নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।
মাত্র আঠারো বছর বয়সের ঘর তাড়ানো একটা ছেলে। সাত বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছে। 'হাপুড় পারা'র বয়স থেকে তার কোন নির্দিষ্ট স্থান নেই। সেইযে নেই, নেইতো নেই। সাত-আটটা বড়ভাই এবং তিন তিনটা বড়বোন থাকার পর সবচে ছোট সে। সব্বার স্নেহ যা পাবার, উপরদিকে ভাগ-যোগ হতে হতে নি:শেষিত। একটা শিশু'র বাবা ছাড়া সবাই ছিলেন। কিন্তু যার বাবা ছাড়া অনেক বেশি সবাই থাকেন এবং সবাইকেই নিজ একান্ত পরিবার দেখতে হয়, সেই শিশু ভাসতে ভাসতে এখান থেকে সেখানে গেলে তার জীবনটা কেমন হতে পারে? আক্ষরিক অর্থেই সে স্নেহ'র পূর্ণ রূপ কী জিনিস, তা জানে না। যদি স্নেহ কাকে বলে তা জেনেও থাকে, পূর্ণ নির্ভরতা, পূর্ণ নির্ভারতা কাকে বলে, তা কক্ষনো চেনেনি। অন্তত মানুষের কাছ থেকে জানেনি।
শুধু একটা কথা জেনেছে, মেনেছে, হৃদয় ও প্রাণ দিয়ে বাস্তবে বিশ্বাস করে সেটার প্রমাণ রেখেছে, 'ভালবাসা পায়নি যে জন, রাসূল দ. তাকে ভালবাসে!'
ছেলেটার বাবা ছিলেন ফুরফুরা শরীফের একজন খলিফা, পীর সাহেব। তাঁর চার হাজার বই লুট হয়ে গেছে। মরণের পর সব লুট হয়ে যায়। কিন্তু পিতা সন্তানের ভিতর যে চিত্র এঁকে দিয়ে যান, সেই লক্ষ বই কখনো লুট হয় না। ছেলেটার শৈশবের স্মৃতি যেটুকু আছে, তাতে বাবা'র নবী দ. প্রেম রয়েছে। চাচার সাথে নামাজের পর মসজিদে বসে বসে না'ত এ রাসূলে পাক দ. পড়ার স্মৃতি আছে। সে ক্লাস ফাইভে থাকার সময় যেসব কবিতা লিখেছে, সেগুলো বিশ্বাস করাও অসম্ভব। তার বই কেনার টাকা হয় না অথবা তার বাউন্ডুলেপনার কারণে কেনা হয় না যাই হোক- বই না কিনেই সে বছরের পর বছর শুধু মাঝে মাঝে ক্লাস করে সব ক্লাসে প্রথম হয়ে আসছে। এমনকি, প্রায়ই স-ক-ল বিষয়ে সর্ব্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে স্কুল ও কলেজে প্রথম হয়ে আসছে।
আঠারো বছর পার হয়েছে কি এখনো? হয়ত। তার নবীপ্রেমের দ. কবিতাই পেরিয়ে গেছে সহস্র।
হ্যা, ইতোমধ্যে মাহদি আল গালিবের পরিচয় স্পষ্ট।
"মাহদি আল গালিব" শুধু কোটের ভিতর থাকা শব্দটা কপি করে গুগল ইমেজ সার্চে পেস্ট করুন। প্রথমে শুধু মদীনার সবুজ গম্বুজের ছবি আসবে। অসংখ্য। পরিচয় এখানেই নিহিত। আর সব পরিচয় নিহত।
আমি গালিবকে ফোনে-ইনবক্সে প্রায়ই বলতাম, 'দেখেন, ভাইয়া, আমি ব্যক্তি আপনাকে ভালবাসি না। ব্যক্তি আপনাকে প্রেফারেন্স দেই না। আপনার ভিতরে যে সম্ভাবনা আছে, আপনার ভিতরে যে ভালবাসার নহর বইছে, সেটাকে ভালবাসি ও প্রেফারেন্স দেই।' আসলে পোড় খেয়ে খেয়ে প্লাস্টিকের মত হয়ে গেছি নতুন ব্যক্তিগত সম্পর্কের ব্যাপারে। কিন্তু তাকে যেটা বলা হয়নি, সেটা হল, ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত জীবনও মমত্ব পাবার দাবিদার।
