নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নেশা সাহিত্য, পেশা শিক্ষকতা।

সুব্রত দত্ত

পরিশ্রমকে সঙ্গী করে কত মানুষ উর্ধ্বে গেলো, আকাশের ঐ তারার দলে/ চিরদিনই অলস আমি, আছি পড়ে অনন্তকাল এই ধরনীর গাছের তলে।

সুব্রত দত্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প ঠুনকো আবেগ [এখানে হিন্দুত্ববাদী ভাবধারা বা কোরবানি বিরোধী কোন মনোভাব নেই]

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩০

১.
বেশ গরম গরম একটা রাত। জ্যাকির ঘুম আসে না। বাবা ফুলস্প্রিডে এসি ছেড়ে ডিমলাইটটা অন করে গেছেন অনেকক্ষণ আগে। মোলায়েম চাদরটা গায়ে দিয়ে তুলতুলে বিছানায় শুয়ে আছে সেই কখন থেকে। তবু জ্যাকির ঘুম আসে না। কাল সকালে বাবার সঙ্গে গরু কিনতে যাবে। লাল রঙের একটা বড়সড় গরু কিনবে। একেবারে নিজেদের গরু, কারো সঙ্গে ভাগাভাগি নাই। তারপর গরুটাকে আদর করবে, ঘাস খাওয়াবে। গরুর সঙ্গে অনেক অনেক সেলফি তুলবে। সাইমাকে ট্যাগও করবে। কত জল্পনা-কল্পনায় ঘুমটা আর আসেই না।

২.
টিনের চালের ছোট ছোট অসংখ্য ফুটো দিয়ে বিশাল আকাশটা দেখতে দেখতে নয়নের আর ঘুম আসে না। আকাশ ভরা তারার মিছিল। ওর খুব ইচ্ছা হয় নিজেও তারাদের সঙ্গে মিশে যায়। কত স্মৃতি ভেসে উঠে ওর মনে। সেই কবে থেকে গরুটার সঙ্গে ওর সখ্যতা। ছোট্ট একটা বাছুর কিনে নিয়ে এসেছিলেন বাবা। দিনটার কথা স্পষ্ট মনে আছে নয়নের। স্কুল থেকে ফিরতেই দেখে উঠানের সামনে ছোট্ট একটা বাছুর বাধা। বাবা বাছুর কিনেছে শুনে ওর আনন্দের শেষ ছিল না। তবে বাবা বলেছিলেন এটা আনন্দের কিছু না, কারণ স্কুল থেকে ফিরে বাছুরটার দেখাশোনা করতে হবে ওকেই। নয়ন সানন্দে রাজি হয়েছিল। তারপর বাছুরটাকে লালন-পালন সবই করতে থাকে নয়ন। একেবারে বন্ধুর মতো হয়ে যায়। লাল গরু বলে নয়ন ওকে ‘লালু’ বলে ডাকে। ডাক দিলেই গরুটা হাম্বা হাম্বা করে নয়নের দিকে তাঁকায়।

৩.
সকাল হয়। মানুষের অশ্রুসিক্ত রাতের ভেতর দিয়েই হেসে ওঠে সূর্য। হাসি-কান্নার উর্দ্ধে সূর্য, তেমনি জীবনও বোধ হয়। মানুষের হৃদয় পোড়ার তীব্র বিকট গন্ধের ভেতর ভাসতে থাকে গরুর গোস্ত রান্নার ঘ্রাণ। মৃত্যুর পূর্বে ডেকে ওঠে প্রতিটি গরুই। সবগুলোই বোধ নয়ন, নয়ন করে নয়ন ঘোরাতে থাকে। জ্যাকি কেবল খুঁজে ফেরে কোন ছবিটায় ক্যামেরার দিকে তাঁকিয়েছিল লালু।


সুব্রত দত্ত
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রি:

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৩

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: কারো কোরবানীর গরুর মা্ংস বা রক্ত ঈশ্বরের কাছে পৌছায় না। পৌছায় শুধু তাকওয়া। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোরবানীর উদ্দেশ্যের চাইতে উপলক্ষ্যটাই বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। এ কারনে কে কত দামী কোরবানী দিতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলে। আর ঈশ্বর চান যেন আমাদের জীবন-মরণ, ত্যাগ-তিতিক্ষা সবকিছু ঈশ্বরের সমীপে হয়।
কোরবানী আমাদের ধর্মিয় রীতির অংশ, যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখন আর তা সঠিক ভাবে মানা হয়না। শুধু গরু নয় অনেক কিছুরই সৃতি মানুষকে পীড়া দেয় তারপরও মানুষ এগিয়ে যায়। আমার লেখায় কষ্ট পেলে আমি দুঃখিত।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৯

সুব্রত দত্ত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আর আপনি সঠিক বিষয়টি ইনডিকেট করেছেন- এতে কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। ভালো থাকবেন।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৬

নেবুলাস বলেছেন: এইযে হৃদয়ে ব্যথা অনুভব করা, নিজের লালিত পালিত গরুকে কোরবানী দেয়া শুধু মাত্র আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য, এটাইতো তাকওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ চাইলে শুধু আমার লালিত পালিত স্নেহের গরু নয়, সব কিছুই কোরবানী করতে প্রস্তুত। কোরবানী মুসলিমদের এটাই শিখিয়ে আসছে। আর এটাইতো কুরবানীর স্বার্থকতা।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১

সুব্রত দত্ত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:০৯

এম এ কাশেম বলেছেন: প্রতিটা গরুই যদি নয়ন নয়ন করে ডাকে ,
বলির পাঠা তবে কাকে ডাকে ?

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩

সুব্রত দত্ত বলেছেন: যৌক্তিক প্রশ্ন করেছেন। এক কাজ করেন- পুরো গল্পটা আবার পড়েন এবং গরু শব্দটা বাদ দিয়ে পাঠা শব্দটা বসিয়ে নেন। তাহলেই প্রশ্নের উত্তরটা পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.