নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।
একটা শিশু পাইপে আটকা পড়ল। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা হল। পারা গেল না। সে মরার পর তাকে তোলা গেল। তাও বেসরকারি চেষ্টায়। দায়ী পক্ষ কারা? আওয়ামীলীগ: কারণ এটা সাজানো নাটক। আর্মি ও ফায়ার সার্ভিস: কারণ তারা অভিযান পরিত্যাগ করেছে। বিএনপি: কারণ তারা সমাবেশ ডেকেছিল। পাইপের মালিকানার প্রতিষ্ঠান: কারণ সেখানে শিশু পড়তে পারে।
আমাদের বাঙালিদের এই একটা শিশু আটকে পড়ার পর থেকে যে আবেগ দেখা গেল, সেই আবেগ দেখে যে কেউ মনে করবে বাঙালি বুঝি পৃথিবীর সবচে মমতাময় জাতি। বিশ্বাস করুন, কাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত আমি এ বিষয়ে কোন খবরই নেইনি। হোমপেজে যেটুকু এসেছে, ব্যস। একবারো টিভির সামনে যাইনি। টিভির সামনে থেকে সরে গেছি। এবং না কাউকে কিছু জিগ্যেস করেছি না পত্রিকা পড়েছি।
এই পার্টিকুলার কাজটার একটা কারণ আছে। বাঙালি মমতাময় জাতি নয়। বাঙালি হুজুগের জাতি। আত্ম-উদ্দীপনায় গতিবৃদ্ধিপ্রাপ্ত আবেগের জাতি। বাঙালি ট্রেন্ডি জাতি। ট্রেন্ডি। ব্যস। আমি যদি এটা নিয়ে একটু হুলস্থূল না করি, তাহলে ক্যাম্নে চলে? বাঙালির কোটি কোটি এমন শিশু আছে, বাঙালি সেইসব শিশুকে হাসিমুখে বিষ খাওয়ায়। ঢেলে ঢেলে বিষ খাওয়ায়।
যত মানুষ টিভির সামনে হা হুতাশ করল,
যত মানুষ কোটি স্ট্যাটাস-মন্তব্য আর চায়ের কাপে ঝড় তুলল,
তারা যদি সত্যি আবেগি মানুষ হয়ে থাকত, সত্যি মমত্বময় মানুষ হয়ে থাকত-
তারা আজকে ঘাড় ধরে সব কলা ব্যবসায়ীকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করতো। আছড়ে ওদের মাথার মগজ বের করে ফেলত। পুড়িয়ে দিত ওইসব প্রতিষ্ঠান, যেসব প্রতিষ্ঠানে কলা পাকানোর বিষ আছে। কারণ বাংলাদেশের প্রায় সব শিশুই কলা খায়। বাংলাদেশের প্রায় সব শিশুই বিষাক্ত ফার্মের মুরগির ডিম খায়। ফর্মালিন দেয়া ডিম, ফর্মালিন দেয়া মাছ খায়। চরম বিষাক্ত কীটনাশক ও মাত্রাতিরিক্ত সারে ছাওয়া সবজি ফল মূল খায়। বাংলাদেশের শিশুরা বিষাক্ত শিশুখাদ্য মুখ ব্যদান করে খায়। পরম মাত্রার বিষ মিশানো দুধ। তরল হোক, গুঁড়া হোক। বাংলাদেশের শিশুরা যত ঝাল খাদ্য খায়, তার সবতাতেই টেস্টিং সল্ট বা আজি-নো-মতো। কোলন ক্যান্সার। প্রতিটা ঝাল খাদ্যে কোলন ক্যান্সার লুকিয়ে আছে। তা দেশি ঝাঁঁঝ বেশি স্বাদ হোক, আর শুধুই দেশি তাই স্বাদ বেশি হোক। মৌসুমী দেশি ফল অথবা বিদেশি ফল- উপড়ে ফেলত গাছ, খুবলে ফেলত এর গোড়ার মাটি, রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলত বিদেশি বিষ মিশানো ফলের কার্টন। রাস্তায় যেখানে দেখতো সেখানেই দু হাত তুলে মারতে যেতো ডাইঙ এর কর্মকর্তা-মালিকদের। আটা প্রসেস করার কোম্পানিগুলোর দেয়াল ভেঙে ফেলত, আটায় থাকা কীটনাশকের পরিমাণের কারণে। যে বাড়িতে নকল চকলেট-চিপস-আইসক্রিমের ফ্যাক্টরি সেই বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে বাড়ির মালিকের নামে মামলা করতো, রাস্তায় পিটিয়ে মেরে ফেলতো ওইসব ভয়ানক বিষ মেশানো নকল কোম্পানির মালিকদের।
আরে হাজার বার না হোক, কোটিবার না হোক, একটা বার তো এমন হবে!!!