এই প্রস্ফুটায়মান অতিসম্ভাবনাময় মানুষটা মায়ের কাছে খুব একটা যায় না। কারণ, তার একটু একটু মাতৃ-অভিমানও আছে। এবার মায়ের কাছে ছুটে গিয়েছিল, মা মদীনায় যাবেন। মা হজ্বে যাবেন, তাই ও ছুটে গিয়েছিল কয়েকটা কবিতা নিয়ে, মদীনা দেখতে কেমন, সেই আকুলতা নিয়ে, মদীনায় যে আছেন তাঁর কাছে কী কী জানাতে হবে সেই আকুলতা নিয়ে। মায়ের সাথে একটা ছবিও তুলেছিল। সেই ছবিতে মা আপাদমস্তক বোরখায় ভালভাবে ঢাকা, শুধু হাতের কব্জি ও চেহারা খোলা।
রাজারবাগের সুস্থ স্বাভাবিক পরিপূর্ণ মানবিক চিরায়ত মানুষগুলো করল কী, গালিবের মায়ের সেই হজ্বে যাবার আগের হজ্বে যাবার উদ্দেশ্যে ভিসাপত্র করতে বের হয়ে ছেলের সাথে তোলা ছবিটাকে জগৎজুড়ে উড়িয়ে দিল। বি-ড়া-ট্ট পূণ্যের কাজ করল। ক্যাপশন দিল, (খুবই বাজে ভাষায়, ভাষাটা বলছি না) গালিব তার মাকে বেপর্দা করেছে।
হজ্ব বেপর্দাগিরি। মদিনায় যাওয়া বেপর্দাগিরি।
ছবি তোলা বেপর্দাগিরি।
বৃদ্ধা একজন মহিলা (গালিবের মা আসলেই বৃদ্ধা, গালিব তাঁর সর্বশেষ সন্তান।) মুখমন্ডল ও হাতের কব্জি খোলা রেখে ভালভাবে বোর্খা পরলেও বেপর্দা।
তারা একটা জিনিস ভুলে গেছে, যে ফুরফুরার খলিফা হিসাবে রাজারবাগীরা সারা দুনিয়া চাউড় করে, সেই ফুরফুরার একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান পরলোকগত খলিফার বৃদ্ধা স্ত্রী ও কিশোর সন্তানকে নিয়ে তারা কুৎসা ছড়ালো। তাও যিঁনি মদিনার যাত্রী হিসাবে কাজ করার সময় ছবিটা তুলেছিলেন। যিঁনি হজ্বে বাইতুল্লাহ তে যাবার কাজে নিয়োজিত হয়ে ছবিটা তুলেছিলেন।
যে পাত্র থেকে 'সুধা' পান করো, সেই পাত্রে জলত্যাগ করলে পরবর্তীতে সেখান থেকেই যে পান করতে হবে, সেটা যখন ভুলে যাও, তখনি তুমি মনোবিকারগ্রস্ত। তোমার আইসোলশেন ছাড়া কোন চিকিৎসা নেই। যে গাছের গোড়ায় সমস্যা (দিল্লুর রহমান), যে গাছের বীজে মনোবিকার, সেই গাছ কেমনধারা ফল দেবে, তা আর দেখার কিছু নাই।
এরা এই কাজ একবার করেনি, দশবার করেনি, একশবার করেনি, এক হাজার বারও করেনি, এরচে বহু বেশিবার করেছে। এটা তাদের কাজের ধারা। এই কাজ তারা ঘরে বসে করে না। তাদের 'দরবারের' ভিতরে সাইবার ক্যাফেতে বসে বসে করে, সবাই একসাথে। পেশাদার। অফিস টাইম মেইনটেইন করে করে করে। বেতন দিয়ে করে। রাসূলপাক দ. কে মক করে দাঁড়ি টুপি জোব্বা আচকান চামড়ার মোজা চামড়ার বালিশ চামড়ার বিছানা কাঠের ও পাথরের পানপাত্র ছোট ছোট ডেস্কে ফরাশের উপর বসে কাজ করা স-ব সত্যিকার সুন্নত পালন করে। নামাজের সময় বিরতি দেয়, নামাজ শেষ করে আবার বসে পড়ে। এইযে সুন্নতগুলো পালন করা, এতে কি বিন্দুমাত্র অভিযোগের সুযোগ আছে? নেই! তাঁকে দ. অন্তর থেকে শুধু পোশাকে কেন ট্রান্সফার করব? তাঁকে দ. পোশাকে যেমন লালন করতে হবে, তারচে বেশি ধারণ করতে হবে অণ্তরে! মা ও ছেলের হজে যাবার আগের ছবি বের করে সেটাকে পাবলিশ করে। অথচ বাইরে সুন্নতের বহর নহর বয়ে গেলেও ভিতরটা কীরকম ভীষণরকম ফাঁপা! হায়, যদি ভিতরে তাঁর দ. শিক্ষা একটু হলেও ঢুকত!
