নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্পেস-টাইম

there is no problem in the heavens and earth ;) problem lies in three places... beneath, between and within the hells.

গোলাম দস্তগীর লিসানি

বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।

গোলাম দস্তগীর লিসানি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ড. তাহির উল ক্বাদরীকে "শিয়া" ডাকা এবং অধমের "সুন্নি" দর্শন

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৬

ডক্টর তাহির উল ক্বাদরী, তাঁর ৬,০০০ লেকচার বা ৮০০ বইতে পরিচিত নন, বরং পরিচিত তাঁর তীক্ষ্ণ ধর্মজ্ঞান এবং তার আরো তীক্ষ্ণ অসাধারণ বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্তের কারণে। ড. ক্বাদরীর "শাইখুল ইসলাম" রূপকে চিনি। চিনি তাঁর "আল মুহাদ্দিসুল আকবর" রূপকে। তাঁর "মুজাদ্দিদুদ্ দ্বীন ওয়াল উম্মাহ্" রূপকে। তিনি শতাব্দীর মুজাদ্দিদ কিনা সে সার্টিফিকেট দেনেওয়ালা আমরা কেউ নই, তবে তিনি নি:সন্দেহে একজন উচ্চতর মুজাদ্দিদ। নি:সন্দেহে একজন বিরাট বড় ফক্বীহ্ যিঁনি "মুজতাহিদ" এর দরজায় কড়া নাড়ছেন।

এমন কোনও ফিক্বহি মাসআলা পেলাম না, যেটার সবচে নমনীয়, গ্রহণীয় এবং তীব্র অনুভূত ব্যাখ্যা প্রতিবার এই ক্বাদরী সাহেবই দেন না। বৃক্ষ, তোমার নাম কী? চিরদিনই ফলে পরিচয়। টাইটেলে পরিচয় নয়।

সেই ডক্টর ক্বাদরীকে চিনি না, যিনি ইনকিলাব করেছেন, রাজনীতি করেন। এর সাথে কোন প্রয়োজন নেই।

তবে সেই ড. ক্বাদরীকে চিনি, যিঁনি বলেছেন,

রাসূল দ.'র পরিবারের প্রতি ভালবাসা রাখলে যদি রাফেজি (শিয়া) হয়,
তবে জেনে রাখো, হে মক্কায় হজ করতে আসা মুসলিম বিশ্বের মানুষেরা,
তোমাদের ইমাম শাফেয়ি'র চেয়ে বড় শিয়া জগতে আর নেই।

হে রাসূল দ.'র পরিবার, ভালবাসি আপনাদের সবাইকে,
কেননা, নামাজে আপনাদের প্রতি সালাত প্রেরণ না করলে নামাজই কবুল হয় না।

হে সাধারণ মুসলিমরা শুনে রাখো,
মাওলা আলী রা. ও তাঁর পরিবারের প্রতি ভালবাসা ও আনুগত্য শিয়াত্ব নয়,
বরং তা চিরকালই ঈমান ছিল যা তোমরা ভুলতে বসেছ।
(কবিতাটিও ড. ক্বাদরীর পয়দায়িশ নয়, বরং ইমাম শাফেয়ি রা.'র লেখা।)

হ্যা, ডক্টর ক্বাদরী শিয়াদের সাথে সসম্মানে বসেন। হ্যা, তিনি তাদের বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহর মধ্যে একটা মত হিসাবে মনে করেন।
হ্যা, তিনি বছরের পর বছরের পর বছর শিয়াদের ইমাম বাড়া (ইমাম বারগাহ্) গেছেন, ইরানে গেছেন, ইরানের বিভিন্ন আয়াতুল্লাহর সাথে কথা বলেছেন। হ্যা, তিনি দশই মুহররম কালো পোশাক পরিধান করেছেন। হ্যা, তিনি সেই ড. তাহির উল ক্বাদরী যিঁনি প্রকাশ্যে বারংবার বলেছেন, বলো, ইয়া হুসাইন রা.! ভয় ও জড়তা ছাড়ো এবং বলো ইয়া হুসাইন রা.!

ড. ক্বাদরী এমন একজন মানুষ, মাত্র একজন ব্যক্তি যার উপর আশা রেখে লক্ষ লক্ষ শিয়া বলেছে, এমন একদিন আসবে, যেদিন ড. তাহির উল ক্বাদরীর কারণে আল্লাহর রহমতে শিয়া ও সুন্নি এক হয়ে যাবে। বিরাট পাপ করে ফেলেছে শিয়া এবং সুন্নিরা এই আশা করে?

ড. ক্বাদরীকে শিয়া বলার ১,১১১ টা কারণ এগারো শরীফ করনেওয়ালা ভাইরা (ইনক্লুডিং মি) পাবেন। কিন্তু ১ টাই যথেষ্ট তাঁকে শিয়া না বলার জন্য।

কারো মুরোদে কুলালো না, ড. ক্বাদরী ৬০ পর্বের "আলোচনা" করলেন শিয়াদের সাথে। নামে আলোচনা, আসলে বিতর্ক।
এর মধ্যে অর্ধেকই তাঁর।
এর যে কোন একটা পর্ব দেখলে যে কোন শিয়া সুন্নি হয়ে যাবে। যদি তার মন খোলা থাকে।
এই আলোচনায় এমনও পাঁচটা মিনিটের কথা আছে, যে কথায় একজন শিয়া পাক পাঞ্জাতনের নামে পাঁচবার সুন্নি হয়ে যাবে।

তিনি যে কত শত পথে এই টিভি বিতর্কে প্রমাণ করেছেন, যে শিয়া ভাইরা আবেগে বাড়াবাড়ি করছে, মূল বিষয় ছিল অন্যরকম। আহলে বাইত বা নবী পরিবারের ইমামগণ চার খলিফা এবং লক্ষ সাহাবীরই সঙ্গী ছিলেন। তাঁদের বিরোধী ছিলেন না!

