নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিশ্রমকে সঙ্গী করে কত মানুষ উর্ধ্বে গেলো, আকাশের ঐ তারার দলে/ চিরদিনই অলস আমি, আছি পড়ে অনন্তকাল এই ধরনীর গাছের তলে।
আপনি যখন ঢাকা বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তখন তো আপনি সেই সকল প্রতিষ্ঠানকে Own করেন। মানে ব্যাপারটা মোটামুটি আপনার সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের মতো। আপনি হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য কোন ধর্মালম্বী, সুতরাং সেসকল ধর্মের যে কোন অবমাননা প্রতিহত করা আপনার নৈতিক দায়িত্ব। যেমনি আপনি বাংলাদেশি হিসেবে বাংলাদেশের অবমাননাকে মেনে নিতে পারবেন না বলেই ধরে নেয়া চলে। আর আপনি যেহেতু পূত-পবিত্র একজন মানুষ সুতরাং আপনার বাসভূমি বা বাসস্থান নিঃসন্দেহে স্বর্গের মতো। কিন্তু আমার ভাবনা হইলো, স্বর্গেও তো অপ্সরা আছে। আচ্ছা আমি কি স্বর্গে জায়গা পাইলে দুই’চারটা অপ্সরার সাথে শুইতে পারব?! স্বর্গে কি যৌনতা আছে? যদি থাকে তবে যৌনতাও স্বর্গীয়। আপনারা গাছের নিচে, ঝোপের পিছে, হোটেলের রুমে কৃষ্ণলীলা করবেন তাতো স্বর্গীয় টাইপেরই ব্যাপার। এত্ত ক্ষ্যাপার কি আছে? আবার ধরেন আমি ও কোন একজন মন্ত্রী ভাগ্যের চক্রে পড়ে স্বর্গে জায়গা পেয়ে গেলাম। তখন কি মন্ত্রীমশাই আর আমি অভিন্ন হয়ে যাব নাকি তিনি মন্ত্রিত্ব সেখানেও দেখাবেন? শুনেছি ‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে’ তাইলে তো মন্ত্রীমশাই স্বর্গে গিয়ে আমার উপর মন্ত্রিত্ব ফলাবেনই।
এইসব হুদাই বললাম। আসল কথা কি, সত্যটা মেনে নিতে এবং স্বীকার করে নেয়াতে কোন ক্ষতি নেই বরং গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। ক্যাম্পাসগুলো কি র্যাগিং শূন্য?? আমি বিশ্বাস করি না। আবার বড় ভাই বোনদের কথা বা ধমক বা ফাপর মানেই কি র্যাগিং?
আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। হলে থাকতাম না। অনেকের ভাষ্যমতে তাই আমি ক্যাম্পাসকে Own করতে পারিনি। তবে সেটা আমার ভাবনাও নয়। যে প্রাকৃতিক নৈসর্গের ভেতর দিয়ে আমি আমার উচ্চশিক্ষার জীবন পাড় করেছি এবং তা থেকে আমি যা অর্জন করেছি তা আমার ব্যক্তিগত সম্পদ। অন্যরে বুঝাইতে যাওয়ার আমার কোন ঠেকা পড়ে নাই। শুনেছিলাম ৩৬/৩৭ ব্যাচ পর্যন্ত র্যাগিং মারাত্মক পর্যায়ে ছিল। তারপর ৩৮/৩৯ ব্যাচ থেকে তা ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে। আমি হলে না থাকলেও মাঝেমাঝে হলে যেতাম। বড় ভাইরা ডাকতেন। অনেক প্রশ্ন করতেন। হলে না থাকার কারণ জানতে চাইতেন। হলে থাকার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতেন। ভুল বা বেয়াদবি টাইপের আচরণ করলে বকাও দিতেন কিন্তু তাকে শারীরিক বা মানসিক টর্চার বলা যায় না। আমি ৩৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী। আমি কেবল আমার অভিজ্ঞতাটুকু বলছি। এটাকে সামগ্রিক পরিস্থিতি দাবি করছি না। সময় বদলালো। ৪০/৪১ ব্যাচ আসতে আসতে জাবি প্রশাসন র্যাগিং-এর শাস্তির ব্যবস্থা করলো। প্রক্টরের নম্বরে মিসকল দিলেও র্যাগিং-এর প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়া শুরু হল। ৪১ ব্যাচের কয়েকজন শাস্তিস্বরূপ সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও হয়েছিল। প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নানা ছাত্র সংগঠন র্যাগিং বিরোধী প্রচারণা চালাতে শুরু করলো। র্যাগিং-এর শাস্তির নমুনাতে এমন দাঁড়ালো সিনিয়ররা জুনিয়রদের ভয় পেতে শুরু করলো। সে পর্যায়ে আজ ২০১৬ সালে এসে র্যাগিং কতটা গুরুতর অবস্থায় থাকার কথা সেটা