গালিব এদের বিরুদ্ধে লিখে খুবই বড় পাপ করে ফেলেছিল তো, তাই তার এই শাস্তি। সাব্বাশ নীতিময়তা, সাব্বাশ বিবেক, তাদের কাছে ইন্টারপ্রেট হওয়া ইসলামের নৈতিকতা-চালিকাশক্তি-কোড অভ লাইফ, সাব্বাশ রাজারবাগের ভবিষ্যত বিশ্বব্যাপী "খিলাফাত" এর ট্রায়াল!
অ-নে-ক আগে মির্জা গালিব (নিতান্তই মদ্যপ এক কবি, যদিও মেধাবী) লিখেছিলেন,
মসজিদেই পান করতে দাও,
নয়তো এমন স্থান দাও,
যেখানে নেই খোদা।
পোশাকে বাস করে তো কোন লাভ নেই যদি হৃদয়ে না থাকে। আর হৃদয় ও পোশাক উভয়ে থাকলে তখনি সফলকাম। কার হৃদয়ে আল্লাহ ও রাসূল দ. বাস করেন এবং কার হৃদয়ে তাঁরা বাস করেন না, সেই বিষয়ে অনেক পরে আল্লামা ইকবাল লিখেছিলেন-
অস্বীকারকারীর হৃদয়ে পান করো, হে গালিব!
কেননা ওটাই একমাত্র স্থান, যেখানে খোদা নেই!
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৪
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: প্রিয় ভাই, সালাম! আমি আপনাকে কোন্ কথায় কীভাবে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি... অনেকদিন কথা হয়নি। সহব্লগার কেউ যখন বেশ কিছুদিন দূরে থাকেন, মনে হয় কোন না কোন ভুল করে ফেলেছি।
আল্লাহ জাল্লা শানুহু আমাদের সবার কল্যাণ করুন তাঁর অসীম করুণা দিয়ে। গালিবকে আল্লাহ দীর্ঘ সুখী জীবন দান করুন, যেন সে তার নবী দ.'র ভালবাসার কথা ছড়াতে পারে বহুমুখে।
২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১১
অন্তরন্তর বলেছেন:
আরে লিসানি ভাই কি বলেন এসব। আপনি আমাকে কখনো, কোনদিন কষ্ট
দেন নি। আমার শারিরিক অসুস্থতার জন্য ব্লগে আসতে পারি না। অনেক দিন
যাবত ভুগছি। কিছুদিন আগে একটা অপারেশন হয়েছে। এখনও সপ্তাহে ৩/৪
দিন হসপিটাল যেতে হচ্ছে। আশার কথা হল আমি ৭০% ভাল এখন।
আল্লাহ্ পাকের অশেষ রহমত আমার উপর লিসানি ভাই।
ভাল থাকুন সব সময়।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আল্লাহর অশেষ অসীম রহমত ভাই। আপনি সুস্থ হয়ে উঠছেন এই খবর জানলাম। পৃথিবীতে কিছু সময় আমরা অবস্থান করি। এই সময়টুকু সবার কল্যাণে যেন ব্যয় করতে পারি, সৃষ্টির সেবায় এবং স্রষ্টার আরাধনায়। আমিন!
৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭
নতুন বলেছেন: রাজারবাগীরা হজে যায় না কারন ছবি তোলা হারাম বলে...
