নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।
সাত বছরের মেয়ে শিশু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে শোয়া। তার সাথে মা নেই, বাবা নেই। কারণ, নিতান্ত ভালমানুষ সহজ-সরল বাবাটা, যিঁনি ভাস্তে-ভাগ্নেদের কাছে 'বেহেস্ত মামা' নামে পরিচিত, তাঁর পা ভেঙেছে দু মাসও হয়নি।
সাত বছরের মেয়ে। ব্লাড ক্যান্সার।
একদিন তোর হইবরে মরণ!
আমার এখন রক্ত চেয়ে স্ট্যাটাস, পোস্ট দেয়ার কথা। কিন্তু সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যায়। একই ঘটনা আরেকজনের হল। তিনিও এ বাচ্চাটার জন্য রক্ত চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে তার কিছুক্ষণ পরই নিজের ফেবু অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভ করে দিলেন। তাঁর কাছেও পুরো বিষয়টা অর্থবিহীন মনে হচ্ছে।
'ব্লাড ক্যান্সার' শব্দটার সাথে লিউকোমিয়া'র একটা যোগসূত্র পর্যন্তই জানতাম। সার্চ করে পেলাম, বহু ক্যান্সারকেই ব্লাড ক্যান্সারে ফেলা হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মরণের দশ বড় কারণ বেশ চমকে দিল।
পেলাম, মরণের মূল কারণ বিলাস। মরণের মূল কারণ অনিয়ন্ত্রণ। মরণের মূল কারণ মরণের কথা বেমালুম ভুলে যাওয়া।
http://www.who.int/mediacentre/factsheets/fs310/en/
মরণের প্রথম, দ্বিতীয় ও দশম কারণই হার্ট ডিজিজ। আর হার্ট ডিজিজের একাত্র কারণ নিয়ন্ত্রণের অভাব।
তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম কারণ ফুসফুস, শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে জড়িত। এটা হয়ই শুধু সচেতন নিয়ন্ত্রণের অভাবে। আত্মসংবরণের অভাবে। মৃততুর সম্ভাব্যতাকে মাথায় না রাখার কারণে।
অষ্টম কারণ, ডায়াবেটিস সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণের সাথে সম্পৃক্ত, আর কিছুই না। নিজেকে পদ্ধতির ভিতরে নিয়ে আসার অনীহা, অর্থাৎ কর্মফল সম্পর্কে অসচেতনতাই এর গোড়া।
পথ-দুর্ঘটনা আর ডায়রিয়া জনিত রোগ- এ দুটাও প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিয়ম মানা ও পদ্ধতির আদলে আসা-না আসার উপর নির্ভরশীল।
এইডসের কথা আর বলার কী থাকতে পারে! শীর্ষ দশ কারণের নয়টার জন্যই যেখানে ভিকটিম স্বয়ং দায়ী, সেখানে শুধু আমরা এই এইডস ধরে দায়ী করি ভিকটিমকে।
পৃথিবীব্যাপী রোগগ্রস্ত মৃততুর শীর্ষ দশ কারণ দখল করে আছে মোট রোগে মরণের ৫০% এরও বেশি স্থান।
এর পুরোটাকেই মাত্র চারটা শ্রেণীতে ফেলতে পারি আমরা-
১. ভোগের ক্ষেত্রে অসংযম। দশটার মধ্যে পাঁচটাই সরাসরি ভোগ বিষয়ক- হার্ট, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, এইডস।
২. শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে জড়িত ভুল। বায়ু দূষণের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করার কারণে শীর্ষ দশের মধ্যে তিনটা রোগে মরণ। ড্রাগস-ধূমপান তো বাদই।
৩. ক্ষুদ্র ক্ষেত্রে সচেতন দৃষ্টির অভাব, বা অভ্যস্ত শৃঙ্খলার অভাব। ডায়রিয়া, পথ-দুর্ঘটনা... এবং দশটার মধ্যে এইডস বাদে বাকী নয়টাই এর মধ্যে পড়ে।
৪. মানসিক পরিপূর্ণতার অভাব। হার্ট জিজিজেস, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসের সাথে সাথে শ্বাসকষ্ট (ত্রিশলাখের বেশি মরনের কারণ বছরে) সম্পূর্ণ মানসিক স্থিতি ও মনের অবস্থার সাথে জড়িত।
