নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজকের এই আমি। ব্লগে আবেগ অনুভূতি শেয়ার করি যেগুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়না। আমি একজন অনুভূতির ফেরিওয়ালা......

আমিই সাইফুল

চলতে চলতে হবে পরিচয়.....

আমিই সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মালেয়শিয়া ভ্রমন এবং তাহাদের স্বপ্নের মালেয়শিয়া(ভ্রমন কাহিনী)।

২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪০



নিউজিল্যান্ডে একবছর কাটানোর পর ইচ্ছে হলো দেশে যাবো। আব্বু আম্মুকে অনেক মিস করতাম তাই হঠাত সিদ্ধান্তেই টিকেট কেটে ফেললাম। তারপর বন্ধু বললো দেশেত যাবোই চল এশিয়া ট্যুর দিয়ে আসি। বন্ধুর কথায় রাজি হলাম; এক সপ্তাহ ভিবিন্ন এম্ব্যাসিতে ঘুরাঘুরি করে অস্ট্রেলিয়া, মালেয়শিয়া, সিংগাপুর আর থাল্যান্ডের ভিসা যোগাড় করে ফেললাম। বন্ধু সহ সিদ্ধান্ত নিলাম মালেয়শিয়ায় চারদিন কাটাবো। আসলে একটা সময়ে আমারো ভাবনা ছিল যদি কোন দেশে পড়তে যেতে না পারি তাহলে মালেয়শিয়া পড়তে যাবো। যেহেতু মালেয়শিয়া পড়তে যেতে হয়নি তাই আগ্রহটা রয়েই গেল। তাই ঘুরে দেখার লোভ সামলাতে পারিনি; নিউজিল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ যাই ১৫ই এপ্রিল। ২৩ তারিখ সকাল আটটায় আবার ব্যাক করি মালেয়শিয়ার উদ্যেশ্যে।



চেক ইন কাউন্টারে চেক ইন করতে গেলাম(বাংলাদেশ বিমান) জিজ্ঞেস করলো
-কই যাবে?
=মালেয়শিয়া যাবো।
-রিটার্ন টিকেট কই?
=রিটার্ন টিকেটেই যাচ্ছি।
-উনি বলল হবেনা! মালেয়শিয়া যদি তোমারে ঢুকতে না দেয় কই যাবা?
= থাইল্যান্ড যাবো।
-কেন থাইল্যান্ড কেন?
=ঘুরুতে যাবো।
- বললেই হলো? ভিসা দেখি?
=পাসপোর্টে আছে।
-ও(ভিসা দেখে)। টিকেট দেখি?
= দিলাম টিকেট। বোডিং পাস দিয়ে দিল।



আচ্ছা কোন দেশে চেক ইনে এত ঝামেলা দেখিনি। এরা এমন কেন???

এবার আরেক ঝামেলা ইমিগ্রেশন। আব্বুর সাথে কথা বলে ইমিগ্রেশনের দিকে হাটা দিলাম। ইমিগ্রেশনে যেতেই আরেক বিপত্তি। অফিসার একজন ডাকে এদিকে আরেকজন অন্যদিকে। একজনের কাছে গেলে আরেকজন রাগান্বিত চোখে তাকাচ্ছে। আচ্ছা অভিজ্ঞ ভাইদের কাছে প্রশ্নঃ এরা কি যাত্রি প্রতি কমিশন পায়? আচ্ছা যাই হোক। ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে যেতেই
-কই যাবে?
=মালেয়শিয়া।
-স্টুডেন্ট ভিসা?
=না। টুরিস্ট।
-থাক কই?
=নিউজিল্যান্ড।

শুনেই অফিসার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করিতে লাগিলেন। আমার ইতিহাস, পাতিহাস, রাজাহাস জেনে তারপর সিল মারল।

বাংলাদেশ বিমানে ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকার সময় আমার ১০-১২জন মালেয়শিয়ায় পড়তে যাওয়া লোকের সাথে পরিচয় হলো। আশ্চর্যের বিষয় এরা কেউ নিজের কলেজের নামই জানেনা। যাচ্ছে ল্যাংগুয়েজ কোর্সে ছয়মাসের ভিসা নিয়ে। কয়েকজনকে বললাম দেখেন অন্তত কলেজের নামটা মুখস্ত করেন তা নাহলে ইমিগ্রেশন আটকে দেবে। ওরা উত্তর দিল কিছু লাগবেনা সেখানে লোক আছে নিয়ে যাবে।

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনেকরি মালেয়শিয়ার ইমিগ্রেশনই এই অবৈধ লোকদের ঢুকার সু ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। তা নাহলে এরা কখনোই ইমিগ্রেশন পার হতে পারতোনা। সবই ব্যাবসা।


যাইহোক, বিমানে চড়ে আসলাম মালেয়শিয়া। ইমিগ্রেশন ক্রস করে এক্সিট করতে যাবো এক দালাল বলল;
-কই যাও।
=এক্সিট করতে।
-কেন আসছ?
=ঘুরতে।
-নো মানি; নো এক্সিট।
= ওকে আমি ইমিগ্রেশনে জিজ্ঞেস করে আসি।
-এই দাড়াও। কইত্যে আসছ?
=নিউজিল্যান্ড।
-বাংলাদেশ না।
=না।
-ওকে। সরি স্যার।

