নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিশ্রমকে সঙ্গী করে কত মানুষ উর্ধ্বে গেলো, আকাশের ঐ তারার দলে/ চিরদিনই অলস আমি, আছি পড়ে অনন্তকাল এই ধরনীর গাছের তলে।
গতকাল পালিত হলো মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। সারাদিন টিপটিপ বৃষ্টিতে বন্দি ছিলাম ঘরে। এমনিতে কোরবানির সময়টুকুতে ঘরে অবস্থান করলেও ঈদের দিনটা ঘুরে ফিরে, বন্ধু-বান্ধবীর বাসায় সেমাই-নুডুলস-চটপটি খেয়ে বেড়াই ছোটবেলা থেকেই। দুঃখজনক, সেই অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। যাহোক গতকালটা একদম গৃহবন্দি থেকেই কেটে যায়। সন্ধ্যায় বৃষ্টি কমে। একটু হাঁটব ভেবে বের হলেও আবার বৃষ্টি নামে, তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরি। তবে যেটুকু সময় বাইরে ঘুরি একটা অদ্ভুত বিষয় চোখে পড়ে। সত্যি বলতে বিষয়টা অদ্ভুত না, কেবল সংখ্যাধিক্য অবাক করে। রেললাইন ধরে হাটছি। দেখলাম জায়গায় জায়গায় মানুষের জটলা। দর কষাকষি চলছে। বিষয়টা বোঝার জন্য একটু উঁকি মেরে দেখি পলিথিনের প্যাকেটে গরুর গোস্ত। বিক্রি হচ্ছে। বেশ ভিড় ওখানে। একটু এগিয়ে রেল ক্রসিং-এর সামনে গিয়ে দেখি রীতিমতো বাজার বসে গেছে। বেশ ভিড় মানুষের। জানেন এই গোস্ত কেনার খরিদ্দার কারা? এরা নিম্নবিত্ত বা নিম্নবর্গের না, এরা কেউ চাকরি করে গার্মেন্টসে, কেউ ছোটখাটো ব্যবসায়ী, মাকেটিং-এ জব করে ইত্যাদি। এদের পেশাগুলো মধ্যবিত্তভিত্তিক, এদের পোশাকটা একটু ছিমছাম, হাতে ক্যামেরা ফোন। উন্নত জীবন বলতে মোটাদাগে কী বোঝায় সেটা তাদের জানা আছে, শিক্ষাদীক্ষাতেও একদম পিছিয়ে নেই। অথচ দেখুন কতটা করুণ তাদের ঈদ। ছোট্ট বাচ্চাটা ঈদের গরু কিনব কিনব করে হয়তো সারাটা বছর নেচেছিল, সহপাঠীর প্রশ্নে উত্তর দিতে না পেরে চোখ মুছে ফিরে এসেছিল। লোকটা সারাদিন ঘরে বসে বা পথে পথে ঘুরে মানুষের গরুগুলো পরখ করেছে। পাশের বাড়ি থেকে বা আশেপাশে নিকট কেউ এক পোটলা মাংস পাঠানোর পর চুলায় আগুন ধরিয়েছে খোকার মা। বড় মেয়েটা তো বড় হয়েছে, ফেসবুকে আইডি আছে, তাই অন্যদের গরুগুলোতে লাইক দিয়েছে 'পশুপ্রেম' মার্কা পোস্টগুলোও হয়তো ভালো লেগেছে ওর। ভাবতে পারেন এই শ্রেণির মানুষের সংখ্যা কত হতে পারে? দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ ভাগ? আমার মনে হয় না। সম্প্রতি বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। ধরলাম এক গামলা অর্থনীতির সঙ্গে এক ড্রাম রাজনীতি মিশিয়ে মধ্যম আয় বানানো হইছে কিন্তু জীবনযাত্রার মানটা দেখেন। এসি বাসগুলোতে যাত্রীর চাপ দেখেন, বসুন্ধরা শপিংমলে বা যমুনা ফিউচার পার্কে ভিড় দেখেন, এরা সব্বাই ধনী? না, এটা আসলে জীবনযাত্রার মান না রুচির মান নির্দেশ করে। আমরা অন্তত রুচিগত ভাবে অনেকটা এগিয়েছি (এক্ষেত্রে জ্ঞানগত বিষয়টা অনুপস্থিত)। ফলে ৪০/৫০ হাজার টাকা দিয়া গরু কোরবানি দেয়ার সামর্থ অনেকেরই নাই, আবার মানুষের বাড়ি গোস্ত চাইতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। অগত্য ঐ গোস্তের দোকানে ভিড় বাড়া। এটা আমার কাছে ইতিবাচক নয়। আমি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ হিসেবে মধ্যবিত্তের এই করুণ দশা মেনে নিতে পারছি না। পুরোটাই পুঁজিবাদী জীবন ব্যবস্থার নেতিবাচকতার সাক্ষর।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২
বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: কিছুদিন আগে এক মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিয়ে এসেছি। এটা ছিল আমার কুরবানি। স্রষ্টা খুশি হোক বা না হোক।
গবিরকে সাহায্যই যদি করতে হয় মহল্লার সবাই মিলে কি গবিরকে স্বাবলম্বী করার কর্মসংস্থান দেয়ার কোন উদ্যোগ নিলে কি হত না? সমাজ ও দেশের মঙ্গল হত না? এখন তো আপনার টাকা মাংস হয়ে গরীবের পায়খানা হয়ে বের হবে আর কিচ্ছু হবে না।
কেন প্রাণীকে কচুকাটা করেই তাদের গারিবি মিটানো লাগবে ? প্রোটিন ? সেটা তো ডালেই যথেষ্ট আছে , পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া। কেন মাংসের নামে নানা রোগবালাই দিচ্ছ গরীবের ঘরে?
যেকোন প্রকার প্রাণীকে হত্যা, প্রাণীজ খাবার খাওয়া ও প্রাণীজ পণ্য ব্যবহার করা অনৈতিক, অপ্রয়োজনীয়, অস্বাস্থ্যকর, অমানবিক ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। জাজমেন্টে না আগে গিয়ে লেখাটা পড়ুন