ভেবে দেখা দরকার। আর গত ৪৪/৪৫ ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষার সময়েও ফেসবুক ও ব্লগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং নিয়ে একটা পোস্ট ভাইরাল হয়ে উঠেছিল। যেখানে মোটামুটি র্যাগিংকে যৌন নির্যাতনের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে জানা গেছে পোস্টদাতা জাহাঙ্গীরনগরের কেউ না। তিনি কিছু তথ্যের ভিত্তিকে একটা রসালো গল্প টাইপের পোস্ট দিয়েছিল। ঢাবির ক্ষেত্রেও এমন কিছু ভাইরাল পোস্ট ছড়াতে দেখা যায় ভর্তি পরীক্ষার আগে। সবগুলো পোস্টের শুরুতে একই ধরনের কথা। “দীর্ঘ দিন প্রচণ্ড মানসিক পীড়ায় র্যাগিং সহ্য করেছি কিন্তু ভেবে দেখলাম ক্যাম্পাসের সম্মানে কথা ভেবে চুপ থাকলে পরবর্তী ব্যাচের ছোট ভাই-বোনদেরও এই পীড়া সহ্য করতে হবে। তাই মুখ খুললাম সাহস নিয়ে।” মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্যগুলোর শুরুতে একটা কমন কথা ছিল দেবীর স্বপ্ন নির্দেশ দিয়েছেন বলে লিখতে বসা। তার কারণ ছিল কাব্যগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো। একটা বিষয় আমরা শিক্ষিত হয়েও বুঝতে পারি না যে ইন্টারনেট জগৎটা গণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করে। গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মাথা গোনা। মানে বুঝলেন? মানে আপনি একজন নেতা। আপনার পেছনে কতগুলো মাথা দাঁড়িয়ে আছে সেটা দিয়ে আমার নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করা। ইন্টারনেটও তেমন। তাইতো এশীয় গাঁধাদের দিয়ে অনেক অনলাইন প্রতিষ্ঠান বারবার তাদের সাইট ভিজিট করানোর চাকরি দিয়ে থাকে। যে সাইটটাতে সবথেকে বেশি ভিজিটর সেই সাইটটা সবার ওপরে থাকে। ভর্তি পরীক্ষার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় লিখে সার্চ সবচেয়ে বেশি হয়। তাতে এই শিরোনামের পোস্টগুলো এসে পড়ে। আর র্যাগিং আর যৌনতা টাইপের শব্দগুলো মানুষের পছন্দের শব্দ হওয়ার ঐ পোস্টগুলো খুলে দেখা বা পড়ার আগ্রহ অনেকের হয়। মাঝখান দিয়ে পোস্টদাতার ফলোয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। কমেন্টে তার গালিগালাজ শুনতে হলেও সে একটু হজম করে নেয় কারণ একটা কমেন্ট তার পোস্টটাকে আরও হাজারটা প্রোফাইলের কাছে বেশিক্ষণ উপস্থিত রাখে। বিষয়গুলো তো সস্তা রাজনীতির অংশ। তবু অনেকেই মূর্খের মতো আচরণ করে বসেন। আমার ক্যাম্পাসকে অপমান করা হচ্ছে আমি চুপ করে বসে থাকব! আরে ভাই, সবার অপমান সে-ই গায়ে লাগায় যার অপমানিত হওয়াই স্বভাব। আপনার ক্যাম্পাসকে অপমান করা হলো আপনি ক্ষেপে অপমানকারীর উপর তেড়ে গিয়ে কী বোঝালেন?? তার থেকে ইতিবাচক দিকগুলো দেখান। ঢাবি ও জাবির শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে বিশাল একটা ইতিবাচক সার্পোট পেয়ে থাকেন কেবল সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্কের ইতিবাচকতার জায়গা থেকেই। মনে পড়ে যে ভাইরা ধমক দিতেন তারাই এখন ভালোবাসেন। ধমক দেয়া মানেই র্যাগিং না। র্যাগিং-এর ব্যূপত্তিগত ও আভিধানিক অর্থ না জেনে যারা সস্তা পাবলিসিটির জন্য পোস্ট দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে তাদের জন্য আমাদের পাল সাহেব উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে থাকবেন। ট্যাক্স-এ চাকরি করে ফাল পারতে পারতে খালে গিয়ে পড়েছেন। সুতরাং আপনি যে-ই হউন না কেন আপনার মিথ্যাচার বেশিদিন টিকবে না। আবার আপনি ক্যাম্পাসকে Own করতে করতে ক্যাম্পাসকে ড্রেনে নিয়ে ফেলবেন না দয়া করে। ক্যাম্পাসকে যদি অনেক ভালোই বাসেন তাহলে যৌক্তিক আন্দোলনগুলোতে অংশগ্রহণ করেন, তখন লাইব্রেরি বসে পড়ার অজুহাত দিতে যাবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি বসে বসে এমপিথ্রি বা ওরাকলের বই পড়ার জন্য বানানো হয় নাই।
