নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নেশা সাহিত্য, পেশা শিক্ষকতা।

সুব্রত দত্ত

পরিশ্রমকে সঙ্গী করে কত মানুষ উর্ধ্বে গেলো, আকাশের ঐ তারার দলে/ চিরদিনই অলস আমি, আছি পড়ে অনন্তকাল এই ধরনীর গাছের তলে।

সুব্রত দত্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাগধারা ও প্রবাদ-প্রবচন বিষয়ক কিছু জিজ্ঞাসা, আপনাদের মন্তব্য একান্ত কাম্য

০৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

[প্রাক-কথন: জীবনের নানা রৈখিক ব্যস্ততায় দীর্ঘদিন সামুতে আসা হয় না। পোস্ট তো দূরের কথা, লগইন-ই করা হয় না। এখনও খুব ব্যস্ততার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি রমযানের মাসটায় আবার ফিরতে পারব ভালোভাবে এবং লেখালেখিতে পূর্ণ মনোযোগও দিতে পারব। আজ বাগধারা বিষয়ক কিছু জিজ্ঞাসা রাখছি আপনাদের কাছে। দয়া করে জানা থাকলে মন্তব্যে জানাবেন।]

বাগধারা বা বাগ্বিধি বিষয়টা আসলে যেকোনো ভাষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা ভাষার সম্পদ এবং ভাষার প্রাঞ্জলতা ও সজীবতার স্মারক। অন্যদিকে হাজার বছর ধরে লোকমুখে চলে আসা বিভিন্ন ‘বিশিষ্ট কথা’র গুরুত্বও কম না। প্রবাদ বা প্রবচন নামে পরিচিত এগুলোও ভাষা ঐতিহ্যগত সম্পদ। এই বাগধারা বা প্রবাদ-প্রবচনগুলোর থাকে মজার মজার ইতিহাস। বিচ্ছিন্নভাবে তার কিছু কিছু জানা থাকলেও কোনো অভিধান আজও সংগ্রহ করা হয়নি। এখন খুব জরুরি ভিত্তিতে অন্তত ৮/১০টা বাগধারা, প্রবাদ-প্রবচনের মূল ইতিহাসটা জানা দরকার। আমি কয়েকটি প্রশ্ন আপনাদের কাছে রাখছি। জানা থাকলে উত্তর দিবেন। এগুলোর বাইরে আপনার নিজ থেকে জানা থাকলে সেটাও শেয়ার করতে পারেন। তাহলে উপকৃত হব। খুব দরকার। অাপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।

১। মান্ধাতার আমল [অর্থ: অতি প্রাচীনকাল]। কোথাও শুনেছিলাম বোধ হয় ‘মান্ধাতার’ কারো নাম। এ সম্পর্কে কিছু জানা থাকলে জানাবেন।
২। কলুর বলদ [অর্থ: নির্বিকারে যে পরিশ্রম করে]। বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু ‘কলুর’ শব্দটার ব্যাখ্যা কি আছে?
৩। লাগে টাকা দিবে গৌরী সেন [অর্থ: অনিশ্চয়তা নির্ভরতা।] এখন প্রশ্ন হচ্ছে ‘গৌরী সেন’ কে?
৪। যত দোষ নন্দ ঘোষ [অর্থ: অসহায়ের উপর অযথাই দোষ চাপানো।] ‘নন্দ ঘোষ’ কে?
৫। তীর্থের কাক [অর্থ: সাগ্রহে প্রতীক্ষাকারী।] এর কি কোনো প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা দাঁড় করানো সম্ভব?
৬। আপনি শুতে ঠাঁই নাই, শঙ্করাকে ডাকে [অর্থ: অন্যের দয়ায় জীবন ধারণ করে আবার অন্যকে সাহায্য করার চেষ্টা।] এখানে প্রশ্ন ‘শঙ্করা’ নামটির সঙ্গে কি কোনো গল্প জড়িত?
৭। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার [অর্থ: ক্ষমতা নেই কিন্তু আস্ফালন আছে।] প্রশ্ন হচ্ছে ‘নিধিরাম সর্দার’ কে ছিলেন? তার পরিচয় কি কেউ জানেন?