বের হয়ে গেলাম বাইরে রেল স্টেশনে। ট্রেনে করে আধগন্টা জার্নি করে সিটিতে পৌছালাম। তারপর টেক্সি নিয়ে আগে অনলাইনে বুক করা ব্যাকপেকার্সে উঠলাম।



এবার সময় এসেছে ঘুরে দেখার। প্রথমেই খাবার খাবো; হোটেলে খেতে গেলাম। বাঙালী হোটেল ইচ্ছা মত খাবার নিলাম। হোটেল বয় থেকে শুরু করে কাস্টমার সবই বাঙালী। যে ছেলেটা টেবিল পরিষ্কার করছে তাকে আমার একটু অন্যরকম মনে হলো।

জিগেস করলাম ভাই আপনি কি স্টুডেন্ট? সে জানালো সে স্টুডেন্ট। ঘন্টায় ৪ রিঙিত বেতনে চাকরি করে এখানে অবৈধভাবে। এখানে অনেক হোটেলে খেয়েছি প্রায় সব হোটেলেই আমার ওয়েটার দের সাথে কথা হয়েছে। সবারই একই অবস্থা! চায়না টাউনের আশেপাশে ১০-১৫টা হোটেলে খেয়েছি আমরা। সবগুলোতেই এমন।

মনে মনে ভাবলাম এরা দেশেত এই কষ্ট করলে আরো বেশি কামাইতে পারত। আমরা নিউজিল্যান্ডে ভালোই আছি। আল্লাহ ভালোই রাখছে।

পরেরদিন বন্ধু এসে ঘুরতে নিয়ে গেল ঘুরে বেড়ালাম ভিবিন্ন জায়গায়। ভিবিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি শেষ করে তিনদিন থেকে যখন থাইল্যান্ডে যাচ্ছিলাম তখন বন্ধুর কষ্টের কথা গুলো মাথায় ঘুরছিল। কেন কেউ কেউ চাইলেও দেশে যেতে পারছেনা। সব কথা ব্লগে না বলাই শ্রেয়।




কিন্তু আমার জেনুইন স্টুডেন্ট দের কাছে অনুরোধ অন্তত নিজের আয় করা টাকায় পড়ার যায়গা মালেয়শিয়া না। মালেয়শিয়া কে প্লিজ লিস্ট থেকে বাদ দিন প্লিজ। আর যারা কাজ করার উদ্দেশ্যে আসছেন তাদের ব্যপারে বলবো প্লিজ ভাই; মালেয়শিয়া না। আর কিছু টাকা দিয়ে কাতার কুয়েত যান হাজার গুনে ভাল থাকবেন। এখানে অবৈধ জীবন আপনার অতিষ্ট করে তুলবে।

আজ এই পর্যন্তই !

পরবর্তীতে বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইটের সুন্দর অভিজ্ঞতা এবং থাইল্যান্ড , সিংগাপুর ঘুরার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। আর "নিউজিল্যান্ডে এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা" সিরিজটা কন্টিনিউ করবো ইনশাল্লাহ।

আগের সকল পর্বের লিংক একসাথেঃ
নিউজিল্যান্ডে এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১)
নিউজিল্যান্ডে এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২)
নিউজিল্যান্ডে এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৩)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



সাধারণ

৩০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮

আমিই সাইফুল বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৪

কল্লোল পথিক বলেছেন:







চমৎকার পোস্ট।

৩০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯

আমিই সাইফুল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: যামুনা মালুশিয়া :)

৩০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯

আমিই সাইফুল বলেছেন: এই কচুর দেশ থেকে বাংলাদেশ অনেক ভালো ভাই।

৪| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯

জসিম বলেছেন: ভালো লিখেছেন. মালয়েশিয়ার অনেক কিছু জানা হলো.
ধন্যবাদ.

৩০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০

আমিই সাইফুল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৫| ৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৭

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাল লাগল, অনেক কিছু জানলাম। ছবি আরো একটু বেশী দিতে পারতেন...

৩০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২

আমিই সাইফুল বলেছেন: পরে আরো বেশি দেয়ার ট্রাই করবো ভাইয়া।

৬| ৩০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৩

হাসনাতুল বলেছেন: আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না যে, মালায়শিয়া তে ভালো ইউনির্ভাসিটি নাই।

০২ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১৫

আমিই সাইফুল বলেছেন: আমি কিন্তু সেটা বলিনি। পার্ট টাইম জব করে পড়াশোনার খরচ চালানো পসিবল না।

৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫০

বাকি বিল্লাহ বলেছেন: নিউজিল্যান্ড নিয়ে আপনার পোস্টগুলো মিস করছি।

৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৪১

রয়ারিহাশা বেঙ্গলেনসিস বলেছেন: লেখকের ফেসবুক লিংক দেয়া যাভে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.