বাঙালি এইসব কিছুই করবে না।
কারণ বাঙালি জাতির মরণের জন্য সে নিজে দায়ী। ওই মাছে বিষ দেয়া, কলায় বিষ দেয়া, সবজিতে বিষ দেয়া, নুডলস-আটায় বিষ দেয়া, নকল চকলেটের নামে চরম ভয়ানক খাবারে বিষ দেয়া লোকটাই আহা উহু ইসসি রে করেছে কাল রাতভর নাটক দেখে এবং আজকে স্ট্যাটাস দিয়ে ও বিকালে চায়ের দোকানে পত্রিকা রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে।
ওই লোকটাই নষ্টের মূল। ওই লোকটা সম্ভবত আমি এবং আপনি। এইসব এক শিশুর জন্য এইরকম তাড়ন দেখিয়ে কোন লাভ নেই। শিশুটার কপালে আপনার আমার সমন্বিত ব্যর্থতার কারণেই মরণ ছিল। অন্য কোন কারণে না। বাকি যে কোটি শিশুর কী করছি, সেটা সময় বলে দিবে, যখন প্রতি থানায় ক্যান্সার হাসপাতালের রমরমা ব্যবসা থাকবে।
আত্মবিধ্বংসী বাঙালি জাতির গোড়ায় 'পতন' লেখা আছে, উত্থান দেখলে বুঝতে হবে এটা পতনকে আরো ত্বরাণ্বিত করার জন্যই হচ্ছে।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই কষ্টটা তো এখানেই। আমরা আমাদের বিনাশ কী করে করব? দুষ্ট যে আামাদের অন্তরে। সেখানটাকে বিনাশ কী করে করব?
২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৭
আরজু পনি বলেছেন:
অফলাইনে আপনার লেখাটা পুরোটা পড়লাম...এখন মনে হলো জানিয়ে যাই...আমরা আসলেই হুজুগে জাতি ।
ভালো থাকুন ।।
৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৩
স্বপ্ন সুমন বলেছেন: ভাই আপনি যে ব্লগে আপনার এই আবেগ মিশ্রিত মানবতার পক্ষে বিদ্রোহী মত রচনা করলেন তাদের ভূমিকাও আপনার সেই কথিত নিরব কৌতুহলী জনতার মতই।এখনও পর্য ন্ত সামু কর্তৃপক্ষের নোটিশ বোর্ডে কোন ধরনের সহমর্মিতা কিংবা দু:খ প্রকাশের রিপোর্ট স্টিকি আকারে দেখা যায়নি।এ ঘটনায় সামু কর্তৃপক্ষের বিবেক স্তব্দ হয়ে আছে। তাদের চেতনায় কি এটা নাড়া দেয়নি?আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪৪
সুফিয়া বলেছেন: সেই আবেগী জাতির যে আপনি এক অবিচ্ছেদ্য অংশ সেটা জানার সুযোগ হলো আপনার লেখা পড়ে।
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০২
সোহানী বলেছেন: চমৎকার সমোপযোগী লিখা..... সত্যিই তাই। এক জিহাদ নিয়ে আমরা ঝাপিয়ে পড়ি.... রাতদিন লাইভশো টেলিকাস্ট করি অথচ বিষাক্ত খাবার শিশুদের হাতে তুলে দিয়ে দিনে দিনে তাদের মৃত্যুমুখী করছি।
আসলে সবখানেই চলে ব্যবসা... দেখতে হবে শিশু জিহাদ দিয়ে কত মিলিয়ন ইনকাম হবে.... কিন্তু আজ নুডুলস্/আটা বা ফল/সব্জির বিষ নিয়ে কথা বলেন ... আপনার টিভির এড কমে যাবে... মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা ক্ষতি হবে... কোন দু:খে যাবে মিডিয়াওয়ালারা এ ঝুকিতে !!!!!!
আর মিডিয়াওয়ালা বা সাধারন পাবলিকরে কি ভাবে দুষবেন !!!!! খোদ রাস্ট্র যেখানে ব্যবসা ছাড়া বুঝে না !!!!!!!!!!
৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৭
বাংলার আকাশ বলেছেন: কলা ব্যাবসায়ির কলার ধরার সাহস আপনার আছে ? মিডিয়ার মতো আপনিও পক পক করলেন ! আমাদের জিবন ঘার লেলানো জিহাদের মতোই । মাথা উচু করে থাকতে পারবেন না , তো বিষ খেয়ে মরাই ভাল !