প্রশ্নগুলোর উত্তর দরকার। আর ঠিক এমন সব বাগধারা ও প্রবাদ-প্রবচন সম্পর্কে জানা থাকলে সেটাও জানাতে পারেন। উপকৃত হব। উত্তরগুলো আগামিকাল রাত ১০টার মধ্যে প্রয়োজন।

ধন্যবাদ
আপনাদের মন্তব্যের জন্য অধীর আগ্রহী
সুব্রত দত্ত

[বি. দ্র. : একটু সিওর হয়ে মন্তব্য করবেন। সম্ভব হলে তথ্যসূত্র দিতে পারেন।]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫

সঞ্জয় নিপু বলেছেন: আমি ও আপনার সাথে অপেক্ষায় রইলাম উত্তর জানার, দেখি কেউ যদি কিছু বলতে পারে আমার ও জানা হবে,

০৬ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

সুব্রত দত্ত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার জানাশোনার মধ্যে কেউ যদি থেকে থাকেন যিনি এগুলোর উত্তর দিতে পারবেন, তাকে মন্তব্যে মেনশন করতে পারেন। তাহলে আমাদের সুবিধা হবে।

২| ০৬ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭

নতুন বলেছেন:

ছবিতে কুলুর বলদ দেখুন... বেচারার চোখ ঢাকা তাই মনে করলে যে সে হয়তো হেটে চলেছে কিন্তু সে চলছে চক্রকারে এবং তেল ভাঙ্গছে যেটা সে কখনোই উপভোগ করতে পারেনা।

http://www.darashiko.com/2014/12/মান্ধাতা-লোকটা-কে/#.WQ2kAdKGMdU

-- দারাশিকো ব্লগে পেলাম আপনার আরেকটা উত্তর...
একে জিজ্ঞেস করি ওকে জিজ্ঞেস করি – সবাই মান্ধাতার আমলের পারিভাষিক অর্থ বলতে পারেন, কিন্তু মান্ধাতা কে সে সম্পর্কে বলতে পারেন না। শেষে ওয়েবে ঘাটতে গিয়ে নাবীল অনুসূর্যের একটা লেখায় পাওয়া গেল সেই প্রশ্নের উত্তর। মান্ধাতা হলেন একজন রাজা, তার শাসনামল পৌরানিক যুগে। মান্ধাতা হলেন সূর্য বংশের রাজা যুবনাশ্বের পুত্র। মান্ধাতার জন্মগ্রহণের ঘটনা বেশ অদ্ভুত। মাতৃগর্ভ নয়, পিতৃগর্ভে জন্মেছিলেন মান্ধাতা। ঘটনাটা বরং বলি।

যুবনাশ্বের কোন ছেলেপুলে নেই। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সবই বিফল। শেষ উপায় – মুনিদের আশ্রমে গিয়ে যোগ সাধনা শুরু করা যেন একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। দীর্ঘ সে সাধনা তৃপ্ত করল মুনিদের। তারা যুবনাশ্বের জন্য এক যজ্ঞ আরম্ভ করলেন। যজ্ঞ শেষ হতে হতে মাঝরাত। ঘুমাতে যাওয়ার আগে কলসি ভর্তি মন্ত্রপূত পানি বেদিতে রেখে গেলেন তারা। এই কলসির পানি যদি খায় যুবনাশ্বের স্ত্রী, তবেই হবে জন্ম পুত্রসন্তানের। কিন্তু বিধিবাম। সে রাতেই তীব্র তেষ্টা পেল যুবনাশ্বের – উপায়ন্তর না দেখে নিজেই খেয়ে ফেললেন সেই কলসী থেকে এক আঁজলা পানি। সকালে মুনিরা ঘুম থেকে উঠে এই ঘটনা শুনে ঘোষনা করলেন – পানি যেহেতু যুবনাশ্বর খেয়েছে, সন্তান তার গর্ভেই জন্মাবে! অবশ্য মুনিরা নারীর গর্ভধারনের কষ্ট থেকে যুবনাশ্বরকে মুক্তি দিলেন। একশ বছর পরে জন্ম নিলেন মান্ধাতা।