আসলে রোগ আমাদের মারছে না, আমরা আমাদের মারছি, রোগ শুধু একটা কারণ রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। ঠিক এই পয়েন্টেই আধ্যাত্মিকতার সূচনা বলে ধারণা করি। কারণ এই সমস্ত কিছুর সাথে কীভাবে কীভাবে যেন আধ্যাত্ম্য জড়িত হয়ে পড়ে প্রতিনিয়ত। পয়সা আছে, সবই আছে, তবু খাবারে সংযম করো, শ্বাসের সাথে কাজ করো, নিজেকে কঠিন নিয়মানুবর্তীতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করো, সর্বসচেতন হও... এ কথা প্যাকেজ আকারে আধ্যাত্ম্য ছাড়া আর কিছু কোনদিন বলে না, কোনদিন দেয় না।
ধর্ম বলব না, ধর্ম আধ্যাত্ম্যের এক খোলসমাত্র।
আপেলের খোসাতেও উপকার আছে, কিন্তু খোদ খোসা কখনোই আপেল নয়। এই আধ্যাত্ম্যের তাসাউউফ নামটাকেই পরিগ্রহণ করলাম, তারপর নিজেকে অধিগ্রহণের চেষ্টা...
আজ বহুদিন পর মনে পড়ে গেল, যখন মানসিক অস্থিতির জন্য মনে করতাম আজকেই শেষদিন। অবশ্যই আজকে শেষ দিন। হায়, যদি বাঁচতাম, তবে কী-ই না করতাম!
বেঁচে শুধু আধ্যাত্ম্যের দিকে নতুন করে ফেরা হয়েছে। সেই কথাগুলো মনে পড়ে গেল, রে হাসন রাজা... একদিন তোর হইবরে মরণ!
২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩৬
প্রামানিক বলেছেন: লেখাটা পড়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম। আসলে তো আমারও ওই অবস্থা।
৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭
জাফরুল মবীন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫১
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩৩
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভোগ-বিলাসের মাত্রা জীবনযাত্রার অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলছে।। আজকাল কেএফসি,ম্যাকডোনাল্ড বা বুমার্সের খাওয়া না হলে,ইজ্জতই থাকে না।। মনে থাকে না এদের খাবারগুলি আর ফার্ষ্টফুডই বেশীর রোগের মূল কারন।। তবুও তা খেয়ে যাচ্ছি,ডাঃ এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত অগ্রাহ্য করে।।
লেখাটি পড়ার পর ২/৪জনও বিরত হয় তবেই তা হবে স্বার্থক।। ধন্যবাদ।।
৭| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:২৭
নস্টালজিক বলেছেন: লিসানী ভাই, আপনার লেখা পড়ে আমি অভিজ্ঞ হই, প্রজ্ঞা বাড়ে আমার।
আপনার লেখায় যে আধ্যাত্ববাদ আবিষ্কার করি, তার তালাশ আমার শুরু হয়েছে কেবল, কিংবা হয়তো শুরু হয়নি এখনও।
পরম করুনাময় আপনাকে আর সুন্দর শব্দচয়ন করবার তওফিক দান করুন।
৮| ১৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:০৪
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: সময় চলে যাচ্ছে, কারো কোন দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই- এইটেই আমাদের বড় ভুল। মেডিক্যাল সায়েন্স তারই প্রমাণ তুলে এনেছে।
চমৎকার লেখা, বরাবরের মতই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৫৭
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আসলে জীবনকে উপভোগ নয় জীবনকে সটীক ভাবে নিয়ন্ত্রণ ও চেনাজানা এবং আত্তসচেতনতার মধ্য দিয়েই এইসব বড় বড় মরনব্যাধি থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব । ধন্যবাদ সচেতনতা পোষ্ট প্রসবের জন্য ।
রে হাসন রাজা... একদিন তোর হইবরে মরণ! সেটাই আসলে সত্য ।