৭| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪১
মুরশীদ বলেছেন: গোলাম দস্তগীর লিসানি সহমত আপনার লেখার সথে। অত্যন্ত সময়পযোগি লেখা। জিহাদের বাবা মার এই শক সহ্য করার মত শকতি যেন পায়।
৮| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৬
সুমন জেবা বলেছেন: ঠিকই বলছেন -
মিডিয়াওয়ালা বা সাধারন পাবলিকরে কি ভাবে দুষবেন !!!!! খোদ রাস্ট্রই যেখানে ব্যবসা ছাড়া কিচ্ছু বুঝে না !!!!!!!!!!
৯| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
ইছামতির তী্রে বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। আমিও সার্বিক উন্নয়ন চাই।
আমরা আবেগী বা হুজুগে জাতি এই নিয়ে দ্বিমত নেই। তবে আমি অন্য কিছু বলতে চাই। যদিও এটি আপনার লেখার মন্তব্য হবে কি না জানি না।
আবেগই আমাদের শক্তি। বড় কোন কাজ সমাধার জন্য আবেগ অতি জরুরী। তবে আমাদের সমস্যা হলো এই আবেগকে কল্যাণের দিকে ধাবিত বা পরিচালিত করার মত লোক বা নেতা আমাদের নেই। চিন্তা করুন, মুক্তিযুদ্ধের কথা। আমাদের বলতে গেলে কিছুই ছিল না। কিন্তু সেই আমরাই পাকিদের মত চরম প্রশিক্ষিত একটা সৈন্যদলকে পরাস্ত করতে পেরেছিলাম। এর পেছনে কাজ করেছে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার তীব্র আবেগ বা হুজুগ। আমাদের প্রচন্ড আবেগকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছিলেন ঐ সময়কার নেতারা। আজ আর তা হচ্ছে না।
গত কালকের উদাহরণ দেখি। ৪ বছরের একটা ছেলেকে রক্ষার জন্য কনকনে শীতের রাতে সাধারণ মানুষ কেন এলো? সারারাত তারা ওখানেই কেন থাকলো? তাদের বিশেষ কোন লাভ ছিল? একদম না। সবাই এসেছেন ভালবাসার টানে। এটা পজিটিভ ওয়েতে কাজ করেছে। আমরা যদি সত্যি সত্যি 'পজিটিভ' থাকি তবে আমাদের আটকানোর সাধ্য কারো নেই। কিন্তু কথা ওই একটাই। আমাদের কে জাগাবে?
আমাদের ঘুমন্ত শক্তিকে জাগিয়ে তা কল্যাণকর পথে নিয়ে যাবার জন্য একজন 'হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা' দরকার।
ভাল থাকবেন।
১০| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কি বলবো ভ্রাতা! এসব দেখে দেখে এখন ক্লান্ত। আর কেন যেন বইতে পারি না। এই জন্য এই ধরণের লেখা এড়িয়ে যাই বিবেকের দংশন নিয়েও। কি বলবো! বলে কি হবে? কি হয়েছে? এই জাতি কোন দিনও ঠিক হবে না।
ভালো থাকবেন সবসময়।
১১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯
িনয়ামুল কারীম মানসুর বলেছেন: আপনার এই পোস্টটি সম্পর্কে আরো তথ্য চাই= Click This Link
১২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩
যাযাবরমন বলেছেন: আমি রাত সারে ৯ টা নাগাত বলেছিলাম পাইপে কোন ছেলে নাই। তবে আগামি কাল তারা পাইপ থেকে জীবিত ছেলে বের করে দেখাবে। আমার ধারনা-
পরের দিন মিডিয়া সরানোর পর তার ছেলেটাকে তারা পাইপে ঢুকিয়েছিলো। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো জিবিত বের করা।
কিন্তু পাইপে ঢোকার পর ছেলেটি ভয়ে বা গ্যাসের কারনে বা নামানোর ভুলে পানিতে পরে মারা যায়।
আমার ধারনার কারন পেপারে ছাপানো লাশের ছবি-
১- লাশ ১২ ঘন্টার পুরোন বলে মনে হয় নাই,
২- ছেলেটি মারা গেছে জানার জন্য মেডিকেলে নিতে হয়েছিলো!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০২
খেলাঘর বলেছেন:
চলুন জাতির দায়িত্ব আমরা নিই, দুস্ট মারাঠাদের বিনাশ করি।