এটা কোন যুক্তিসম্পন মানুষের কথা হইতে পারেনা...
কিন্তু http://islamichattrasena.wordpress.com/about/
এদের কাজও কেমন যেন লাগলো...
নিচের দিবশ এরা পালন করে... এটাই বাড়া বাড়ী মনে হলো..
১ মহররম ঃ হিজরী নববর্ষ
১০ মহররম ঃ পবিত্র আশুরা
২২ মহররম ঃ ইমামে আহলে সুন্নাত আবুল হাসান আশয়ারী (রাঃ) এর ওফাত দিবস
২৭ মহররম ঃ হযরত মাখদুম আশরাফ জাহাঙ্গীর সিমনানী (রঃ) এর ওফাত দিবস
১৩ সফর ঃ ইমাম নাসায়ী (রাঃ) এর ওফাত দিবস
২৫ সফর ঃ আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান ফাজেলে বেরলভী (রঃ) এর ওফাত দিবস
২৫ সফর/৮ অক্টোবর ঃ আল্লামা সৈয়দ আবিদ শাহ আল-মাদানী (রঃ) এর ওফাত দিবস
২৭ সফর ঃ হযরত গাযী সালাহউদ্দীন আইয়ুবী (রাঃ) এর ওফাত দিবস
১২ রবিউল আউয়াল ঃ পবিত্র ঈদ-ই- মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম
১১ রবিউস সানী ঃ পবিত্র ফাতেহা-ই- ইয়াজদাহুম
১৪ রবিউস সানী ঃ ইমাম মুহাম্মদ গায্যালীর (রাঃ) এর ওফাত দিবস
২৮ রবিউস সানী ঃ খাতুনে জান্নাত হযরত মা ফাতিমা (রাদ্বিঃ) এর পবিত্র জন্ম দিন
১৩ জমাদিউল আউয়াল ঃ খাতুনে জান্নাত হযরত মা ফাতিমা (রাদ্বিঃ) এর ওফাত দিবস
১৪ জমাদিউস সানী ঃ ইমাম মুহাম্মদ গায্যালীর (রাঃ) এর ওফাত দিবস
২২ জমাদিউস সানী ঃ হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর ওফাত দিবস
৬ রজব ঃ হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ (রঃ) এর ওফাত দিবস
১২ রজব ঃ গাজীয়ে দ্বীনো মিল্লাত আল্লামা শেরে বাংলা আল-কাদেরী (রঃ)এর ওফাত দিবস
২৭ রজব ঃ পবিত্র লাইলাতুল মিরাজুন্নবী সাল্লাল্লাহুু আলাইহে ওয়াসাল্লাম
২ শাবান ঃ ইমাম আজম আবু হানিফা (রঃ) এর ওফাত দিবস
১৫ শাবান ঃ পবিত্র লাইলাতুল বরাত
২৯/৩০ শাবান ঃ মাহে রমজানের আগমন উপলক্ষে স্বাগত মিছিল
১৭ রমজান ঃ বদর দিবস
২১ রমজান ঃ হজরত আলী (রাঃ)’র শাহাদাত দিবস
২৭ রমজান ঃ পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর
রমজান মাসের শেষ জুমা ঃ পবিত্র জুমুআ’তুল বিদা
১৮ জিলক্বদ ঃ হজরত ওসমান গনী (রাঃ)র শাহাদাত দিবস
১ জিলহজ্ব ঃ ছাহেবে মজমুয়ায়ে সালাওয়াতির রাসুল (দঃ) খাজা আবদুর রহমান চৌহরভী (রঃ) এর ওফাত দিবস
৯ জিলহজ্ব ঃ পবিত্র হজ্ব দিবস
২০ জিলহজ্ব ঃ হজরত শাহ জালাল মুজাররদে ইয়ামনী (রঃ) এর ওফাত দিবস
২৬ জিলহজ্ব ঃ হজরত ওমর ফারুক (রাঃ)র শাহাদাত দিবস
৯ মাঘ/২২ জানুয়ারী ঃ আল্লামা খাজা আবু তাহের নকশবন্দী (রঃ) এর ওফাত দিবস
১০ মাঘ/২৩ জানুয়ারী ঃ ঃ হযরত শাহ আহমদুল্লাহ মাইজভান্ডারী (রঃ) এর ওফাত দিবস
১২ ফেব্র“য়ারী ঃ ইমামে আহলে সুন্নাত শহীদ ফজলে হক খায়রাবাদী (রঃ) এর শাহাদাত দিবস
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: তাদের হজ্বে না যাওয়াটাই তো গোঁড়ামি ভাই। চরম পরম গোঁড়ামি এবং ইসলামে নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ।
অথচ তাদের কোন কাজ এজন্য থামে না।
