিলে প্রেসিডেন্টরা উত্তর কোরিয়া নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে দেন। বর্তমান প্রেসিডেন্টের বাবা উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। মানুষ ভেবেছিলো, সাবেক উত্তর কোরিয়ান একজনের সন্তান হিসেবে কোরিয়া যুদ্ধের তিনি সমাপ্ত ঘোষণা করতে পারবেন। এজন্য তিনি উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে প্রেসিডেন্ট কিম জং ইলের সাথে বৈঠক করেছেন। তবে অগ্রগতি নেই। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং ইল বড়ই ত্যাদোড়। কোন ক্রেডিট তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে দেননি। উল্টা দক্ষিণ কোরিয়া কয়েকবার সহায়তার হাত বাড়ালেও তা নিতে অস্বীকার করে মুখের উপর না বলে দেন। আর এখন তো উত্তর কোরিয়ার সীমান্তই সীল করে দিয়েছেন। সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ।

আমার মনে হচ্ছে এই করোনার রাজনীতিই দক্ষিণ কোরিয়ার আগামি প্রেসিডেন্ট নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।

ছবি- ১: সিউল শহর (লেখক)
ছবি-২ : করোনা আক্রান্ত কোরিয়ার দেগু শহর (কোরিয়ান দৈনিকের ভিডিও থেকে ক্রপ)
ছবি-৩ : প্রেসিডেন্টর ইমেপিচমেন্টর আবেদনের স্ক্রীন শট

দক্ষিণ কোরিয়া
১ মার্চ ২০২০

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৩৩

ঢাবিয়ান বলেছেন: তথ্যবজুল পোস্ট। অবাকই লাগচে যে দক্ষিন কোরিয়ান সরকার জানা স্বত্তেও চায়নার সাথে সম্পর্ক জারী রেখেছে। সিঙ্গাপুর চাইনিজ অধ্যূষিত দেশ হওয়া স্বত্তেও করোনা সং্ক্রমনের একেবারে প্রাথমিক দিকেই চায়নার সাথে সকল প্রকার উড়োজাহাজ যোগাযোগ বন্ধ করেছে।। এমনকি অন্য দেশ থাকা আসা চায়না নাগরিকদেরও সিঙ্গাপুরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। শুধু চায়নায় থাকা সিঙ্গাপুরিয়ানদের চায়না থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। করোনা সং্ক্রমন তাদের মাধ্যমেই কিছুটা হয়েছে । সিঙ্গাপুর থেকে সবচেয়ে বেশী ফ্লাইট যেত চায়নায়। এই কারনে এয়ারলাইন সেক্টর ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে, ব্যবসা বানিজ্য ও তুরিজম সেক্টর দারুন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিন্ত তারপরেঈ সিঙ্গাপুরের সরকার আগামী এপিল পর্যন্ত চায়নার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৫৭

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: কোরিয়ার অত্যাধিক আত্মবিশ্বাস আর উন্নত হওয়ার অহমিকায় পেয়ে বসেছিল। প্রতিদিন কোটি কোটি ডলার খরচ করে রাস্তাঘাট পরিবহন ডিজইনফেক্ট করছে। মনে করেছে, এভাবে প্রতিরোধ সম্ভব। আসলে একটা গোপন খ্রীস্টান মিশনারি সরকারের বারোটা বাজিয়েছে। তারা গোপেন উহান গিয়ে ধর্ম প্রচার করেছে। পরে তথ্য গোপন করে ফিরে এসে ভাইরাস ছড়িয়েছে। সরকার উভয় সংকটে পড়েছে।
একদিকে বাণিজ্য, আরেকদিকে স্বাস্থ্য। সরকার বাণিজ্যকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এই দেশের সরকার এমনই।

২| ০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১১

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা আসলেই ভুল বুঝি। রোগ শোক নিয়ে মানুষ বানিজ্য করে না। করোনা নিয়ে অতি সাধারণ মানুষ যেমন ভীত ও চন্তিত তেমনি দেশের প্রধান ব্যাক্তিরা আরো বেশি চিন্তিত।

০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১৪

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। দোয়া করবেন।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুচিন্তিতভাবে সুচারু মনোভাব প্রকাশ ।

০২ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০১

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ৷ শুভেচ্ছা নিরন্তর৷

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আপনি নিরাপদে থাকুন এবং কোরিয়া সহ সমগ্র বিশ্বের সকল মানুষ নিরাপদ থাকুক।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। পৃথিবীর মানুষ নিরাপদে থাকুক- এটাই প্রার্থনা। ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.