নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।
আট বছর আগে মাত্র চার মাসের জন্য আমি ভয়ানক অসুস্থ ছিলাম মানসিকভাবে। আজকে শুধু সেইদিনের কথা মনে পড়ছে। নিউরনে নিউরনে ছড়িয়ে যাচ্ছে তখনকার রিয়েলাইজেশনগুলো, সুস্থতার পর এই অসুস্থতাই আমার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে- জীবনের খোলনলচের কথা বুঝতে পারি এবং পুরোপুরি ঝুঁকে পড়ি তাসাউউফের দিকে।
অসুস্থ কীভাবে হলাম, কীভাবে সারলাম তা বিষয় নয়। বিষয় হল, সে সময় কেমন ছিলাম আমি? জানা, বিশ্বাস করা এবং একাগ্রচিত্তে উপলব্ধি করার মধ্যে বিস্তর ফারাক।
তখন একাগ্রচিত্তে উপলব্ধি করে ছিলাম, আই অ্যাম গোয়িং টু ডাই ভেরি সুন!
আমার বাবা পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন চিড়িয়াখানায়, আমি ভাবছি, আহহা, আব্বুর কতই না কষ্ট হচ্ছে, তাঁকে বাধ্য করা হচ্ছে আমাকে বলি দিতে। তিনি না পেরে আমার গলায় ছুরি চালাবেন একটু পর, বোটানিক্যাল গার্ডেনের কোন একটা কোণায়। শেষ পর্যন্ত এভাবে মারা যাব?
গোসল করতে গেছি, আমি স্পষ্ট দেখছি, ঝর্ণার পানির রঙ হলুদাভ। পানি থেকে ধোঁয়া উঠছে। তীব্র আতঙ্কে বের হয়ে আসি। ওরা আমাকে মেরেই ফেলবে। ট্যাঙ্কে সালফিউরিক এসিড দিয়ে দিয়েছে। আমি নিশ্চিত, আমার এইডস হয়েছিল। আজ অথবা কাল। খুব দ্রুত মারা যাচ্ছি। মেরে ফেলা হবে আমাকে। ঘুমের ভিতরেই। প্রতিদিন জেগে দেখি, হায়হায়, বেঁচে আছি। এবং অপেক্ষা করছি, মারা যাব। আজ অথবা কাল।
ঠিক ফাঁসির আসামীর মত, আর দুদিন কি বেঁচে থাকব? কোন সম্ভাবনা কি আছে? নেই। আর দুদিন কি বেঁচে থাকব? কোন সুযোগ কি আছে? নেই। হয়ত আজই। হয়ত এখনি।
প্রতিদিন প্রতিক্ষণ বাসার বাইরে শব্দ শুনি আর ভাবি, তারা আসছে। তারা আসছে। এখনি নিয়ে যাবে আমাকে।
আমি বিশ্বাস করতাম, আমি উপলব্ধি করতাম, মারা যাচ্ছি। সে কী কষ্ট! সে কী অবর্ণণীয় অকল্পপূর্ব অচিন্তনীয় কষ্ট!
আমি সুস্থ হয়ে শুধু একটা বিষয়ই শিখেছি, মানুষ একবার মাত্র মরে।
দিনে দশবার যে মরে, সে সারা জীবনে অসংখ্যবার মরে। এবং তারপর মরার সময় মরে।
আর মানুষ, প্রকৃত মানুষ, মাত্র একবার মারা যায়।
জয় বাংলা।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৪
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: সকল ভয়ের জননী হল মরণভয়। এটাকে যে জয় করতে পারে তার পক্ষে সর্বজয়ী মানব হওয়া সম্ভব।
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:১২
হাছন রাধা করিম বলেছেন: মরনের ভয় কি জয় করা আদৌ সম্ভব লিসানি ভাই?
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: অবশ্যই সম্ভব ভাই! আমাদের রাসূল দ. করেছেন। করেছেন লক্ষ সাহাবী রা.। করেছেন ঈসা আ.। মুসা আ.। মহামতি গৌতম বুদ্ধ জয় করেছেন। সকল ভয়কে জয় করা ছাড়া নাফসে কামিলা তে পদার্পণ করা কখনোই সম্ভব নয়।
৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৪
একজনা বলেছেন: প্রকৃত মানুষ, মাত্র একবার মারা যায়।
০২ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:৫১
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: এই উপলব্ধিতে পৌছাতে পারাটাও একটা পরিপূর্ণতার স্মারক।
৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮
কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: চার বছর . . . অনেক দীর্ঘ সময়
এত আগের সব বিষয় কি এখনও মনে আছে??
তার পরও গভীর ভাবে চিন্তা করে দেখুনতো সেই সময় কি শুধুই মৃত্যুভয় ছিল, না কি ছিল আরো কোন কিছুর অনুভুতি?
কোন পরীক্ষা বা টিকে থাকারমত কিছু ছিল কি? মনে হচ্ছিল কি যে কোন পরীক্ষায় পাশ করতে পারছেন না বা এই জাতীয় কোন অনুভুতি?
১২ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: সব তো অবশ্যই মনে নেই।
মূলত রোগটা যখন গভীর হয় তখন শুধুই মৃততুভয়। তার আগে নিজেকে প্রতারিত মনে হত।
না, টিকে থাকাটা একেবারেই অবান্তর। পরীক্ষা এবং তাতে পাশ করতে না পারা- তাও না।
আসলে মরণভয় খুব দারুণ জিনিস। এটার সাথে আর কিছুর সম্পর্ক তৈরিই হয় না, যখন সে নিজে চেপে বসে।
৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৮
বোকামন বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ্ আপনি সুস্থ হয়েছেন ....
মৃত্যুভয় আর মৃত্যু-চিন্তার মধ্যে পার্থক্য আমরা বুঝতে পারি না কেন জানি ....
আস সালামু আলাইকুম
১২ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: অগুণতি ধন্যবাদ ভাই। আসলে ওই সময়টার কথা সহজে মনেও পড়ে না। পড়ার উপায় নেই। কারণ মানুষ কষ্টের কথা মনে রাখতে পারে না।
মাত্র চার মাসে উত্তরণ, প্রায় অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার। অবশ্য ওষুধের জন্য ভুগতে হয়েছিল টানা দুই বছর। মনোরোগের ওষুধ ভয়ানক জিনিস।
সালাম, আপনার প্রতিও। অনেক অনেক ভাল থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১
একজন আরমান বলেছেন:
কাপুরুষ বার বার মরে,
বীরপুরুরষ একবারই মরে।।
জয় বাংলা।।