আর ইসলামের মহান পূর্বসুরীদের আগমন দিবস ও প্রত্যাগমন দিবস পালন করা কোনদিক দিয়েই খারাপ কিছু নয়।
৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৩
হাসান নাঈম বলেছেন: বাস্তব কাজের চেয়ে শুধুমাত্র ভক্তি শ্রদ্ধাকেই যখন মুক্তির পথ হিসেবে বেছে নেয়া হয় তখন তার চরম পরিনতি এমন হতেই পারে।
এটা এক দিনে হয় নাই, আস্তে আস্তে হয়েছে, একটার পর একটা পর্যায় অতিক্রম করে ক্রমান্ময়ে এটা চরম পন্থার দিকে এগিয়ে গেছে।
এর কারণ মানুষ বড়ই আবেগ প্রবন, কোন একটা কিছুর দিকে ঝুকে পরলে সেদিকেই যেতে থাকে, কোথায় থামতে হবে সেটা বুঝতে পারে না।
তথাকথিত আধুনিক পশ্চিমা সমাজ যেমন 'ব্যাক্তি স্বাধীনতা'র দিকে ঝুকতে গিয়ে ক্রমান্ময়ে ধর্ম, সামাজিকতা, পরিবার ইত্যাদি সব সীমা অতিক্রম করে এখন সমকামিতাকেও ব্যাক্তি স্বাধিনতার মধ্যে এনে ফেলেছে। আশা করা যায় অদুর ভবিষ্যতে তারা আত্মহত্যার অধীকারও স্বীকার করবে, নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করবে।
একই অবস্থা এইসব ভক্তিবাদীদের। তারাও ভক্তির আতিশয্যে কখন যে সীমা অতিক্রম করে ফেলে বুঝতেই পারে না।
তাই বলি - এই পথটা বড়ই বিপজ্জনক। উপযুক্ত পথ প্রদর্শক ছাড়া এই পথে চলা উচিত নয়। তার চেয়ে কোরআন হাদীসের আলোকে প্রকাশ্য শরিয়ত চর্চা এবং নিজ নিজ কর্মের মাধ্যমে মুক্তির চেস্টা করাই উত্তম। তাতে হয়ত আধ্যাত্মকতার খুব উচ্চ স্তরে পৌছান যাবে না - তবে এই রকম বিপদের সম্ভাবনাও কম থাকবে।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০০
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: নাঈম ভাই, এই বিষয়ক আলাপগুলো তো আমরা ইতোমধ্যে শেষ করে ফেলেছি বলে ধারণা করি।
ইসলাম হচ্ছে মধ্যপন্থার নাম।
ইসলাম মানে হল মধ্যপন্থা।
মধ্যপন্থা মানে কিন্তু এই নয়, যোহরের নামাজ চার রাকাতের জায়গায় দুই রাকাত পড়া। মধ্যপন্থা মানে হল, যোহরের নামাজ চার রাকাত পড়ো। অযু করতে গিয়ে হাত শুকনা রেখেও উঠে পড়ো না, আবার ঘষতে ঘষতে বারোটাও বাজিও না, বরং সুন্দর করে প্রতিটা রোমকূপ ভেজানোর আন্তরিক চেষ্টা করো। নামাজে দাঁড়িয়ে- হায় খোদা তোমার সাথে মিরাজ হচ্ছে... এই ভাবনায় তিন ঘন্টা ডুবে থেকো না আবার না জানি নামাজে শয়তান ওয়াসওয়াসা দেয়, এই ভাবনায় বুকডন দেয়ার মত নামাজ পড়ো না।
মধ্যপন্থা মানে এক ধর্মের সাথে আরেক ধর্ম মিলিয়ে ঝালমুড়ি বানানো নয়।
মধ্যপন্থা মানে, ইসলামে ইতোমধ্যে পাওয়া প্রমাণিত সুন্নাহ থেকেই অতি কঠোর এবং অতি কোমল কোন পথে না গিয়ে সবকিছুতে মধ্যবর্তী পথ অনুসরণ করা।
মধ্যপনন্থা মানে চোদ্দশ বছর আগের ইসলামকে নিজের ইচ্ছামত বদলে দেয়াও নয়। যেহেতু ইসলাম ওইদিনই পূর্ণ ছিল এবং কিয়ামাত পর্যন্ত পূর্ণ থাকবে।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৫
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: একটা মজার ব্যাপার হল, "ভক্তিবাদ"কে আমরা যেভাবে ভয় পাচ্ছি, অথচ তারচে বেশি ভয় পাবার কথা "কর্মবাদ" কে।