[বি. দ্র: ফ্যাক্টকে ফ্যাক্টর হিসেবে ব্যবহারকারীদের সাধুবাদ। আপনারা অনেকেই সফলতা পাচ্ছেন। আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল। আপনারা একদল ফলোয়ার নামক ভেড়ার দল তৈরি করছেন।]
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:১৫
সুব্রত দত্ত বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১
নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: নিজের ইউনিভার্সিটির সম্মান রক্ষার নামে মুলত বহুকাল ধরে চলে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাচারকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। এসব নিয়ে যত বেশি আলচনা হবে তত বরং ভাল। তাহলেই বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান র্যাগিং , নোংরামি দূর করার বিষয়ে সচেতনতা তৈরী হত। কিন্তু একজন সুশান্ত পালকে শাস্তি দিয়ে, মান্সিক রগী বানিয়ে মুলত এই ইস্যুটার মুখে তালা মারা মেরে দেবার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:১৯
সুব্রত দত্ত বলেছেন: সুশান্ত পাল আমার আলোচনার টপিক নন। আপনি বোধ হয় এই বিষয়টাকেই প্রাধান্য দিলেন। তবে আপনার কথা যৌক্তিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে সমালোচনার প্রয়োজন আছে কিন্তু তাই বলে মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেয়া ঠিক না। তিনি সমালোচনা করেননি করেছেন মিথ্যাচার।
যাহোক, আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫
মার্কো পোলো বলেছেন:
চমৎকার! আপনি আসল কথা বলে দিয়েছেন।
পাল সাহেব হিরো সাজতে গিয়ে আজকে জিরো হয়েছেন উনার নিজের কৃতকর্মের জন্য। র্যাগিং নিয়ে যেরকম কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন তাতে শাস্তি প্রাপ্য ছিল।
পাল সাহেব কোনদিন হলে থাকলো না, অথচ হল সম্পর্কে অশ্লীল কথা বললেন। সেখানে নাকি চায়ের সাথে বীর্য মিশিয়ে জোর করে খাওয়ানো হয়। আরো কত কি....। আমরা ৬ বছর কাটিয়ে দিলাম অথচ এসব কথার বিন্দুমাত্র জানা হলো না।
পাল সাহেবের ভক্ত, শিষ্যগণ এখন উনাকে জাতীয় বীরের ভূমিকায় প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। পাল সাহেব নাকি সত্য বলেছেন। সে সত্য বলেছেন কিনা সেটি পালের ভক্তদের অনুরোধ করবো হলে গিয়ে যেন খোঁজখবর নিয়ে আসে। পাল সাহেব সত্য বললে সাথে সাথে ক্ষমা চাইতো না।
আবার অনেক শিষ্য বলতেছে সে তো ক্ষমা চেয়েছে, ক্ষমা করা যেত না! কেউ আপনাকে লাখ লাখ মানুষের সামনে গালি দিয়ে, কুরুচিপূর্ণ কথা বলে, মিথ্যাচার করে ক্ষমা চাইলো, ক্ষমা করবেন! এতো বাজে, কুরুচিপূর্ণ কথা বললে আপনাদের মহত্বও তখন সাগর অতলে হারিয়ে যাবে।
অনেকে বলতেছে ঢাবির সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ঢাবির সম্মান ক্ষুণ্ণ হওয়া কি এতই সোজা যে গাছে ঢিল মারলেন আর ফল সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেল! তারা বলে ঢাবির মামলা করা উচিত হয়নি, কোন প্রতিষ্ঠানকে তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ঠিক হয়নি। অথচ তাদের মাথায় সহজ কথাই ঢুকছে না মামলা ঢাবি কর্তৃপক্ষ করেনি, মামলা করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী।
কিছু লোক আছে যাদের কাজই হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করা। সেটি বুঝে হোক না বুঝে হোক।
আজকের সেরা পড়লাম। ধন্যবাদ আপনাকে।