তিনি কেমন শিয়া, যাঁকে গালাগালি করে শিয়া আলিমরা তান্ডব করেন টিভিতে! বারবার বলেন, যে নজদের পানি পান করেছে! ড. ক্বাদরীর বিরুদ্ধে নজদের পানি পান করার অভিযোগ আনেন শিয়া আলিমরা। তাঁরা ড. ক্বাদরীকে সালাফি-আহলে হাদিস-ওয়াহাবি-খারেজি সাব্যস্ত করতে চান খোদ টিভি প্রোগ্রামে।

এমন একটা বিতর্কও ড. ক্বাদরী ছাড়া কারো করার মুরোদে কুলালো না, যে করে দেখায়। হায়, "সুন্নি" দের লজ্জা, "শিয়া" ডক্টর ক্বাদরী লক্ষ লক্ষ শিয়াকে সুন্নি বানায়।

তবে এমন সুন্নি না হওয়াই ভাল, যা দলভারি করে দলবাজি করবে। বরং বিনীত মুমিন হতেই আমরা আগ্রহী। আমি সুন্নি, সুতরাং আমি জান্নাতি-বিষয়টা কিন্তু এ্যাত্তো সহজ না। জাহান্নামে কে পুড়বে এটা আল্লাহ্ নির্ধারণ করবেন। তাঁর সর্বক্ষমতার কথা যেন ভুলে না যাই, রাসূল দ. কাকে শাফাআত করবেন এটা রাসূল দ.'র ইচ্ছা, তাঁর দয়ার কথা যেন ভুলে না যাই। এককালে বনী ইস্রাঈলও বলত, আমরা জাহান্নামে যাবো না, আর গেলেও বেশিদিন থাকবো না। আল্লাহর এ কথা সহ্য হয় নাই। কুরআনে আছে। সুন্নি সঠিক পথ, এটাতো স্বত:সিদ্ধ। সুন্নি সঠিক পথ, এটাতো বহুভাবে প্রমাণিত। কিন্তু অহংকার এবং দলবাজির হাদিসগুলোও আমাদের মনে রাখা চাই। যার অন্তরে এক তিল পরিমাণ অহঙকার, সেটা সুন্নিগিরির অহংকার হোক, তার ওই তিল আগে বের করা হবে। তারপর জান্নাত। ইসলামের একটা মূল শর্ত বিনয়ী হওয়া, তাক্বওয়াবান হওয়া, ভালবাসাপূর্ণ হওয়া, বিভক্ত না হওয়া, দাওয়াহ্ করা, মধ্যপন্থী হওয়া, বাড়াবাড়ি না করা, সহনশীল হওয়া, ভিন্নমতকে মমত্বের সাথে বুঝতে পারা। একদল মানুষ ভালবাসা দেখাতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে সাহাবাদের সাথে বেআদবি করে শিয়া হয়ে গেছে, এখান থেকে আমাদের শেখার আছে। আমরা বাড়াবাড়ি কখন করে ফেলি... কখন আমরা তাঁর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাহর বাইরে চলে যাই সংজ্ঞামত... আমি মধ্যপন্থী আমার উম্মাহ্ মধ্যপন্থী। স-ব মনে আছে, শুধু আমিত্বটাকে ছাড়া গেল না। আরে ব্যক্তির আমিত্বর চেয়ে দলবাজির আমিত্ব বেশি ভয়ানক। এটাই এক প্রকার গোত্রবাদ, আসাবিয়্যাহ্।

আল্লাহ্ আমাদেরকে তাক্বওয়াবান করে তৌহিদে ডুবিয়ে রাসূল দ.'র ভালবাসায় বিলীন করে দিন। এই বিলীনতার আলোকে আলোকিত করুন আমাদের উপলব্ধির জগৎকে। ধর্মবোধ, দলবোধ ও মানবতাবোধকে। সুস্পষ্টভাবে পৌছে দেয়ার বাইরে আমাদের আর কোনই করণীয় নেই।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:১৬

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল লেখাটি।
++++

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৭

মুদ্‌দাকির বলেছেন: বিভেদের চেয়ে বড় ব্যবসা আর নাই। এই সামু তেই আমারে গালি দিয়ে একটা পোষ্ট দেন হিটের বন্যা হয়ে যাবে। আমার বা অন্য কাউকে ভালো বলে একটা পোষ্ট দেন গুটি কতক হিট হবে। দলাদলি করেন একদল সাথী পাবেন সবাইকে মৌলিক কোন ব্যাপারে এক হতে বলেন কেউ আসবেনা।

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৭

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাল লাগল আপনার লেখাটা। আল্লাহ ওনার প্রচেষ্টাকে কবুল করুন এবং শিয়া ভাইদের সঠিক বুঝ দান করুন।
প্রসংগতঃ আমি বেশ কয়েক বছর ধরে ইরানে আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.