কেননা, চীন-জাপান-থাইল্যান্ড তথা সম্পূর্ণ সাউথ ইস্ট এশিয়া কর্মবাদী ভাবধারায় বহু বহুদূর অগ্রসর হওয়ার কারণেই তাদের পরিশ্রম ও কর্ম অতুলনীয়।
আর এই সুবিধা নিয়েই সেদিকে কমুনিজম অত্যন্ত বেশি প্রতাপাণ্বিত হয়েছে।
কমুনিজমের মত ভয়ানক হত্যাকান্ড আর খুব কম মতবাদই করেছে। কমুনিজমের সাথে দ্বৈততায় যে যুদ্ধ হয়েছে, তাও খুবই ভয়ানক।
আবার দেখি পুঁজিবাদকে। পুঁজিবাদও এক প্রকার কর্মবাদ। কর্ম করো, খাও, না করো, কিচ্ছু করার নাই।
পৃথিবীতে যত বীভৎসতা, তার বেশিরভাগ কিন্তু (ক্যাজুয়ালটির সংখ্যার হিসাবে) এই কর্মবাদীদের হাত ধরেই হয়েছে হচ্ছে। দুটা বিশ্বযুদ্ধ এবং দুই যুদ্দ শেষের পরও শুধু আমেরিকার ৫০+ দেশ আক্রমণের ইতিহাস তাই বলে।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১০
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: সবচে বড় কথা,
আল কায়েদা, তালেবান, বোকো হারাম, জামাতে ইসলাম, হিজবুত তওহীদ, হিজবুত তাহরীর, আই এস সহ অসংখ্য "মুসলিম সংঘাতবাদী" মতবাদ কিন্তু মোটেও ভক্তিবাদী নয়।
বরং তারা সকলেই চরমভাবে "ভক্তিবাদ" এর সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। এই কর্মবাদীদের কারণেই কিন্তু সবচে বেশি সংঘাত, সবচে বেশি মুসলিম হত্যা হচ্ছে। তা তাদের হাত দিয়েও, আবার তাদের "ঠেকানোর" অভিনয়ে নামা কমুনিস্ট ও পুঁজিবাদী তথা সেই কর্মবাদীদের হাত দিয়েই।
অন্ততপক্ষে আমরা দেখতে পাব, "কর্মবাদ" পন্থীদের হাত দিয়ে যা ঘটেছে তার কিয়দংশও "ভক্তিবাদ" এর হাত দিয়ে হয়নি। যদিও আমি "ভক্তিবাদী" দিয়ে তা নির্দিষ্ট করতে চাচ্ছি না।
৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১২
হাসান নাঈম বলেছেন:
দু:খিত, আমার মনে হচ্ছে আপনি স্বাধারণ কর্মবাদ এবং ইসলামের কর্মবাদকে এক করে ফেলেছেন।
স্বাধারণ কর্মবাদের কোন সীমা পরিসীমা নাই। কিন্তু ইসলামের কর্মবাদ হচ্ছে কোরআন হাদীস এর আলোকে প্রকাশ্য আইন কানুন বা শরিয়তের অনুসরণ বা জাহিরী পথ।
এই পথের লোকদের আপনার দৃস্টিতে যতটা বিভ্রান্ত মনে হচ্ছে বা যতটা সংঘাতবাদী হিসেবে মিডিয়ায় তুলে ধরা হচ্ছে - আপনাদের ভক্তিবাদের অনুসারীরা বিভ্রান্তির দিক দিয়ে তার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে তাদের সাথে বাতিলের কোন সংঘাত না থাকায় বা তারা বাতিলের ভোগবাদের পথে কোন অন্তরায় না হওয়ায় বা অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যাবহারের সুযোগ থাকায় প্রচলিত মিডিয়া তাদের বিভ্রান্তিগুলি প্রচারে আগ্রহী নয়। তা না হলে এই দেশে ভন্ড পীর আর মাজার পুজারীর দৌরাত্ম মোটেই কম নয়।
তবে আশার কথা হচ্ছে শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতি এবং আপনার অসমর্থিত কর্মবাদী ইসলমী সংগঠনগুলির কাজের ফলে এই বিভ্রান্তির মাত্রা ক্রমান্ময়ে কমছে। মানুষ ক্রমান্ময়ে কোরআন হাদীস জেনে বুঝে পড়ার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। অন্যের হাতে নিজেকে সপে না দিয়ে নিজেই বোঝার চেস্টা করছে কোনটি তার জন্য কল্যানকর।