বড় হয়ে মান্ধাতা একসময় রাজা হলেন। পৃথিবী বিজয়ে বের হলেন এবং যুদ্ধ করে সারা পৃথিবীই জয় করে ফেললেন মান্ধাতা। সারা পৃথিবী যিনি জয় করেছেন তিনি কি আর স্বর্গজয় বাদ রাখবেন – সুতরাং চললেন তিনি স্বর্গজয়ে। কিন্তু ইন্দ্র জানালেন – পুরো পৃথিবী জয় শেষ হয় নি। মধুর পুত্র লবনাসুর মান্ধাতার অধীনতা মেনে নেয় নি এখনো। সুতরাং মান্ধাতা ফিরলেন লবনাসুরকে হারিয়ে তবেই স্বর্গজয়ের যুদ্ধ করবেন বলে। কিন্তু ফেরা আর হয়ে উঠে নি মান্ধাতার – লবনাসুরের সাথে যুদ্ধেই নিহত হয়ে গেলেন তিনি।

বেচারা মান্ধাতা। সারা পৃথিবী জয় করেছেন – দীর্ঘকাল শাসন করেছেন কিন্তু এত কাল পরে লোকে কেবল জানে তার নাম আর তার শাসনামল, জানে না কে তিনি আর শাসনামলটা কোন সময়ে। সারা পৃথিবী জয়ের চেষ্টা বাদ দিয়ে নামের সাথে যেন কাজ এবং শাসনামলটুকুও টিকে থেকে সেই চেষ্টায় কিছু সময় ব্যয় করলে বরং ভালো হত। অবশ্য মান্ধাতার আর দোষ কি – বাপের পেটে জন্মালে এমনই তো হবে!
-- দারাশিকো

০৬ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৪

সুব্রত দত্ত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। দুটোর সমাধান হলো।

৩| ০৬ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৮

নতুন বলেছেন: Click This Link

থমেই বলে রাখা যাক, এই প্রবাদপ্রতিম গৌরী কি‌ন্তু কোনও মহিলার নাম নয়। সপ্তদশ শতকে জন্ম নেওয়া গৌরী সেন ছিলেন ব্যবসায়ী নন্দরাম সেনের পুত্র। তাঁরা জাতিতে ছিলেন সুবর্ণবণিক। গৌরীর জন্ম হয় ১৫৮০ সালে হুগলিতে। বড় হওয়ার পর পারিবারিক আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার হাল ধরেন গৌরী। তাঁর সময়ে এই ব্যবসা আরও ফুলে ফেঁপে ওঠে। ব্যবসা থেকে বিপুল অর্থ রোজগার করেন তিনি। তিনি ছিলেন সেই সময়ের বিখ্যাত দানবীর। যেসব গরিব মানুষ সরকারি কোষাগারে তাঁদের দেয় কর প্রদান করতে পারতেন না, গৌরী তাঁদের হয়ে কর দিয়ে দিতেন। সেই থেকেই ‘লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন’— এই প্রবাদের জন্ম।
অনেকে মনে করেন, হুগলির বড়াই লেনে যে গৌরীশঙ্কর শিব মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় তা এই গৌরী সেনই নির্মাণ করেন। ১৬৬৭ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।
তাহলে ‘লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন’— এই প্রবাদের নেপথ্যে একটি বাস্তব ইতিহাস রয়েছে। গৌরী সেন বলে সত্যিই কেউ ছিলেন।

০৬ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮

সুব্রত দত্ত বলেছেন: হুম, আমি অাংশিক শুনেছিলাম। এই তথ্য দিয়ে বোঝা যায়- নন্দ ঘোষ, শঙ্করা বা প্রবাদ বাক্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যক্তির নামের সঙ্গে কোন না কোন ইতিহাস জড়িয়ে আছে। এখন দরকারকে খোঁজখবর নিচ্ছি কিন্তু সত্যি বলতে এগুলো আমাদের সকলেরই জেনে রাখা উচিত। শত হলেও এটা আমাদের ভাষার সম্পদ এবং আমাদের সম্পদ। এ সম্পর্কে ধারনা থাকা উচিত। ধন্যবাদ আরেকবার। খুবই উপকৃত হলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.