আপনি যে জামাতে ইসলামীর ঘোরতম বিরোধী সেই জামাত আজ থেকে ৭০ বছর আগে বলেছিল ইসলামে রাজনীতি আছে - যখন ভক্তিবাদী পীরেরা ফতোয়া দিত ভোট দিলে বৌ তালাক হয়ে যাবে। আজকে সেই পীরদের অনেকেই রাজনৈতিক দল গঠন করছে। এমনকি মাজার কেন্দ্রীক চরম ভক্তিবাদী মাইজভান্ডারীও রাজনৈতিক দল গঠন করে ভোটে অংশ নিচ্ছে।
সুতরাং নবী রাসুল(আ.), আহলে বাইত, সকল ওলী আউলিয়া এবং ইমামদের প্রতি স্বাধারণ শ্রদ্ধা রেখে কোরআন হাদীসের আলোকে প্রকাশ্য শরিয়ত অনুসরণের মাধ্যমে নিজের কাজের ভিত্তিতে রাসুলের(আ.) শাফায়ত প্রত্যাশা এবং পরকালীন মুক্তির উপায় খোঁজার পথই মধ্যম পথ। এখনও যারা ভক্তিবাদের ধোঁয়াশা পথে পরে আছেন, আশা করা যায় অদুর ভবিষ্যতে তারাও এই মধ্যমপন্থী সুস্পস্ট পথে ফিরে আসবেন।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: "পীর আর মাজার পুজারীর দৌরাত্ম"
কাউকে মুশরিক বলার সাথে সাথে যে বলেছে অথবা যাকে বলেছে এই দুইজনের যে কোন একজন কাফির হয়ে যাবে।
কর্মবাদ ও ভক্তিবাদ আমি বলিনি এবং আমি এটাকে এখন পর্যন্ত কোন মন্তব্যে স্বীকৃতিও দেইনি। মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে আপনার দিকনির্দেশ অনুযায়ী কর্মবাদ হিসাবে তা সাব্যস্ত করেছি।
আর যে কোন সন্ত্রাসবাদী সঙ্ঘ বা জামাতে ইসলামকে কোনদিক দিয়ে কোন প্রকার সমর্থন তো দূরের কথা, তা নিয়ে পজিটিভলি ভাবারও কোন অবকাশ নেই।
আমাদের মুখ দিয়ে সন্ত্রাসবাদী বানানোর কিছু নেই, নিজেরাই হয়ে বসে আছে। কেউ যখন পাইকারি মানুষ হত্যা করে, এবং সেই হত্যার মধ্যে নিরীহও থাকে, তাকে নতুন করে সন্ত্রাসবাদী বানানোর কিছু নেই। সে প্রকৃতিগতভাবেই চরমপন্থী ও সন্ত্রাসবাদী।
৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪
হাসান নাঈম বলেছেন: আপনার স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতির উপরতো আর সবকিছু নির্ভর করে না - দুনিয়া কোথায় যাচ্ছে - ইসলামের অগ্রগতি কোন দিকে হচ্ছে সেটাই দেখার বিষয়। আমরা প্রায়ই বিশ্ব ব্যাপী ইসলাম ধর্মগ্রহনকারীদের উচ্চ হার নিয়ে যে গর্ব করি তা কিন্তু কোন ভক্তিবাদী ধারায় কোন উত্তরাধীকারী পীরের হাতে বায়াতের মাধ্যমে হচ্ছে না। বরং কোরআন হাদীস এবং ইসলামের ইতিহাসের উপর পড়াশুনা করেই মানুষ ইসলাম গ্রহন করছে। এবং এটাই ইসলামের সঠিক গন্তব্য। মানুষ কোরআন পড়বে, বুঝবে এবং তার শিক্ষার ভিত্তিতেই জীবন গঠন করবে - এ'জন্যই কোরআন পাঠান হয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হবে।
আপনি যদি আপনার পছন্দের দল/ধারার মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি দেখতেই না পান আর আপনার অপছন্দের ধারারকে চরম খারাপ হিসেবেই ("পজিটিভলি ভাবারও কোন অবকাশ নেই") দেখতে থাকেন তাহলে সেটাকেই কি চরমপন্থা বলা যায় না?
চোখের সামনে মাজার কেন্দ্রীক চরম অনাচার ( যেমন, মাজারকে সিজদি করা, মরা গাছের ডালে সুতা বেধে মনোবাসনা পুরনের আশা, বা কচ্ছপের মাথা ধোয়া পানি খেয়ে রোমুক্তির সাধ এবং আরো বহু কিছু) দেখেও যদি সেটাকে পুজা বলা না যায়, আর সেটা বলার সাথে সাথে যদি একজনকে কাফের হতে হয় - তাহলে এই মন্তব্যে আপনি যে বল্লেন "কেউ যখন পাইকারি মানুষ হত্যা করে, এবং সেই হত্যার মধ্যে নিরীহও থাকে, তাকে নতুন করে সন্ত্রাসবাদী বানানোর কিছু নেই।" - এ'টাকে কী বলবেন? আপনি কাকে কোথায় পাইকারী মানুষ হত্যা করতে দেখেছেন? চরম একপক্ষীয় মিডিয়ার মাধ্যমে শোনা কথার ভিত্তিতে কোন মানুষ/দল/সংগঠনকে পাইকারী খুনি বলে প্রচার করার পর যদি তারা সত্যিই সেইরকম খুনি না হয় - তাহলে আপনার অবস্থান কোথায় হবে - একটু ভাবুন।
আর একটা কথা - আপনি সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় তালেবানকে অন্তর্ভুক্ত করলেন কিসের ভিত্তিতে? তারাতো মুক্তিযোদ্ধা। আফগানিস্তানে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সেনারাই তালেবান গঠন করে। বর্তমানে তার আমেরিকান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আপনিও কি মিডিয়ার প্রভাবে যুদ্ধ - মুক্তিযুদ্ধ আর সন্ত্রাসবাদকে গুলিয়ে ফেলেছেন??
৭| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভণ্ড রাজারবাগি গুলারে নিয়া আর কি বলবো । এরা পার্থিব সুখ লিপ্সায় মত্ত হয়ে , ধর্ম ব্যাবসার চূড়ান্ত করছে । আর অশিক্ষিত মূর্খ কিছু অনুসারীরা রাজারবাগির মাধ্যমে কি হাসিল করার উছিলায় আছে কে জানে ! এদের মনে আল্লাহ্ খোদা তা'আলার ভয় নাই । কিয়ামত হাশরের কোন ভয় নাই । আল্লাহ্ ওদের হেদায়েত করুন ।
গালিব ভাই'র জন্য শুভকামনা ।
আপনিও ভালো থাকবেন ভ্রাতা ।।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০০
অন্তরন্তর বলেছেন:
সালাম লিসানি ভাই। চমৎকার লিখা। আমি আসলে তাঁর সম্পর্কে
জানতাম না । আপনার পোস্ট পড়ে জানলাম। আমরা মুহাম্মদি(সাঃ) এর
ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছি তাই আজকের এই পৃথিবীতে আমাদের এই
দুর্গতি।
পোস্টে ভাল লাগা জানলাম। মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলের মঙ্গল করুন।